1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাদা ইস্টার

অরুণ শঙ্কর চৌধুরী (ডিপিএ, এএফপি)২৯ মার্চ ২০১৩

শীত মানে বড়দিন, আর ইস্টারের আগমন মানে বসন্ত৷ লোকে তো এতদিন এ কথাই জানতো৷ কিন্তু শুক্রবার সকালে বন শহরের মানুষরা দেখেছেন: গাছের ডালে, ঝোপঝাড়ের মাথায় বরফের আস্তরণ!

ছবি: FikMik - Fotolia.com

গুড ফ্রাইডের দিনেও যাদের চাকুরিসূত্রে গাড়ি নিয়ে বাইরে বেরতে হয়েছে, তারা ভেবেছেন: শীতের টায়ারগুলো বদলে এত তাড়াতাড়ি গরমের টায়ার না লাগালেই হতো৷ গুঁড়িবৃষ্টির বদলে গুঁড়োবরফ বৃষ্টি চলেছে সাত সকাল থেকে, হয়ত গতকাল রাত থেকেই৷ বড়দিনের গানের সেই সুবিখ্যাত হোয়াইট ক্রিসমাসের বদলে হোয়াইট ইস্টার, অ্যাঁ? তা-ও কি হয়?

হয়, যেমন জার্মানিতে ১৮৮১ সাল যাবৎ ছ'বার মার্চ মাসে এ রকম ঠাণ্ডা পড়েছে৷ এটা নিশ্চয় করে বলা যায় কেননা ১৮৮১ সাল থেকেই আবহাওয়া, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, তুষারপাত ইত্যাদির সরকারি হিসাব রাখা হচ্ছে৷

রসিকতা নয়

পণ্ডিত থেকে সমঝদার থেকে রাস্তার মোড়ের রসিক মানুষ, সবাই অভ্যাস মতো জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে ঠাট্টা করছেন বটে, কিন্তু এ-ও ভাবছেন: মার্চ মাসের গোড়া থেকেই কোথায় সেই রাশিয়ার সাইবিরিয়া থেকে একটা হিমশীতল বাতাস বইতে শুরু করেছে – কিবা দিন, কিবা রাত৷ তার সঙ্গে বরফ পড়া৷ উত্তর, পূর্ব আর দক্ষিণ জার্মানির অবস্থা তো কাহিল৷ আর পশ্চিমাংশের মানুষ অতটা বরফ না পেলেও, শীতে কেঁপে মরছে৷

সেই সঙ্গে আছে রাস্তায়, মোটরওয়েতে বরফ পড়ে গাড়ি দুর্ঘটনার পর গাড়ি দুর্ঘটনা৷ একমাত্র সান্ত্বনা, এ দশা শুধু জার্মানিরই নয়৷ ইউক্রেনে তুষারপাতের ফলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা৷ মস্কোয় দমকল দিয়ে বাড়ির ছাদ থেকে বরফ সরানো হচ্ছে, যাতে ওজনে ছাদ না ভেঙে পড়ে, কিংবা ছাদ থেকে বরফের ধস নেমে রাস্তায় লোকজন না চিঁড়চ্যাপটা হয়৷ আয়ারল্যান্ডে, ইংল্যান্ডে বিদ্যুৎ বিভ্রাট৷ কোথায় নাকি সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে খামারবাড়ির বেচারা ভেড়াগুলিকে উদ্ধার করতে হয়েছে৷

এবার কি তাহলে ইস্টারের খরগোশ এভাবে স্লেজে চড়ে আসবে?ছবি: picture-alliance/dpa

ফ্রাংকফুর্ট, প্যারিস কি লন্ডন, সর্বত্রই বিমানবন্দরে হালহামেশা উড়াল বাতিল, কেননা রানওয়ে থেকে শুরু করে বিমানের পাখা, সর্বত্র বরফ জমে আছে৷ মনে রাখতে হবে: মাসটা কিন্তু মার্চ মাস, ইস্টারের ‘বানি' খরগোশের যখন ড্যাফোডিল, লিলি, টিউলিপ ফুলের পাশ কাটিয়ে ঘন সবুজ ঘাসের ওপর দিয়ে ইস্টারের ডিম নিয়ে যাবার কথা৷ ইস্টার বানি আসলে রং করা ডিমগুলোকে লুকিয়ে রাখে৷ সেগুলো খুঁজে বার করার কাজ ছোট ছেলে-মেয়েদের৷

ফাদার ক্রিসমাস বনাম ইস্টার বানি

ওদিকে বড়দিনে ফাদার ক্রিসমাস রেইনডিয়ার হরিণে টানা স্লেজগাড়িতে চড়ে বরফের ওপর দিয়ে গাড়ি হাঁকিয়ে ক্রিসমাসের প্রেজেন্ট নিয়ে আসবেন – এমনই তো হবার কথা৷ এবার কি তাহলে ইস্টার বানি স্লেজে চড়ে আসবে? আর আসেও যদি, তাহলে যেন জার্মানির এই কপালপোড়া মানুষগুলোর জন্য কিছুটা সূর্যালোক আর উত্তাপ নিয়ে আসে৷

ওদিকে চলতি শীতে ইতিমধ্যেই একাধিক রেকর্ড হয়ে বসে আছে৷ যেমন ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি, এই তিন মাসে উত্তর জার্মানির মানুষ সূর্যালোক পেয়েছে সাকুল্যে ৯১ দশমিক দুই ঘণ্টা! জানুয়ারির গোড়ায় রাজধানী বার্লিনের মানুষ টানা পনেরো দিন সূর্যের মুখ দেখতে পায়নি৷ আর এই মার্চ মাসে বার্লিন, ব্রান্ডেনবুর্গ আর স্যাক্সনি-আনহাল্ট, উত্তরের এই তিনটি রাজ্যে গড় তাপমাত্রা কত ছিল জানেন?

মাইনাস দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস৷

ইস্টার এসে পড়ল, কিন্তু আবহাওয়ার উন্নতি ঘটার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ রাশিয়ার কোনো এক বিজ্ঞানী নাকি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ২০১৪ সাল থেকে দ্বিতীয় তুষার যুগ শুরু হবে৷

শুনে এক সহকর্মী বলছিলেন: শুরু হবে, না শুরু হয়ে গেছে?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ