1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইসরায়েলের ৬৫ বছর

বেটিনা মার্ক্স/এসি১৪ মে ২০১৩

‘‘তোমরা যদি চাও, তবে তা রূপকথা থেকে যাবে না’’, ভিয়েনার সাংবাদিক ও জিওনিজমের প্রতিষ্ঠাতা টেওডোর হেরৎসল এ কথাটি লিখেছিলেন ১৯০২ সালে৷ ৪৬ বছর পরে সেই স্বপ্ন সত্য হয়৷ জন্ম হয় ইসরায়েল রাষ্ট্রের৷

Ausstellung "IHR GLÜCKLICHEN AUGEN" in Berlin (26.03.-24.06.2012 im Centrum Judaicum) David Ben-Gurion verliest die Unabhängigkeitserklrung des Staates Israel , Tel Aviv, 14 Mai 48; Foto: Rudi Weissenstein; Copyright: Photo House Pri-Or, Tel Aviv ***ACHTUNG! BILDER NUR ZUR BERICHTERSTUNG ÜBER DIE AUSSTELLUNG VERWENDEN!!***
ছবি: Photo House Pri-Or, Tel Aviv

১৯৪৮ সালের ১৪ মে৷ সেদিন তেল আভিভের একটি মিউজিয়ামে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেওয়া হয়৷ মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে এই অসীম গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তটির কিছু পুরনো সাদা-কালো আলোকচিত্র, কাঁপা কাঁপা ফিল্ম ফুটেজ আর একটি খরখরে অডিও টেপ ছাড়া আর কিছু পড়ে নেই৷ ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে প্যালেস্টাইনের ইহুদি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রধান ডেভিড বেন গুরিয়নকে৷ তাঁর মাথার উপর জিওনিজমের প্রতিষ্ঠাতা টেওডোর হেরৎসল-এর প্রতিকৃতি৷ বেন গুরিয়নের বাঁ হাতে স্বাধীনতার ঘোষণা৷

‘‘আমরা ইসরায়েল নামক দেশে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করছি'', আনুষ্ঠানিকভাবে জানান বেন গুরিয়ন৷ পরে তিনি তাঁর দিনলিপিতে লেখেন: ‘‘বৈঠক শেষ হলো আমাদের জাতীয় সংগীত হাতিভকা গেয়ে৷ বাইরে তেল আভিভের রাস্তায় মানুষজন নাচছে৷'' কিন্তু ঐ আনন্দের মুহূর্তেও ছিল আসন্ন যুদ্ধের কালো ছায়া৷

৫ থেকে ১০ জুন, এই ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলি সৈন্যরা মিশর, জর্ডান ও সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে এবং পশ্চিম তীর ও গাজা স্ট্রিপ ছাড়া গোলান হাইটস দখল করেছবি: MOSHE MILNER/AFP/Getty Images

স্বাধীনতা যুদ্ধ

১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ব্রিটিশ ম্যানডেট ভুক্ত প্যালেস্টাইনকে ইহুদি ও আরবদের মধ্যে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়, আরবরা যা প্রত্যাখ্যান করেছিল৷ ঐ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইহুদিদের মোট এলাকার অর্ধেকের বেশি প্রদান করা হয়েছিল৷ সেই এলাকায় তখন কি সংখ্যক ইহুদি কিংবা আরবের বাস ছিল, সে পরিসংখ্যান আজও বিতর্কিত৷ কিন্তু বেন গুরিয়ন ইসরায়েলে ইহুদিদের জনসংখ্যাগত গরিষ্ঠতা নিশ্চিত করার জন্য বিপুল সংখ্যক আরবকে বিতাড়ন করার সিদ্ধান্ত নেন৷ ঐ ফিলিস্তিনিরা – আজ তাদের ফিলিস্তিনিই বলা হচ্ছে – নিকটবর্তী আরব দেশ কিংবা পশ্চিম তীর ও গাজা স্ট্রিপে পলায়ন করে৷ ৫৩০টি ফিলিস্তিনি গ্রাম সে সময় নিশ্চিহ্ন হয়, লুপ্ত হয়ে যায় ১১টি ফিলিস্তিনি শহর৷

‘ছয় দিনের যুদ্ধ'

পশ্চিম তীর কিংবা গাজা স্ট্রিপ সে আমলে ইসরায়েলের দখলে ছিল না৷ কিন্তু ১৯৬৭ সালের ‘ছয় দিনের যুদ্ধের' পর ইসরায়েল ঐ এলাকা দু'টিও নিজের দখলে আনে৷ ৫ থেকে ১০ জুন, এই ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলি সৈন্যরা মিশর, জর্ডান ও সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে এবং পশ্চিম তীর ও গাজা স্ট্রিপ ছাড়া গোলান হাইটস দখল করে৷ বিশেষ করে পূর্ব জেরুসালেম ও তথাকথিত ‘উইপিং ওয়াল' পুনরায় ইসরায়েলের হাতে আসাটা ইহুদিদের কাছে একটা অতীব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা৷

বসতি নির্মাণ

অধিকৃত এলাকাগুলিতে শীঘ্রই ইহুদি বসতি নির্মাণ শুরু হয়৷ এবং তা-তে শ্রমদলের নেতৃত্বাধীন সরকারের শুধু সম্মতি নয়, প্রত্যক্ষ সমর্থন ও সাহায্য ছিল৷ এই বসতিগুলি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষার বহির্প্রাকার হিসেবে কাজ করবে, অধিকৃত এলাকাগুলিতে ফিলিস্তিনি জনগণকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে এবং এখানে যাতে স্বশাসনের কাঠামো না গড়ে ওঠে, তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে – এই ছিল উদ্দেশ্য৷

১৯৭৯ সালে মিশরের সঙ্গে শান্তি চুক্তি, কিংবা ১৯৯৩ সালে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়ার সূচনা, কিংবা ২০০৫ সালে ইসরায়েলের গাজাস্ট্রিপ থেকে পশ্চাদপসারণ – কিছুই ইসরায়েলের বসতি নির্মাণ নীতির পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি৷ স্বয়ং নিহত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইটঝাক রাবিন অধিকৃত এলাকাগুলিতে ইহুদি বসতির বিরোধী হলেও, সেগুলি খালি করার নির্দেশ দেওয়া সাহস পাননি৷

১৯৬০ সালের ১৪ এপ্রিল নিউ ইয়র্কের একটি হোটেলে জার্মান চ্যান্সেলর কনরাড আডেনাউয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন গুরিয়নেরছবি: picture-alliance/dpa

আজ পশ্চিম তীরে এবং পূর্ব জেরুসালেমে মোট পাঁচ লাখ ইহুদি বাসিন্দা এই সব বসতিতে বাস করছে৷ তাদের মধ্যে পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া থেকে আগত বহু ইহুদিরা আছে, যারা সেভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ইসরায়েলে আসে৷ মোট দশ লক্ষ রুশি ইহুদি ইসরায়েলে স্থান পেয়েছে৷ ১৯৯১ সালে ইথিওপিয়া থেকে ১৪ হাজার ইহুদিকে ইসরায়েলে আনা হয়৷

ইসরায়েলি-জার্মান সম্পর্ক

ইসরায়েলের সঙ্গে ফেডারাল জার্মান প্রজাতন্ত্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে ১৯৬৫ সাল যাবৎ৷ নাৎসি আমলে ইউরোপীয় ইহুদিদের সম্পত্তি দখল ও হত্যার জন্য জার্মানি প্রায় ৩৫০ কোটি মার্ক ক্ষতিপূরণ দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় – এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৬২ সালে৷ তারও আগে, ১৯৬০ সালের ১৪ এপ্রিল নিউ ইয়র্কের একটি হোটেলে জার্মান চ্যান্সেলর কনরাড আডেনাউয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন গুরিয়নের৷ সাক্ষাতের পর বেন গুরিয়ন সাংবাদিকদের সমীপে বলেন: ‘‘আমি ইসরায়েলি সংসদে বলেছি, আজকের জার্মানি অতীতের জার্মানি নয়৷ আডেনাউয়ারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর আমি এ বিষয়ে নিশ্চিত যে, আমার এ ধারণা ঠিক৷''

জার্মানি ও ইসরায়েলের মধ্যে আজ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক৷ ইসরায়েলের মিত্রদেশগুলির মধ্যে প্রথমেই জার্মানিকে গণ্য করা হয় – রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক, সব বিচারেই৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ২০০৮ সালে ইসরায়েলি ক্নেসেটে প্রদত্ত ভাষণে যেমন বলেছিলেন: ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য জার্মানির একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব আছে৷ ‘‘এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব আমাদের জাতীয় স্বার্থের অঙ্গ৷ এর অর্থ, জার্মান চ্যান্সেলর হিসাবে আমার কাছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আপোষ চলতে পারে না৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ