ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধকে অ্যামেরিকা আর সমর্থন করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বাইডেন। খোঁজা হবে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ।
বিজ্ঞাপন
ক্ষমতা গ্রহণের পর ফের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ জো বাইডেন। বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়ে দিলেন, গত ছয় বছর ধরে ইয়েমেনে সৌদি আরব যে লড়াই চালাচ্ছে, অ্যামেরিকা সেই লড়াইয়ে সৌদিকে আর সাহায্য করবে না। বরং শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে কী ভাবে মীমাংসাসূত্র তৈরি করা যায়, অ্যামেরিকা সেই চেষ্টাই চালাবে।
জার্মানির অস্ত্র যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে
ইয়েমেন ও লিবিয়ায় যুদ্ধে জড়িত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কাছে ২০২০ সালে বড় অঙ্কের অস্ত্র বিক্রি করেছে জার্মানি৷ এইসব যুদ্ধে মারা গেছেন কয়েক লাখ মানুষ৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Desouki
শতকোটি ইউরো
২০২০ সালে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ১১৬ কোটি ইউরো বা ১৪১ কোটি ডলারের অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে জার্মান সরকার৷ এই দেশগুলো ইয়েমেন আর লিবিয়ায় প্রাণঘাতী যুদ্ধে জড়িত ছিল৷ জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয় দেশটির গ্রিন পার্টির এক সদস্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে সংসদের নিম্নকক্ষে এই তথ্য জানিয়েছে৷
ছবি: Philipp Schulze/dpa/picture alliance
সবচেয়ে বেশি মিসরে
মিসরে গেল বছর ৭৫ কোটি ইউরো বা ৯১ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে জার্মান সরকার৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Desouki
কাতার দ্বিতীয়
তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অস্ত্র বিক্রির ছাড় দেয়া হয়েছে তেল সমৃদ্ধ দেশ কাতারে৷ যার পরিমান সাড়ে ৩০ কোটি ইউরো বা প্রায় ৩৭ কোটি ডলার৷
ছবি: picture alliance/dpa/AA
আমিরাতের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক
২০১৯ সালে জার্মানি-সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে কয়েকশো কোটি ইউরোর অংশীদারিত্ব চুক্তি হয়েছে৷ আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স আল নাহিয়ান ১২ জুন বার্লিন সফরে আসলে নতুন এই সম্পর্কের সূচনা হয়৷ ইয়েমেন, লিবিয়া যুদ্ধে বির্তকিত ভূমিকার কারণে জার্মানির গ্রিন পার্টি এসব চুক্তির বিরোধিতা করে আসলেও গেল বছর পাঁচ কোটি ইউরোর বেশি বা ছয় কোটি ডলারের উপরে অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে৷
ছবি: Reuters/H. Hanschke
কুয়েতেও কম না
কুয়েতের কাছেও দুই কোটি ৩৪ লাখ ইউরো বা দুই কোটি ৮৪ লাখ ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে জার্মানি৷ ২০২০ সালেই এই রপ্তানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/ZumaPress/U.S. Marines
তুরস্কে অস্ত্র বাণিজ্য
কূটনৈতিক নানা ইস্যুতে টানাপোড়েন থাকলেও জার্মানির কাছ থেকে ঠিকই অস্ত্র আমদানি করছে তুরস্ক৷ বিদায়ী বছরে দেশটিতে প্রায় দুই কোটি ৩০ লাখ ইউরোর অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে জার্মান সরকার৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Souleiman
আরো যারা
এছাড়াও গত বছর জর্ডানে ১৬ লাখ ইউরো আর বাহরাইনে ১৫ লাখ ইউরো মূল্যের অস্ত্র বিক্রির লাইসেন্স দিয়েছিল জার্মান সরকার৷
ছবি: GettyImages/J. Eid
যে কারণে বিতর্ক
এই দেশগুলো ইয়েমেন ও লিবিয়ার একটিতে অথবা দুইটিতেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িত৷ ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ২০১৪ সাল থেকে হুথি বিদ্রোহীদের দমনে হামলা চালিয়েছে৷ জোটে আছে আরব আমিরাত, মিসর, কুয়েত, জর্ডান ও বাহরাইন৷ ছয় বছরের যুদ্ধে দুই লাখ ৩৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷ অন্যদিকে লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে দুইটি বিবদমান পক্ষকে মদত দিয়ে আসছিল কাতার, তুরস্ক এবং আরব আমিরাত ও মিসর৷ যদিও বর্তমানে সেখানে অস্ত্র বিরতি চলছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/H. Mohammed
জার্মানি পঞ্চম
বিশ্বে অস্ত্র বাণিজ্যে জার্মানির অবস্থান পঞ্চম৷ স্টকহম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপ্রি) এর তথ্য অনুযায়ী, এই তালিকার প্রথম চারে আছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স ও চীন৷ ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই দেশগুলো অস্ত্র রপ্তানির ৭৬ ভাগ সরবরাহ করেছে৷
ছবি: Imago/Est/Ost
9 ছবি1 | 9
বৃহস্পতিবার প্রথমে এ বিষয়ে প্রথম বিবৃতি দেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান। পরে বাইডেন নিজেই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান। প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনো ভাবেই আর সৌদি আরবকে যুদ্ধে মদত দেওয়া হবে না। বরং ইয়েমেনে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের রাস্তা খোঁজা হবে। তবে এর ফলে সৌদি আরবের সঙ্গে অ্যামেরিকার সম্পর্কের কোনো পরিবর্তন হবে না। অ্যামেরিকা কেবল যুদ্ধ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবে।
২০১৪ সালে ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা আক্রমণ শুরু করে। ক্রমশ তারা ইয়েমেনের দখল নিতে শুরু করে। সে সময় সৌদি সহ একাধিক মুসলিম দেশ তার বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে। তাদের সাহায্য করে অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ফ্রান্সের মতো পশ্চিমা বিশ্ব। মানবাধিকার সংস্থাগুলির বক্তব্য, দীর্ঘ ছয় বছরে ইয়েমেনে এক লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যুদ্ধের ফলে দেশে তীব্র অনাহার শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে ইয়েমেন। এই অবস্থায় শান্তিপূর্ণ আলোচনাই একমাত্র পথ বলে মনে করছেন বাইডেন।
এদিন রাশিয়াকেও এক হাত নিয়েছেন বাইডেন। বলেছেন, যে ভাবে মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়া নাক গলিয়েছে, যে ভাবে নিজের দেশের নাগরিককে বিষ দিয়ে মারার চেষ্টা করেছেন পুটিন, অ্যামেরিকা তা ভালো চোখে দেখছে না। সব কিছুর দিকেই অ্যামেরিকা কড়া নজর রাখছে।