1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মধ্যপ্রাচ্য সংকট

২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ইসরায়েলকে একাধিকবার সাবধান করে দিয়েছেন যে, ইসরায়েল অধিকৃত এলাকাগুলি না ছাড়লে কালে ইসরায়েল একটি দ্বিজাতিবিশিষ্ট দেশ হয়ে উঠতে পারে৷

ছবি: picture-alliance/dpa

জন কেরি আপাতত যে শান্তি প্রচেষ্টায় লিপ্ত তা-তে একটি মোক্ষম যুক্তি হলো এই যে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনিদের থেকে পিছিয়ে পড়ছে৷ গতমাসেই জন কেরি বলেন যে, শীঘ্র একটি শান্তি চুক্তির কাঠামো নির্দিষ্ট না হলে ‘‘একটি গণতান্ত্রিক ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে (ইসরায়েলের) ভবিষ্যৎ'' নিশ্চিত করা অসম্ভব হয়ে উঠবে৷

যুক্তিটা ইসরায়েলিদের মনে নাড়া দিয়েছে৷ গত সোমবার ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী ইয়্যার লাপিদ এই যুক্তিকে কেরির সাফল্য কেন কাম্য, তার মূল কারণ হিসেবে অভিহিত করেছেন৷ লাপিদ বলেন: ‘‘আমরা ফিলিস্তিনিদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে যতো দেরী করব, ততই সেটা ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের অস্তিত্বের পক্ষে একটি স্পষ্ট বিপদ হয়ে উঠবে৷''

ইসরায়েল যদি অধিকৃত এলাকাগুলি দখল করে রাখে, তাহলে ইসরায়েলের জন্য মাত্র দু'টি পথ খোলা থাকবে: হয় হৃতাধিকার ফিলিস্তিনিদের উপর সংখ্যালঘু ইসরায়েলিদের শাসন; নয়ত ফিলিস্তিনিদের ভোটাধিকার দিয়ে দেখতে হবে, ঐতিহাসিক প্যালেস্টাইনে ইহুদিদের একটি নিজস্ব স্বদেশের স্বপ্নের কিভাবে সলিলসমাধি ঘটে৷

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিছবি: Reuters

ভারসাম্য বদল

বিংশ শতাব্দীতে সেই প্যালেস্টাইন বা ফিলিস্তিনে আরব-ইহুদি জনসংখ্যার ভারসাম্য বদলে যায় একদিকে ইহুদি অভিবাসন এবং অপরদিকে যুদ্ধের কারণে আরবরা উদ্বাস্তু হওয়ার কারণে৷ জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ফিলিস্তিনে যখন ব্রিটিশ শাসন শুরু হয়, তখন ঐতিহাসিক প্যালেস্টাইনে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষের বাস ছিল: তাদের মধ্যে ৭৮ শতাংশ মুসলিম, ১১ শতাংশ ইহুদি এবং ১০ শতাংশ খ্রিষ্টান – এক্ষেত্রে আবার খ্রিষ্টান ও মুসলিমরা সকলেই মোটামুটি জাতিতে আরব ছিল৷

১৯৪৭ সাল জাতিসংঘের ভোটে প্যালেস্টাইনে ব্রিটিশ শাসনের অন্ত ঘটে এবং ফিলিস্তিনকে ‘‘স্বাধীন আরব ও ইহুদি রাষ্ট্রে'' বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ সে সময় এলাকার ১৮ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ৬০ শতাংশ মুসলিম, ৩১ শতাংশ ইহুদি এবং আট শতাংশ খ্রিষ্টান ছিল৷ এর পরের যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনিরা পরবর্তীকালের ইসরায়েলের এলাকা থেকে পালায় কিংবা বিতাড়িত হয়, এছাড়া বহু ইহুদি নতুন ইসরায়েল দেশটিতে অভিবাসী হন৷ ফলে দেখা যায়, ১৯৫০ সালে ইসরায়েলের জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশ ছিল ইহুদি৷

সে যুদ্ধে জর্ডান ও মিশর যথাক্রমে পশ্চিম জর্ডান ও গাজা স্ট্রিপ দখল করে৷ ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল ঐ এলাকা দু'টি অধিকার করার পর জনসংখ্যার অঙ্ক আবার বদলে যায়৷ বর্তমানে ইসরায়েল, পূর্ব জেরুসালেম, পশ্চিম জর্ডান ও গাজা স্ট্রিপ মিলিয়ে মোট এক কোটি বিশ লাখ মানুষের বাস৷ ২০১৩ সালে শুধু ইসরায়েলের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৮১ লাখ – এ হলো ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের তথ্য৷ ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান তার সঙ্গে জুড়লে যে ছবিটা পাওয়া যায়, তা হলো এই যে, হোলি ল্যান্ডে আজ ৬১ লাখ ইহুদি এবং প্রায় ৫৮ লাখ আরবের বাস৷

যার অর্থ, দেশবিভাগের চুক্তি ছাড়া ইহুদিরা একদিন তাদের স্বদেশেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে৷ জন কেরি ঠিক সেই ভীতিটাকেই কূটনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন৷

এসি/ডিজি (এপি, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ