1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঈদে আনন্দের মধ্যেও আছে কষ্ট

২৬ জুন ২০১৭

দেশজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর৷ আবহাওয়া ভালো থাকায় দিনটি আনন্দেই কেটেছে৷ তবে রংপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু নাড়া দিয়েছে৷ হাওড়ের মানুষও ভালো নেই৷ পার্বত্য এলাকায় পাহাড় ধ্বসে নিহতদের পরিবারেও আনন্দ নেই বললেই চলে৷

ছবি: Getty Images/AFP/Str

সোমবার রাজধানীতে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রধান জামাত৷ মোনাজাত করা হয় দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায়৷ ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাতে দেশের উন্নয়নে যারা ভূমিকা রাখছেন তাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়৷ নামাজ শেষে মুসল্লিরা কোলাকুলির মধ্যদিয়ে ভাব বিনিময় করেন৷

তবে পার্বত্য এলাকায় পাহাড় ধ্বসে বাড়ি-ঘর হারা মানুষরা ঈদ করেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে৷ রাঙ্গামাটির সাংবাদিক সত্রং চাকমা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আশ্রয়কেন্দ্রে তাঁদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন৷ ভালো-মন্দ খাবার দেয়া হয়েছে তাঁদের সবাইকে৷ কষ্টের মধ্যেই আনন্দ খুঁজে নিয়েছেন তারা৷'' 

Journalist Gazi Firaz Shibly 26.06.2017 - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

রাঙ্গামাটিতে সেনানিবাসের ঈদ জামাতে অংশ নেন পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অনেকে৷ নামাজ শেষে পাহাড় ধসে নিহতদের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়৷ গোসল করে মিষ্টিমুখ না করেই নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন সুমন৷ ফিরে এসে পেয়েছেন সেনাবাহিনীর দেয়া সেমাই৷ নামাজ থেকে ফিরে দুই ছেলেকে নিয়ে সেমাইম খেয়ে তিনি বলেন, ‘‘এবার এ রকম ঈদ করতে হবে কে ভাবতে পেরেছিল৷ রান্না করতে পারেনি আমার স্ত্রী৷ মিষ্টি না খেয়ে ঈদের নামাজ পড়লাম এই প্রথম৷ কিছুই করার নেই৷ দুই ছেলেকে নানীর বাড়ি থেকে টুপি-পাঞ্জাবি দিয়েছে৷ ওদের খাইয়ে দিয়ে নিচে গিয়ে মোবাইলে ছবি তুলবো একটু পরে৷''

চট্টগ্রামে রিকশা চালান ইউসুফ৷ পাহাড় ধসের খবর পেয়ে এসে দেখেন কিচ্ছু নেই৷ এখন পরিবার নিয়ে মাথা গুঁজেছেন রাঙামাটি সরকারি কলেজে৷ ঈদের জামাতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও পারেননি, কারণ, সরবরাহ করা সেমাই, নাস্তা জোগাড়ে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে তাঁকে৷ ধসে পড়া এক পাহাড়ের পাশের এই মসজিদেও হয় ঈদের জামাত৷ তিনি আরও জানান, এই আশ্রয়কেন্দ্রের কয়েকজন কাছের মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলন৷ তবে এই সহায়-সম্বল স্বজনহারা মানুষগুলোর দুর্দশা ভোলেনি রাঙামাটির সর্বসাধারণ৷ শহরের সব মসজিদেই নিহতদের আত্মার শান্তি, গুনাহ মাফ এবং দুঃস্থদের কল্যাণ কামনায় হয়েছে বিশেষ মোনাজাত৷

Journalist Satrang Chakma 26.06.2017 - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

আগের দিন রবিবার সকালে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পাহাড় ধসে দুর্গতদের মাঝে ঈদের নতুন কাপড় বিতরণ করা হয়েছে৷ রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত পরিবারের সব সদস্যের মাঝে নতুন কাপড় বিতরণ করা হয়৷ রাঙ্গামাটি সেনাবাহিনী তাদের পরিচালনাধীন ৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে পাহাড়ধ্বস হওয়ার পর আশ্রিতদের মাঝে নতুন পোশাক বিতরণ করে৷

চট্টগ্রামের সাংবাদিক গাজী ফিরোজ শিবলী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘চট্টগামের যেসব এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী পৌঁছেছে৷ তবে তাঁদের বাড়িঘর এখনও মাটির নিচে৷ কষ্ট নিয়েই আশ্রয়কেন্দ্রে তাঁরা ঈদ উৎযাপন করেছে৷ তবে রাঙ্গামাটিতে ঈদের আনন্দ অনেকটাই ম্লান৷ সেখানকার মানুষ সবকিছু মিলিয়ে কষ্টে আছে৷''  

এদিকে দেশবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ৷ তিনি বলেছেন, ‘‘ঈদ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে গড়ে তোলে সৌহার্দ, সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধন৷ শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যময় সমাজ গঠনে ঈদুল ফিতরের আবেদন চিরন্তন৷'' সোমবার ঈদের সকালে বঙ্গভবনে বিভিন্ন শ্রেণি, পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি৷

দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ সোমবার গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আল্লাহর রহমতে প্রত্যেকটি ঈদের জামাত সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে৷ দেশের মানুষ আজকে আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ উদযাপন করছেন৷ মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হচ্ছে৷ আশা করি, মানুষের জীবনমান আরও উন্নত হবে৷ বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে৷ বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল৷''

ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘‘এবার থামেন, ১০ বছর তো অনেক দুর্নীতি, লুটপাট করেছেন, গুম করেছেন৷ দেশ বাঁচাতে এবার নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন৷'' রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এক শ্রেণির বিত্তশালীরা বিদেশে গিয়ে মার্কেট করছে৷ আরেক শ্রেণি দুর্যোগের মধ্যে পড়ে আছে৷ হাওরে এই ঈদের সময় দুর্ভিক্ষ চলছে৷ তাঁরা একবেলাও খেতে পারছে না৷ বিশেষ করে হাওড়ের আগাম বন্যায় সেখানে বিপর্যয় নেমে এসেছে৷'' 

আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ