ইয়েমেনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রত্যাঘাত সৌদির মধ্যস্থতায় তৈরি হওয়া জোট সরকারের। হুতি বিদ্রোহীদের দখলে থাকা রাজধানীতে বিমান হানা।
বিজ্ঞাপন
বুধবার এডেনে নতুন সরকারের মন্ত্রীরা যখন সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন, তখনই বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ হয়। মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তারা অক্ষত থাকলেও মারা গেছেন ২২ জন। পরে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের কাছেও বিস্ফোরণ হয়। সেখানেই ছিলেন মন্ত্রীরা। ঘটনার দায় স্বীকার না করলেও প্রেসিডেন্ট হাদির নেতৃত্বে জোট সরকারের অভিযোগ, এই আক্রমণের পিছনে হুতি বিদ্রোহীরাই ছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবার হুতি-শাসিত রাজধানী সানা-তে অন্তত ১৫টি জায়গায় বোমা ফেলে বিমান বাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমানবন্দর সহ বিভিন্ন জায়গায় বোমা ফেলা হয়েছে। হুতি বিদ্রোহীদের টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, অন্তত ১৫টি জায়গায় বোমা ফেলেছে বোমারু বিমান। কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানা যায়নি।
সৌদির মধ্যস্থতায় তৈরি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ বিন মুবারক সংবাদসংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন, ইয়েমেনের অস্থিরতা কাটাতে সরকার তার দায়িত্ব পালন করবে। জঙ্গি আক্রমণ করে তাদের থামানো যাবে না।
ইয়েমেনের শিশুদের খাদ্য নিরাপত্তা কে দেবে?
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বলছে, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা ২৪ লাখ হয়ে যাবে৷ অচিরেই তাদের খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছে তারা৷
করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে তহবিলের অভাব হচ্ছে জাতিসংঘের৷ এতে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে পর্যাপ্ত সহায়তা করতে পারছে না তারা৷ বাড়ছে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা৷ শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে৷
ছবি: Save the Children/Sami Jassar
ইউনিসেফের রিপোর্ট
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থাটির নতুন রিপোর্ট অনুযায়ী, ইয়েমেনে অপুষ্টিতে ভোগা পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুর সংখ্যা এ বছরের শেষ নাগাদ ২০ ভাগ বাড়বে৷ অর্থাৎ প্রায় ২৪ লাখ হবে, যদি না তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য সাহায্য না পৌঁছে৷
প্রায় পাঁচ বছরের যুদ্ধে ইয়েমেন প্রায় বিধ্বস্ত৷ সেখানে মুখোমুখি যুদ্ধে লিপ্ত সৌদি আরব সমর্থিত সরকার ও ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা৷ এই ক’বছরে লাখো মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন, ঘরছাড়া হয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua/M. Mohammed
ত্রাণ সংকট
যেহেতু এই যুদ্ধ শেষ হবার নাম নেই, তাই জাতিসংঘ বলছে যে, তারা সহায়তার চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে৷ সেখানে কার্যক্রম চালাতে ইউনিসেফের প্রায় ৪৬ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন৷ এছাড়া কোভিড-১৯ মোকাবিলায় জরুরি তহবিল হিসেবে আরো ৫.৩ কোটি ডলার প্রয়োজন তাদের৷ এখন পর্যন্ত যথাক্রমে এই দুই তহবিলের ৩৯ ভাগ ও ১০ ভাগ মিলেছে৷
ছবি: picture-lliance/Photoshot/M. Mohammed
শিশুশ্রম বৃদ্ধির ঝুঁকি
ইউনিসেফ বলছে, যুদ্ধের কারণে ৭৮ লাখ ইয়েমেনি শিশু স্কুলে যেতে পারছে না৷ তাদের শ্রমের দিকে ঠেলে দিয়ে এ অবস্থার ফায়দা লোটা হচ্ছে৷ শুধু শিশুশ্রমই নয়, এই শিশুরা বাল্যবিবাহ ও সশস্ত্র দলগুলোতে জড়ানোর ঝুঁকিতে আছে৷
ছবি: picture-alliance/AA/M. Hamoud
5 ছবি1 | 5
ইয়েমেনে হাদি সরকারই আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত। এই হাদি সরকারের সঙ্গে এ বার সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় জোট হয়েছে সাদার্ন ট্রান্সিশনাল কাউন্সিলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের। বুধবারই সব মন্ত্রী রিয়াধ থেকে এডেন এসে পৌঁছেছিলেন। তখনই বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ হয়। সরকার এখন হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে দিল। ২০১৪ থেকে রাজধানী শহর হুতিদের অধীনে। হুতিদের সমর্থন করে ইরান। জোট সরকারের পিছনে আছে সৌদি আরব ও আমিরাত।