‘হাতিরঝিল ড্রিম বিগিনস’
২১ জুন ২০১৪তাঁর কোম্পানি ‘ম্যাসিভস্টার স্টুডিও লিমিটেড' ছয় মাস কাজ করার পর এই গেমটি ডেভেলপ করে৷ প্রায় ২১ জন তরুণ এই গেম তৈরিতে জড়িত ছিল বলে জানান মাহবুবুল আলম৷ এর মধ্যে বয়সে সবচেয়ে ছোট মাশরুর মাহমুদ৷ সে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে৷
মাহবুবুল আলম বলেন, হাতিরঝিল প্রকল্প নিয়ে তৈরি এই গেমটি ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ বর্তমানে ঢাকা শহরের প্রায় ১৬০টি সিডির দোকানে এই গেমটি পাওয়া যাচ্ছে৷ তবে মাস খানেকের মধ্যেই সেটা সারা দেশে পাওয়া যাবে বলে ডয়চে ভেলেকে জানান তিনি৷ এছাড়া আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই গেমটির আপডেট সংস্করণ ছাড়া হবে৷ এতে গ্রাফিক্সের মান আরও উন্নত করার পাশাপাশি গেম লোড হওয়ার সময় যেন আরও কমে সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷
গেমটির বর্তমান দাম দেড়শো টাকা হলেও আপডেট সংস্করণটি ১২০ টাকায় পাওয়া যাবে বলে জানান মাহবুবুল আলম৷
কম্পিউটারের পাশাপাশি স্মার্টফোনেও যেন গেমটি খেলা যায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ আগামী ঈদের আগেই অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা যেন গেমটি খেলতে পারেন সে চেষ্টা করা হচ্ছে৷
গেমটির নামকরণ প্রসঙ্গে মাহবুবুল আলম বলেন, ‘‘তরুণদের কীভাবে স্বপ্ন দেখানো যায় সেটা নিয়ে আমরা ভাবছিলাম৷ আমাদের মনে হয়েছে, তরুণরা যেহেতু গেম খেলতে পছন্দ করে তাই তার মাধ্যমেই স্বপ্ন দেখানো যেতে পারে৷ সেসময় হাতিরঝিলের বিষয়টি মাথায় আসে৷ কারণ হাতিরঝিলে একসময় ড্রেন ছিল৷ এখন সেটা সুন্দর করে গড়ে তোলা হয়েছে৷ অর্থাৎ এর মাধ্যমে একটা ড্রিম বা স্বপ্ন দেখানো হয়েছে৷'' এই চিন্তা থেকেই গেমটির এমন নাম করা হয়েছে৷ ‘‘তবে আমি বলতে চাই যে, হাতিরঝিল গেমটা কখনো শেষ হবে না৷ অর্থাৎ এই যে, হাতিরঝিল ড্রিম বিগিনস পর্ব ওয়ান এসেছে৷ এরপর টু, থ্রি, ফোর, ফাইভ এভাবে আসতে থাকবে৷ এটা একটা সিরিজ গেম৷ কারণ আমরা চাই যে, স্বপ্ন সবসময় আমাদের মাঝে অ্যাকটিভ থাকুক৷''
গেম সম্পর্কে কিছু কথা
থ্রিডি স্টুডিও ম্যাক্স, গুগল স্কেচআপ প্রো, ব্লেন্ডার ও মায়া সফটওয়্যার ব্যবহার করে গেমটি নির্মাণ করা হয়েছে৷ গেমটিতে মোট লেভেল আছে ৩১টি৷ একটি লেভেল শেষ করে পরেরটিতে যেতে হবে৷ প্রতিটি লেভেলের জন্য সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে৷ খেলার পাশাপাশি চাইলে বিআরটিসির বাস বা গাড়িতে করে হাতিরঝিলে ঘুরে বেড়ানো যাবে৷ স্পিডবোট আর বিমান নিয়েও গেম খেলা যাবে৷
ডেভেলপার তৈরির প্রকল্প
মাহবুবুল আলম বলেন, তাঁরা গত নভেম্বর থেকে ‘উই মেক গেমস' নামে একটি কর্মসূচি শুরু করেছেন৷ এর আওতায় ইতিমধ্যে ঢাকার ১১টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের গেম তৈরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বা হয়েছে৷ এভাবে সারা দেশের চারশো স্কুলের প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি৷ ‘‘এ ব্যাপারে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও কথা হয়েছে৷ তাঁরা এতে সহায়তা করবে,'' বলেন মাহবুবুল আলম৷
তিনি বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে এই কর্মসূচি শেষ করার পরিকল্পনা করছেন তাঁরা৷ এটা সম্ভব হলে দেশে অনেক গেম ডেভেলপার তৈরি হবে৷ ‘‘ফলে একদিন বাংলাদেশ বিশ্বের ১০০ বিলিয়ন ডলারের গেম তৈরির বাজারের একটা বড় অংশের অংশীদার হবে,'' এমন স্বপ্ন দেখছেন মাহবুবুল আলম৷
সাক্ষাৎকার: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ