সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের নিয়ে পুলিশ এ দুটি স্থানে অভিযান চালায়৷ তবে সেখান থেকে কিছু মেলেনি৷  

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক উপাচার্যের বাসভবন ও কার্যালয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে৷ এ সময় উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের অনুরোধে তাদের কার্যালয়েও তল্লাশি চালানো হয়৷”

‘‘কোথাও কোনো লুকায়িত ডিভাইস আছে কি-না তা খুঁজে দেখতে তল্লাশি চালানো হয়েছে৷ এ সময় সেখানে ডিভাইস সংক্রান্ত কিছু পাওয়া যায়নি৷”

তল্লাশি অভিযানে থাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি আননূর যায়েদ বিপ্লব ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশনায় উপাচার্যের কার্যালয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে তবে প্রযুক্তিগত কিছু পাওয়া যায়নি৷”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ‘ফারাহ জেবিন' ও ‘মিসেস সালাম' নামের দুটি ফেসবুক আইডি থেকে পাঁচটি ফোনালাপের অডিও ভাইরাল হয়৷ এরপর রোববার ও সোমবার আল'বিদা ফেসবুক আইডি থেকে আরও দুটি অডিও ফাঁস হয়েছে৷

সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ‘কণ্ঠের মতো' একজনকে কথা বলতে শোনা গেছে৷ অডিওগুলোতে কথোপকথনকারীরা টাকার বিনিময়ে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, নিয়োগ বোর্ড গঠন, প্রশ্নপত্র ফাঁস ইত্যাদির বিষয়ে কথা বলেন৷

এ ঘটনায় শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইবি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়৷ অডিও ফাঁসের ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন ‘শাপলা ফোরাম'৷

তবে এসব ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম ‘কাল্পনিক প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য' সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন৷

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমার সহধর্মিণীর নামসহ একাধিক ফেইক আইডি খুলে সেখান থেকে একান্তই ব্যক্তিগত আলাপ-আলোচনা সংযোজন-বিয়োজন করে সোশাল ও অন্যান্য মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে৷”

‘‘অথচ কথিত নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিতই হয়নি৷ পরীক্ষার ব্যাপারে কোনো প্রশ্নপত্রই প্রণীত হয়নি৷ ইউজিসি প্রয়োজনে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পারে”, যোগ করেন উপাচার্য৷

উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন

এদিকে উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদ৷ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়৷ তার ঘণ্টাখানেক পর সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান৷

প্রায় তিন ঘণ্টা পর দুপুর দেড়টার দিকে ১৫ মিনিটের জন্য উপাচার্য কার্যালয়ের তালা খুলে দেয় আন্দোলনকারীরা৷ তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম, পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা কার্যালয়ে প্রবেশ করে ডিভাইসের খোঁজে তল্লাশি চালায়৷

এ বিষয়ে অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান টিটু দাবি করেন, ‘‘উপাচার্য সবাইকে দুর্নীতি করে নিয়োগ দিচ্ছেন৷ তিনি মাসের পর মাস ক্যাম্পাসে থাকেন না, বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংস করে দিচ্ছেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা দিয়ে নিজের বাড়ি বানাচ্ছেন৷ তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সম্পর্কেও খারাপ মন্তব্য করেছেন৷ তার পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে৷”

এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)