1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের জন্য মোটেই সুদিন নয়

বেটিনা মার্ক্স/এসবি১৮ মার্চ ২০১৫

সবাইকে অবাক করে দিয়ে পরিবর্তনের পূর্বাভাষ ভুল প্রমাণিত করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী রয়ে গেলেন বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু৷ বেটিনা মার্ক্স মনে করেন, ইসরায়েল ও মধ্যপ্রাচ্যের জন্য এই সিদ্ধান্ত মোটেই ভালো নয়৷

Israel Wahlen 2015 Likud Anhänger Jubel
ছবি: Reuters/N. Elias

বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু পারলেন বটে৷ নির্বাচনি প্রচারের শেষ লগ্নে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী চাকার গতি ঘুরিয়ে লিকুদ পার্টির জন্য এক বিশাল জয় হাসিল করলেন৷ ভোটগ্রহণের একেবারে শেষ কয়েক ঘণ্টায় তিনি দক্ষিণপন্থি শিবিরের ভোটারদের মন জয় করতে সমর্থ হয়েছেন৷ জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী তাঁর পিছিয়ে থাকার কথা ছিল৷ সেই ব্যবধান তিনি শুধু কমিয়ে আনেননি বা প্রতিপক্ষ ইৎশাক হ্যারৎসগ-এর সমান ভোটও জোগাড় করেন নি৷ মধ্যরাতেও হ্যারৎসগ ও তাঁর সহযোগী, প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিপি লিভনি নির্বাচনে জয়ের আনন্দ উৎসব শুরু করে দিয়েছিলেন এবং আগামী সরকার গড়ার তোড়জোড় করছিলেন৷ তারপর রাত গভীর হবার সঙ্গে সঙ্গে ফলাফলের গতি-প্রকৃতি বদলে যেতে থাকে৷ স্পষ্ট হতে থাকে, যে নেতানিয়াহু বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে যাচ্ছেন৷ ডাক নাম ‘ম্যাজিশিয়ান' যে সত্যি তাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, নেতানিয়াহু আবার তা প্রমাণ করে দিলেন৷

বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু যাঁর ডাকনাম ম্যাজিশিয়ানছবি: Reuters/N. Elias

শেষ পর্যায়ে আতঙ্ক ছড়ানো

জনমত সমীক্ষায় খারাপ ফল সম্পর্কে জানার পর নেতানিয়াহু আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন৷ তখন তিনি কিছু নোংরা কৌশল কাজে লাগাতে ও নির্বাচনি আইন উপেক্ষা করতে পিছপা হননি৷ এমনকি আইন ভেঙে ভোটগ্রহণের দিনে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে সাবধানবাণী উচ্চারণ করে তিনি বলেছিলেন, যে তাঁর নির্বাচনি জয় রুখতে ‘আরবরা' দলে দলে ভোট দিতে যাচ্ছে৷ নির্বাচনের দিন প্রকাশ্যে এমন বিবৃতি দেওয়া নিষিদ্ধ৷ তাই সংবাদমাধ্যমেও সে বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রচার করা হয়নি৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই বার্তা দ্রুত ছড়িয়ে যায়৷ সম্ভবত সেই কারণেই শেষ মুহূর্তে অসংখ্য ভোটার লিকুদ পার্টিকে ভোট দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ কারণ ইসরায়েলি পাসপোর্টধারী ফিলিস্তিনিরা ভোটার হিসেবে ইহুদি রাষ্ট্রের রাজনীতি প্রভাবিত করছে – এমন একটা চিত্র অনেক ইহুদি ইসরায়েলি কল্পনা করতে পারে না৷

বাস্তবে সংখ্যালঘু ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ এবং ভোটার তালিকার প্রায় ১৪ শতাংশ জুড়ে রয়েছে৷ তাদের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগের প্রবণতা সত্যি বেশি৷ এ কারণেই ‘সম্মিলিত আরব তালিকা' ১৪টি আসন পেয়ে ক্নেসেট বা সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম সংসদীয় দল হয়ে উঠেছে৷ এই সাফল্য সত্যি নজর কাড়ার মতো৷ তবে এই বাস্তব ইসরায়েলের চরম জাতীয়তাবাদী ভাবধারার শিকড়ে আঘাত করতে পারবে না৷ সেই ভাবধারায় অনুপ্রাণিতরা ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অথবা অধিকৃত এলাকায় ফিলিস্তিনিদের সমানাধিকার দিতে প্রস্তুত নয়৷

ডয়চে ভেলের বেটিনা মার্ক্সছবি: DW

দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানসূত্র থেকে বিদায়

এবারের নির্বাচনের ফলাফল আন্তর্জাতিক সমাজে ইসরায়েলের একঘরে হয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে চূড়ান্ত রূপ দিলো৷ ভোটাররা বর্তমান নীতির পক্ষে রায় দিয়েছেন৷ এ এমন এক নীতি, যার কোনো লক্ষ্য নেই৷ এই নীতি ইসরায়েল সহ গোটা অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও অস্তিত্বের প্রশ্নের জবাব দিতে পারে না৷ ভোটের ঠিক আগে নেতানিয়াহু শুধু বলেছেন, তিনি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্ম বন্ধ করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবেন৷ আন্তর্জাতিক সমাজের অবস্থানকে অবজ্ঞা করে এমন স্পষ্ট ঘোষণা হয়তো তাঁর বিস্ময়কর সাফল্যে অবদান রেখেছে৷ কিন্তু নেতানিয়াহু ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কোনো বিকল্প তুলে ধরতে পারেননি৷ ভোটাররাও তাঁর কাছে এর সদুত্তর চাননি৷ অর্থাৎ ইসরায়েলের জনগণের সংখ্যাগুরু অংশ কার্যত অন্য একটি জাতির উপর কর্তৃত্ব চালিয়ে যেতে প্রস্তুত ও আগ্রহী৷ অধিকৃত এলাকায় ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারও অস্বীকার করে যেতে চান তাঁরা৷ মোটকথা, আগামী ৫০ বছরেও অধিকৃত এলাকা থেকে প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা নেই৷ ইসরায়েলের গণতন্ত্র ও গোটা অঞ্চলের জনগণের ভবিষ্যতের জন্য এই নির্বাচনের ফলাফল কোনো শুভ বার্তা বহন করছে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ