তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একটি বিমান রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়লে তিন জন নিহত ও ১৭৯ জন আহত হয়৷
বিজ্ঞাপন
১৮৩ জন যাত্রী নিয়ে বুধবার বন্দর শহর ইজমির থেকে ইস্তাম্বুলের সাবিহা গোকেন বিমানবন্দরে নামছিল তুরস্কের পেগাসাস এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি৷ এ সময় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় এটি ভেঙে পড়ে৷
পেগাসাস এয়ারলাইনস তুরস্কের একটি সুলভ বিমানসংস্থা৷ গত মাসেও তাদের একটি বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ একই বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে৷ তবে সেসময় হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি৷
তার আগে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে একটি পেগাসাস বোয়িং ৭৩৭ তুরস্কের ট্র্যাবসন বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে৷ এসময়ও হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি৷
যেসব এয়ারলাইন্সের বিমান কখনো বিধ্বস্ত হয়নি
সম্প্রতি বেশ কিছু বিমান দুর্ঘটনার কারণে এই যাত্রা কিছুটা ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কিন্তু এমন কিছু এয়ারলাইন্স আছে যাদের ফ্লাইট কখনো বিধ্বস্ত হয়নি৷ চলুন দেখা যাক একনজরে৷
ছবি: Wright Electric
হাওয়াইয়ান এয়ারলাইন্স
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই বিমান সংস্থাটি ১৯২৯ সাল থেকে আকাশ পথে যাত্রা শুরু করেছে৷ যদিও ১৯৯৩ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত লোকসানের মুখে পড়েছিল এটি৷ কিন্তু নিরাপদ যাত্রার ক্ষেত্রে এর তুলনা নেই৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/O. Garcia
ইজিজেট
ব্রিটিশ বাজেট এয়ারলাইন্স ইজিজেট এর পথচলা শুরু হয়েছে ১৯৯৫ সালে৷ এখন পর্যন্ত এই এয়ারলাইন্সের কোনো বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়েনি৷
ছবি: Wright Electric
রায়েন এয়ার
নিরাপদ যাত্রার ক্ষেত্রে এই আইরিশ এয়ারলাইন্সের ভালো রেকর্ড রয়েছে৷ যদিও ২০০৮ সালে রোম যাওয়ার পথে কিছু পাখি যাত্রাপথে বাধার সৃষ্টি করায় জরুরি অবতরণ করতে হয়েছিল বিমানটিকে৷ কিন্তু যাত্রীদের কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি৷ কেবল দু’জন ক্রু কিছুটা আহত হয়েছিলেন৷
ছবি: AP
ভার্জিন
ভার্জিন ব্যান্ডের ভার্জিন আটলান্টিক, ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া এবং ভার্জিন অ্যামেরিকা এয়ারলাইন্স – এদের প্রতিটি ফ্লাইটের নিরাপদ যাত্রার রেকর্ড খুবই ভালো৷
ছবি: picture alliance/AP Images/M. Faulkner
এমিরেটস
এমিরেটস এয়ারলাইন্সের পথচলা শুরু হয়েছে ১৯৮৫ সালে৷ এই এয়ারলাইন্সের কোনো ফ্লাইট বড় কোনো দুর্ঘটনার কবলে পড়েনি৷ কেবল একবার দুবাই বিমানবন্দরে ২০১৬ সালের আগস্টে বিমান অবতরণের সময় আগুন ধরে গিয়েছিল ফ্লাইটে৷ বিমানের কোনো আরোহী হতাহত হননি৷ তবে একজন দমকলকর্মী প্রাণ হারিয়েছিলেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/M. Gambarini
ইত্তিহাদ
ইত্তিহাদ এয়ারলাইন্সের সেফটি রেকর্ডও ভীষণ ভালো৷ কেবল একবার ফ্রান্সের তুলু বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড টেস্টিং-এর সময় একটি ফ্লাইট এত দ্রুতগতিতে যাত্রা শুরু করেছিল যে দেয়ালে গিয়ে আঘাত হানে৷ এতে বিমানের ভেতরে থাকা ন’জন আহত হন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/K. Jebreili
কাতার এয়ারওয়েজ
২০০৪ সাল থেকে যাত্রা শুরু করেছে কাতার এয়ারওয়েজ৷ বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ বিমান বলা হয় এই এয়ারলাইন্সের বিমানগুলোকে৷ কিন্তু দু’বার এদের বিমান দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়৷ প্রথমবার আবুধাবিতে ২০০৭ সালে এবং দ্বিতীয়বার ২০১৭ সালে দোহাতে৷ কিন্তু দু’টি ঘটনার কোনোটাই কেউ হতাহত হননি৷
ছবি: Airbus - photo by master films/ H. Goussé
7 ছবি1 | 7
বুধবারের দুর্ঘটনার বিষয়ে ইস্তাম্বুলের গভর্ণর আলি ইয়েরলিকায়া জানান, অবতরণের সময় পাইলট বিমানটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হলে তা রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে ৩০ মিটার গভীর একটি খাদে আছড়ে পড়ে৷
যাত্রীদের বেশিরভাগই ছিল তুরস্কের নাগরিক৷ বিমানটিতে আরো ২২ বিদেশি নাগরিক এবং বেশ কয়েকজন শিশুও ছিল৷
দুর্ঘটনার সময়ের কথা স্মরণ করে ওই বিমানের যাত্রী ডোগাস বিলজিক বলেন, রানওয়েতে নামার ২০-৩০ সেকেন্ড পর বিমানটি হঠাৎ রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে৷ আচমকা সিটের পাশে একটি ফাটল তৈরি হলে তিনি বেরিয়ে আসতে পারেন৷
এদিকে দুর্ঘটনার পর পর জরুরি উদ্ধার কাজ শুরু করে উদ্ধারকর্মীরা৷ ঘটনার পর বিমানবন্দরে সব ধরনের অবতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়৷
তুরস্কের বেসামরিক বিমান পরিবহন এবং এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷ কীভাবে এ ধরনের বোয়িং ভেঙে পড়ল তা জানার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে কর্মকর্তারা৷
উল্লেখ্য, ২০ বছর ধরে বিমান পরিচালনায় জড়িত থাকা পেগাসাস এয়ারলাইন্সের ৮৩টি এয়ারক্রাফট, ৪৭টি বোয়িং ও ৩৬টি এয়ারবাস রয়েছে৷