ফিলিস্তিনের গাজার জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের কমান্ডার বাহা আবু আল-আতা মঙ্গলবার সকালে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন৷ ইরানের সমর্থনপুষ্ট গোষ্ঠীটি তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে৷
বিজ্ঞাপন
এর কিছুক্ষণ পরই ইসরায়েলের দিকে লক্ষ্য করে গাজা থেকে রকেট হামলা শুরু হয় বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ৷
এর টুইটার বার্তায় ৪২ বছর বয়সি আল-আতার উপর হামলার খবর জানায় আইডিএফ৷ ‘‘ইসরায়েলের সাধারণ নাগিরক ও সৈন্যদের বিরুদ্ধে শত শত সন্ত্রাসী হামলা চালানোর সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন৷ খুব শিগগিরই তিনি পরবর্তী হামলার পরিকল্পনা করছিলেন,’’ বলে জানিয়েছে আইডিএফ৷
ইসলামিক জিহাদ এক বিবতিতে আল-আতার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে৷ হামলায় সময় আল-আতা ‘নায়কোচিত’ কাজ করছিলেন বলে জানানো হয়৷ হামলার প্রতিশোধ নেয়ার কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে৷ ইসরায়েলি হামলায় আল-আতার স্ত্রীও নিহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে৷
আল-আতার মৃত্যুর খবর নিশ্চিতের পর ইসলামিক জিহাদ ইসরায়েলে রকেট হামলা শুরু করে৷ এই ঘটনায় তেল আভিভের কাছের হলন ও রিশোন লেজিয়ন এলাকায় সাইরেন বাজানো হয়৷ স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷
সিরিয়ার আরেক হামলা
মঙ্গলবার সকালে সিরিয়ার দামেস্কের এক ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েল৷ সেখানে ইসলামিক জিহাদের একজন কমান্ডার ছিলেন বলে জানানো হয়েছে৷
সিরিয়ার সরকারি সংবাদসংস্থা সানা বলছে, হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন৷ তবে নিহতদের মধ্যে আকরাম আল-আজুরি নামের ইসলামিক জিহাদ কমান্ডার আছেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷
জেডএইচ/কেএম (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)
২৩ অক্টোবরের ছবিঘরটি দেখুন...
সৌদি আরব, ইরান, ইসরায়েল কার শক্তি কেমন?
সৌদি আরবের তেলক্ষেত্রে হামলার পর অস্থির হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি৷ হুতি বিদ্রোহীরা এর দায় নিলেও ইরানকে দায়ী মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব৷ এ নিয়ে চলছে হুমকি-পাল্টা হুমকি৷ কিন্তু সামরিক শক্তিমত্তা কার বেশি?
ছবি: picture-alliance/EPA/TSGT
আকাশে সৌদি আরব
সামরিক খাতে সৌদি আরব ২০১৮ সালে ৬ হাজার ৭৬০ কোটি ডলার খরচ করেছে৷ ব্যয়ের দিক থেকে তাদের অবস্থান গোটা বিশ্বে তৃতীয় আর উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে৷ বিশ্বের সামরিক যন্ত্রপাতির সবচেয়ে বড় ক্রেতাও তারা৷ বর্তমানে সৌদির মোট সামরিক সদস্য ২ লাখ ৩০ হাজার৷ আছে ৮৪৮ টি যুদ্ধবিমান, ২৫৪ টি হেলিকপ্টার, ১০৬২ টি ট্যাংক ও ৫৫ টি যুদ্ধ জাহাজ৷ তবে নেই কোনো সাবমেরিন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সমুদ্র আর সৈন্যে ইরান
সামরিক খাতে গত বছর ইরানের ব্যয় ছিল ১ হাজার ৩২০ কোটি ডলার, যা ২০১৭ সালের তুলনায় সাড়ে নয় ভাগ কম৷ অবরোধ আর অর্থনৈতিক মন্দায় গত এক দশকে দেশটির অস্ত্র আমদানির পরিমাণও কমেছে৷ ২০০৯-১৮ সালের মধ্যে তা্দের আমদানিকৃত অস্ত্রের পরিমাণ সৌদি আরবের মাত্র সাড়ে তিনভাগ৷ বর্তমানে দেশটির সামরিক সদস্য আট লাখ ৭৩ হাজার৷ ৫০৯ টি যুদ্ধ বিমান, ১৫৬ টি হেলিকপ্টার, ১৬৩৪ টি ট্যাংক, ৩৯৮ টি নৌযান, ৩৪ টি সাবমেরিনের মালিক তারা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Noroozi
ইসরায়েল নিজেই অস্ত্র তৈরি করে
২০১৮ সালে সামরিক খাতে এক হাজার ৫৯৫ কোটি ডলার ব্যয় করেছে ইসরায়েল৷ দেশটি নিজেই সামরিক অস্ত্র তৈরি করে, তাই তেমন একটা আমদানি করতে হয় না৷ গত বছর সর্বসাকুল্যে ১০৩ কোটি ডলারের অস্ত্র কিনেছে যুক্তরাষ্ট্র আর জার্মানির কাছ থেকে৷ দেশটির সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৬ লাখ ১৫ হাজার৷ তাদের বহরে আছে ৫৯৫ টি যুদ্ধবিমান, ১৪৬ টি হেলিকপ্টার, ২৭৬০ টি ট্যাংক, ৬ টি সাবমেরিন৷
ছবি: Reuters
প্রতাপশালী তুরস্ক
২০১৮ সালে তুরস্কের সামরিক ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮৯৭ কোটি ডলার৷ এর মধ্যে ১১১ কোটি ডলার খরচ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, স্পেন, ইতালিসহ ৬টি দেশের কাছ থেকে অস্ত্র ক্রয়ে৷ তুরস্কের সামরিক বাহিনীর সদস্য ৭ লাখ ৩৫ হাজার৷ যুদ্ধবিমান আছে ১০৬৭ টি৷ আছে ৪৯২ টি হেলিকপ্টার, ৩২০০ ট্যাংক, ১৯৪ টি যুদ্ধজাহাজ, ১২ টি সাবমেরিন৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Kilic
উপসাগরের ছোট শক্তি কাতার
কাতারের সবশেষ সামরিক ব্যয়ের হিসাবটি ২০১০ সালের৷ সে বছর তাদের বাজেট ছিল ২১৭ কোটি ডলারের৷ দেশটির সামরিক সদস্য সংখ্যা ১২ হাজার৷ আছে ১০০ টি এয়ারক্রাফট, ৪২ টি হেলিকপ্টার, ৯৫ টি ট্যাংক, ৮০ টি যুদ্ধজাহাজ৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Jaafar
পড়ন্ত শক্তির ইরাক
গেল বছর সামরিক বাহিনীর পেছনে প্রায় ৬৩২ কোটি ডলার খরচ করেছে ইরাক৷ এর মধ্যে ১৫৬ কোটি ডলার ব্যয় করেছে অস্ত্র ক্রয়ে৷ তাদের আছে ১ লাখ ৬৫ হাজার সৈন্য, ৩২৭ টি যুদ্ধবিমান, ১৭৯ টি হেলিকপ্টার, ৩০৯ টি ট্যাংক, ৬০ টি যুদ্ধজাহাজ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Abdul Hassan
এবং যুক্তরাষ্ট্র
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাজেট ছিল ৬৪ হাজার ৮৮০ কোটি ডলারের৷ প্রায় সাড়ে ২১ লাখ সামরিক সদস্যের বিশাল বাহিনী তাদের৷ ১৩,৩৯৮ টি যুদ্ধবিমান, ৫৭৬০টি হেলিকপ্টার, ৬২৮৭টি ট্যাংক, ৪১৫টি যুদ্ধজাহাজ, ৬৮টি সাবমেরিন আছে এই পরাশক্তির বহরে৷