সতের বছর বয়সি ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ওয়েসেল আবু আমরা গাজার একটি পার্কে সেলফি তুলছেন৷ বন্ধুদের সঙ্গে গাজার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতে, কেনাকাটা করতে আর রেস্টুরেন্টে খেতে ভালোবাসেন আবু আমরা৷ ‘‘যুদ্ধ এবং দুর্বল অর্থনীতির মাঝে থাকা সত্ত্বেও আমরা কিছুটা আনন্দে সময় কাটানোর চেষ্টা করি,’’ বলেন তিনি৷

ছোটবোনের সঙ্গে পারিবারিক বাড়িতে খেলছেন আবু আমরা৷

বাড়িতে জায়নামাজে আবু আমরা৷

চব্বিশ বছর বয়সি ফিলিস্তিনি সুয়াদ দাউদ গাজার সমুদ্র সৈকতে একটি ঘোড়ায় চড়েছেন৷ ‘মেডিক্যাল সেক্রেটারি’ বিষয়ে ডিপ্লোমা করার পরও চারবছর ধরে বেকার তিনি৷ ‘‘গাজায় কোনো চাকরি নেই৷ যখন আমি বিরক্ত বোধ করি, তখন বন্ধুদের নিয়ে সমুদ্র সৈকতে বা সবুজ কোথাও চলে যাই,’’ বলেন দাউদ৷

সতের বছর বয়সি ফাতেমা ইউসুফ উচ্চমাধ্যমিকে পড়ছেন৷ ‘‘স্কুলে এটা আমার শেষবর্ষ বলে কিছুটা চাপ অনুভব করি, কিন্তু ঘোড়ায় চড়লে নিজেকে মুক্ত মনে হয়,’’ বলেন ইউসুফ৷

ঘোড়ায় চড়ে শান্তি খুঁজলেও লেখাপড়ার ব্যাপারে বেশ মনোযোগী ফাতেমা ইউসুফ৷ ছবিতে নিজের ঘরে লেখাপড়া করছেন তিনি৷

ফিলিস্তিনি দুই শিক্ষার্থী স্কুলে যাচ্ছেন৷

সমুদ্রের পাড়ে বসে প্রকৃতি উপভোগ করছেন গাজার দুই তরুণী৷ গাজা উপত্যকায় যে সংঘাত চলছে তা কি এই ছবি দেখে বোঝার কোন উপায় আছে?

ছবিতে একটি ড্রোন ধরে আছেন ইসরায়েলের এক সৈন্য৷ জেরুসালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস উদ্বোধনের দিন যত ঘনিয়ে আসছিল বিক্ষোভের তীব্রতা ততই বাড়ছিল গাজায়৷ অথচ সশস্ত্র ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সামনে ফিলিস্তিনিরা তো অসহায়৷ তাই প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে দেয়ার জন্য অভিনব এক উপায় বের করলো ফিলিস্তিনিরা৷ সেই আগুন থেকে বাঁচতেই এই ড্রোন বানিয়েছে ইসরায়েল৷

ছবিতে একটি ঘুড়িতে আগুন জ্বালাচ্ছেন এক ফিলিস্তিনি৷ রামায়ণে হনুমানের আগুন পুড়ে ছাড়খার করেছিল রাবণরাজ্য৷ ফিলিস্তিনিরাও চায় ইসরায়েলে আগুন লাগাতে৷ তাই আকাশে ওড়ার আগে আগুনে পুড়ছে ঘুড়ি৷

ফিলিস্তিনিদের উড়িয়ে দেয়া জ্বলন্ত ঘুড়ি উড়ে চলেছে ইসরায়েলের দিকে৷ কিন্তু ইসরায়েলে ঢোকা কি এত সহজ? ঘুড়ি-প্রতিরোধী ড্রোন বানিয়ে ইসরায়েলও ইতিমধ্যে তৈরি৷ দূর থেকে ফিলিস্তিনিদের ঘুড়ি উড়তে দেখেই তাই ড্রোন পাঠিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী৷ উড়ে এসে ঘুড়ি প্রতিরোধে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ড্রোন৷

এই ঘুড়িটি গাজা থেকেই এসেছে৷ কিন্তু বড় কোনো ক্ষতি হওয়ার আগেই আগুন নেভাচ্ছেন এক ইসরায়েলি সৈন্য৷

ঘুড়ির আগুনে দাউ দাউ করে জ্বলছে মাঠ৷ মাঠটি ইসরায়েলে৷

রাতের আঁধারে ইসরায়েলের আকাশে ঢুকে পড়েছে আরেকটি ঘুড়ি৷

ফিলিস্তিনিদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসবাহী ড্রোন পাঠিয়েছে ইসরায়েল৷ সেই ড্রোন গাজার আকাশে এসেই ছাড়তে শুরু করেছে কাঁদানে গ্যাস৷

‘‘ক্ষোভ আর প্রতিশোধের আগুন নিয়ে উড়ে যা ঘুড়ি’’ – ঘুড়িতে আগুন লাগিয়ে যেন এ কথাই বলছেন ফিলিস্তিনিরা৷

ফিলিস্তিনি পতাকার পাশ দিয়েই উড়ে যাচ্ছে ঘুড়ি৷

গাজা সীমান্তে ঘুড়ি নিয়ে ফিলিস্তিনিরা তৈরি৷

গাজা থেকে উড়ে আসা ঘুড়ি ধরতে পেরে আনন্দিত ইসরায়েলি সেনা৷

ফিলিস্তিনিরা আগুন জ্বালিয়ে ঘুড়ি পাঠায় বলে পালটা ব্যবস্থা হিসেবে কখনো কখনো গাজায় আগুন লাগানোর জন্যও ড্রোন পাঠায় ইসরায়েল৷ এমনই এক ডোন থেকে ফেলা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন এক ফিলিস্তিনি৷

জানেন ইসরায়েলের রাষ্ট্রভাষা ক’টি? দু’টি৷ আধুনিক হিব্রু ভাষা এবং আরবি৷ হিব্রু ভাষার কথা তো সবাই শুনেছেন, কিন্তু ‘আধুনিক হিব্রু’ বলতে ঠিক কী বোঝানো হচ্ছে তা হয়ত অনেকেই বুঝতে পারবেন না৷ এই ভাষাটি গত ১৯ শতকের শেষভাগ পর্যন্তও বিকশিত হয়েছে৷ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আধুনিক হিব্রুর শেকড় প্রাচীন হিব্রু হলেও এখন এ ভাষায় ইংরেজি, স্লাভিচ, আরবি এবং জার্মানসহ অনেকগুলো বিদেশি ভাষার প্রভাব রয়েছে৷

ছোট্ট দেশ৷ কিন্তু কত ছোট? ইসরায়েলের আয়তনই বা কত? কাজির গরু নাকি গোয়ালে থাকে না, গাছে থাকে৷ ইসরায়েলের ক্ষেত্রে কথাটা একটু অন্যভাবে বলা যায়৷ ইসরায়েলের ভূমি চুক্তিতে থাকে না, বাস্তবে থাকে৷ ১৯৪৯ সালে ইসরায়েল, লেবানন, জর্ডান ও সিরিয়ার মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সেই চু্ক্তি অনুযায়ী দেশটির আয়তন হওয়ার কথা ২০ হাজার ৭৭০ বর্গ কিলোমিটার৷ কিন্তু ইসরায়েলের আয়তন এখন ২৭ হাজার ৭৯৯ বর্গ কিলোমিটার৷

ইসরায়েল একমাত্র দেশ যেখানে প্রাপ্ত বয়স্ক সব নাগরিকের জন্যই সেনা প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক৷ সুতরাং দেশটিতে যতজন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক সেনাসদস্যও এক অর্থে ততজন৷ সেনাপ্রশিক্ষণও স্বল্পমেয়াদি হয় না৷ সব প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেকে ৩ বছরের এবং মেয়েকে অন্তত ২ বছরের প্রশিক্ষণ নিতে হয়৷

ইহুদিদের একটি ধর্মীয় সংগঠন জিওনিজম মতবাদ এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে৷ সংগঠনটির নাম, ‘নেতুরেই কার্টা’ বা ‘নগর রক্ষক’৷ ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই সংগঠনটি ‘ফিলিস্তিনের সমর্থক’ হিসেবে পরিচিত৷

নোবেল বিজয়ী জার্মান পদার্থ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিনিধন বন্ধ করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন৷ ইসরায়েল তাঁর কথা শুধু কৃতজ্ঞচিত্তে মনেই রাখেনি, তাঁকে সম্মানও জানাতে চেয়েছিল প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে৷ ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন আইনস্টাইন৷

ইসরায়েলের মানুষ সত্যি সত্যিই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে প্রচুর চিঠি লিখে৷ প্রতি বছর জেরুসালেমের ডাক বিভাগ এমন অন্তত হাজার খানেক চিঠি পায় যেখানে প্রাপকের জায়গায় লেখা থাকে ‘ঈশ্বর’!

ইতিহাস বলছে, প্যালেস্টাইনের রাজধানী জেরুসালেমে এ পর্যন্ত ২৩ বার ভয়াবহ আগুন লেগেছে আর বহিঃশক্তির আক্রমণের শিকার হয়েছে ৫২ বার৷ জেরুসলেম দখল এবং পুনরুদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে ৪৪ বার৷

ইসরায়েলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে বিশেষ মুদ্রা৷ ‘ব্রেইল’-এর মতো বর্ণের সহায়তায় কাগুজে নোটগুলোতে লেখা থাকে বলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের কেনাকাটা বা মুদ্রা বিনিময়ে কোনো অসুবিধা হয় না৷ সারা বিশ্বে ইসরায়েল ছাড়া ক্যানাডা, মেক্সিকো, ভারত আর রাশিয়াতেও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য এই বিষেষ ব্যবস্থা রয়েছে৷