ইসরায়েলের সঙ্গে যে কোনো সম্পর্ক অপরাধ। তার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও ভোগ করতে হতে পারে। আইন পাস ইরাকের পার্লামেন্টে।
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েলকে কখনোই সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করেনি ইরাক। ইহুদি দেশটির সঙ্গে কখনো কোনো কূটনৈতিক সম্পর্কও গড়ে ওঠেনি। এবার সেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধেই আরো কঠোর আইন পাস হলো ইরাকের আদালতে। আইনসভায় যে বিলটি পেশ করা হয়েছিল, তাতে বলা ছিল, ইরাকের কোনো সংস্থা বা ব্যক্তি ইসরায়েলের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্কে গেলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।
ইরাকে লাশ তোলায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ
ইরাকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট আইএস-এর হাতে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷ তাদের অনেককে গণকবর দেয়া হয়েছে৷
ছবি: ZAID AL-OBEIDI/AFP/Getty Images
দুশোর বেশি গণকবর
ইরাকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট আইএস-এর হাতে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷ তাদের অনেককে গণকবর দেয়া হয়েছে৷ জাতিসংঘের হিসেবে দেশটিতে এমন প্রায় দুশোর বেশি গণকবর আছে৷ এগুলোতে ১২ হাজারের বেশি মরদেহ থাকতে পারে৷
ছবি: ZAID AL-OBEIDI/AFP/Getty Images
পরিচয় শনাক্ত
গণকবরে থাকা মরদেহগুলোর পরিচয় জানতে কাজ করছে ইরাকের গণকবর অধিদপ্তর৷ তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে জাতিসংঘের তদন্ত সংস্থা ইউনিটাড ও ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অফ মিসিং পার্সনস বা আইসিএমপি৷
ছবি: AHMAD AL-RUBAYE/AFP via Getty Images
তিন হাজার মরদেহ উত্তোলন
গণকবর অধিদপ্তরের প্রধান দিয়া করিম সাইদি জানান, এখন পর্যন্ত তারা ২৯টি এলাকার গণকবর থেকে প্রায় তিন হাজার মরদেহ উত্তোলন করেছেন৷ মোট ১১৪টি এলাকায় গণকবর দেয়া হয়েছে বলে ধারনা করা হয়৷
ছবি: MARWAN IBRAHIM/AFP/Getty Images
বেশিরভাগই ইয়াজিদিদের
এখন পর্যন্ত যতগুলো গণকবর থেকে মরদেহ তোলা হয়েছে সেগুলোর বেশিরভাগই সিনজার রাজ্যে অবস্থিত৷ এলাকাটি মূলত ইয়াজিদিদের মাতৃভূমি৷ ফলে কবর থেকে তোলা বেশিরভাগ মরদেহ ইয়াজিদিদের৷
ছবি: Zaid Al-Obeidi/AFP via Getty Images
অভিযোগ
ইরাকের সুন্নিপ্রধান হাউইজা শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, লাশ তোলার ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে শিয়া ও ইয়াজিদিপ্রধান এলাকার গণকবরকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের৷
ছবি: Judit Neurink/DW
অভিযোগ অস্বীকার
গণকবর অধিদপ্তরের প্রধান সাইদি জানান, কোন গণকবর থেকে লাশ তোলা হবে সেই সিদ্ধান্ত দিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিটাড ও আইসিএমপি৷ তবে আইসিএমপির মুখপাত্র দিমা বাবিলি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে৷
ছবি: AFP/Getty Images
6 ছবি1 | 6
ইরাকের ৩২৯ আসনের পার্লামেন্টে বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ২৭৫টি। অর্থাৎ, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিলটি পাশ হয়ে যায়। ইরাকের সরকার গঠনের ক্ষেত্রেও এত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো দল। বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পরে ইরাকের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়া দল রাস্তায় নেমে উদযাপন করে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শাসনের শেষ অধ্যায়ে একের পর এক মধ্যপ্রাচ্যের দেশের সঙ্গে সমঝোতা হতে থাকে ইসরায়েলের। অ্যামেরিকার হস্তক্ষেপে এঘটনা ঘটে। বাইডেনের আমলেও সেই ধারা অব্যাহত। সেই পরিস্থিতিতে ইরাকের এই নতুন আইন মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ইরাকের এই আইনে বলা হয়েছে, দেশের কোনো সংস্থা স্বাধীনভাবেও ইসরায়েলের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্কে যেতে পারবে না। ইরাকে কাজ করতে আসা বিদেশি সংস্থাগুলির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে।
সম্প্রতি উত্তর ইরাকে কুর্দদের হাতে থাকা এলাকায় একের পর এক মিসাইল আক্রমণ চালিয়েছে ইরাক। তাদের বক্তব্য, ওই অঞ্চলে ইসরায়েল ঘাঁটি তৈরি করেছে। কুর্দ এবং সুন্নি দলগুলির সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ করেছে ইরাকের সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারি দল।