ইসলামী উগ্রপন্থী গোষ্ঠী হামাস ও তার প্রতিষ্ঠাতার পরিচিতি
২৩ মার্চ ২০০৪ষনা করেছে৷
ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন-হামাস ফিলিস্তিনীদের সবচেয়ে বড় উগ্রপন্থী গোষ্ঠী৷ গাজা এলাকার আনুমানিক ৩০ শতাংশ মানুষ এই গোষ্ঠীর সদস্য৷ তার প্রায় কুড়ি বছরের ইতিহাসে গোষ্ঠী বহু রক্তক্ষয়ী হামলার জন্য দায়ী ৷ তবে সামাজিক কর্মকান্ডেও নিয়োজিত৷
ইসরাইলী পররাষ্টমন্ত্রনালয়ের খবর অনুযায়ী , দ্বিতীয় ইন্টিফাডা অর্থাত্ দ্বিতীয় বিপ্লবের শুরু থেকে এ পর্যন্ত শুধু হামাস গোষ্ঠীই গত তিন বছরে ৫০টিরও বেশি আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে ৷ ফলে শত শত ইসরাইলীর প্রাণহানী ঘটেছে এবং হাজার হাজার আহত হয়েছে৷
১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে হামাস গোষ্ঠী ফিলিস্তিনী জনসাধারণের ব্যাপক সমর্থন লাভে সক্ষম হয়৷ উগ্রপন্থী ফিলিস্তিনী গোষ্ঠীগুলোর মাঝে হামাসই এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হামলা চালিয়েছে- যাতে বহু ইসরাইলী নিহত হয়েছে৷ আর সংস্থার নেতারা বারংবার তাঁদের লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন এই বলে যে , তাঁরা তাঁদের হামলা চালিয়ে যাবেন৷ হামাসের রাজনৈতিক মুখপাত্র আবদেল আজিজ আল-রান্টিসি বলেন , বেশির ভাগ ফিলিস্তিনীই এটা ভালভাবে জানেন যে , আলোচনার টেবিলে তাঁদের কোন ভবিষ্যত নেই৷ তাই তাঁরা প্রতিরোধী৷ আর এ জন্যই হামাসের ওপর আঘাত হানা খুব কঠিন কাজ৷
জিহাদ চালিয়ে ইসরাইলী রাষ্ট্রের বিলুপ্তি সাধন হল হামাসের লক্ষ্য৷ এই মত পোষন করতেন গোষ্ঠীর নিহত প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসীন৷ কায়রোত পড়লেখা করার সময় তিনি উগ্রপন্থী ইসলামী গোষ্ঠীর প্রভাবে আসেন এবং ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন হামাস৷ প্যালেস্টাইনে একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং ইসরাইলী রাষ্ট্রের ধ্বংস হল গোষ্ঠীর লক্ষ্য৷
গোড়ার দিকে হামাস নিজেকে নিয়োজিত করে বিশেষ করে গাজা ভূ-খন্ডে সমাজকল্যানমূলক কাজে-যেমন স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন খোলার কাজে৷ ৷ ফলে প্যালেস্টাইনের বেশির ভাগ মানুষের সহানুভূতি লাভ করে৷ গোষ্ঠীর বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ যোগায় সৌদী আরব , ইরান এবং ইউরোপে বসবাসরত ফিলিস্তিনীরা৷
হামাস সহিংসার আশ্রয় নেয় প্রথম ১৯৯০ সালে এবং ইসরাইলী সরকারের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়৷ আবদুল আজিজ আল-রান্টিসি বলেন যে , তারা আমাদের জমি দখল করে নিচ্ছে এবং সেখানে তাদের বসতি স্থাপন করছে৷ কাজেই তারা কিছুতেই নির্দোষ নয়৷
তারা আগ্রাসনকারী , সন্ত্রাসী এবং তারা আমাদের ৩৫০টিরও বেশি শিশুকে হত্যা করেছে ৷ তারা আমাদের প্রায় দুই হাজার অসামরিক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে৷
ইয়াসিন-এর মত প্যালেস্টাইনী প্রেসিডেন্ট আরাফাতও কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন৷ সেখান থেকে তাঁরা দুজন দু পথে চলে যান৷ কিছুদিন হামাস গোষ্ঠী এমন কি ইসরাইলী সরকারের সমর্থন পায় - আরাফাতের পি এল ও সংস্থাকে মোকাবিলা করার লক্ষ্যে৷ হামাসের প্রথম হামলা ইসরাইলের কাছে এটা স্পস্ট হয়ে উঠে যে , কী ভুল সে করেছে৷ তবে আরাফাত এবং ইয়াসিন-এর মধ্যে মতপার্থক্য থেকেই যায়৷
সে যাই হোক , এটা এখনও বিতর্কের বিষয় , এই দুই নেতার মধ্যে কার সমর্থক বেশি-বিশেষ করে সহিংস উপায়ে শেখ ইয়াসিনের মৃত্যুর পর৷ বহু ফিলিস্তিনীর চোখে ইয়াসিনের মর্যাদা এখন শহীদের মর্যাদা৷