ইসলামিক সমাজ এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন অধ্যাপক ইয়ান ইলহান কিজিলহান৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইসলামের ব্যাখ্যা, অপব্যাখ্যা ও বাস্তবতা নিয়ে এক রকমের দ্বন্দ্ব কাজ করছে৷
বিজ্ঞাপন
অধ্যাপক কিজিলহান আন্তঃসাংস্কৃতিক মনোবিদ্যা, অভিবাসন ও ইসলাম নিয়ে গবেষণা করছেন দীর্ঘদিন ধরে৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদ, তরুণ প্রজন্ম, নারী-পুরুষের সমতা ও সামাজিক দ্বন্দ্ব নিয়ে কথা বলেছেন৷
তরুণ সমাজ সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে কিজিলহান বলেন যে, আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণে তাদের হতাশাকে অপব্যবহার করছেন উগ্রবাদীরা৷
‘‘তরুণরা আত্মপরিচয় সংকটে ভোগেন৷ তারা প্রশ্ন করেন, ‘আমার পরিচয় কী?' ‘আমি কে?' ‘আমার ধর্ম কী বলে?'', বলেন অধ্যাপক কিজিলহান৷
তিনি বলেন যে, এর সঙ্গে যখন তাদের সামাজিক রাজনৈতিক সংকটগুলো যুক্ত হয়, তখন তারা নিজেদের দুর্বল ভাবেন৷ যেসব দেশে অর্থনৈতিক সংকট প্রকট, শিক্ষার হার কম, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দুর্বল, সংঘাত চলছে, প্রচুর দুর্নীতি, তখন সেখানকার তরুণ সমাজ এর সমাধান খোঁজার চেষ্টা করেন৷ তারা নিজেদের ও তাদের চারপাশের সমাজকে দুর্বল মনে করেন৷
‘‘তখনই প্রতিক্রিয়াশীল সংগঠনগুলো তাদের শক্তি দেবার প্রতিশ্রুতি দেয়, তাদের পরিচয় দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়, সাম্রাজ্যবাদী দের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দেয়,'' কিজিলহান ব্যাখ্যা করেন৷ তিনি বলেন যে, বহু আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক পরিভাষা ব্যবহার করে এবং কোরআনের উক্তি তুলে ধরে৷
‘‘এতে করে তারা এমন একটি আবহ তৈরি করে যেন ইসলামের নামে এসব সন্ত্রাস করা হচ্ছে, যা একদম সঠিক নয়৷ শুধু তাই নয়, এতে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে ইসলামের প্রতি একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়,'' বলেন এই বিশ্লেষক৷
কাশ্মীরে বহুদিনের সংঘাত, বহুদিনের ক্ষত
স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কে যেন গলার ফাঁস হয়ে রয়েছে কাশ্মীর৷ তাই কাশ্মীর সংক্রান্ত ঘটনাবলী আজ নিজেরাই ইতিহাস৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Bhat
১৯৪৭
বলা হয় দেশবিভাগের পর পাকিস্তান থেকে আগত উপজাতিক যোদ্ধারা কাশ্মীর আক্রমণ করে৷ তখন কাশ্মীরের মহারাজা ভারতের সাথে সংযোজনের চুক্তি করেন, যা থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়৷
ছবি: dapd
১৯৪৮
ভারত জাতিসংঘে কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে পর, ৪৭ ক্রমিক সংখ্যক প্রস্তাবটি গৃহীত হয়৷ ঐ প্রস্তাব অনুযায়ী গোটা কাশ্মীরে গণভোট অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে৷
ছবি: Keystone/Getty Images
১৯৪৮
কিন্তু পাকিস্তান প্রস্তাব অনুযায়ী, কাশ্মীর থেকে সৈন্যাপসারণ করতে অস্বীকার করে৷ অতঃপর কাশ্মীরকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়৷
ছবি: Getty Images
১৯৫১
ভারতীয় কাশ্মীরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে সমর্থন করা হয়৷ অতঃপর ভারত বলে, আর গণভোট অনুষ্ঠানের কোনো প্রয়োজন নেই৷ জাতিসংঘ ও পাকিস্তানের মতে, গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৫৩
কাশ্মীরের ‘প্রধানমন্ত্রী’ শেখ আব্দুল্লাহ গণভোটের সমর্থক ছিলেন ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করেন৷ ফলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ জম্মু-কাশ্মীরের নতুন সরকার ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের সংযোজনকে পাকা করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৬২-৬৩
১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীন আকসাই দখল করে৷ তার আগের বছর পাকিস্তান কাশ্মীরের ট্রান্স কারাকোরাম ট্র্যাক্ট এলাকাটি চীনকে প্রদান করে৷
ছবি: Getty Images
১৯৬৫
কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়৷ কিন্তু যুদ্ধশেষে উভয় দেশের সেনা তাদের পুরোনো অবস্থানে ফিরে যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Singh
১৯৭১-৭২
আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ৷ যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর সিমলা চুক্তি সম্পাদিত হয় ১৯৭২ সালে৷ যুদ্ধবিরতি রেখাকে লাইন অফ কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণ রেখায় পরিণত করা হয় ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ সমাধান সম্পর্কে ঐকমত্য অর্জিত হয়৷
ছবি: AP
১৯৮৪
ভারত সিয়াচেন হিমবাহ নিজ নিয়ন্ত্রণে আনার পর পাকিস্তান তা একাধিকবার দখল করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হতে পারেনি৷
ছবি: AP
১৯৮৭
জম্মু-কাশ্মীরে বিতর্কিত নির্বাচনের পর রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়৷ ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উগ্রপন্থাকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করে, কিন্তু পাকিস্তান সে দোষারোপ চিরকাল অস্বীকার করে এসেছে৷
ছবি: AP
১৯৯০
গওকাদল সেতুর কাছে ভারতীয় সিআরপি রক্ষীবাহিনী কাশ্মীরি বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালালে পর শতাধিক আন্দোলনকারী নিহত হন৷ প্রায় সমস্ত হিন্দু কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে চলে যান৷ জম্মু-কাশ্মীরে সেনাবাহিনীকে আফসা বা আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images/Tauseef Mustafa
১৯৯৯
কাশ্মীর ভ্যালিতে গোটা নব্বই-এর দশক ধরে অশান্তি চলে৷ ১৯৯৯ সালে আবার ভারত-পাকিস্তানের লড়াই হয়, এবার কারগিলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
২০০১-২০০৮
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলাপ-আলোচনার যাবতীয় প্রচেষ্টা প্রথমে নতুন দিল্লির সংসদ ভবন ও পরে মুম্বই হামলার ফলে ব্যর্থ হয়৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/F. Khan
২০১০
ভারতীয় সেনার গুলি লেগে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর পর কাশ্মীর ভ্যালি উত্তেজনায় ফেটে পড়ে৷ বিক্ষোভ চলে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে, প্রাণ হারান অন্তত ১০০ জন৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/U. Asif
২০১৩
সংসদ ভবনের উপর হামলার মুখ্য অপরাধী আফজল গুরুকে ফাঁসি দেওয়া হয়৷ এর পর যে বিক্ষোভ চলে, তা-তে দু’জন প্রাণ হারায়৷ এই বছরই ভারত আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় মিলিত হয়ে উত্তেজনা উপশমের কথা বলেন৷
ছবি: Reuters
২০১৪
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ উপস্থিত থাকেন৷ কিন্তু এর পর নতুন দিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশনার কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে মিলিত হওয়ায় ভারত আলাপ-আলোচনা স্থগিত রাখে৷
ছবি: Reuters
২০১৬
আজাদ কাশ্মীর ভিত্তিক হিজবুল মুজাহিদীন-এর অধিনায়ক বুরহান ওয়ানি-র মৃত্যুর পর কাশ্মীরে স্বাধীনতা সমর্থকরা আবার পথে নেমেছেন৷ এই আন্দোলনে এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে ও বিক্ষোভ অব্যাহত আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R.S.Hussain
২০১৯
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)-এর গাড়িবহরে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে৷ এতে ৪২ জওয়ান নিহত হন৷ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন জৈশ-ই-মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করেছে৷ এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সীমান্তের ভেতরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Wire/P. Kumar Verma
২০১৯
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নং ধারা অনুযায়ী, জম্মু ও কাশ্মীরের কাছে কিছু বিশেষ অধিকার ছিল। ৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৩৭০ ধারাটি অবসানের দাবি তোলেন৷ বিল পাস হয়। একই দিনে তাতে সই করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷ ফলে, কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা' বাতিল হয়। তাছাড়া মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা হারায়। জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ নামে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।
ছবি: Reuters
19 ছবি1 | 19
তবে এই তরুণ প্রজন্ম যেন আশাহত না হন, সেক্ষেত্রে তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে মনে করেন তিনি৷ বলেন, তাদের কারিগরি শিক্ষা ও খেলাধুলা এসবে উৎসাহী করতে হবে এবং ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে তাদের হতাশা নিয়ে গভীর আলোচনা করতে হবে৷ বলতে হবে যে, সহিংসতা কোনো সমাধান নয়৷
‘‘দুঃখজনকভাবে, বিশ্বে ইসলামকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানো হচ্ছে৷ মানুষকে ভুল তথ্য দেয়া হচ্ছে,'' বলেন কিজিলহান৷
ইটালির দক্ষিণাঞ্চল, গ্রিস ও ব্রাজিলের মতো পৃথিবীর অনেক দেশেই পুরুষতন্ত্র একটি সমস্যা বলে মনে করেন কিজিলহান৷ সেসব দেশের মধ্যে অনেক ইসলামি সমাজও রয়েছে৷ সেসব দেশে পুরুষতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে ইসলামকে ব্যবহার করা হয় বলে মনে করেন তিনি৷
‘‘অনেক ইসলামিক সমাজে পুরুষতন্ত্র এতটাই শক্তিশালী যে সেখানে নারীকে সম্পত্তি হিসেবে দেখা হয়, মানুষ হিসেবে নয়৷....এ সব অনেক দেশে অনেক নারীরা শিক্ষা পর্যন্ত পান না এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা বলতে কিছু নেই৷''
তিনি মনে করেন, নারীকে স্বাধীনতা দেয়া হলে ইসলামের অবমাননা হবে বলে মনে করেন অনেকে৷ ‘অনার কিলিং' বা সম্মান রক্ষার্থে হত্যা অনেক সমাজে সমস্যা বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘এ সব পুরুষতান্ত্রিক ধারণা সম্পর্কে মানুষকে আলোকিত করতে হবে,'' বলেনতিনি৷ ‘‘আমি বিশ্বাস করি যে, ইসলামের দোহাই দিয়ে ‘সম্মান', ‘ধর্ম' ও ‘সংস্কৃতি' রক্ষার নামে হত্যা করা ঠিক নয়৷''
কিজিলহান বলেন যে, ইসলাম একটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে৷ এই সংকট মোকাবেলায় যুগ যুগ ধরে চলে আসা ইসলামের কিছু ব্যাখ্যায় পরিবর্তন আনতে হবে৷ তবে এই পরিবর্তন যখনই আসার উপক্রম হয়েছে, তখনই প্রতিক্রিয়াশীলদের উদ্ভব হয়েছে বলে মনে করেন তিনি৷
‘‘যখন আরব জাতীয়তাবাদের উন্মেষ হয়, তখন সৌদি আরবে ‘ওয়াহাবি'-দের কিংবা মধ্যপ্রাচ্যে ‘মুসলিম ব্রাদারহুডের' উদ্ভব ঘটে৷'' এই অধ্যাপক যোগ করেন, ‘‘আজকে অনেক পরিবর্তন এসেছে মুসলিম সমাজে৷ মুসলিম সমাজে ২০, ২৫ বা ৩০ বছর বয়সীদের সংখ্যা পশ্চিমাদের চেয়ে বেড়েছে৷ তারা ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের প্রসারের কারণে এবং তাদের শিক্ষার কারণে যেমন নারী পুরুষের সমতা বা ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়ে সোচ্চার হয়েছে৷''
তিন মনে করেন, তাদের এই চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন কট্টরবাদী চিন্তাভাবনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থান তৈরি করেছে৷ ‘‘এর ফলে সমাজে সংকট তৈরি করেছে৷ ফলে প্রতিক্রিয়াশীল আল-নুসরা, আল-কায়েদা বা ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর জন্ম হয়েছে৷ তারা এ সব পরিবর্তন বিরোধী,'' যুক্তি দেন কিজিলহান৷
তিনি বলেন যে, পৃথিবীর শত কোটি মুসলিম ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি থেকে এসেছেন৷ তাই সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের কারণে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন জীবন পদ্ধতি প্রত্যাশা করেন৷ তাই মুসলিমদের ভেতরেই একটা পরিবর্তনশীল স্রোত দেখতে পাচ্ছেন কিজিলহান৷
তিনি বলেন, ‘‘ইরানে দেখুন মেয়েরা পড়াশুনা করছে, গ্রাজুয়েট হচ্ছে এবং ছেলেদের চেয়েও ভালো করছে৷ তারা ডাক্তার, আইনজীবী হতে চান, কিন্তু একইসঙ্গে নিজেদের ব্যক্তি স্বাধীনতা চান এবং পুরুষদের দ্বারা নিগৃহীত হতে চান না৷''
কিজিলহান যোগ করেন, ‘‘এই নারীরা বিভিন্ন দেশে যান এবং দেখেন সেখানকার অবস্থা৷ তারা চার থেকে পাঁচ শতক আগে যেসব নিয়ম তৈরি করা হয়েছিল, সেসব মানতে চান না৷''
তিনি ইসলামিক চিন্তাবিদ ও স্কলারদের একসঙ্গে বসে এসব নিয়ে আলোচনা করার তাগিদ দেন৷ বলেন যে, ইসলামের অপব্যাখ্যা রুখতে এবং মুসলিমদের মধ্যেই দ্বন্দ্ব যেন না হয়, সে কারণে যুগ যুগ ধরে কিছু কিছু সমাজে ইসলামের যে ব্যাখ্যা চলে আসছে, তার কোনো কোনোটিতে পরিবর্তন আনতে হবে৷
‘‘তা না হলে আমরা মুসলিম সমাজে এমন একটা বিশাল জনগোষ্ঠী দেখতে পাব, যারা নিজেদের সাংস্কৃতিকভাবে মুসলিম তো মনে করেন, কিন্তু ইসলামের পথ অনুসরণ করেন না,'' বলেন ড. কিজিলহান৷
ইউরোপে কোন দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বাস
অ্যামেরিকান থিংক ট্যাংক পিউ রিসার্চ সেন্টার বলছে, ২০১৬ সালে ইউরোপের মোট জনসংখ্যার ৪ দশমিক ৯ ভাগ ছিল মুসলমান৷ ২০৫০ সালের মধ্যে ইউরোপের মোট জনসংখ্যার ৭.৫ ভাগ হবে মুসলমান৷
ছবি: Nikolay Doychinov/AFP/Getty Images
ফ্রান্স
২০১৬ সালের ঐ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে ফ্রান্সে সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বাস৷ দেশটির মোট জনসংখ্যার ৮ দশমিক ৮ ভাগ অধিবাসী মুসলমান৷ বর্তমানে সেখানে ৫৭ লাখ ২০ হাজার মুসলমান বাস করছেন৷
ছবি: AP
জার্মানি
জার্মানিতে ২০১৬ সালে মুসলমানদের মোট সংখ্যা ছিল ৪৯ লাখ ৫০ হাজার, যা মোট জনসংখ্যার ৬ দশমিক ১ ভাগ৷
ছবি: Getty Images/S. Gallup
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে ৪১ লাখ ৩০ হাজার মুসলমানের বাস, যা মোট জনসংখ্যার ৬ দশমিক ৩ ভাগ৷
ছবি: picture-alliance/empics/D. Dawson
ইটালি
এই দেশটিতে ২৮ লাখ ৭০ হাজার মুসলমানের বাস, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৪ দশমিক ৮ ভাগ৷
ছবি: Getty Images for Les Benjamins/S. Alemdar
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের সংখ্যা ১২ লাখ ১০ হাজার, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার শূন্য দশমিক এক ভাগ৷
ছবি: AP
স্পেন
স্পেনে বর্তমানে ১১ লাখ ৮০ হাজার মুসলমানের বাস, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ২ দশমিক ৬ ভাগ৷
ছবি: picture-alliance/AA/E. Aydin
6 ছবি1 | 6
অধ্যাপক ড. ইয়ান ইলহান কিজিলহান একজন মনোবিদ ও প্রাচ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যর্গের মেডিক্লিন ক্লিনিকে ট্রান্সকালচারাল সাইকোসোমাটিক্সের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন৷ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাফিউল্লাহ ইব্রাহিমখাইল৷