জার্মানিতে অন্তত এক লাখ ইহুদির বসবাস৷ তাদের সম্পর্কে জার্মানদের রয়েছে কিছু বদ্ধমূল ধারণা, অনেকেই কোনো ইহুদির সঙ্গে মেলামেশা করেনি৷ তাই ডয়চে ভেলে খোঁজার চেষ্টা করেছে ‘রেন্ট এ জিউ' বা ইহুদি ভাড়া প্রকল্প কী এর পরিবর্তন হবে?
ছবি: rentajew.org/Foto: DW/K. Brady
বিজ্ঞাপন
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে সোলিঙ্গেন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ কোনো ইহুদিকে চেনো?' ২০ জনের মধ্যে ১৫ জনের উত্তরই ছিল ‘না'৷ একজন শিক্ষার্থী বলেছে, ‘‘আমি রাস্তায় একজনকে দেখেছিলাম৷ কিন্তু তার সঙ্গে কোনো কথাবার্তা হয়নি৷'' এ কারণেই ‘রেন্ট এ জিউ' প্রকল্প৷ প্রকল্পের প্রতিপাদ্য ‘তুমি তোমার শেকড় ভুলতে পারো না', যা চালু করেছে মিউনিখভিত্তিক ইউরোপিয়ান ইয়ানুৎস কোরসাক অ্যাকাডেমি৷
এই প্রকল্পের আওতায় কাজ করছে ৫০ জন সদস্য৷ জার্মানির বিভিন্ন প্রাইভেট ও পাবলিক সেক্টরে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সেমিনারের আয়োজন করে তারা৷ এদের প্রধান লক্ষ্য ইহুদি সম্প্রদায়কে জার্মানদের কাছে পরিচিত করে তোলা৷ জার্মানদের মধ্যে ইহুদিদের নিয়ে কোনো ধরনের কুসংস্কার বা ভুল ধারণা থাকলে তা যাতে দূর হয়ে যয়৷ এই প্রকল্পে কাজ করছেন মাশা স্মারলিং এবং মন্টি ওট৷ তারা দু'জনেই ইহুদি৷ তাদের কাছে ডয়চে ভেলের প্রশ্ন ছিল, প্রকল্পের এমন অদ্ভুত নাম রাখার কারণটা কী?
জার্মানদের মধ্যে ইহুদিদের নিয়ে কুসংস্কার বা ভুল ধারণা দূর করতে কাজ করছেন মাশা স্ম্যারলিং এবং মন্টি ওটছবি: DW/K. Brady
তারা জানালেন, এই প্রশ্নটা করাই স্বাভাবিক৷ এটা আসলে মানুষকে প্ররোচিত করার জন্য, যাতে এ থেকে আলোচনার সূত্রপাত হয়৷ অনেকেই নিজেদের ইহুদি বলে পরিচয় দিতে দ্বিধা বোধ করে৷ তাই আমরা চাই না ইতিহাস থেকে ইহুদিদের সম্পর্কে জার্মানরা জানুক৷
১৯৯২ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে মা এর সঙ্গে জার্মানিতে এসেছিলেন স্ম্যারলিং, যেমনটা জার্মানিতে অন্য ইহুদিরা এসেছে৷ স্ম্যারলিং-এর ভাষ্য ‘‘ইহুদিদের অনেকেই এখানে ‘আকস্মিক শরণার্থী' বলা হয়৷ অথচ এই ধরনের ইহুদিরাই ১ লাখ ইহুদির ৮০ শতাংশ৷
আমরা একটা সুযোগ করে দিতে চাই যাতে ইহুদি সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলার একটা প্লাটফর্ম তৈরি হয়৷ হলোকস্টের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে আমরা জার্মানদের সঙ্গে ইহুদিদের পরিচয় করিয়ে দিতে চাই না৷''
জার্মানির স্কুলে স্কুলে ‘ইহুদিকে ভাড়া করুন’
01:28
This browser does not support the video element.
তবে কেবল জার্মানিতেই নয় ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলে সম্প্রতি ইহুদিবিরোধী মনোভাব সোচ্চার হচ্ছে৷ আর সেকারণেই এ ধরনের প্রকল্পের খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন ওটো৷ মার্চে বার্লিনের এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে জার্মানির রাজধানীতে ৩৪ ভাগ বেশি ইহুদি বিদ্বেষের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে৷ ২০১৫ সালে বার্লিনে ৪০১ টি ঘটনা ঘটেছে, জার্মানিজুড়ে এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা ১৩০০টি৷ এ বছরের শুরুতে ২১ বছয় বয়সি এক ইহুদি যুবককে মারধোর করে তিন জার্মান যুবক, যা নিয়ে শিরোনাম হয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে৷
হলোকস্টের স্মরণে জার্মানি যা করেছে, করছে
১৯৪৫ সালের ৮ মে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় ইউরোপে৷ এরপর থেকে হলোকস্টের শিকার হয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের স্মরণে রাখতে এই গণহত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থাপনা সংরক্ষণ করে আসছে জার্মানি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Sven Hoppe
ডাখাউ
মিউনিখের কাছে ডাখাউ-এ প্রথম কনসেনট্রেশন ক্যাম্পটি স্থাপন করেছিল নাৎসিরা৷ আডল্ফ হিটলারের ক্ষমতা গ্রহণের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁর গড়ে তোলা কুখ্যাত আধা-সামরিক বাহিনী বা এসএস-এর সদস্যরা রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের সেই ইহুদি নিধন শিবিরে ধরে নিয়ে গিয়ে প্রথমে বন্দি করতো৷ তারপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করতো তাঁদের৷ পরবর্তীতে নাৎসিদের স্থাপন করা অন্যান্য ক্যাম্পগুলো ঐ ডাখাউ-এর আদলেই তৈরি করা হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নাৎসিদের ব়্যালি গ্রাউন্ড
ন্যুরেমব্যার্গে নাৎসি আমলের সবচেয়ে বড় প্রচারণা ব়্যালিটি অনুষ্ঠিত হতো৷ প্রায় ১১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকা একটি ‘গ্রাউন্ডে’ নাৎসিদের বার্ষিক কংগ্রেস এবং এই ব়্যালি অনুষ্ঠিত হতো, যাতে প্রায় দুই লক্ষ মানুষ অংশগ্রহণ করতেন৷ ছবিতে অসমাপ্ত কংগ্রেস হলটি দেখতে পাচ্ছেন৷ এটি বর্তমানে একটি জাদুঘর এবং ডকুমেন্টেশন সেন্টার৷
ছবি: picture-alliance/Daniel Karmann
হলোকস্টের মূল পরিকল্পনা
বার্লিনের ভানজে লেক এলাকার এই ‘ভানজে হাউস’-টিতে ইহুদি নিধনযজ্ঞের মূল পরিকল্পনা হয়েছিল৷ নাৎসি সরকার ও এসএস বাহিনীর মোট ১৫ জন সদস্য ১৯৪২ সালের ২০ জানুয়ারি এই ভবনে মিলিত হয়ে ‘ফাইনাল সলিউশন’ নামের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন৷ অর্থাৎ জার্মান নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে সব ইহুদিদের তাড়ানো ও তাঁদের শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয় এখানেই৷ ১৯৯২ সাল থেকে ভবনটি একটি জাদুঘরে পরিণত হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আনে ফ্রাঙ্কের স্মৃতি বিজড়িত
আনে ফ্রাঙ্ককে এখন অনেকেই চেনেন৷ তাঁর ডাইরিও পড়েছেন অনেকে৷ আনে ফ্রাঙ্ক সহ প্রায় ৫০ হাজার ইহুদিকে ব্যার্গেন-বেলজেনের এই কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে হত্যা করা হয়েছিল৷
ছবি: picture alliance/Klaus Nowottnick
হিটলারকে মারার ব্যর্থ পরিকল্পনা
জার্মানিতে হিটলারের নাৎসি অপশাসন প্রতিরোধে ১৯৪৪ সালের ২০ জুলাই সামরিক কর্মকর্তা কর্নেল ক্লাউস ফন স্টাউফেনব্যার্গ-এর নেতৃত্বে একটি দল হিটলারের ওপর বোমা হামলা চালায়৷ কিন্তু হত্যা পরিকল্পনাটি ব্যর্থ হলে, সেই রাতেই বার্লিনের এই ‘বেন্ডলারব্লক’ ভবনে স্টাউফেনব্যার্গ ও তাঁর সঙ্গীদের গুলি করে হত্যা করা হয়৷ এই ভবনটি এখন ‘জার্মান রেসিস্টেন্স মেমোরিয়াল সেন্টার’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হত্যা স্মরণ
হেসে রাজ্যের হাডামারে একটি হাসপাতালের প্রায় ১৫ হাজার শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীকে হত্যা করা হয়৷ এরকম ‘অক্ষমদের’ নাৎসি সরকার ‘অবাঞ্চিত’ ঘোষণা করেছিল৷ তাই তাঁদের দেহে ইনজেকশনের মাধ্যমে বিষাক্ত ওষুধ প্রবেশ করানোসহ বিভিন্ন উপায়ে হত্যা করা হয়৷ পুরো জার্মানিতে এভাবে প্রায় ৭০ হাজার প্রতিবন্ধীকে মেরে ফেলে নাৎসি বাহিনী৷ পরবর্তীতে নিহতদের স্মরণে হাডামারে একটি স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বার্লিনে স্মৃতিস্তম্ভ
হলোকস্টের স্মরণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষের ৬০ বছর পর, বার্লিনের ঐতিহাসিক ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণের কাছে ‘মেমোরিয়াল টু দ্য মার্ডার্ড জিউস অফ ইউরোপ’ নামের এই স্মৃতিস্তম্ভটি স্থাপন করা হয়৷ নিহতদের স্মরণে সেখানে কংক্রিটের ২,৭১১টি স্ল্যাব বসানো হয়েছে৷ ইহুদি নিধনযজ্ঞের শিকার, এমন বহু মানুষের নামও লেখা আছে একটি জায়গায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সমকামী হত্যা স্মরণ
বার্লিনের ঐ স্মৃতিস্তম্ভ থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত ‘টিয়ারগার্টেন’ নামক একটি উদ্যানে স্থাপন করা হয়েছে চার মিটার উঁচু এই স্মৃতিফলক৷ ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে নাৎসিদের হাতে নিহত সমকামীদের স্মরণে এটি স্থাপন করা হয়৷ এই স্তম্ভের মধ্যে থাকা একটি পর্দায় চোখ রাখলে দুটি ছবি দেখা যায়৷ একটিতে চুমু খাচ্ছেন দু’জন পুরুষ, অন্যটিতে দুই নারী৷
ছবি: picture alliance/Markus C. Hurek
সিন্টি ও রোমা হত্যা স্মরণ
বার্লিনের সংসদ ভবনের ঠিক উল্টো দিকে ২০১২ সালে একটি পার্ক উদ্বোধন করা হয়৷ নাৎসি আমলে নিহত প্রায় পাঁচ লক্ষ সিন্টি ও রোমার স্মরণে এটি স্থাপন করা হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
স্মতিস্মারক হিসেবে ‘শ্টলপারশ্টাইন’
নব্বইয়ের দশকে শিল্পী গুন্টার ডেমনিগ নাৎসি নির্যাতনের শিকাররা যে সব বাড়িতে বাস করতেন, সেগুলোর সামনে রাস্তার ওপর সোনালি পাতের ছবির মতো এই স্মৃতিস্মারক বসানো শুরু করেন৷ এতে যিনি নির্যাতিত হয়েছিলেন, তাঁর নাম, তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া ও মেরে ফেলার তারিখ লেখা আছে৷ ইউরোপের ১৮টি দেশে এরকম ৪৫ হাজারেরও বেশি ‘শ্টলপারশ্টাইন’ রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মিউনিখের ব্রাউন হাউস
নাৎসি আমল শেষের এত বছর পরও সে সময়ের স্মৃতি ধরে রাখতে তৎপর জার্মানি৷ তাই তো ৩০ এপ্রিল, ২০১৫-তে আরও একটি ডকুমেন্টেশন সেন্টার উদ্বোধন করতে যাচ্ছে জার্মানি৷ মিউনিখ শহরে হিটলারের অফিসের অদূরে যেখানে নাৎসিদের প্রধান কার্যালয় ছিল, সেই ব্রাউন হাউসে ‘ডকুমেন্টেশন সেন্টার ফর দ্য হিস্টরি অফ ন্যাশনাল সোশ্যালিজম’ নামের এই সেন্টারটির উদ্বোধন করা হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Sven Hoppe
11 ছবি1 | 11
‘রেন্ট এ জিউ' প্রকল্পের এ সব সেমিনারে ইহুদি সম্প্রদায়ের ধর্ম, সংস্কৃতি, খাবার সম্পর্কেও জানানো হয়৷ তবে সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের যখন প্রশ্ন করা হয় ইহুদিদের সম্পর্কে তারা কী জানে৷ বেশিরভাগই উত্তর দেয়, ‘তারা শিক্ষিত এবং ধনী'৷ সেমিনারে অংশ নিয়েছিলেন ১৭ বছরের মোহাম্মদ৷ যিনি জানালেন, ‘‘আমি এ প্রকল্পের মাধ্যমে ইহুদিদের দৈনন্দিন জীবন যাপন সম্পর্কে পুরো ধারণা পেয়েছি৷ এমনকি আমি আগে এমন অনেক বিষয় জানতাম, যা ছিলো ভুল৷'' ওটো বললেন, মোহাম্মদের মতো অনেকেই যে তাদের ভুল ধারণাগুলো থেকে বেরিয়ে এসে চিন্তা করছে, এটাই তাদের প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য৷
নাৎসি আমলের ইহুদি নিধন যজ্ঞে প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষের অপমৃত্যুর জের ধরে আত্মপ্রকাশ ঘটে ইসরায়েলের৷ তাই ঐতিহাসিক কারণে জার্মানি ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্কের চরিত্র একেবারে অনন্য৷ কিছু মানুষের জীবন জুড়েও রয়েছে এ দুটি ভূখণ্ড...
গল্পগুচ্ছ
জার্মান লেখক সারা স্ট্রিকার ইসরায়েলে প্রায় পাঁচ বছর কাটিয়েছেন৷ সেখানেই লিখেছেন নিজের প্রথম উপন্যাসটি৷ আর সম্প্রতি ইসরায়েলি এবং জার্মান লেখকদের কাজ নিয়ে তৈরি অভিনব একটি গল্পগুচ্ছে একটি ছোট গল্পও লিখেছেন তিনি৷
ছবি: Win Schumacher
মানুষ, প্রকৃতি, ভবিষ্যৎ
এত দীর্ঘ একটা সময় ইসরায়েলে থাকার কারণে সেখানকার মানুষ, এমনকি প্রকৃতিকেও ভালোবেসে ফেলেছেন সারা৷ তাঁর মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফেডারেল জার্মান প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে, বেড়ে চলেছে সহযোগিতা৷ তাই সারা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী৷
ছবি: Win Schumacher
রন্ধনশিল্প
২০১৩ সালে জার্মানির টম ফ্রাঞ্জ ইসরায়েলের একটি বিখ্যাত রান্নার অনুষ্ঠান তথা প্রতিযোগিতা ‘মাস্টার শেফ’-এ প্রথম পুরস্কার পেয়েছিলেন৷ আর তখন থেকেই ইসরায়েলে তিনি একটি অতি পরিচিত নাম৷
ভালোবাসার টানে
ইসরায়েল আর সেখানকার মানুষদের সঙ্গে এতটাই মিলেমিশে গিয়েছিলেন টম যে, আট বছর আগে ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি৷ হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন৷ এ অঘটনটা ঘটেছিল ভালোবাসার টানেই৷ প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি৷ বর্তমানে টমকে জেরুসালেমের একটি ছোট্ট সিনাগগে প্রতিদিন স্ত্রীর সঙ্গে প্রার্থনা করতে দেখা যায়৷
রাঁধুনি পরিবার
স্ত্রীর পরিবারেই থাকেন টম৷ তাঁরাও যে রান্নায় এক-একজন ওস্তাদ৷ তাই তাঁদের সঙ্গে রান্নাঘরে দারুণ সময় কাটে টমের৷ কত কী যে শিখেছেন তিনি এখানে৷ আসলে জেরুসালেমের খাবার-দাবার নিয়ে একটি বই লিখতেই তিনি এসেছিলেন ইসরায়েলে৷
গায়িকা হওয়ার স্বপ্ন
নাম: রিলি উইলো৷ বয়স: ৩৪৷ স্বপ্ন: দাদির মতো মস্ত গায়িকা হওয়ার৷ রিলির দাদি একসময় বার্লিনের বিখ্যাত গায়িকা ছিলেন৷ তাই রিলি ইসরায়েল ছেড়ে আজ পরবাসী৷ বহুদিন হলো বার্লিনেই ঘর বেঁধেছেন তিনি, সানন্দেই৷ যদিও নাৎসিদের কুখ্যাত কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প আউশভিৎসে হত্যা করা হয়েছিল তাঁর প্রিয় দাদিকে৷
বার্লিনের আড্ডা
এটা ইসরায়েল নয়, জার্মানির ছবি৷ রাজধানীর ক্রয়েৎসব্যার্গ এলাকার একটা পাবে বসে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা মারছেন রিলি উইলো আর তাঁর স্বামী বেনেডিক্ট বিন্ডেভাল্ড৷ বার্লিনের এ অঞ্চল এবং পার্শ্ববর্তী নয়ক্যোলন এলাকায় বহু তরুণ ইসরায়েলির বাস৷
হালকা হাসির পাল্লা
ইসরায়েল থেকে আসা রিলি উইলো আর বন্ধু শাহাগ শাপিরা একটা বিষয়ে একমত৷ আর সেটা হলো: ইহুদি বুদ্ধিমত্তা আর ইসরায়েলি ব্যঙ্গ আসলেই অতীতের কালো অধ্যায়টাকে হালকা করতে সাহায্য করেছে অনেকটাই৷
ছবি: Win Schumacher
সোজা প্রশ্ন
পেশায় সাংবাদিক শাপিরার বয়স মাত্র ২৭৷ কিন্তু আজকের জার্মান সমাজে ইহুদিদের কীভাবে দেখা হয়, সেটা জানতে তাঁর দারুণ আগ্রহ৷ তাই পথে-ঘাটে কারুর সাথে দেখা হলেই তিনি প্রশ্ন করে বসেন: আচ্ছা, আপনি কি ইহুদি বিদ্বেষী?
হাসতে তো মানা নেই!
বার্লিনের হলোকস্ট মেমোরিয়ালটি দেখতে যাঁরাই আসেন, তাঁরাই নিজের মোবাইল ফোনটা দিয়ে একটা ‘সেল্ফি’ তুলতে ভোলেন না৷ ‘‘এখানে সেল্ফি তোলা নিষেধ’’ – না, সত্যি সত্যি না৷ দর্শনার্থিদের সঙ্গে দুষ্টুমি করে শাপিরা প্রায়ই এমনটা বলেন৷ আর লোকজন সব ঘাবড়ে গেলে, হো হো করে হেসে ওঠেন তিনি৷