উইগুর: জাতিসংঘের বৈঠকে চীন-পশ্চিমা দেশের সংঘাত
১৩ মে ২০২১![](https://static.dw.com/image/56997381_800.webp)
বুধবার জাতিসংঘের ভার্চুয়াল বৈঠকে উইগুর নিয়ে চীনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালো অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি সহ অনেক দেশ। চীন অবশ্য আগে থেকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, এই বৈঠকে যেন সদস্য দেশগুলি যোগ না দেয়। কারণ, এই বৈঠক পুরোপুরি চীন-বিরোধী। তবে অন্য দেশকে বৈঠকে যোগ দিতে মানা করলেও চীন অবশ্য এই বৈঠকে ছিল। ছিল আরো পঞ্চাশটির মতো দেশ।
এই বৈঠকের উদ্যোক্তা ছিল অ্যামেরিক, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য। নিউজিল্যান্ড, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের দেশগুলি তাদের সমর্থন করে। সেখানেই উইগুর নিয়ে অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগে বৈঠক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বৈঠকে কে কী বললেন
অ্যামেরিকর প্রতিনিধি লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ড বলেছেন, ''শিনজিয়াংয়ে উইগুরদের গণহত্যা করা হচ্ছে। এটা মানবিকতার বিরুদ্ধে অপরাধ। চীন যতদিন এই অপরাধ করবে, ততদিন অ্যামেরিকাও এর বিরুদ্ধে কথা বলবে।''
জার্মানির প্রতিনিধি বলেন, ''চীনের হুমকি সত্ত্বেও যে সব দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠকে যোগ দিয়েছেন, তাদের স্বাগত জানাচ্ছি। উইগুররা যতদিন স্বাধীনভাবে বাঁচতে না পরছেন, যতদিন তাদের আটক করা না হচ্ছে, জোর করে শ্রম দিতে বাধ্য করা হচ্ছে, মানবাধিকার ভাঙা হচ্ছে, ততদিন জার্মানিও চুপ থাকবে না। উইগুরদের ধর্মপালনের অধিকার, মতামত প্রকাশের অধিকার আছে। সেসব তাদের দিতে হবে।''
যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি বারবারা উডওয়ার্ড শিনজিয়াংয়ের পরিস্থিতিকে ''বর্তমান সময়ে মানবাধিকার ভঙ্গের সব চেয়ে খারাপ উদহরণ বলেছেন।''
চীনের প্রতিক্রিয়া
চীনের কূটনীতিক গুও জিয়াকুনের বক্তব্য ছিল, ''আমরা আপনাদের শিনজিয়াং পরিদর্শন করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তবে কোনো ধরনের তদন্ত করতে দেব না।''
জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বৈঠকের ১৫টি উদ্যোক্তা দেশের কাছে লিখিত মেসেজ পাঠিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, এই ধরনের বৈঠক ডাকার আগে দুই বার ভাবা উচিত। যারা এই বৈঠক সমর্থন করবেন, তাদের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক খারাপ হতে পারে।
শিনজিয়াং নিয়ে
উডওয়ার্ড বলেছেন, ''উপগ্রহ থেকে নেয়া ছবি, অত্যাচারিতদের জবানবন্দি, চীন সরকারের নথি সহ অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে আমরা রীতিমতো উদ্বিগ্ন।'' তিনি জানিয়েছেন, ''একটা বিশেষ জাতিগত সম্প্রদায়ের উপর ভয়ঙ্কর দমননীতি নিয়ে চলছে চীন। ধর্মপালন করাটা অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উইগুরদের উপর পরিকল্পনামাফিক অত্যাচার করা হচ্ছে।''
গ্রিনফিল্ড বলেছেন, ''শিনজিয়াংয়ে মানুষকে অত্যাচার করা হচ্ছে। মেয়েদের জোর করে বন্ধ্যা করা হচ্ছে।''
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল বলেছেন, ''শিনজিয়াংয়ে ১০ লাখের বেশি উইগুর ও অন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে আটক করে রাখা হয়েছে।''
জিএইচ/এসজি(রয়টার্স, এপি)