ভিডিওটিতে দেখা যায়, একদল উঠতি বয়সি তরুণ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট ও ভবনের উপর ইট পাটকেল ছুঁড়ছে৷ লাঠি দিয়ে আঘাত করছে৷
বিজ্ঞাপন
সময় টিভির ইউটিউব পেজে ভিডিওটি প্রকাশের পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রায় পৌঁনে এক লাখ বার দেখা হয়ে যায়৷ ভিডিওটিতে যেসব বালক বা তরুণদের দেখা যায়, তাদের দেখে প্রশ্ন ওঠে যে, এরা কেন হামলা করছে? কিংবা এদের কারা ব্যবহার করছে?
সোমবার এর আগে রাজধানীর রামপুরার আফতাবনগর এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতে ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নেন৷ বেলা পৌনে এগারটার দিকে শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ৷ পুলিশ টিয়ার শেল ছুঁড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ৷
এ সময় একদল যুবক লাঠি হাতে তাদের ধাওয়া দেন৷ তারা মেরুল বাড্ডার দিক থেকে এসে ধাওয়া দেন৷ যুবকরা রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেন এবং সাধারণ পথচারীদের ওপর চড়াও হন বলে জানিয়েছে বিডিনিউজ৷ এ সময় স্কুলের পোশাক পরিহিত দু'জনকে পেটাতে দেখেন সেখানে উপস্থিত নিউজ পোর্টালটির প্রতিবেদক৷
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে বিডিনিউজ বলেছে যে, লাঠি হাতে সেই যুবকদের মধ্যে বেরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদেরও দেখা যায়৷
এরপর পুলিশের পাশাপাশি সেখানে র্যাব ও এপিবিএন সদস্যরাও অবস্থান নেন৷ তারা শিক্ষার্থীদের চলে যেতে বলেন৷ কিন্তু শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে টায়ার জ্বালিয়ে দেন৷
পরে পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়ে৷ ইউনিভার্সিটির ভেতরে চলে যায় শিক্ষার্থীরা৷ লাঠি হাতে রাস্তায় অবস্থান নেয়া যুবকরা তখনও ইউনিভার্সিটির দিকে ঢিল ছুঁড়ছিলেন৷
সেখান থেকে প্রকাশ হওয়া বিভিন্ন ভিডিওতে অল্প বয়সি এই তরুণ যুবকদের দেখা যায় ইস্ট ওয়েস্টের দিকে ঢিল ছুঁড়তে৷
জেডএ/ডিজি
কী ঘটেছিল ৫ আগস্ট?
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনটি এখন ন্যায়বিচারের আন্দোলনের পরিণত হয়েছে৷ ৫ আগস্ট আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে পুলিশ ও ‘সরকারি’ ছাত্রসংগঠনের কর্মীরা৷ বিস্তারিত দেখুন ছবিঘরে৷
ধানমন্ডিতে ৪ আগস্টের হামলার প্রতিবাদে পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দু’টি মানববন্ধন কর্মসূচি দেয়া হয়৷ মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা শাহবাগে জড়ো হন৷
ছবি: Nasirul Islam
জিগাতলা যাওয়ার সিদ্ধান্ত
শাহবাগ থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জিগাতলা মোড়ের দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷
ছবি: Nasirul Islam
জিগাতলার উদ্দেশে মিছিল
দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা সায়েন্স ল্যাব হয়ে জিগাতলার দিকে মিছিল নিয়ে এগোয়৷ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ জিগাতলা মোড়ে জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সামনে দিয়ে ফিরছিল, অন্য অংশটি দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশের মুখোমুখি৷ আন্দোলনকারীরা পুলিশের উদ্দেশে চিৎকার করছিল৷
ছবি: Nasirul Islam
টিয়ার শেল
এক পর্যায়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের দিকে টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়তে শুরু করে৷ শিক্ষার্থীরাও দূর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়ে ও টিয়ার শেলের ধোঁয়া থেকে রক্ষা পেতে আগুন জ্বালায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. uz Zaman
লাঠিসোঁটা হাতে ওরা কারা
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, টিয়ারশেল থেকে বাঁচতে ধানমন্ডি লেকের পাশ দিয়ে শিক্ষার্থীদের একাংশ বেরিয়ে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে যুবকেরা শিক্ষার্থীদের তাড়া দেয়৷ একই সময়ে ঢাকা কলেজ থেকে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী এসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়৷ এ সময় অনেকেই রক্তাক্ত হন৷
ছবি: Nasirul Islam
সায়েন্স ল্যাবরেটরিতেও টিয়ারশেল
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগ হাজির হলে বেলা দেড়টার পর পুলিশ সায়েন্স ল্যাবরেটরির দিক থেকে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া শুরু করে৷ তারপরই লাঠিসোঁটা, রড, পাইপ, রামদা হাতে মাথায় হেলমেট পরা একদল যুবক শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে কাঁটাবনের দিকে তাড়িয়ে দেন৷ ধাওয়ার সময় তাঁরা কয়েকজনকে মারধর করেন৷
ছবি: Nasirul Islam
সাংবাদিকদের ওপর হামলা
সাংবাদিকেরা যখন আহতদের ছবি তুলছিলেন, তখন অতর্কিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে তাঁদের শাসান৷ পুলিশের সামনেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে বলেন, সাংবাদিকদের কেউ যদি ছবি তোলেন তাহলে সবাই ‘রক্তাক্ত’ হবেন৷ ছবি তুলতে গিয়ে মারধরের শিকার হন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক৷ তাদের ক্যামেরাও ভেঙ্গে ফেলা হয়৷
ছবি: Nasirul Islam
পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ
হেলমেট পড়া, রাম দা, কিরিচ, লাঠি, রড হাতে যুবকরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করলেও সে সময় পুলিশ ছিল নীরব৷ তাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে পুলিশের ভূমিকা৷
ছবি: Nasirul Islam
ন্যায়বিচার চাই
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের দাবিতে রাস্তায় নামা শিক্ষার্থীদের ওপর বার বার হামলার পর দাবি পরিবর্তিত হয়ে স্লোগান হয়ে ওঠে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বা ‘আমরা ন্যায়বিচার চাই’৷