ইয়াঙ্গনের দুইটি জেলায় মার্শাল ল জারি করল মিয়ানমারের সেনা-শাসকরা। বিক্ষোভ থামানোর জন্যই এই ব্যবস্থা।
বিজ্ঞাপন
মিয়ানমারে গত ছয় সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলছে। ইয়াঙ্গনে রোজই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সেনা-শাসকদের বিরুদ্ধে এবং সু চি সহ সব নেতাকে মুক্তি ও গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে। লঠি, গ্যাস, গুলি দিয়েও বিক্ষোভকারীদের থামানো যাচ্ছে না। এবার তাই সামরিক আইন জারি হলো দুই জেলায়।
এর ফলে এই দুই জেলায় সেনা বাহিনীর হাতে আরো ক্ষমতা এল। এই দুই জেলায় বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে ১৪ জন মারা গেছেন। তারপরেও বিক্ষোভ থামেনি। স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন, রাস্তা থেকে গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।
বাগো শহরের এক বাসিন্দা ডিপিএ-কে জানিয়েছেন, উত্তেজনা আরো বেড়েছে। মানুষ বিক্ষোভ থামাতে রাজি নয়। সেনাও বিক্ষোভ থামাতে মরিয়া। ইয়াঙ্গনে রোববারও গুলি চালিয়েছে পুলিশ। তাতে অন্তত তিনজন বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। মিয়ানমারের বিভিন্ন জায়গায় রোববার পুলিশের গুলিতে অন্ততপক্ষে সাতজন মারা গেছেন।
গত ৪ মার্চ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছিল, সেনা শাসকরা জবরদস্তি বিক্ষোভ থামাতে চাইছে। তারা নির্বিচারে মানুষকে ধরছে। আটকে রাখছে।
মিয়ানমারে বিক্ষোভ অব্যাহত, পুলিশি তাণ্ডবও
মিয়ানমারে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ অব্যাহত। সেই সঙ্গে চলছে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশের লাঠি, গ্যাস, গুলি।
ছবি: AP Photo/picture alliance
অদম্য বিক্ষোভকারীরা
পুলিশের গুলিতে তারা মারা যাচ্ছেন, আহত হয়ে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও অদম্য বিক্ষোভকারীরা। সেনা-শাসন মানতে নারাজ তারা। সু চি সহ আটক নেতাদের মুক্তি চান তারা।
ছবি: Str/AFP/Getty Images
মুখোমুখি
বিক্ষোভকারী ও রায়ট পুলিশ মুখোমুখি। বিক্ষোভকারীরা নিরস্ত্র। তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখাতে চান। কিন্তু পুলিশ তাদের বিক্ষোভ বরদাস্ত করছে না।
ছবি: STR/AFP/Getty Images
ইয়াঙ্গনের ছবি
পুলিশের তাণ্ডবের পর ইয়াঙ্গনে পিছু হঠছেন বিক্ষোভকারীরা। লাঠি, গ্যাস, গুলির পর তারা পালাতেও বাধ্য হচ্ছেন।
ছবি: AP/picture alliance
বিক্ষোভকারীদের কৌশল
বিক্ষোভকারীরা ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে পুলিশের মোকাবিলা করছে। প্রচুর ধোঁয়া হচ্ছে। পুলিশ যাতে পালায় তার জন্য এই কৌশল নেয়া হয়েছে।
ছবি: STR/AFP/Getty Images
রেললাইন অবরোধ
নিয়মিত রেললাইন অবরোধ করছেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ অবশ্য সেখানেও বিক্ষোভকারীদের আক্রমণ করছে।
ছবি: AP/picture alliance
পুলিশ আরো সহিংস
বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলায় পুলিশি সহিংসতা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। প্রথমে তারা লাঠি ও গ্যাস ব্যবহার করছিল। তারপর রবার বুলেট। এখন তারা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে প্রায় প্রতিদিন গুলি চালাচ্ছে। তাতে রোজ বিক্ষোভকারীরা মারা যাচ্ছেন।
পুলিশ গুলি চালাতেই মাটিতে শুয়ে পড়ছেন বিক্ষোভকারীরা। তবে এইভাবে যে সবসময় গুলি এড়ানো যাচ্ছে তা নয়।
ছবি: REUTERS
কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়া
পুলিশ এমন কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে যে, ধোঁয়ায় ভরে যাচ্ছে চারপাশ। কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়াতেও বহু বিক্ষোভকারী অসুস্থ হয়েছেন।
ছবি: AP/picture alliance
বাসিন্দাদের অবরোধ
পুলিশ যাতে ঢুকে পড়ে তাণ্ডব না করতে পারে, সে জন্য আবাসিক এলাকায় এভাবেই অবরোধ তৈরি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ছবি: AP/picture alliance
নিন্দায় গোটা বিশ্ব
নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের উপর যে অত্যাচার চলছে, তার নিন্দায় জাতিসংঘ থেকে শুরু করে প্রায় গোটা বিশ্ব। তারপরেও পুলিশি তাণ্ডব কমছে না।
ছবি: AP Photo/picture alliance
10 ছবি1 | 10
গত ছয় সপ্তাহ ধরে চলা এই বিক্ষোভের ফলে ৮০ জন নিহত হয়েছেন। দুই হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। রেল কর্মীরা ধর্মঘটে নেমেছেন। ট্রেড ইউনিয়নগুলি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। ফলে দেশের অর্থনীতির হাল খুবই খারাপ।
চীনের অনুরোধ
মিয়ানমারেরসেনা শাকদের কাছে চীনের অনুরোধ, তারা যেন চীনের অর্থসাহায্যে গড়ে ওঠা পোশাকের কারখানাগুলিকে রক্ষা করে। চীনের নাগরিকদের রক্ষার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়। সম্প্রতি একটি পোশাক কারখানায় দুষ্কৃতীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। দূতাবাসের তরফে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি খুবই জটিল। তবে তার ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।