1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ইসলামি ফ্যাসিবাদ’

স্টেফান ডেগে/এসি৩ এপ্রিল ২০১৪

জার্মান-মিশরী ইসলাম সমালোচক হামেদ আবদেল-সামাদ তাঁর নতুন বইতে উগ্রপন্থি ইসলামকে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে তুলনা করেছেন৷ অনেকের মতে আবদেল-সামাদের বইটি নিঃসন্দেহে এক বিতর্কের প্ররোচনা, জার্মান ভাষায় যাকে বলে একটি ‘স্ট্রাইটশ্রিফ্ট’৷

Hamed Abdel-Samad, Schriftsteller
ছবি: DW/S. Dege

গত বছর কায়রোয় হামেদ আবদেল-সামাদ নিজের ধ্যানধারণা ব্যক্ত করার পর পরই তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করা হয়৷ আল-আঝার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক এবং জামা ইসলামিয়ার এক নেতা টেলিভিশন ক্যামেরার সামনেই আবদেল-সামাদের মৃত্যু দাবি করেন৷ সে যাবৎ আবদেল-সামাদ পুলিশি সুরক্ষা নিয়ে চলেন৷ ২০০৯ সাল থেকে তিনি জার্মানিতেই আছেন৷

‘‘আমি ফ্যাসিবাদের সঙ্গে উগ্র ইসলামের তুলনা করি: আদর্শগতভাবে, সাংগঠনিকভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে৷ উভয়েই একটি মতাদর্শ অনুসরণ করে চলে, যা সহিংসতার পথ উন্মুক্ত করে দেয়৷ উভয়েই বিশ্ববাসীকে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীতে বিভক্ত করে, মিত্র ও অমিত্রে৷ উভয়েই প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করতে উদ্যত৷ উভয়েই ইহুদিবিদ্বেষী৷ উভয়েরই নিজেদের বিশেষত্ব ও বিশ্ব শাসন করার দাবিতে পূর্ণ প্রত্যয়৷'' এই হলো আবদেল-সামাদের বক্তব্যের মর্ম৷

‘আমি ফ্যাসিবাদের সঙ্গে উগ্র ইসলামের তুলনা করি’ছবি: DW

বিংশ শতাব্দীতে জার্মানি ও ইটালির ফ্যাসিবাদী শাসনের সঙ্গে বিভিন্ন ইসলামপন্থি গোষ্ঠী ও সরকারবর্গের তুলনা করেছেন আবদেল-সামাদ৷ আধুনিকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম; ইহুদিবিদ্বেষ; সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া; স্বাধীনতার বদলে কর্তৃত্ব; ব্যক্তির উপরে সমাজ – তুলনার একাধিক ক্ষেত্র, কারণ ও উদাহরণ৷

জার্মানিতে বসেই আবদেল-সামাদ লিখছেন, জার্মানিতে ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করা হয়েছিল, কিন্তু ফ্যাসিবাদের সংজ্ঞাকে ৬০ লাখ ইহুদির মৃত্যুর উপর নির্ভরশীল করলে চলবে না৷ এছাড়া কম মানুষ উগ্র ইসলামের শিকার হননি: ইরানে লাখ-লাখ মানুষকে নিপীড়ন ও হত্যা করা হয়েছে৷ আলজিরিয়ার গৃহযুদ্ধে, সিরিয়া, সুদান, সোমালিয়া, ইয়েমেনের সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ৷ শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদী আক্রমণেই বিগত ২০ বছরে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৪০ হাজার মানুষ৷ আবদেল-সামাদের ভাষায়: ‘‘উগ্র ইসলামের হাতে নাৎসিবাদের মতো মৃত্যুসরঞ্জাম না থাকতে পারে, কিন্তু উভয়ের মনোভাব ও লক্ষ্য একই৷''

ইসলামি রাজনীতির সঙ্গে কি গণতন্ত্র খাপ খায়? আবদেল-সামাদ বলেন: ইসলামি রাজনীতি বিগত কয়েক শতাব্দী জুড়ে বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনি৷ ইসলামি দেশগুলোয় গির্জার রিফর্মেশন কিংবা ইউরোপীয় ‘এজ অফ এনলাইটেনমেন্টের' মতো কোনো ব্যাপার ঘটেনি: ইউরোপে যেমন জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলোক গির্জার আধিপত্য ভঙ্গ করেছিল, ইসলামি দুনিয়ায় তেমনটা ঘটেনি৷

আবদেল-সামাদ মানুষের কাছ থেকে ধর্ম কেড়ে নিতে চান না, তিনি আধ্যাত্মিকতার বিরোধী নন, যতক্ষণ পর্যন্ত না ধর্ম রাজনীতি ও আইনের এক্তিয়ারে নাক গলাচ্ছে৷ সেই কারণে বিশেষ করে ইসলামি বিশ্বের জন্য তাঁর সমাধান হলো: ‘‘ধর্মনিরপেক্ষতা!'' কিন্তু আবদেল-সামাদ কি এভাবে পশ্চিমের সঙ্গে ইসলামের বিরোধে ইন্ধন যোগাচ্ছেন না? আবদেল-সামাদ তা মনে করেন না৷ তিনি ইমামের সন্তান, পবিত্র কোরান পড়ে মানুষ হয়েছেন৷ তাঁর নিজস্ব কোনো বাণী কিংবা বার্তা নেই৷

তবুও তাঁর ২০০৯ সালে প্রকাশিত প্রথম বইটির নাম ‘‘আমার স্বর্গ হতে বিদায়''; ২০১১ সালে প্রকাশিত দ্বিতীয় বই হলো ‘‘ইসলামি বিশ্বের পতন – একটি ভবিষ্যদ্বাণী''; সবশেষে তাঁর নতুন বই, ‘‘ইসলামি ফ্যাসিবাদ''৷ এর কতটা প্রত্যয় আর কতটা প্ররোচনা, তা নির্ধারণ করার দায়িত্ব থাকবে পাঠক ও সমালোচকদের হাতে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ