জঙ্গি গোষ্টি ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ডাকে সাড়া দিয়ে সিরিয়া বা ইরাকে গেছেন, এমন বাংলাদেশিদের সংখ্যা কত? সিরিয়া-ইরাকের যুদ্ধে মারা গেছেন যে বাংলাদেশিরা, তাদের আসল পরিচয় কী? আইএস-এর ‘বাংলাদেশ ক্লাস্টারের’ সদস্যই বা কারা?
বিজ্ঞাপন
জনমনে অনেক আগ্রহ থাকলেও, এই প্রশ্নগুলি নিয়ে বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায় আলাপ-আলোচনা সচরাচর চোখেই পড়ে না৷ এখানে সঠিক তথ্যের অভাব যেমন আছে, তেমনি আছে জিহাদি সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে ভালো গবেষণার অভাব৷ আরও আছে সরকারি চোখ রাঙানি আর গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট৷ এর মাঝেই আমাদের উত্তরগুলি খুঁজে নিতে হবে৷
আইএস-এর তথাকথিত খিলাফত প্রতিষ্ঠার জিহাদে যোগ দিতে সিরিয়া বা ইরাকে গেছেন এমন ‘হিজরতকারীর' সংখ্যা — বাংলাদেশি, দ্বৈত নাগরিক ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সব মিলিয়ে — ৫০-এর কম হবে না৷ আইএস-এর বাইরে আল-কায়েদা সমর্থক গ্রুপগুলির জন্য লড়াই করতে গেছেন যারা, তাদের হিসেবে ধরলে এই সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যাবে৷
আলোচিত কয়েকটি আত্মঘাতী হামলা
ব্রিটিশ সংস্থা ‘অ্যাকশন অন আর্মড ভায়োলেন্স’ গত নভেম্বরে জানায়, গত ৩০ বছরে বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ৫০ হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছেন৷
ছবি: DW/ISPR
প্রথম আত্মঘাতী হামলা
১৮৮১ সালের ১৩ মার্চ এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন রুশ সম্রাট দ্বিতীয় আলেকজান্ডার৷ তাঁকে বহনকারী ঘোড়ার গাড়ির সামনে বোমা হামলা চালিয়েছিল ২৫ বছরের তরুণ ইগনাটি গ্রিনেভিৎস্কি৷ তিনি ‘দ্য পিপলস উইল’ নামে বামপন্থি একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/Fine Art Images/Heritage Images
ফিলিস্তিনের প্রথম নারী আত্মঘাতী হামলাকারী
ওয়াফা ইদ্রিস নামে ২৮ বছরের এক নারী ২০০২ সালের ২৭ জানুয়ারি জেরুসালেমে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে এক বয়স্ক ইসরায়েলিকে হত্যা করেন৷ আহত হয়েছিলেন প্রায় ১০০ জন৷ ইদ্রিসের পিঠে ঝোলানো ব্যাগে ১০ কেজি ওজনের বোমা ছিল৷ ছবিতে তাঁকে গ্রাজুয়েশন পোশাক পরা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে৷ ‘আল-আকসা মার্টায়ার্স ব্রিগ্রেড’ হামলার দায় স্বীকার করেছিল৷ পরবর্তীতে নারী আত্মঘাতী হামলাকারীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল তারা৷
ছবি: Getty Images
সবচেয়ে প্রাণঘাতী আত্মঘাতী হামলা
২০০১ সালে আল-কায়েদার আত্মঘাতী হামলাকারীরা বিমান ছিনতাই করে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগনে হামলা চালিয়েছিল৷ এতে প্রায় তিন হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছিলেন৷
ছবি: AP
বিদেশি বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা
১৯৮৩ সালের অক্টোবরে লেবাননে গৃহযুদ্ধ চলার সময় শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত ৩০০-র বেশি মার্কিন ও ফরাসি সামরিক বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল৷ দু’টি ট্রাক নিয়ে হামলাকারীরা ব্যারাকে ঢুকে পড়েছিল৷ প্রতিটি ট্রাকে প্রায় ১ দশমিক ৪ টন বিস্ফোরক ছিল৷ ৯/১১ হামলার আগে ওটিই ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Bouchon
শরীরের ভেতর বোমা স্থাপন
২০০৯ সালে সৌদি আরবের তৎকালীন উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নাইফকে (ছবি) হত্যার উদ্দেশ্যে নিজের শরীরের ভেতর বোমা স্থাপন করিয়েছিলেন ২৩ বছরের সৌদি তরুণ আল-আসিরি৷ পরে মোবাইল ফোনের সাহায্যে বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটনা হলেও তাতে শুধু আসিরিই মারা যান৷ প্রিন্স নাইফ সামান্য আহত হয়েছিলেন৷ উল্লেখ্য, শরীরের ভেতরে বোমা স্থাপন করলে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সেটি সহজে ধরা পড়ে না৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/H. Ammar
রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ড
১৯৯১ সালের ২১ মে ভারতের তামিলনাড়ুতে আত্মঘাতী এক বোমা হামলায় নিহত হন দেশটির সেই সময়কার প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী৷ তাঁকে হত্যা করেন শ্রীলঙ্কার তৎকালীন জঙ্গি সংগঠন ‘লিবারেশন টাইগার্স অফ তামিল ইলম’ বা এলটিটিই-র এক নারী সদস্য৷ ছবিটি হামলার কয়েক সেকেন্ড আগের মুহূর্তে তোলা৷ শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ বন্ধ করতে সে দেশে শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠিয়েছিল ভারত৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বাংলাদেশে প্রথম আত্মঘাতী হামলা
বাংলাদেশে নব্য জেএমবি-র সদস্যদের মধ্যে সম্প্রতি আত্মঘাতী প্রবণতা বেশি দেখা গেলেও, আগেও এর নজির ছিল৷ ২০০৫ সালের ২৯শে নভেম্বর গাজীপুরে বাংলাদেশের প্রথম আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে৷ ঐ হামলায় আত্মঘাতী হামলাকারী জেএমবি-র সদস্য আসাদসহ আটজন নিহত হয়েছিলেন৷ উপরের ছবিটি সম্প্রতি সিলেটে এক অভিযানের সময় তোলা৷
ছবি: DW/ISPR
7 ছবি1 | 7
তথাকথিত খুরাসানের জিহাদে যোগ দিতে যারা আফগানিস্তানে গেছেন, তারা এই হিসেবের বাইরে৷ জিহাদি সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাবলিক ডোমেইনে যে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়, তা যাচাই-বাছাই করেই আমি এই সংখ্যাগুলি অনুমান করছি৷
এখানে মনে রাখা দরকার যে, টাকা-পয়সা খরচ করে তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় যাওয়ার সুযোগ বা সামর্থ্য আছে, এমন লোকজনই কিন্তু দেশের বাইরে হিজরতকারী হয়েছেন৷ খিলাফতে বিশ্বাস করেন, জিহাদ করতে চান কিন্তু বিদেশে হিজরত করতে পারেননি, এমন কয়েক হাজার আইএস-সমর্থক কিন্তু বাংলাদেশেই থেকে গেছেন৷ এদের অনেকেই দেশের ভিতরেই হিজরতকারী হয়েছেন — বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে গিয়ে আস্তানা পেতেছেন৷ এরাই যখন ব়্যাব-পুলিশের হাতে ধরা পড়েন, তখন তাদের ‘নব্য জেএমবি' বা ‘তামিম-সারওয়ার গ্রুপ' নাম দিয়ে মিডিয়ার সামনে হাজির করা হয়৷
সিরিয়া-ইরাকের যুদ্ধক্ষেত্রে মারা গেছেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি৷ এদের মধ্যে তিনজনকে ‘শহিদ,' ‘বীর' ইত্যাদি বিশেষণ লাগিয়ে আইএস-এর বিভিন্ন প্রোপাগান্ডায় উপস্থাপন করা হয়েছে৷
‘ইসলামিক স্টেট’ আসলে কী?
আল-কায়েদার অখ্যাত এক উপদল থেকে প্রভাবশালী ‘মিলিট্যান্ট মুভমেন্টে’ পরিণত হয়েছে তথাকথিত ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএস৷ জিহাদি এই গোষ্ঠীটির দখলে থাকা অঞ্চল থেকে আক্রমণের কৌশল – আইএস-এর এমন নানা দিক তুলে দেয়া হলো এই ছবিঘরে৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Souleiman
আইএস কোথা থেকে এসেছে?
ইসলামিক স্টেট (আইএস) সুন্নী ইসলামিস্ট আদর্শে বিশ্বাসী আল-কায়েদার একটি উপদল, যেটি আইএসআইএল, আইসিস এবং দায়েশ নামেও পরিচিত৷ ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আক্রমণের পর এটির বহিঃপ্রকাশ ঘটে৷ এই গোষ্ঠীর নেতৃত্বে রয়েছেন আবু বকর আল-বাগদাদি৷ জঙ্গি গোষ্ঠীটির লক্ষ্য হচ্ছে ইরাক, সিরিয়া এবং অন্যান্যা অঞ্চল নিয়ে একটি ইসলামিক স্টেট বা খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
আইএস কোথায় কাজ করে?
বিশ্বের ১৮টি দেশে আইএস সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা করা হয়৷ ইরাক এবং সিরিয়ার কিছু অংশ এই গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং এটি সিরিয়ার রাকা শহরকে রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করে৷ তবে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে এখন অবধি নিজেদের দখলে থেকে এক চতুর্থাংশ এলাকা তাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে৷
কারা তাদের বিরুদ্ধে লড়ছে?
আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বেশ কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে৷ বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশের সমন্বয়ে তৈরি মার্কিন নেতৃত্বাধীন একটি ‘কোয়ালিশন’ আইএস অধ্যুষিত এলাকায় বিমান হামলা চালাচ্ছে৷ এই কোয়ালিশনে কয়েকটি আরব দেশও রয়েছে৷ অন্যদিকে সিরিয়া সরকারের পক্ষে সেদেশে বিমান হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া৷ তবে ভূমিতে তাদের বিরুদ্ধে লড়ছে কুর্দিশ পেশমার্গার মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলো৷
ছবি: picture-alliance/abaca/H. Huseyin
আইএস-এর অর্থের উৎস কী?
জঙ্গি গোষ্ঠীটির অর্থ আয়ের অন্যতম উৎস হচ্ছে তেল এবং গ্যাস৷ এটি এখনো সিরিয়ার তেল উৎপাদনের এক তৃতীয়াংশ দখলে রেখেছে৷ আর মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিমান হামলার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে জঙ্গি গোষ্ঠীর এই মূল্যবান সম্পদ৷ এছাড়া কর, মুক্তিপন এবং লুট করা পুরাকীর্তি বিক্রি করেও অর্থ আয় করে এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি৷
ছবি: Getty Images/J. Moore
আইএস কোথায় কোথায় জঙ্গি হামলা চালিয়েছে?
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসংখ্য জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস৷ চলত বছর সবচেয়ে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলাটি চালানো হয়েছে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে, যেখানে দু’শোর বেশি মানুষ নিহত ও অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছে৷ আইএস-এর নেতারা জঙ্গি গোষ্ঠীটির আদর্শে বিশ্বাসীদের এককভাবে বিভিন্নস্থানে আঘাত হানতে উৎসাহ প্রদান করে৷
অন্যান্য আর কী কৌশল ব্যবহার করে আইএস?
নিজেদের ক্ষমতার পরিধি বাড়াতে অনেক কৌশল ব্যবহার করে আইএস৷ জঙ্গি গোষ্ঠীটি ‘কালচারাল ক্লিনজিংয়ের’ নামে সিরিয়া এবং ইরাকের অনেক ঐতিহাসিক শিল্পকর্ম লুট ও ধ্বংস করেছে৷ এছাড়া সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর কয়েকহাজার মেয়েকে ক্রীতদাসী বানিয়েছে৷ গোষ্ঠীটি নিজেদের ‘প্রোপোগান্ডা’ এবং নিয়োগের কাজে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Eid
শরণার্থী হয়েছেন কতজন?
সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে সেদেশের প্রায় ৬০ লাখ মানুষ প্রতিবেশী লেবানন, জর্ডান এবং তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছেন৷ অনেক সিরীয় ইউরোপেও পাড়ি জমিয়েছেন৷ এছাড়া প্রায় ৩০ লাখ ইরাকে ইরাকের মধ্যেই অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন বলে খবর৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Souleiman
7 ছবি1 | 7
মার্চ মাসের মাঝামাঝি আইএস-এর ফুরাত মিডিয়া একটি ভিডিওটি প্রকাশ করে আবু মরিয়ম আল-বাঙ্গালী নামক এক জিহাদির বক্তব্যসহ৷ এই আবু মরিয়ম ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ইরাকের টিকরিট শহরের পাশে একটি আত্মঘাতী হামলায় জীবন বিসর্জন দেন৷ তার আসল নাম নিয়াজ মোর্শেদ রাজা৷ চট্টগ্রামের এক বিত্তশালী পরিবারের সন্তান, পড়ালেখা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে৷
নিয়াজ মোর্শেদের আগে আরেক জিহাদির নাম পাওয়া যায় আইএস-এর দাবিক ম্যাগাজিনে৷ আবু জান্দাল আল-বাঙ্গালী নামক এই জিহাদি সিরিয়ার আইন ঈসা শহরের পাশে এক যুদ্ধে মারা যান৷ তার মৃত্যুর কোনো তারিখ জানা যায়নি৷ আবু জান্দালের আসল নাম আশিকুর রহমান জিলানী৷ ঢাকার মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ছাত্র এই জিলানী, পিলখানা বিদ্রোহের সময় নিহত কর্নেল মশিউর রহমানের ছেলে৷
মোর্শেদ আর জিলানীরও আগে আইএস-এর হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা যান আবু দুজানা আল-বাঙ্গালী (অন্য অনেকেই এই কুনিয়া বা ছদ্মনামটি ব্যবহার করেন)৷ এই আবু দুজানাই সম্ভবত আইএস-এর প্রথম বাংলাদেশি সদস্য৷ শ্রমিক হিসেবে বাংলাদেশ থেকে লেবানন যাওয়ার পথে সন্দেহভাজন জিহাদি হিসেবে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছিলেন তিনি৷ এরপর মসুল শহরের পাশে বাদোশ কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় সহবন্দীদের কাছ থেকে আইএস-এর আদর্শের দীক্ষা নেন৷ এই আবু দুজানার কথা ফুরাত মিডিয়ার একটি বাংলা ভিডিওতে বলা হলেও তার আসল নাম, পরিচয় ইত্যাদি এখনও জানা যায়নি৷
‘শহীদ' বা ‘বীর' তকমা পাননি, কিন্তু আইএস-এর শীর্ষ নেতৃত্বে ছিলেন আবু খালেদ আল-বাঙ্গালী৷ তার আসল নাম সাইফুল হক সুজন৷ আইএস-এর ‘বাংলাদেশ ক্লাস্টারের' মূল নেতা এই আবু খালেদ আইএস-এর ‘টপ হ্যাকার' হিসেবেই কুখ্যাত ছিলেন৷ ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে সিরিয়ার রাক্কা শহরে আইএস-এর সদরদপ্তরের পাশেই এক মার্কিন ড্রোন হামলায় মারা যান তিনি৷
তবে ‘বাংলাদেশ ক্লাস্টারের' অন্য গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা কিন্তু বেঁচেই আছেন৷ এই ক্লাস্টারে আছেন সাজিত দেবনাথ ওরফে মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, এটিএম তাজউদ্দীন কাওসার, তাহমিদ রহমান শফিসহ অন্তত ১০ জন বাংলাদেশি বা বাঙালি৷ এদের অনেকেই আইএস-এর ‘ইমনি' নামক সিক্রেট অপারেশন্স গ্রুপের সদস্য৷ এদেরই একজন বাংলাদেশে তথাকথিত খিলাফার সৈনিকদের আমীর আবু ইব্রাহীম আল-হানিফ৷ এক কুর্দিশ গোয়েন্দা সূত্রমতে রাক্কা শহর থেকে একটু দূরে তবকা বাঁধের পাশেই এক সময় আস্তানা ছিল এই বাংলাদেশ ক্লাস্টারের৷ সেখান থেকেই তারা বাংলাদেশে গুলশান হামলাসহ বিভিন্ন হামলা পরিচালনা করেছিলেন৷ বাংলাদেশে ভবিষ্যতে আইএস-এর নামে যে হামলাগুলি হবে তার নির্দেশনাও কিন্তু আসবে এদের কাছ থেকেই৷
অর্থাৎ বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট নামক যে জিহাদি রাক্ষসটি ত্রাস ছড়াচ্ছে তার মাথাটি কিন্তু বাংলাদেশে নেই৷