জার্মানিতে ৪০ লাখেরও বেশি মুসলিম বাস করে৷ তাঁরা কি এই দেশটিকে বদলে দিচ্ছে৷ যদি দেয়, তাহলে সেটা কীভাবে? ডয়চে ভেলে এর উত্তর খুঁজেছে জার্মানির সংস্কৃতির অন্যতম প্রাণকেন্দ্র কোলন এবং এর আশেপাশের এলাকায়৷
বিজ্ঞাপন
২০১৫ সালে প্রায় ১০ লাখ উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দেয়ার পর, জার্মানিজুড়ে আলোচনার অন্যতম বিষয়বস্তুতে পরিণত হয় ইসলাম৷ বিশেষ করে দেশটির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নর্থ-রাইন ওয়েস্টফালিয়ার অন্যতম শহর কোলন এবং তার আশেপাশের এলাকায়৷ জার্মানিতে থাকা প্রায় ৪০ লাখ মুসলিমের ১৪ লাখের বাস এই রাজ্যে৷
আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জার্মানির সংসদীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে দেশটির ছয়টি বড় শহরে নানা প্রশ্ন নিয়ে সাধারণ মানুষের মুখোমুখি হন ডয়চে ভেলের দুই প্রতিবেদক নিনা হাসে এবং সুমি সমাস্কান্দা৷ তাঁদের মতে, এবারের নির্বাচন নিয়ে আলাপ-আলোচনার সময় সবচেয়ে কঠিন ছিল ইসলাম নিয়ে কথা বলা৷
ইসলাম জার্মানিকে ধারণ করে কিনা – এই প্রশ্ন উঠলেই ছড়িয়েছে, ছড়াচ্ছে উত্তাপ, জমে উঠছে আলোচনা৷ অনেকে এটাকে ‘শান্তি ও সহিষ্ণুতার' ধর্ম হিসেবে দেখেন৷ অনেকে আবার এটাকে মনে করেন, ‘ঘৃণার বাহক' বলে৷ কারো কারো কাছে রাস্তায় চলা নারীদের স্কার্ফ ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার অংশ৷ আবার কারো মতে, এটা নিপীড়নের প্রতীক৷
জার্মানির মুসলমানরা ইসলামের নানা ধারার প্রতিনিধিত্ব করে৷ এই রাজ্যেও একই অবস্থা৷ জার্মান সংস্কৃতির কেন্দ্র কোলন শহরে গত মাসে নতুন একটি কেন্দ্রীয় মসজিদ উদ্বোধন হয়৷ অটোমান তুর্কীদের ধাঁচে নির্মিত এই মসজিদের গ্লাস ও পাথরে চকচক করে৷ ৫৫ মিটার উঁচু মিনার জানান দিচ্ছে মসজিদের অস্তিত্ব৷ তারকা খচিত মসজিদের ভেতরটায় একত্রে হাজারেরও বেশি মানুষ নামাজ পড়তে পারেন৷
জার্মানির মুসলমানদের সম্পর্কে তরুণরা যা ভাবছেন
জার্মানিতে বসবাসরত মুসলমানদের নিয়ে আটটি প্রশ্ন করা হয়েছিল আট তরুণ-তরুণীকে৷ তাঁদের উত্তর থেকে বেরিয়ে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: DW/J. Chase
নিজেকে কি জার্মান মনে করেন?
জার্মানির বিলেফিল্ডে থাকেন মরোক্কান বংশোদ্ভূত আয়া৷ গত মার্চে বার্লিনে অনুষ্ঠিত হলো ‘ইয়ং ইসলাম কনফারেন্স ২০১৭’৷ তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল – নিজেকে কি জার্মান মনে করেন? জবাবে ১৮ বছর বয়সি এই তরুণী বলেন, ‘‘আমি নিজেকে যতটা মরোক্কান মনে করি, তার চেয়ে বেশি জার্মান মনে করি৷ জার্মান সংস্কৃতির মাঝেই বেড়ে উঠেছি আমি৷ এর (জার্মান সংস্কৃতির) সঙ্গে যোগাযোগ আমার অন্য দেশের (মরক্বো) চেয়ে অনেক বেশি৷’’
ছবি: DW/J. Chase
ইউরোপে কি ইসলামীকরণ চলছে?
২২ বছর বয়সি মার্টিন থাকেন ফ্লেনসবুর্গে৷ ইউরোপে কি ইসলামীকরণ চলছে? – এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘না, ইউরোপে অনেক সংস্কৃতি এসে মিলছে৷আমার মনে হয়, ইউরোপ এ মুহূর্তে বেদনাদায়ক কিছু শিক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে৷ ব্রেক্সিট এর একটা উদাহরণ৷ কিন্তু তথ্য এবং পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, ইউরোপে মোটেই ইসলামীকরণ চলছে না৷ এটা পুরোপুরি বাজে কথা৷’’
ছবি: DW/J. Chase
আপনার কাছে সংহতির মানে কী?
ফলকান বললেন, ‘‘আমার কাছে এর মূল কথা হলো, কোথাও অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকা বা না থাকার অনুভূতি৷ শরণার্থীদের অনেককে এমন অনেক প্রশ্নই শুনতে হয় যা থেকে বোঝা যায় যে, আপনি আসলে এ সমাজের বাইরের কেউ৷ ছোটবেলায় এ বিষয়টি আমার খুবই খারাপ লাগত৷ মনে হতো, কোথায় আছি, কী কাজ করছি– এসব ছাপিয়ে সবসময় আমি যেন শুধুই একজন বহিরাগত ’’
ছবি: DW/J. Chase
মুসলিম আর অমুসলিমদের সম্পর্কোন্নয়নে কী কী করা যেতে পারে?
‘ইয়ং ইসলাম কনফারেন্স ২০১৭’-এর সংলাপের শিরোনাম ছিল ‘রিপেয়ারিং ডায়ালগ’৷ হানা-র কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘‘মুসলিম আর অমুসলিমদের সম্পর্ক মেরামতের জন্য কী করা দরকার?’’ হানা বললেন, ‘‘বড় সমস্যা হলো, এখানে একজন আরেকজনের বিষয়ে যত কথা বলে, একজন আরেকজনের সঙ্গে ততটা বলে না৷ আরেকজনের কাছে গিয়েই কিন্তু জানতে চাওয়া যায়, ‘‘তুমি কেন হেডস্কার্ফ পরো?’’ আমরা যেন এভাবে জানার আগ্রহ প্রকাশ করতে শিখিইনি৷’’
ছবি: DW/J. Chase
মুসলমানদের মিডিয়া যেভাবে তুলে ধরে
ডুইসবুর্গের মার্ভ-এর কাছ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘যখন নির্দিষ্ট একটা বিষয়ের দিকেই পুরো গুরুত্ব দিয়ে মুসলিমদের তুলে ধরা হয়, তখন খুব খারাপ লাগে৷ ধরা যাক, আমি হেডস্কার্ফ পরেছি৷ এর মানে তো এই নয় যে, আমি খুব গরিব৷ আমার তো এর বাইরেও অনেক কিছু আছে৷ আমি যে ডুইসব্যুর্গের মানুষ হিসেবে গর্বিত সেটাও তো খুব গুরুত্বপূর্ণ৷’’
ছবি: DW/J. Chase
মুসলিমবিরোধী ‘হেটস্পিচ’ বা ভুয়া খবর রুখতে কী করণীয়?
কোলনের ২৫ বছর বয়সি তরুণ আহমেদ মনে করেন, ‘‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হেটস্পিচ বা ভুয়া খবরের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি দরকার সরাসরি কথা বলা৷ এসব নিয়ে আলোচনা করতে আমি সবসময় প্রস্তুত৷ বিশেষ করে ফেসবুকে যে কোনো বিষয়ে মন্তব্য করার সাহস থাকা উচিত৷ তুরস্ক নিয়ে বিতর্কে অংশ নেয়ার জন্য আমি সম্প্রতি আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রি-অ্যাক্টিভেট করেছি৷’’
ছবি: DW/J. Chase
শরণার্থীবিরোধী পেগিডা বা এএফডি সম্পর্কে ভাবনা
১৯ বছর বয়সি আয়লিন বললেন, ‘‘এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না৷এসব লোকের সঙ্গে কথা বলার কোনো মানে হয় না৷ কিছু লোক কখনোই মনমানসিকতা বদলাতে চায় না৷ এএফডি মনে করে যে, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি ঠিক৷ পেগিডাও তাই মনে করে৷ অথচ তাদের দৃষ্টিভঙ্গির বড় একটা অংশই কিন্তু সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক৷ তবে আমার মনে হয়, এ মুহূর্তে এসবের একটা হুজুগ চলছে, একসময় সবার শুভবু্দ্ধির উদয় হবে৷’’
ছবি: DW/J. Chase
ইসলাম কি জার্মানির অংশ?
পল বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই৷ জার্মানি এমন এক ভৌগোলিক এলাকা, যেখানে একটিই সমাজের বসবাস এবং একটি সমাজই ক্রিয়াশীল৷ এখানে বসবাসরত প্রত্যেকটি গ্রুপই জার্মানির অংশ৷ জার্মানিতে বাস করলে আমি জার্মানিরই অংশ এবং আমার নিজেকে ‘জার্মান’ বলার অধিকারও আছে৷ সেক্ষেত্রে আমার তো মনে হয় কারো জার্মান ভাষায় কথা বলারও দরকার নেই৷’’
ছবি: DW/J. Chase
8 ছবি1 | 8
এই মসজিদটি অনেক বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছে৷ কোলনের প্রধান গির্জার গম্বুজ শতাব্দীর পর শতাব্দী আকাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে৷ সেই আকাশে ভাগ বসাবে মিনার – এটা যেন মানতে পারছিলেন না অনেক খ্রিষ্টান নেতা৷
তাই এই স্থাপনা নিয়ে নগরের প্রধান স্থপতির দপ্তরকে রাজি করাতে টার্কিশ-ইসলামিক ইউনিয়ন ফর রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ারকে (ডিআইটিআইবি) বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে৷ জার্মানিতে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় সংগঠন ডিআইটিআইবি৷ এটি তুরস্ক সরকারের ধর্ম বিষয়ক কর্তৃপক্ষের অংশ৷ দলটিকে ঘিরে সম্প্রতি তুরস্ক-জার্মানির সম্পর্ক অবনতি হয়েছে৷ দলটির বিরুদ্ধে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এর্দোয়ানের স্বার্থে কাজ কাজ করার অভিযোগ রয়েছে৷ আন্তঃধর্মীয় জীবন এখানে কতটা জটিল-এটা যেন সেটারই একটা চিত্র৷
পরিসংখ্যানের অধ্যাপক ও পরামর্শক ইউসেফ এল ওয়াদুদী বাস করেন কোলনে৷ তিনি মরোক্কো থেকে ১৮ বছর আগে জার্মানিতে আসেন৷ এরপর এখানে এসে তিনি একজন ভিন্নধর্মী নারীকে বিয়ে করেন৷ পালন করতে থাকেন সংসার-ধর্ম৷ তাঁর মুসলিম পরিচয় এখন অনেকটাই ঢাকা পড়ে গেছে৷ গতানুগতিক ছাঁচ এবং পক্ষপাতিত্বে ইসলামকে ঘিরে থাকা রাজনৈতিক ডিসকোর্স ক্রমেই দূষিত হয়ে যাচ্ছে বলে তাঁর মত৷
তিনি বলেন, সমস্যা হচ্ছে, সব ধর্মই মনে করে, সেই একমাত্র সত্য৷ মানুষ ধর্মকে বিভিন্নভাবে দেখে৷ যেমন কালো চুলের একজন মানুষ মানেই মনে করা হয়, তিনি মুসলিম৷ সুতরাং মুসলিম যদি কারো শত্রু হয়, তাহলে ব্যক্তিগতভাবে চিনুক না চিনুক, কালো চুল দেখলেই শত্রু মনে করা হয়৷ আপনি ধার্মিক কিনা, সেটা বিষয় নয়, এই সামাজিক সমস্যা আমাদের সবার জীবনকে প্রভাবিত করছে৷''
এল ওয়াদুদীর আশেপাশে হাত বাড়ালেই মরোক্কান দোকান, রেস্তোরাঁ এবং মসজিদ; যেখানে অধিকাংশ মানুষই রক্ষণশীল৷ তাঁর মতে, মুসলমানদের ভেতরের সমস্যাটাও গভীর৷ এর ফলে নিজস্ব কমিউনিটির ভেতরেও গঠনমূলক সংলাপ হয় না৷
উদার এবং রক্ষণশীল মুসলমানদের মাঝেও খুবই কম যোগাযোগ হয়, তাঁরা নিজেদের মধ্যে কথা বললেও ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনা থেকে যায়৷ এটার সবচেয়ে ভালো সমাধান হচ্ছে, ইসলামের বিভিন্ন শাখার মধ্যে একটা আলোচনার সূত্রপাত করা৷
অন্যদিকে রক্ষণশীল মুসলমানরাও বলছেন, তাঁরা সংলাপের জন্য প্রস্তুত৷
যদিও তরুণ মুসলিমদের মাঝে ইসলামিক উগ্রপন্থার বিস্তারের ফলে একটা আশঙ্কার কালো মেঘ জমা হয়েছে৷ ভায়োলেন্স প্রিভেনশন নেটওয়ার্কের মতে, কেবল নর্থ-রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যেই উগ্র সালাফিদের আক্রমণের পরিমাণ ২০১৫ সালে ৩০০ ছিল, যা পরের বছর দ্বিগুণ হয়ে গেছে৷
বনের পাশেই বাড গোডেসবার্গ আল-আনসার মসজিদের ইমাম আবদেলকাদের ইজেইম বলেন, যে সব রক্ষণশীল মুসলিম তাঁদের পছন্দসই বিশ্বাসকে আঁকড়ে বাঁচতে চায়, এই ধারা খুব গভীরভাবে তাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে৷
তিনি বলেন, এ সব ঘটনায় অনেক নেতিবাচক চিত্র তৈরি হয়েছে৷ অনেক মুসলিম রয়েছে, যারা আমাদের সম্মিলিত ভাবমূর্তি নষ্ট করে দিয়েছে৷ ফলে এমন একটা ধারণা তৈরি হয়েছে য, মুসলিম এবং ইসলাম এ রকমই৷ আমরা এই সব উদ্বেগ দূর করার চেষ্টা করছি৷ জার্মানদের দেখাতে চাই, এটা বাস্তবতা নয়৷ ভালো ভালো কাজ করাই ইসলামের মূল শিক্ষা৷ অন্য ধর্মাবলম্বীদের ইসলাম ও মুসলিমদেরকে ভয় করা উচিত নয়৷ কারণ ইসলাম শান্তির ধর্ম৷ সংলাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷
কোলনে লিবারেল ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশনের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে এর সংগঠক আনিকা মেহমেতি বলেন, তরুণ মুসলিমরা আধুনিক পৃথিবীর বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামের মতামত জানতে চায়৷ যেমন সমকামিতা ইসলামে বৈধ কিনা, খ্রিষ্টান ছেলে-বন্ধু রাখা যাবে কিনা ইত্যাদি৷
মেহমেতি বলেন, এখানে ৪ মিলিয়ন মুসলিম বাস করেন৷ তাঁরা সবাই বিভিন্নভাবে তাদের ধর্ম এবং সংস্কৃতি পালন করেন৷ তাঁদের জীবনও আলাদা৷ আরো বড় পরিসরে চিন্তা করলে একটা খোলামেলা এবং আন্তরিক সংলাপ সম্ভব৷
জার্মানির উচিত, ইসলামকে তাঁদের দেশের অংশ হিসেবে গ্রহণ করা৷ এটা জার্মানিকে আরো উন্মুক্ত এবং সহিষ্ণু সমাজ উপহার দেবে, বলেন মেহমেতি৷ তাঁর কথায়, ‘‘কিছু কিছু মানুষ এটাকে দূরে ঠেলে দেয়৷ তাঁরা বলে, এখানে ইসলামের কোনো অস্তিত্ব নেই৷ কিন্তু তাঁরা বাস্তবতায় নেই৷ ইসলাম এখানে রয়েছে এবং সেটা একটা ভালো বিষয়৷ অবশ্যই ইসলামের উচিত অন্য ধর্ম এবং গণতন্ত্রের সাথে একই সমতলে এখানে অবস্থান করা৷''
বলেন, ‘‘ইসলাম ও মুসলিমরা জার্মানিকে ধারণ করে না – আমি এটা আর শুনতে চাই পারছি না৷''
নিনা হাসে, সুমি সমাস্কান্দা/এসএন/ডিজি
আইএস বিরোধী লড়াইয়ের আঁচ জার্মানিতে
গত জুন মাসে ইরাকের মোসুল দখল করে নেয় ইসলামিক স্টেট (আইএস বা আইসিস)৷ চরমপন্থি ইসলামি সংগঠনটির লক্ষ্য, মধ্যপ্রাচ্যের একটা অংশে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা৷ এদিকে আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আঁচ লেগেছে জার্মানিতেও৷ দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
জার্মানিতে সংঘর্ষ
সুদূর ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের তৎপরতার আঁচ জার্মানিতেও দেখা যাচ্ছে৷ উত্তরের হামবুর্গ ও সেলে শহরে মঙ্গলবার (০৭.১০.১৪) কুর্দি ও ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে উগ্রপন্থি মুসলমানদের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Markus Scholz
গনসচেতনতার উদ্যোগে বাধা
জার্মানিতে বসবাসরত কুর্দি ও ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মানুষ সিরিয়া ও ইরাকে আইএস জঙ্গিদের তৎপরতা সম্পর্কে গণসচেতনতা বাড়াতে গত কয়েক মাস ধরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও সমাবেশের আয়োজন করেছে৷ কখন উগ্রপন্থিরা তাদের বাধা দিচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/Alexander Koerner
কোবানিতে তীব্র লড়াই
এদিকে সিরিয়ার কোবানি বা আইন আল-আরব শহরে আইএস জঙ্গিদের ব্যাপক হামলা চলছে৷ প্রাণ বাঁচাতে এক লাখেরও বেশি সিরীয় কুর্দি এলাকা ছেড়েছে৷ অধিকাংশই আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী দেশ তুরস্কে৷ আইএস জঙ্গিদের প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কুর্দিদের আধা সামরিক বাহিনী ওয়াইপিজি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/EPA/SEDAT SUNA
আপাতত রক্ষা
কুর্দি এই নারী তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে আইন আল-আরব থেকে পালিয়ে এসেছেন৷ সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহরটিতে আইএস-এর হামলা তীব্র হওয়ার পরপরই তাঁরা তুরস্কে আশ্রয় নেন৷
ছবি: DW/Alice Martins
আতঙ্ক
তখনও আইন আল আরব সীমান্তে চলছে তীব্র লড়াই৷ এই কুর্দি পরিবার আইন আল-আরব থেকে এসে তুরস্কের সীমান্তে অপেক্ষা করছে৷ ইরাকে কুর্দি নারীদের আইএস যেভাবে তুলে নিয়ে বিক্রি করেছে, তাড়াতাড়ি পালাতে না পারলে তাঁদেরও একই পরিণতি হতে পারে এই আতঙ্ক গ্রাস করেছে তাঁদের৷
ছবি: DW/Alice Martins
অসহায়ত্ব
তুরস্কেও ভালো নেই আইন আল-আরব ছেড়ে আসা কুর্দিরা৷ খাবারদাবার, এমনকি খাওয়ার পানিও ঠিকমতো জোটে না৷ একটি সংগঠন তাই চাঁদা তুলে পানির বোতল কিনে এনে বিতরণ করছে শরণার্থীদের মাঝে৷
ছবি: DW/Alice Martins
দীর্ঘ অপেক্ষা
প্লাস্টিকের ব্যাগে কিছু খাবার নিয়ে এসেছেন একজন৷ আইন আল-আরব ছেড়ে আসা সিরীয়দের সে খাবারগুলো দিতে চান৷ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে্ তুরস্কের সেনাবাহিনী৷ তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে৷ ওদিকে খাবারের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছে শরণার্থীরা৷
ছবি: DW/Alice Martins
যাত্রী চাই
সিরীয় শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছে তুর্কি সরকার৷ এক মিনিবাস চালক তাই যাত্রীর অপেক্ষায়৷ শরণার্থীদের কেউ যদি তাঁর মিনিবাসে ওঠেন, তাতে নিজের তো সামান্য কিছু আয় হবেই, শরণার্থীদেরও উপকার হবে৷ জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ লাখ সিরীয় তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে৷
ছবি: DW/Alice Martins
মধ্যপ্রাচ্যে কর্তৃত্ব চায় আইএস
আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে আইএস বা আইসিস-এর একসময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল৷ ২০০৬ থেকে ২০০৭-এর দিকে ইরাকে যখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ লড়াই চলছে তখনই আইএস-এর জন্ম৷ সংগঠনটির লক্ষ্য সিরিয়া, ইরাক, লেবানন, ফিলিস্তিন এবং জর্ডান মিলিয়ে বেশ বড় একটা অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
আইএস-এর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ আর ইরাকে নুরি আল-মালিকির সাবেক সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট বিদ্রোহীদেরই পাশে ছিল৷ সিরিয়ায় ন্যাশনাল কোয়ালিশনের মতো কিছু মধ্যপন্থি সংগঠনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে৷ তবে ওবামা সরকার এখন আইএস-এর বিরুদ্ধে৷ জঙ্গি সংগঠনটিকে নিশ্চিহ্ন করার অঙ্গীকার নিয়ে ইরাক ও সিরিয়ায় চলছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা৷
ছবি: picture alliance/dpa/Matthew Bruch
এবার আইন আল-আরব?
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আইন আল-আরব সাধারণের কাছে ‘কোবানি’ নামেই পরিচিত৷ তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তের এ শহরের একটা অংশ এখন আইএস-এর দখলে৷ এবার কি তবে আইন আল-আরবও দখল করে নেবে আইএস? তারপর?
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
11 ছবি1 | 11
আসলেই কি ইসলাম জার্মানিকে বদলে দিচ্ছে? মন্তব্য লিখুন নিচের ঘরে৷