ই-বাইক মানে ইলেকট্রিক মোটর লাগানো সাইকেল চড়েন প্রবীণেরা, এটাই ছিল লোকের ধারণা৷ এখন সেই ই-বাইকই কিন্তু তরুণ প্রজন্মের কাছে ‘হিপ', মানে ফ্যাশনেবল হয়ে উঠছে৷
বিজ্ঞাপন
যে সাইকেল চালাতে হয় না
04:29
২০১৬ সালের আসল ট্রেন্ড হল ই-বাইক৷ ই-বাইককে আর প্রবীণদের সাইকেল বলে গণ্য করা হচ্ছে না৷ বার্লিনে একটা ই-বাইকের দোকান খোলা হয়েছে৷ দোকানটি খুলেছেন মাথিয়াস লিঙ্গনার, দু'বছর আগে, নাম রেখেছেন ‘উইংহুইলস'৷ এখানে শুধু ই-বাইক পাওয়া যায়৷ ইতিমধ্যে সেই ই-বাইকও ভোল পাল্টে ফ্যাশনেবল হয়েছে৷ ইলেকট্রিক মোটরটি আরো ছোট হয়েছে, অ্যাকুমুলেটর, মানে স্টোরেজ ব্যাটারিটি ফ্রেমে ঢাকা পড়েছে৷ মাটিয়াস বললেন, ‘‘ইতিমধ্যে নানা নতুন প্রযুক্তি বেরিয়েছে, যার ফলে ইলেক্ট্রোমোবিলিটি, মানে ইলেকট্রিক কার ইত্যাদি বেড়ে চলেছে৷ বহু সুন্দর সুন্দর ই-বাইক বাজারে এসেছে৷ তাদের ডিজাইন যেমন সুন্দর, তেমনই পাওয়ার বেশি৷ এগুলো ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার গতিতে চলে; নাম রাখা হয়েছে এস-পেডেলেক্স৷''
আরো কত ধরনের ই-বাইক! যেমন সিটি বাইক অথবা মাউন্টেইন বাইক – যার অ্যাকুমুলেটরটা বিশেষভাবে লুকনো৷ কোনো ই-বাইককে স্মার্টফোনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যায় – কেননা ই-বাইকের জগতেও এখন কনেক্টিভিটির ভীষণ চল৷ মাটিয়াস লিঙ্গনার তাঁর স্মার্টফোন দিয়ে জানতে পারেন, সাইকেলটা কোথায় রাখা আছে; অথবা তিনি কোন স্পিডে বাইক চালাচ্ছেন; অথবা ব্যাটারিতে আর কতটা চার্জ আছে৷
আমস্টারডামের সাইকেল ‘‘খোয়াড়’’
নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামে মানুষের চেয়ে সাইকেলের সংখ্যা বেশি৷ অবস্থা এমন যে, সাইকেলের কারণে রাস্তাঘাটে চলাই দায়৷ ফলে শহর কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে পার্ক করা সাইকেলগুলো তুলে নিয়ে রেখে দেয় এক বিশেষ জায়গায়৷
ছবি: DW/C. Nasman
সাইকেল অনেক, জায়গা কম
আমস্টারডাম শহরে মানুষের চেয়ে সাইকেলের সংখ্যা বেশি৷ নেদারল্যান্ডসের রাজধানীর জনসংখ্যা সাত লাখের মতো৷ আর সাইকেলের সংখ্যা আনুমানিক দশ লাখ৷ সাইকেল পার্ক করার নির্দিষ্ট জায়গা আছে শহরে৷ কিন্তু সেগুলো ভরা থাকে অধিকাংশ সময়৷ তাই অনেকে রাস্তার পাশে অবৈধভাবে রাখেন সাইকেল৷ সেখানে সাইকেল চুরিও এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার৷
ছবি: DW/C. Nasman
সাইকেল যখন মাথাব্যাথার কারণ!
আমস্টারডামে সাইকেল পার্ক করা এক জটিল ব্যাপার৷ রাস্তাগুলো সরু আর সাইকেল পার্ক করার নির্দিষ্ট জায়গাও কম৷ এই সাইকেল আরোহী আমস্টারডাম ট্রেন স্টেশনের বাইরে সাইকেলটি রাখার জায়গা খুঁজছেন৷
ছবি: DW/C. Nasman
আগে আসলে, আগে পাবেন
আমস্টারডাম ট্রেন স্টেশনের বাইরে একটি খালের উপর গড়ে তোলা সাইকেল রাখার জায়গার ছবি এটি৷ তিন তলা এই পার্কিংয়ে আড়াই হাজারের বেশি সাইকেল বিনা খরচায় রাখা যায়৷ তবে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সাইকেল সরিয়ে নিতে হয়৷ আগে আসলে, আগে পাবেন ভিত্তিতে সাইকেল রাখার জায়গা পাওয়া যায় এখানে৷
ছবি: DW/C. Nasman
সাইকেল বন্যার ঝুঁকি
পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গার বাইরে রাখা সাইকেলগুলো শহর কর্তৃপক্ষ তুলে নিয়ে যায়৷ এরপর সেগুলোকে রাখা হয় সাইকেলের খোয়াড়ে, নেদারল্যান্ডসের ভাষার যাকে বলে ‘‘ফিয়েটসডিপো৷’’ আমস্টারডামের সাইকেলের খোয়াড়ের ম্যানেজার পিটার বের্কহ্যুট এই বিষয়ে বলেন, ‘‘সাইকেলগুলো না সরানো হলে গোটা শহর সাইকেলে ঢেকে যাবে৷ তখন হাঁটাচলা অসম্ভব হয়ে যাবে৷’’ ২০১২ সালে খোয়াড়ে জমা হয়েছিল ৬৫,০০০ সাইকেল৷
ছবি: DW/C. Nasman
নতুন আগত
আমস্টারডাম ট্রেন স্টেশনের কাছ থেকে তুলে আনা সাইকেলগুলো গাড়ি থেকে নামাচ্ছেন খোয়াড় কর্মীরা৷ হঠাৎ একদিন শহর কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে পার্ক করা সাইকেলের সন্ধানে বের হন৷ এরপর সেসব সাইকেলের লক কেটে গাড়িতে তুলে খোয়াড়ে নিয়ে আসেন৷ সেখানে একসঙ্গে ১২ থেকে ১৭ হাজার সাইকেল রাখা যায়৷
ছবি: DW/C. Nasman
রেকর্ড রাখা
এই সাইকেলগুলোকে খোয়াড়ে জমা করার জন্য রাখা হয়েছে৷ একটু লক্ষ্য করে দেখা যাবে প্রতিটি সাইকেলে কমলা রংয়ের ট্যাগ জুড়ে দেওয়া হয়েছে৷ এভাবে সাইকেলের রং, নকশা, সিরিয়াল নম্বর, তুলে নেয়ার স্থানসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহে রাখা হয়৷ কোনো সাইকেল আগে চুরি হয়েছিল কিনা সেটাও পরীক্ষা করে দেখা যায় এই পদ্ধতিতে৷
ছবি: DW/C. Nasman
হ্যালো, পুরনো বন্ধু!
রাস্তায় সাইকেল পার্ক করার কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে যদি দেখেন সেটি হাওয়া হয়ে গেছে, তখন কেমন লাগবে? নিঃসন্দেহে কষ্ট পাবেন আপনি৷ ২৭ বছর বয়সি ইমকা লিগ্টহার্ট একবার এমন পরিস্থিতিতে পরেছিলেন৷ তবে তিনি দ্রুতই ফোন করেন সাইকেলের খোয়াড়ে৷ পরেরদিন খোয়াড়ে গিয়ে সাইকেলটিও খুঁজে পান৷ তবে সেটি ফেরত পেতে দশ ইউরো জরিমানা গুনতে হয়েছিল তাঁকে৷
ছবি: DW/C. Nasman
প্রমাণ করুন
ফিলিপ বঙ্কের (২৬) জন্য সেদিনটা এমনিতেই খারাপ যাচ্ছিল৷ তার উপর টের পেলেন সাইকেলটাও হাওয়া৷ তবে তিনি মনে করেন, অবৈধভাবে পার্ক করে রাখা সাইকেল তুলে নেয়া ভালো, কেননা এতে করে অন্যরা পার্কিংয়ের জায়গা পায়৷ খোয়াড় থেকে নিজের সাইকেল ফিরে পেতে অবশ্য পরীক্ষা দিতে হয়েছিল ফিলিপকে৷ সাইকেলের লকে ঠিকঠাক চাবি ঢুকিয়ে পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি৷
ছবি: DW/C. Nasman
ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা
‘‘আমরা এগুলো মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই৷ এটাই আমারদের মূল উদ্দেশ্য’’, বলেন খোয়াড়ের ম্যানেজার বের্কহ্যুট৷ মালিকদের ফিরিয়ে দিতে সাইকেলগুলো তিন মাসের মতো খোয়াড়ে রাখা হয়৷ এই সময়ের মধ্যে মালিকরা সাইকেল নিতে না আসলে সেগুলো নিলামে তুলে বিক্রি করা হয়৷ বের্কহ্যুটের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, অনেক মালিকই হারিয়ে যাওয়া সাইকেলের খোঁজে খোয়াড়ে আসেন না৷ তাঁরা মনে করেন সাইকেল চুরি হয়ে গেছে৷
ছবি: DW/C. Nasman
9 ছবি1 | 9
২০১৫ সালে জার্মানিতে পাঁচ লাখের বেশি ই-বাইক বিক্রি হয়েছে৷ ক্রমেই আরো বেশি মানুষ ই-বাইক কিনছেন কেননা তারা সাধারণ সাইকেল চালিয়ে ঘেমে-নেয়ে অফিসে পৌঁছাতে চান না৷ তবে সাধারণ প্যাডেল চালানো সাইকেলও বাজারে থাকবে, বলে মাটিয়াসের ধারণা৷ তিনি বলেন, ‘‘সাইকেল কিংবা ই-বাইক চালিয়ে সর্বত্র যাওয়া যায়; যেখানে-সেখানে সাইকেল রাখা যায়, জায়গার কোনো অভাব হয় না৷''
সাইকেলের জয়যাত্রা
ইউরোপের বহু বড় শহরে সাইকেলের জয়যাত্রা৷ নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম শহরকে তো সাইকেলের রাজধানী বলা হয়ে থাকে৷ সেখানে নাকি বাসিন্দার চেয়ে সাইকেলের সংখ্যাই বেশি! ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহাগেনও সাইক্লিস্টদের প্রতি বিশেষভাবে সদয়: এখানে আছে ট্র্যাফিক লাইটে অপেক্ষা করার সময় পা রাখবার জায়গা, অথবা সাইকেলচালকদের উপযোগী ময়লা ফেলার টিন৷ জার্মানির ম্যুনস্টার শহরে মোটরওয়ের মতো সাইকেলের জন্য আলাদা করে সাইকেলওয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে৷ এই সাইকেলওয়েতে দিনে ২০ হাজার সাইকেল চলে৷ লন্ডনের মেয়র বরিস জনসন স্বয়ং সাইকেল চালান৷ সেখানেও নাকি দশ বছরের মধ্যে সাইকেলের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে৷
সাইকেলে ইউরোপ ঘুরতে চাইলে যা জানা প্রয়োজন
সাইকেলে ঘোরাঘুরি সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং জনপ্রিয়৷ আর সাইকেলে চড়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মধ্যে চলাচলও সহজ৷ এখানে দেয়া হলো সাইকেলের দশটি ‘রুট’ সম্পর্কে তথ্য৷
ছবি: picture alliance/Arco Images/K. Kreder
দশম: ড্রাভা সাইক্লিং রুট
ইটালির সাউথ টিরোল থেকে স্লোভেনিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত এই রুটে দৈর্ঘ ৩৬৬ কিলোমিটার৷ মূলত ড্রাভা নদীর তীর ঘেষে তৈরি হয়েছে রুটটি৷ ভবিষ্যতে অবশ্য এটা ক্রোয়েশিয়া পর্যন্তও যেতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/K. Kreder
নবম: এলবে সাইকেল রুট
চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগ থেকে শুরু হওয়া এই পথ শেষ হয়েছে জার্মানির নর্থ সি বা উত্তর সাগরে গিয়ে৷ দূরত্ব ১,২২০ কিলোমিটার৷ এলবে নদীর তীর ধরে এই রুট তৈরি হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/ZB/P. Zimmermann
অষ্টম: ভিয়া ক্লাউডিয়া আউগুস্টা
জার্মানির ডোনাউভ্যোর্ট থেকে শুরু হয়ে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার লম্বা এই রুটটি শেষ হয়েছে ইটালির ভেনিসে৷ প্রাচীন রোমের ‘বাণিজ্য সড়ক’ হিসেবে পরিচিত এই পথে রয়েছে আল্পস পর্বতমালার সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ৷ আর রয়েছে দক্ষিণ টিরোলে অবস্থিত রেশেন হ্রদ৷ ছবিতে সেই লেকে ডুবে থাকা একটি গ্রামের বেল টাওয়ার দেখা যাচ্ছে৷
সুইজারল্যান্ডের মালোয়া থেকে জার্মানির পাসাও পর্যন্ত বিস্তৃত এই রুট৷ তবে এ পথে সাইকেল চালাতে একটু কষ্ট আছে৷ বলা বাহুল্য, আল্পসের পাথুরে পথ পাড়ি দিতে প্রয়োজন হয় বাড়তি শক্তি৷
ছবি: picture alliance/A. Weigel
ষষ্ঠ: অতলান্ত থেকে কৃষ্ণ সাগর
সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার লম্বা এই পথ সাধারণ মানুষের পক্ষে সাইকেলে পাড়ি দেয়া প্রায় অসাধ্য৷ তবে ইউরোপে সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং সৌন্দর্য সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে চাইলে এই রুট ব্যবহার করা যেতে পারে৷ এ পথে যেতেই পড়বে নান্টেস, অরলিন্স, বাসেল, বুদাপেস্ট, বেলগ্রেড এবং বুখারেস্ট৷
ছবি: picture-alliance/ZB/W. Thieme
পঞ্চম: এচ সাইক্লিং রুট
রেশেন থেকে ভেরোনা পর্যন্ত ৩০০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই পথ চলেছে এচ নদীর তীর ঘেষে৷ মসৃণ পথে সাইকেল চালাতে চাইলে এই রুট একেবারে আদর্শ৷
ছবি: picture-alliance/U. Bernhart
চতুর্থ: নর্থ সি কোস্ট সাইকেল রুট
শেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ থেকে নরওয়ের ব্যার্গেন পর্যন্ত বিস্তৃত এই পথের দৈর্ঘ ৬,০০০ কিলোমিটার৷ পথের জার্মান অংশ মূলত বন্যা প্রতিরোধক বাঁধের উপর দিয়ে গেছে৷
ছবি: picture-alliance/Bildagentur-online/Klein
তৃতীয়: লেক কনস্টানৎস সাইকেল রুট
লেক কনস্টানৎস সাইকেল রুট ইউরোপের সেরা তিনটি সাইকেল রুটের একটি৷ সাইকেল চালানোর জন্য জার্মানি, অস্ট্রিয়া এবং সুইজারল্যান্ডের সীমান্তে অবস্থিত এই লেকটিকে ঘিরে রয়েছে ২৬০ কিলোমিটার লম্বা একটি নৈসর্গিক পথ৷
ছবি: picture alliance/P. Seeger
দ্বিতীয়: রাইন সাইকেল রুট
রাইন নদীর শুরু যেখানে, সেই সুইজারল্যান্ড থেকে শুরু হয়ে ১,২৩০ কিলোমিটার লম্বা এই পথ গিয়ে শেষ হয়েছে নেদারল্যান্ডসের রটারডামে৷ ছবিটি অবশ্য কোলন শহরে অবস্থিত ‘রাইনাউহাফেন’-এর৷
ছবি: picture alliance/H. Ossinger
প্রথম: দানিউব বাইক পাথ
জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং লম্বা সাইকেলের পথ এটি৷ প্রায় আটটি দেশের মধ্য দিয়ে বইছে দানিউব নদী, যার পাশ ধরে গেছে এই পথ৷ ২,৮৫০ কিলোমিটার লম্বা সাইকেলের এই রুটে তাই দেখা মিলবে বিভিন্ন সংস্কৃতির, ঐতিহ্যের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Jaeger
10 ছবি1 | 10
বার্লিন বাইসাইকল উইক-এর অঙ্গ হিসেবে একটি সাইকেল প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন উদ্যোক্তা ফারেজ গাব্রিয়েল হাদিদ৷ তাঁর কাছে সাইকেল শুধু পরিবহন কিংবা স্পোর্টসের যন্ত্র নয়৷ সাইকেল ইতিমধ্যে স্ট্যাটাস সিম্বল হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ফারেজ বলেন, ‘‘সমাজে শরীর ও মন সম্পর্কে একটা নতুন চেতনা দেখা দিয়েছে বলে আমার ধারণা, সাইকেল চালানো যার অঙ্গ৷ মানুষ যেন সাইকেলকে নতুন করে চিনতে শিখছে৷''
পুরনো আমলের সাইকেলের মতে দেখতে নস্টালজিয়া সাইকেলগুলোর চাহিদাও খুব৷
গাড়ির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে কার্গো বাইক৷ কাঠ কিংবা ঐ ধরনের কোনো প্রকৃতিদত্ত পদার্থ দিয়ে তৈরি এই সাইকেল৷ অভিনব ফ্রেম, চমকে দেওয়ার মতো মডেল, সিট যে আরামদায়ক হতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই – ডিজাইন হলো আসল কথা৷ আনুষঙ্গিকের ক্ষেত্রেও যা প্রযোজ্য৷ ফারেজ বলেন, ‘‘মাথার হেলমেটের ক্ষেত্রে নতুন অনেক কিছু বেরিয়েছে৷ অথবা মোবাইল রাখার কেস, বাইক অ্যাপ৷ আরেকটা ট্রেন্ড হলো মিনিমালিজম ছেড়ে আবার রঙচঙের দিকে যাওয়া, যা দেখলে পাঁচ-দশ বছর আগে লোক নাক কুঁচকোত৷ হাওয়া যে অন্যদিকে ঘুরছে, তা স্পষ্ট বোঝা যায়৷''
রেসিং সাইকেলই হোক আর ট্রেলার লাগানোই হোক, বার্লিনে এই গ্রীষ্মে সব কিছুই দেখা যাবে, বলে ধরে নেওয়া যায়৷
বহন এবং বাহন
বোঝাই-করা আলুর বস্তা, কাঠের তক্তা বা আখের আঁটি৷ মোপেড কিংবা সাইকেল কিংবা গাধার পিঠে চড়িয়ে তা বহন করার নানান পন্থা বের করে ফেলেছে মানুষ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Hase
কঙ্গো: সুকুদু
দু’টি ছোট ছোট চাকা, একটি হাতল, মালপত্র রাখার অনেকটা জায়গা - সব কিছুই কাঠের৷ এই হল সুকুদু৷ এই অসাধারণ যানটি বিশেষ করে পূর্ব কঙ্গোয় বানানো এবং ব্যবহার করা হয়৷ সুকুদু স্রেফ ঠেলে চালানো হয়, তার ইঞ্জিনের দরকার পড়ে না!
ছবি: Getty Images/AFP/J. D. Kannah
ফিলিপিনের ‘জিপনি’
ফিলিপিনের জিপনি-রা ঠিক জিপ নয়, জিপ গোত্রীয় গাড়ি৷ ভস ভস করে ধোঁয়া বেরোয়, কেননা গাড়িগুলো খুবই পুরনো৷ গোড়াতে এই জিপনি-গুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিন সৈন্যদের ফেলে রেখে যাওয়া জিপ থেকে তৈরি হতো৷ রংচং হতো ফিলিপিনি ঢঙে৷ আজ অবশ্য নতুন মডেল কিনতে পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Reboredo
ভিয়েতনামের মোপেড
ভিয়েতনামের হালকা-পলকা অটোসাইকেল বা মোটরবাইকগুলি বিশেষভাবে জনপ্রিয়৷ রাজধানী হ্যানয়-এর বাসিন্দা ৬৫ লাখ, কিন্তু মোপেড চলে ৪০ লাখ৷ টুরিস্টরাও মোপেডে চড়ে শহর দেখতে ভারী পছন্দ করেন৷
ছবি: picture alliance/AFP Creative/H. D. Nam
কম্বোডিয়ার বাঁশের ট্রেন
নাম হল নরি৷ ‘নরি’-তে আজ আর বিশেষ যাত্রী ওঠেন না৷ অপরদিকে এই বাঁশের ট্রেন ব্যাকপ্যাক টুরিস্টদের কাছে খুবই প্রিয়৷ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার গতিতে ধানক্ষেতের মধ্যে দিয়ে, ছোটখাটো গাঁ পেরিয়ে যেতে ভালো লাগে বৈকি৷...
ছবি: Getty Images/AFP/T. C. Sothy
থাইল্যান্ডের টুক টুক
টুক টুক শুধু থাইল্যান্ডেই নয়, বিশ্বের বহু দেশে চলে৷ পর্যটকদের বিশেষ প্রিয়, কেননা টুক টুক ট্যাক্সির চেয়ে সস্তা৷ টুক টুক-এর আরেক নাম হল অটো রিকশা৷
ছবি: picture alliance/P. Kittiwongsakul
কম্বোডিয়ার সাইকেল রিকশা
আমাদের উপমহাদেশেও - অন্তত মফস্বলে - সাইকেল রিকশা ছাড়া জীবন কল্পনাই করা যায় না৷ তবে কম্বোডিয়ার এই সাইকেল রিকশাটি দেখলে বোঝা যায়, হালে মডেলের কতো রকমফের ঘটছে৷
ছবি: picture alliance/Robert Harding/S. Dee
চিরকালের বাহন
গাধার পিঠে মাল টানা চলে আসছে সুপ্রাচীন কাল থেকে৷ পাঁচ হাজার বছর আগেও মাল পরিবহণের কাজে জন্তু-জানোয়ার ব্যবহার করা হতো৷ আজও বিশ্বের কোনো কোনো এলাকায় গাধা পোষা গাড়ি রাখার চেয়ে সস্তা হতে পারে!
ছবি: picture alliance/Photoshot
জার্মানিতে মালবাহী বাইসাইকেল
ইউরোপে এখন সাইকেল থেকে রিকশা, অশ্বশক্তির বদলে পেশিশক্তিতে চলে, এমন সব ধরনের যানের চল৷ কাজেই জার্মানিতে এই ধরনের ‘লাস্টেনরাড’ বা মালবাহী সাইকেল মালপত্র বওয়া থেকে শুরু করে কচিকাঁচাকে কিন্ডারগার্টেনে পৌঁছে দেওয়া, সব কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে৷