বিদ্বেষমূলক অপরাধ বা হেট ক্রাইম বন্ধ করার নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকে একটি দফতর খোলার সিদ্ধান্ত নিল ফ্রান্স৷ একশোটি ইহুদি কবরস্থান অপবিত্র করার ঘটনা সামনে আসতেই ফরাসি সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
স্ট্রাসবুর্গের কাছে ইহুদিদের একশোটি কবর অপবিত্র করার ঘটনার পর আর কোনও সময় নষ্ট না করে ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাঁরা বিদ্বেষমূলক অপরাধ বা হেট ক্রাইম বন্ধ করার নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে একটি অফিস খুলবে৷
ষোড়শ শতকের ওই কবরস্থান পরিদর্শনের পর অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী ক্রিস্তোফ কাস্তানের বলেছেন, ‘‘প্রজাতন্ত্রকেই অপবিত্র করা হল৷ ঘৃণা বা বিদ্বেষ আবার আঘাত হেনেছে৷ আমাদের জাতীয় সীমানার মধ্যে এই বিদ্বেষ আছে৷ অপরাধীদের শাস্তি দিতে আমরা সর্বাত্মক প্রয়াস করব৷’’
জার্মানিতে ইহুদি উপাসনালয়ে যত হামলা
জার্মানির হালে শহরে বুধবার ইহুদিদের একটি উপাসনালয়ে হামলার চেষ্টা হয়েছে৷ তবে সিনাগগে ঢুকতে না পেরে দুইজন পথচারীকে হত্যা করেন এক জার্মান আততায়ী৷ ছবিঘরে কয়েকটি সিনাগগে হামলার ঘটনা তুলে ধরা হলো৷
ছবি: Imago Images/S. Schellhorn
কোলন, ১৯৫৯: স্বস্তিকা ও হেট স্পিচ
১৯৫৯ সালের ডিসেম্বরে ‘ডয়চে রাইশপার্টাই’ নামের একটি চরম ডানপন্থি দলের সদস্যরা কোলনের সিনাগগে স্বস্তিকা এঁকে দিয়েছিল৷ এছাড়া ‘জার্মানদের দাবি: ইহুদিরা চলে যাও’ শব্দগুলোও লিখে দেয় তারা৷ এরপর জার্মানির বিভিন্ন এলাকায়ও ইহুদিবিরোধী গ্রাফিতির দেখা পাওয়া গিয়েছিল৷ ঐ ঘটনায় জড়িতদের ধরা হয়েছিল এবং ভবিষ্যতে কেউ যেন ‘মানুষের উসকানিমূলক’ কিছু করতে না পারে সেজন্য সংসদে আইন পাস হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images/Joko
ল্যুবেক, ১৯৯৪: অগ্নিসংযোগ
মার্চ মাসের এই ঘটনা সারা বিশ্বের মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলেছিল৷ চরম ডানপন্থি চার ব্যক্তি ল্যুবেকের সিনাগগে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল৷ এই ঘটনার এক বছর পর আবারও একই সিনাগগে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Büttner
এসেন, ২০০০: পাথর ছোড়া
লেবানন থেকে আসা ১০০-র বেশি ফিলিস্তিনি ২০০০ সালের অক্টোবরে এসেন শহরের পুরনো সিনাগগে পাথর ছুড়ে মেরেছিল৷ ‘মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত’-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শেষে এই হামলা করা হয়৷ এই ঘটনায় একজন পুলিশ আহত হয়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/B. Boensch
ড্যুসেলডর্ফ, ২০০০: অগ্নিসংযোগ ও পাথর নিক্ষেপ
ইহুদি ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধ’ নিতে ১৯ বছর বয়সি এক ফিলিস্তিন ও ২০ বছর বয়সি মরক্কোর এক নাগরিক আগুন ও পাথর দিয়ে ড্যুসেলডর্ফের নতুন সিনাগগে হামলা করেছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Weihrauch
মাইনৎস, ২০১০: মলটফ ককটেল হামলা
১৯৩৮ সালে নাৎসি বাহিনী মাইনৎসের একটি সিনাগগ পুড়িয়ে দিয়েছিল৷ সেখানে নতুন করে একটি সিনাগগ নির্মাণ করা হয়৷ তবে উদ্বোধনের কিছুক্ষণ পরই সেখানে মলটফ ককটেল হামলা চালানো হয়৷
ছবি: picture-alliance/akg/Bildarchiv Steffens
ভুপার্টাল, ২০১৪: অগ্নিসংযোগ
ফিলিস্তিনি তিন তরুণ ২০১৪ সালের জুলাই মাসে ভুপার্টালের সিনাগগের প্রবেশ দরজায় দাহ্য পদার্থ ছুড়ে মেরেছিল৷ তবে এই ঘটনায় ইহুদিবিদ্বেষের পক্ষে ‘প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ বলে আদালত রায় দিয়েছিলেন৷ জার্মানির ইহুদি ও বিদেশি গণমাধ্যম এই রায়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Seidel
বার্লিন, ২০১৯: ছুরি নিয়ে হামলা
অক্টোবরের ৪ তারিখ শাবাতের পূর্বে বার্লিনের নতুন সিনাগগে স্থাপন করা একটি বেড়ায় ছুড়ি নিয়ে উঠে পড়েছিলেন এক ব্যক্তি৷ নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে ধরে ফেলেন৷ পরে ছেড়েও দেন৷ ইহুদি নেতারা পুলিশের এই সিদ্ধান্তকে বিচারব্যবস্থার ‘ব্যর্থতা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Avers
হালে, ২০১৯: গুলি
ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের জন্য বছরের সবচেয়ে পবিত্র দিন ‘ইয়ম কিপুর’ উপলক্ষ্যে ৯ অক্টোবর সিনাগগে উপস্থিত হয়েছিলেন ৭০-৮০ জন মানুষ৷ অস্ত্র নিয়ে সেই সিনাগগে ঢোকার চেষ্টা করেছিল ২৭ বছর বয়সি জার্মান আতাতয়ী৷ তবে নিরাপত্তারক্ষীদের বাধার মুখে সিনাগগে ঢুকতে না পেরে রেগে গিয়ে গুলি করে দুইজন পথচারীকে হত্যা করেন তিনি৷ জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার জানিয়েছেন, ইহুদি-বিদ্বেষের কারণেই তিনি হামলা চালিয়েছেন৷
ছবি: Imago Images/S. Schellhorn
8 ছবি1 | 8
এই ঘটনাটা ঘটেছে গত মঙ্গলবার রাতে স্ট্রাসবুর্গ থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের ওয়েস্টহফেন শহরে৷ সেখানে ১০৭টি কবরে স্বস্তিক বা অন্য ইহুদি-বিরোধী চিহ্ন লেপে দেওয়া হয়েছে৷ এই কবরস্থানেই কার্ল মার্কসের পূর্বপুরুষদের সমাধি রয়েছে৷ ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লিওঁ বামের সমাধিও আছে৷
স্ট্রাসবুর্গের ইহুদি আইনজ্ঞ হ্য়ারল্ড আব্রাহাম ওয়েইল বলেছেন, ‘‘এভাবে রঙ দিয়ে বা অন্য় কোনওভাবে কখনই আমাদের পরিচয়, আমাদের স্মৃতি মুছে ফেলা যাবে না৷’’
পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী, ইহুদি-বিরোধী ঘটনা ২০১৭-র তুলনায় ২০১৮-তে ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ স্বাভাবিকভাবেই ফ্রান্সে বসবাসকারী ইহুদিরা রীতিমতো চিন্তিত৷ ঘটনা হলো, ইউরোপের মধ্যে সব থেকে বেশি ইহুদি ফ্রান্সেই আছেন৷
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ মঙ্গলবার টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ইহুদিরাও ফ্রান্সকে গঠন করেছেন৷ যারা তাঁদের আক্রমণ করছে, তাঁদের কবরস্থানে হামলা করছে, তাদের আচরণ ফ্রান্সের মূল ভাবনার খাপ খায় না৷’’ তিনি বলেছেন, ''ইহুদি-বিদ্বেষ একটা অপরাধ। আমরা ওয়েস্টহফেনে এবং অন্যত্র তার সঙ্গে লড়াই করব৷ যতক্ষণ পর্যন্ত প্রয়াতরা শান্তিতে ঘুমোতে পারবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এই লড়াই চলবে৷’’
১৩ সেপ্টেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...
ইহুদিদের ‘হালাল’ সেক্স শপ
ইসরায়েলের তেল আভিভে কোশের সেক্স শপ খুলেছেন চানা বোটিচ নামের এক নারী, যেখানে ইহুদি ধর্মের নিয়ম মেনে যৌনতা সম্পর্কিত পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হয়৷
ছবি: AFP/J. Guez
নিঃসঙ্গতার হাতিয়ার
বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছেন অনেক দম্পতি৷ এদের যৌন চাহিদা মেটাতে সেক্স খেলনাগুলো বেশ কাজের বলে মনে করেন চানা বোটিচ, যিনি বিতর্কিত ইহুদি ধর্মীয় নেতা শমুলে বোটিচের মেয়ে৷
ছবি: AFP/J. Guez
নেই অশ্লীল খেলনা
ছানা বোটিচের সেক্স শপে যৌন উদ্দীপক বিভিন্ন জিনিসপত্রের সঙ্গে প্লাস্টিকের তৈরি রঙিন সেক্স টয়গুলো বিবাহিতদের সহজেই নজর কাড়ে৷ তবে দেখতে অশ্লীল ও ফালতু কোনো জিনিস দোকানে রাখেন না তিনি৷
ছবি: AFP/J. Guez
ধর্মীয় অনুশাসন মেনেই সব!
ইহুদি ধর্মের নিয়ম অনুসরণ করেই যৌনতা সম্পর্কিত পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করেন বোটিচ৷ হাত ব্যবহার না করে যৌনসুখ পাওয়ার ‘ভাইব্রেটর’ পাওয়া যায় তার দোকানে৷
ছবি: AFP/J. Guez
পবিত্র শহরে সেক্স শপ!
ইহুদি, ইসলাম ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র শহর হিসেবে পরিচিত ইসরাইলের অন্যতম নগরী জেরুজালেমে একটি সেক্স শপ খুলতে চান বোটিচ৷
ছবি: AFP/J. Guez
যৌন আকাঙ্ক্ষাই গুরুত্বপূর্ণ
ছানা বোটিচের বাবা শমুলে বোটিচ যৌনতা নিয়ে ‘কোশার সেক্স: এ রেসিপি ফর প্যাশন অ্যান্ড ইনটিমেসি’ শিরেনামে বই প্রকাশ করেছেন৷ সেখানে তিনি লিখেছেন, মানুষের যৌন আকাঙ্ক্ষা প্রেমের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷
ছবি: AFP/J. Guez
প্লেবয়দের নিয়ে বই
শমুলে বোটিচ যৌনতা বিষয়ক ২০টি বই লিখেছেন৷ তার সবশেষ বইয়ে পামেলা অ্যান্ডারসন, সাবেক প্লেবয় সেন্ট্রেফোল্ডদের নিয়ে কলম ধরেছেন তিনি৷
ছবি: AFP/J. Guez
সেক্স শপে মিছলে সব
শুধু ইউরোপের দেশগুলোতেই নয়, এখন বিভিন্ন দেশে গড়ে উঠেছে সেক্স শপ৷ আর এসব দোকান থেকে খুব সহজেই সংগ্রহ করা যায় যৌন উদ্দীপক খেলনাগুলো৷