1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুসলিম সমাজ

১৪ সেপ্টেম্বর ২০১২

ইন্টারনেটে প্রকাশিত এক বিতর্কিত ইসলাম-বিরোধী চলচ্চিত্রকে কেন্দ্র করে লিবিয়া, মিশর, ইয়েমেন সহ একাধিক দেশে মারাত্মক মার্কিন-বিরোধী বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে৷ বিশেষজ্ঞের মতে, দুই পক্ষের মনোভাব বদলানোর সময় এসেছে৷

People shout slogans during a protest against what they said was a film being produced in the United States that was insulting to the Prophet Mohammad, in Basra, 420 km (261 miles) southeast of Baghdad September 13, 2012. REUTERS/Atef Hassan (IRAQ - Tags: POLITICS CIVIL UNREST RELIGION)
Protest gegen einen US Film über den Prophet Mohammadছবি: Reuters

পবিত্র কোরান পোড়ানোর প্রতিবাদে রক্তাক্ত বিক্ষোভের প্রায় এক বছর পর মহানবী হজরত মহম্মদের উপর তৈরি একটি চলচ্চিত্র আবার মুসলিম সমাজে বিশাল ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে৷ বিভিন্ন দেশে মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ বা সরাসরি হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে৷ লিবিয়ার বেনগাজি শহরে খোদ মার্কিন রাষ্ট্রদূত সহ ৩ কূটনীতিকের হত্যা, মিশর ও ইয়েমেনও অশান্তির ঘটনা ঘটছে৷

এই অশান্তির জন্য দায়ী একটি ছবির কিছু অংশ, যা ইন্টারনেটে প্রকাশিত হয়েছে৷ সেই ছবিতে ইসলাম ধর্মের মহানবী হজরত মহম্মদের চরিত্রকে অত্যন্ত নেতিবাচক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে৷ এমনকি নারী সংসর্গ, শিশুদের উপর যৌন নিপীড়নের মতো ঘটনারও উল্লেখ রয়েছে ছবিতে৷ ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল'এর সূত্র অনুযায়ী এই ছবির লেখক, পরিচালক ও প্রযোজকের একই সঙ্গে মার্কিন ও ইসরায়েলি নাগরিকত্ব রয়েছে৷

ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী আল্লাহ ও মহানবীর কোনোরকম পৌত্তলিক রূপ নিষিদ্ধ৷ অথচ বিতর্কিত এই ছবিতে ঠিক সেটাই করা হয়েছে৷ মুসলিম সমাজের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ এমন পদক্ষেপকে প্ররোচনা হিসেবে দেখছে৷ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ, লেখক ও জার্মানির ইসলামি সংগঠনের সদস্য হামেদ আবদেল সামাদ এ প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলে'কে বলেন, কীভাবে মহানবীর অবমাননা করা হয়েছে, সেটা এখানে মুখ্য বিষয় নয়৷ কে সেই কাজ করছে, সেটাই আসল কথা৷ তিনি আরও বললেন, ‘‘কেউ যদি সংবাদপত্র পড়ে জানতে পারে, যে জাপান বা চীনে মহানবীর অবমাননা করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে ক্ষোভের মাত্রা এত বেশি হবে না৷ কিন্তু ডেনমার্ক বা অ্যামেরিকা থেকে সেই খবর এলে মানুষ এমন তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়, এ ক্ষেত্রে যেমনটা ঘটছে৷''

কয়েক শতক ধরে পরস্পরের সম্পর্কে বৈরী মনোভাব ও ভুল বোঝাবুঝির ফলেই এমনটা ঘটছেছবি: Reuters

ইন্টারনেটে এই ছবিটি নতুন নয়৷ ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল' জানাচ্ছে, গত জুলাই মাস থেকেই ভিডিওটি দেখা যাচ্ছে৷ কিন্তু স্বঘোষিত কোরান-বিরোধী মার্কিন যাজক টেরি জোনস যখন থেকে এই ছবিটির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তখন থেকেই এর পরিচিতি বেড়ে গেছে৷ উল্লেখ্য, গত বছর মার্চ মাসে জোনস'এর উদ্যোগে অ্যামেরিকার ফ্লোরিডা রাজ্যে কোরান পোড়ানোর পরিকল্পনার জের ধরে মুসলিম বিশ্বে জোরালো প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল৷ সে সময়ে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের ৭ জন কর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল৷ সম্প্রতি বেনগাজি ও কায়রোয় বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞরা আরও হিংসাত্মক ঘটনার আশঙ্কা করছেন৷ বিশেষ করে যে সব দেশে উগ্রবাদী ইসলামি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি সক্রিয়, সেখানে এই বিপদের আশঙ্কা বেশি বলে তারা মনে করেন৷

রাজনীতি বিশেষজ্ঞ আবদেল সামাদ মনে করেন, এখন থেকে মাত্রাতিরিক্ত সাবধানতার সঙ্গে সব ইসলামি ও ধর্মীয় বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে হবে – এটা ভাবা সম্পূর্ণ ভুল হবে৷ এর ফলে হিতে বিপরীত হবে৷ সামাদ বলেন, মত প্রকাশের অধিকার ও শিল্পের ক্ষেত্রে মুক্ত চিন্তার অধিকার এমন এক সম্পদ, যার বিচ্যুতি একেবারেই কাম্য নয়৷ তাছাড়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুসলিমদের শিখতে হবে যে, মহানবী হজরত মহম্মদ তাদের একার নয়, তিনি সমগ্র মানবজাতির ইতিহাসের অংশ৷ সব মানুষ এক ধর্মভীরু মুসলিমের দৃষ্টিতে তাঁকে দেখে না৷

মিশরীয় বংশোদ্ভূত আবদেল সামাদ আরও মনে করেন, ইসলামি ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি কাটছে না৷ দুই পক্ষই একে অপরের কাজে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়ে থাকে৷ তাঁর ভাষায়,‘‘ ইউরোপে অনেকে মনে করে, ইউরোপের ইসলামিকরণ ছাড়া মুসলিমদের মনে আর কোনো চিন্তা নেই৷ অন্যদিকে ইসলামি বিশ্বে অনেকে মনে করে, ইউরোপের মানুষ সকালে উঠেই ভাবতে শুরু করে, আজ কীভাবে মুসলিমদের অবমাননা করবো৷ কয়েক শতক ধরে পরস্পরের সম্পর্কে বৈরী মনোভাব ও ভুল বোঝাবুঝির ফলেই এমনটা ঘটছে৷''

প্রতিবেদন: আনে আলমেলিং/এসবি

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ