1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইসরায়েলের সমালোচনা, নাকি ইহুদি বিদ্বেষ?

ফল্কার ভাগেনার/আরবি২ আগস্ট ২০১৪

ইদানীং জার্মানিতে ইহুদি বিদ্বেষ নিয়ে বিতর্ক আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে৷ গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে জার্মানিতেও প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের ধ্বনি উঠছে৷ প্রশ্ন জাগছে ইসরায়েলি রাজনীতির সমালোচনা করা ইহুদি বিদ্বেষ কিনা৷

Alter Jüdischer Friedhof in Leipzig Hakenkreuze Archiv 1992
ছবি: picture-alliance/dpa

জার্মানির ইহুদি সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় পরিষদের প্রধান ডিটার গ্রাউমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমি ভাবতেই পারিনি যে, জার্মানিতে ইহুদিদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা আবার শুনতে হবে৷''

কেন্দ্রীয় পরিষদের ফেসবুকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রায় ৬০টি মন্তব্য চলে আসে৷ এর মধ্যে এক চতুর্থাংশই ইহুদি বিদ্বেষমূলক৷ কিছু ক্ষেত্রে এব্যাপারে পুলিশি তদন্তও চলছে৷

সংজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক

ইহুদি বিদ্বেষ নিয়ে বিতর্কের মূল বিষয়টি হলো এর সংজ্ঞা নিয়ে৷ এখানে প্রশ্ন উঠছে, ইসরায়েল সরকারের প্যালেস্টাইন নীতির সমালোচনা করা কি ইহুদি বিদ্বেষ?

বছর দুয়েক আগে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সক্রিয় আন্তর্জাতিক বেসরকারি ইহুদি সংস্থা ‘সিমোন-ভিসেনথাল-সেন্টার' বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ইহুদি বিদ্বেষি ১০ জনের একটি ‘কালো তালিকা' প্রকাশ করে৷ এটি নিয়ে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়৷ তালিকার নয় নম্বরে স্থান দেওয়া হয়েছে জার্মানির প্রখ্যাত ম্যাগাজিন শ্পিগেলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকাশক রুডলফ আউগুশ্টাইনের ছেলে সাংবাদিক ইয়াকব আউগুস্টাইনকে৷ শ্পিগেলের নিয়মিত অনলাইন কলামে তিনি ইসরায়েলের প্যালেস্টাইন-নীতির কঠোর সমালোচনা করে বক্তব্য প্রকাশ করেন৷ তাঁর মতে ইসরায়েল একটি গণতান্ত্রিক দেশ হওয়া সত্ত্বেও গাজায় দখলদারি শক্তি হিসাবে প্যালেস্টাইনিদের দমন করে রাখছে৷ এজন্য সাংবাদিক ইয়াকব আউগুশ্টাইনকে ইহুদি বিদ্বেষি বলা হয়েছে৷ আউগুশ্টাইন পাল্টা যুক্তি দিয়ে শ্পিগেলে লেখেন, তিনি এব্যাপারে সচেতন যে একজন জার্মান হিসাবে তিনি ইসরায়েল সম্পর্কে এরকমভাবে লিখতে পারেন না, যেমনটি পারেন একজন সুইস কিংবা স্প্যানিশ৷

দুই সত্তায় দ্বন্দ্ব

কিন্তু জার্মান সাংবাদিক হিসাবে তাঁর দ্বৈত সত্তায় দ্বন্দ্ব দেখা দেয়৷ তাঁর জার্মান সত্তা ইসরায়েলের ব্যাপারে সতর্ক ও সংবেদনশীন থাকতে বলে৷ কিন্তু তাঁর সাংবাদিক সত্তা তাঁকে সৎ থাকার কথা বলে৷ ইসরায়েল যদি কারো অধিকার ক্ষুন্ন করে, তাহলে তা বলার অধিকার রয়েছে সাংবাদিকের৷

স্বচ্ছতা প্রয়োজন

জার্মানিতে ইসরায়েল সম্পর্কে সমালোচনা সহজেই ইহুদি বিদ্বেষ বলে গণ্য হয়৷ এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইহুদি বিদ্বেষের সংজ্ঞা দিয়েছে এইভাবে: যারা ইসরায়েলকে দানবীয় বলে মনে করে এবং রাষ্ট্রটির অস্তিত্বের ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করে, তারা ইহুদি বিদ্বেষি৷

এছাড়া যারা ইসরায়েলি নীতির সঙ্গে নাৎসি কার্যকলাপের তুলনা করে এবং ইসরায়েলের কারণে সমগ্র ইহুদি সম্প্রদায়কে দায়ী করে তাদেরও ইহুদি বিদ্বেষি বলা যায়৷ গ্রাউমানের মতে, ‘‘বিশ্ব ষড়যন্ত্রে' ইহুদিদের দায়ী করার প্রবণতাও ইহুদি বৈরিতা৷

বার্লিনের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির অ্যান্টিসেমিটিজম গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ইতিহাসবিদ ভল্ফগাং বেনৎস ৩০ বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন৷ তাঁর মতে ইহুদি বিদ্বেষ জার্মানিতে একই রকম রয়েছে৷ বদলেছে ইসরায়েল রাষ্ট্রটি সম্পর্কে ধারণা৷ ইসরায়েলি রাজনীতিকে সর্বান্তঃকরণে মেনে নেওয়া হয় না এখন৷ এটা ইহুদি বিদ্বেষ নয়৷

জনমত স্পষ্ট

একটি জার্মান টিভি চ্যানেলের জনমত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, উত্তরদাতাদের ১৮ শতাংশ ইসরায়েলকে মধ্যপ্রাচ্য সংকটের জন্য দায়ী করেছেন৷ মাত্র নয় শতাংশ মনে করেন এজন্য মূলত প্যালেস্টাইনিরাই দায়ী৷

জার্মানির মতো ইউরোপের অন্য কোনো দেশে ইহুদি বিদ্বেষ সম্পর্কে এত দ্রুত প্রতিক্রিয়া হয় না৷ রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকরা ঐতিহাসিক কারণেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সঠিক হোক বা না হোক ‘ইহুদি বিদ্বেষে'র বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠেন৷

ইহুদি সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় পরিষদের প্রাক্তন সদস্য ও মনস্তত্ত্ববিদ রল্ফ ফ্যারলেগার রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের ইহুদি বৈরিতামূলক প্রচারণার ব্যাপারে দায়ী করেন৷ রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকরা যদি বলেন ইসরায়েল যা কিছু করে সবই সঠিক, জার্মানির ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা যদি বলেন কেউ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কথা বললেই তিনি ইহুদি বিরোধী, তাহলে ইহুদি বিদ্বেষকে আরো প্ররোচিত করা হয়৷ ইসরায়েলের সব কর্মকাণ্ডের সঙ্গেই যে তাল মেলাতে হবে, এমন কোনো কথা নেই৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ