‘ইসলামিক স্টেটের' দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শীর্ষ নেতা নিহত
১৭ অক্টোবর ২০১৭
আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট' বা আইএস-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধানের নিহত হওয়ার ঘটনা জঙ্গি গোষ্ঠীটির উপর এক বড় আঘাত৷ তবে প্রধান নিহত হলেও জঙ্গি গোষ্ঠীটি এক বড় হুমকি হিসেবেই রয়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
বিজ্ঞাপন
আইএস-এর আঞ্চলিক প্রধান ইসনিলন হ্যাপিলন সোমবার ভোরে ফিলিপাইন্সের দক্ষিণাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর এক অভিযানে নিহত হয় বলে জানা গেছে৷ মারাউয়ি শহরে গত কয়েকমাস ধরে অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী৷ ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিরা শহরটি দখল করে নিয়েছিল৷ উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ইতোমধ্যে কয়েক শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷
হ্যাপিলন ছিল ফিলিপাইন্সের মুক্তিপণ আদায়ের জন্য মানুষকে অপহরণকারী গোষ্ঠী আবু সায়েফের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য৷ গতবছর আইএস-এর প্রধান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি৷ এরপর মে মাসে তার বাহিনী মারাউয়ির দখল নিয়ে নেয়৷
হ্যাপিলনের মৃত্যু ফিলিপাইন্সে আইএস-এর উপর বড় আঘাত হিসেবে বিবেচিত হলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, জঙ্গিগোষ্ঠীটি এখনো এক বড় হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে৷ সিঙ্গাপুরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ কুমার রামকৃষ্ণ এই বিষয়ে বলেন, ‘‘শুধুমাত্র মারাউয়ি আইএস জঙ্গিদের দখল থেকে মুক্ত করার অর্থ এই নয় যে হুমকি শেষ হয়ে গেছে৷আইএস সম্পৃক্ত জঙ্গিরাআবারো ঐক্যবদ্ধ হবে৷ শুরুতে হয়ত তারা নিজেদের অবস্থান জানান দেবে না, কেননা সেসময় নিজেদের পুর্নগঠন করবে৷''
ইসলামিক স্টেটের ভয়ংকর আত্মঘাতী গাড়িবোমা
মোসুল শহর নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর বিপুল পরিমাণ গাড়িবোমা উদ্ধার করেছে ইরাকি বাহিনী৷ কোনটা ছিল বিস্ফোরকভর্তি, আবার কোনটা প্রস্তুতির প্রাথমিক পর্যায়ে৷ সেগুলো এখন সাজিয়ে রাখা হয়েছে শহরটির ফেডারেল পুলিশ দপ্তরের সামনে৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
গাড়ি বনাম গাড়িবোমা
সাধারণ মালবাহী ট্রাক, কোনো কোনো ক্ষেত্রে যাত্রিবাহী গাড়িও ব্যবহার করা হতো গাড়িবোমা তৈরির জন্য৷ ভেতরের যন্ত্রপাতি ঠিক থেকে বাইরেটাকে মুড়ে দেয়া হতো পুরু ইস্পাতে৷ উদ্দেশ্য ছিল বন্দুকের গুলি থেকে ভেতরের আত্মঘাতী চালককে রক্ষা করা৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
এড়াতে হবে ড্রোন
জঙ্গিদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে প্রায়ই চালকবিহীন বিমান বা ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালাতো মার্কিন সেনারা৷ গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই যাতে ধরা না পড়তে হয়, সেজন্য গাড়িগুলোকে রং করা হতো সাধারণ গাড়ির মতো৷ কখনও লাল রং, কখনও সাদা দিয়ে ঢেকে দেয়া হতো ইস্পাতের আবরণ৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
অস্বাভাবিক গতি
গাড়ির যন্ত্রপাতিতে কিছুটা পরিবর্তন এনে সেগুলোকে দেয়া হতো অস্বাভাবিক গতির সুবিধা৷ পাশাপাশি, বেশিরভাগ গাড়িরই সামনের অংশ এমনভাবে তৈরি করা হতো, যাতে যে কোনো বাধা ভেঙে গাড়িগুলো এগোতে পারে সামনে৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
কী ধরনের বিস্ফোরক?
বোমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয় নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থ৷ সবচেয়ে বেশি গাড়িতে পাওয়া গেছে ক্লোরিন গ্যাসের উপস্থিতি৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
প্রচণ্ড ধ্বংস ক্ষমতা
ব্যাপক আকারে বিস্ফোরণ ঘটানোর ক্ষমতা আছে এই গাড়ি বোমার৷ এক একটি গাড়িতে যে পরিমাণ বিস্ফোরক মজুদ করা যায়, তাতে দুই তিনটে বাড়ি উড়িয়ে দেয়া সম্ভব বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
আরো গাড়িবোমার মজুদ
মোসুল শহরে ইরাকি সেনা যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে স্নাইপার আর গাড়িবোমা হামলাই ছিল আইএস জঙ্গিদের মূল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা৷ ইরাকি বাহিনী আশংকা করছে এখন শহরের বিভিন্ন ভবনের গ্যারেজে বিপুল পরিমাণ গাড়িবোমা থাকতে পারে৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
গাড়িবোমার প্রদর্শনী!
উদ্ধার করা গাড়িবোমাগুলো রাখা হয়েছে মোসুলে ইরাকি পুলিশের সদরদপ্তরের সামনে৷ যে কেউ চাইলেই দেখে আসতে পারেন ভয়ংকর সেই গাড়িগুলো৷ তবে পুলিশের নিয়মিত পাহারা অবশ্য থাকছেই৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
7 ছবি1 | 7
উল্লেখ্য, সিরিয়া এবংইরাকে ইসলামিক স্টেটের দখলকৃত এলাকাগুলো একের পর এক মুক্ত করছে পশ্চিমা সমর্থিত বিভিন্ন বাহিনী৷ ফলে সেসব অঞ্চল থেকে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার জঙ্গিরা নিজেদের দেশে ফিরে গিয়ে জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত হতে পার বলে ধারণা করা হচ্ছে৷