আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে এ বছর ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে৷ এ বিষয়ে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে রেলমন্ত্রীর৷
ছবি: bdnews24.com
বিজ্ঞাপন
এর আগে মঙ্গলবার রাজধানীর রেলভবনে ‘ঈদ উপলক্ষ্যে ট্রেন পরিচালনা' সংক্রান্ত সভায় আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়৷ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন৷
বৈঠকের একটি সূত্র জানিয়েছে, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৭ এপ্রিল থেকে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হবে৷ ওই দিন দেওয়া হবে ১৭ এপ্রিলের টিকিট৷ অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলবে পাঁচ দিন পর্যন্ত৷
এক নজরে বাংলাদেশের রেল
ন্যারোগেজ রেলপথ অনেক আগেই বাংলাদেশ থেকে উঠে গেছে, এখন মেট্রোরেল উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ঢাকাবাসী৷ বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের আদ্যোপান্ত দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: DW/M. Rahman
ব্রিটিশ আমলে শুরু
বাংলাদেশে রেলওয়ের কার্যক্রম শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনামলে৷ ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর দর্শনা-জগতি রেললাইন স্থাপনের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় রেল যুগের৷
ছবি: DW/M. Rahman
এখন যা আছে
বাংলাদেশ রেলওয়ের ২৭৮টি লোকোমোটিভ, এক হাজার ৬৫৬টি মিটারগেজ ও ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ এবং আট হাজার ৬৮০টি পণ্যবাহী ওয়াগন আছে৷ তবে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় অধিকাংশের অবস্থাই জরাজীর্ন৷
ছবি: DW/M. Rahman
দুই ধরনের পথ
বাংলাদেশে বর্তমানে ‘ব্রডগেজ’ এবং ‘মিটারগেজ’ এই দুই ধরনের রেলপথ চালু রয়েছে৷ দেশের পূর্বাঞ্চলে রয়েছে মিটার ও ব্রডগেজ রেলপথ৷ পূর্বাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব স্টেশন থেকে ঢাকা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ রয়েছে৷ আগে ন্যারোগেজ রেলপথ চালু থাকলেও এখন আর তার ব্যবহার নেই৷
ছবি: DW/M. Rahman
রেলপথ
বাংলাদেশে দুই হাজার ৮৭৭ কিলোমিটার রেলপথ আছে৷ তবে অনেকটাই ব্যবহারের উপযোগী নয়৷ দেশের ৪৪ টি জেলার সঙ্গে রেললাইন নেটওয়ার্ক সংযুক্ত৷
ছবি: Samdani Haque Najum
বোর্ড
১৯৮২ সালের ২ জুন পর্যন্ত একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য নিয়ে রেলওয়ে বোর্ডের মাধ্যমে রেলপথের ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো৷
ছবি: DW/M. Rahman
রেলওয়ে বিভাগ
১৯৮২ সালের ৩ জুন রেলওয়ে বোর্ড বিলুপ্ত করে এর কার্যক্রম যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের রেলওয়ে বিভাগের আওতায় নেয়া হয়৷ তখন থেকে এই বিভাগের সচিব রেলওয়ের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করতেন৷ পরে রেলওয়েকে পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলে ভাগ করা হয়৷
ছবি: DW/M. Rahman
মহাপরিচালকের হাতে রেল
১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট রেলপথের দৈনন্দিন কার্যক্রম যোগাোযাগ মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে মহাপরিচালকের হাতে ন্যস্ত করা হয়৷ তবে নীতি নির্ধারণের জন্য যোগাযোগমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে গঠন করা হয় নয় সদস্যের বাংলাদেশ রেলওয়ে অথরিটি৷
ছবি: DW/M. Rahman
রেলপথ মন্ত্রণালয়
২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে আদেশ জারি করে৷ বর্তমানে সচিবালয় সংলগ্ন রেলভবনে এই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/M. Ponir
দীর্ঘ রুট
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় স্টেশন পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব প্রায় ৫০৫ কিলোমিটার, এটিই দেশের সবচেয়ে বেশি দীর্ঘ রেলরুট৷ এই রুটে ‘দ্রুতযান’ ও ‘একতা এক্সপ্রেস’ চলাচল করে৷
ছবি: bdnews24.com
ই-টিকেটিং
বাংলাদেশ রেলওয়ে কয়ক বছর আগে ই-টিকেটিং চালু করেছে৷ যাত্রীরা অনলাইনে তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন৷
ছবি: Sony World Photography Awards/Md Enamul Kabir
সেরা পথ
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের রেলপথকে সব থেকে সুন্দর রেললাইন হিসেবে অভিহিত করেছে টেলিগ্রাফ৷ শ্রীমঙ্গলের সবুজে ঘেরা পথটুকু আসলেই দৃষ্টিনন্দন৷
ছবি: bdnews24.com/Mustafiz Mamun
জনবল
বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২৫ হাজার ৮৩ জন নিয়মিত কর্মচারী রয়েছে৷ এর বাইরে বিভিন্ন কারিগরি পদে চুক্তিতে কয়েক হাজার মানুষ কাজ করেন৷
ছবি: Samdani Haque Najum
মেট্রোরেল
মেট্রেরেল চালুর জন্য কয়েক বছর আগে কাজ শুরু হলেও ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রথমবারের মতো এই রেল সার্ভিস চালু হতে পারে৷ মেট্রেরেল চালু করতে রেলপথ স্থাপনের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে৷
ছবি: Samdani Haque Najum
লোকসান
রেলে ভ্রমণকারীর সংখ্যা বাড়লেও এর সেবার মানে উন্নতি না হওয়ায় লোকসানের মুখ থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না রেলওয়ে৷ ২০১৭ সালের থেকে ২০১৮ সালে রেলের যাত্রী বেড়েছে এক কোটিরও বেশি, কিন্তু ২০১৭ সালে রেলে এক হাজার ২০০ কোটি এবং ২০১৮ সালে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে৷
ছবি: Samdani Haque Najum
১০ খাতে দুর্নীতি
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিকিট বিক্রিতে কালোবাজারি, যাত্রীবাহী ট্রেন ইজারা দেয়া এবং ট্রেনে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনসহ বাংলাদেশের রেলখাতের ১০টি দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে প্রতিবেদন দিয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com
15 ছবি1 | 15
অন্যদিকে ঈদের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে৷ ঈদে বাড়তি চাপ সামলাতে থাকবে ১০ জোড়া স্পেশাল ট্রেন৷ সেই সঙ্গে শিডিউল বিপর্যয় ঠেকাতে রেলবহরে যুক্ত হবে ১০টি বাড়তি ইঞ্জিন৷
এসব বিষয় নিয়ে আজ বুধবার বিস্তারিত জানানো হবে৷ এ উপলক্ষ্যে দুপুর ১২টায় রেলভবনে সংবাদ সম্মেলন করার কথা রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের৷
এনএস/কেএম (যুগান্তর)
বিশ্বের দ্রুততম ট্রেন
চলুন জেনে নেয়া যাক নতুন এবং পুরোনো সব ঝোড়োগতির ট্রেনের কথা৷
ছবি: picture-alliance/AP/Yomiuri Shimbun
‘ভাসমান রাজা’
জাপানের সেন্ট্রাল রেলের ‘ম্যাগলেভ ট্রেন’ নতুন রেকর্ড গড়ে বিশ্বের দ্রুততম হবার গৌরব অর্জন করেছে৷ জাপানের এই ট্রেনই প্রথম ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার, অর্থাৎ ৩৭৩ মাইল বেগে ছুটে দেখালো৷ ম্যাগলেভ নামটা এসেছে ‘ম্যাগনেটিক’ শব্দের ‘ম্যাগ’ এবং ‘লেভিটেশন’ শব্দের ‘লেভ’ নিয়ে৷ ম্যাগনেটিক লেভিটেশনের জাদুতেই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সামলে রেল লাইনের ওপরে অনেকটা ভেসে চলে ম্যাগলেভ ট্রেন৷
ছবি: picture-alliance/AP/Yomiuri Shimbun
‘ট্রেন নয়, যেন প্লেনে চড়েছি’
জাপানের ম্যাগলেভ ট্রেনটি এখনো পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে৷ টেস্ট সেন্টারের প্রধান ইয়াসুকাজু এন্ডো জানালেন, এ পর্যন্ত হাতে গোনা যে ক’জন ট্রেনটিতে চড়ার সুযোগ পেয়েছেন তাঁদের সবাই ফিরেছেন মুগ্ধ হয়ে৷ তাঁর ধারণা প্রশ্ন করলে সবাই বলতেন, ‘‘কী গতি! মনে হলো ট্রেনে নয় যেন প্লেনে চড়েছি৷’’ জাপানের এই ট্রেন সাধারণ জনগণের জন্য পুরোদমে চলতে শুরু করবে ২০২৭ সালে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এখনো সেরা.....
৬০০ কিলোমিটার বেগে চালালেও পুরোদমে যখন যাত্রীসেবায় নামবে তখন ৫০০ কিলোমিটার বেগে চলবে জাপানের ম্যাগলেভ৷ তার আগ পর্যন্ত হয়তো যাত্রীসেবায় নিয়োজিত ট্রেনগুলোর মধ্যে দ্রুততম থাকবে চীনের শাংহাই শহরে জার্মান প্রযুক্তি দিয়ে গড়ে তোলা ট্রেন ট্রান্সরাপিড৷ শাংহাই কেন্দ্রীয় রেল স্টেশন থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ঘণ্টায় ৪৩০ কিলোমিটার বেগে ছুটে যায় ট্রেনটি, সাড়ে ৩০ কিলোমিটার দূরত্ব যেতে লাগে মাত্র ৮ মিনিট!
ছবি: picture-alliance/dpa
ফ্রান্সের গর্ব
জাপান আর চীনের ট্রেন দুটো আসলে ম্যাগনেটিক লেভিটেশন প্রযু্ক্তির উজ্জ্বলতম নিদর্শন৷ এই দুটোর বাইরে প্রথাগত চাকার ট্রেনগুলির মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত ফ্রান্সের ‘ত্র্যাঁন-আ-গ্রঁ-ভিতেস’ (টিজিভি)৷ ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫৭৪ কিলোমিটার৷ তবে ব্যয় কম রাখতে টিজিভির গতিবেগ ৩২০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়৷
ছবি: Sebastien Bozon/AFP/Getty Images
বেইজিং থেকে শাংহাইয়ের পথে গতির ঝড়
হারমোনি সিআরএইচ ৩৮০এ পুরোপুরি বিদ্যুৎ চালিত৷ ২০১০ সালে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়ে দেখার সময় এটি ঘণ্টায় ৪৮৬ কিলোমিটার বেগে ছুটেছিল৷ তবে স্বাভাবিক অবস্থায় বেইজিং-শাংহাই রুটে ৩৮০ কিলোমিটার বেগে চলে ট্রেনটি৷
ছবি: imago/UPI Photo
জার্মানিও আছে...
হাই-স্পিড ট্রেনের জগতে সেই ১৯৮৮ সালে সাড়া জাগিয়েছিল জার্মানি৷ সেবার আইসিই ট্রেন হ্যানোফার থেকে ভ্যুরৎসবুর্গের পথে ৪০৬ দশমিক ৯ কিলোমিটার গতি তুলে তাক লাগিয়েছিল৷ পরে ব্যয় কমানোর জন্য অবশ্য সর্বোচ্চ গতি ২৫০ কিলোমিটারে বেঁধে দেয়া হয়৷