৪৫ বছর আগে মার্কিন মুলুক থেকে জার্মানিতে এসেছিল উইন্ডসার্ফিং৷ উন্ডসার্ফিং বলতে বোঝায় অসম্ভব গতি আর আশ্চর্য সব কেরামতি৷ পণ্ডিতরা বলেন, আজও তা আছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে৷ তবে অতীতে উইন্ডসার্ফিং-এর আরেক রকম চেহারা ছিল৷
যে বস্তুটিকে সেলিং বোর্ড, উইন্ডসার্ফিং বোর্ড বা ভালোবেসে শুধুমাত্র বোর্ড বলা হয়ে থাকে, কালে স্মিট সেটা প্রথম মার্কিন মুলুক থেকে জার্মানিতে আনেন ১৯৭২ সালে৷ বোর্ডে চড়ে উইন্ডসার্ফিং করার প্রথম প্রচেষ্টার কথা ৭৭ বছর বয়সি কালে-র আজও মনে আছে: ‘‘দিনটা খুব ঝোড়ো ছিল, উইন্ডসার্ফিং শুরু করার পক্ষে যা আদৌ ভালো নয়৷ কাজেই আমাকে প্রথমদিন অনেকবার জলে পড়তে হয়েছে৷’’
অসম্ভব গতি, আশ্চর্য কেরামতির নাম উইন্ডসার্ফিং
04:19
This browser does not support the video element.
দ্বিতীয় দিনে বাতাস একটু পড়ে এলে কালে সত্যিই তাঁর বোর্ডে চড়ে ‘সেলিং’ করতে শুরু করেন – আজ পর্যন্ত সে বোর্ড তাঁর কাছে আছে, যে বোর্ডে চড়ে কালে সে আমলে জার্মানির সমুদ্রসৈকতে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন৷ কালের মনে পড়ে: ‘‘উইন্ডসার্ফিং দেখে সবাই চমকে যেতো, হাঁ করে দেখতো৷ তখন উইন্ডসার্ফারও খুব বেশি ছিল না, কাজেই যারা ছিল, তাদের বাজার দেখে কে!’’
কিছুদিনের মধ্যেই উইন্ডসার্ফিং-এর হুজুগ চালু হয়ে গেল – সবাই উইন্ডসার্ফিং করতে চায়৷ আজও হাজার হাজার মানুষ উইন্ডসার্ফিং শিখতে সার্ফ স্কুলে যায় – কিন্তু খুব কম লোকই টেঁকে, কেননা উইন্ডসার্ফিং শেখাটা সহজ নয়৷
শানিয়া রাফায়েল আর লিজা ক্লোস্টারের বয়স ১৬-১৭; দু'জনেই ফ্রিস্টাইল সার্ফার, কিন্তু বাতাস না থাকলেও সার্ফবোর্ড নিয়ে যে মজা করা যায়, সেটা তারা জানে৷ শুধু মজা তো নয় – এ দু'জনের কাছে উইন্ডসার্ফিং একটা অনুভূতি৷ শানিয়া বলে, ‘‘সার্ফিং করার সময় যে অনুভূতি হয়, তা বলে বর্ণনা করা যায় না৷ সে এক আশ্চর্য অনুভূতি৷’’
সার্ফিংয়ের সবচেয়ে ভয়ংকর জায়গা
হাঙর উপদ্রুত জলরাশি, তার নীচে ওৎ পেতে থাকা ধারালো প্রবাল আর বিশাল বিশাল ঢেউয়ের মাঝেই সার্ফিংয়ে নামে অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষ৷ অনেক সময় যা প্রাণঘাতীও হয়ে উঠে৷ এ রকম কিছু স্থানের খবর রয়েছে ছবি গ্যালারিতে৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Bielmann
হাওয়াইয়ের নির্মম তরঙ্গ
হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের ওয়াহু দ্বীপের উত্তর উপকূলে বাঞ্জাই পাইপলাইনকে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাণঘাতী তরঙ্গের এলাকা বলে মনে করা হয়৷ এটি সার্ফিং এলাকা হিসাবেও বিখ্যাত৷ এখানে অল্প পানিতে এমন একটি প্রবাল রয়েছে যেখানে, ৮০’র দশক থেকে এখানে সাত ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন৷ এরপরও মানুষ ও মুখো হওয়া ছাড়েনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Bielmann
তাহিতির টিহপু
ফরাসি পলিনেশীয় দ্বীপপুঞ্জের তাহিতি দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলে টিহপুতে এ রকম আরেকটি প্রবাল রয়েছে৷ যেখানে পানির উপরিতলের মাত্র এক মিটার নীচেই রয়েছে ধারালো ওই প্রবাল৷ এখানে মাঝে মাঝেই উঁচু উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়ে উপকূলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Boissy
ক্যালিফোর্নিয়ার ম্যাভরিক্স
ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাঞ্চলে সানফ্রান্সিসকোর ম্যাভরিক্সে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সার্ফিং প্রতিযোগিতা হয়৷ এই প্রতিযোগিতার নাম ‘ম্যাভরিক্স ইন্টারন্যাশনাল’৷ এত বড় প্রতিযোগিতার ভেন্যু হলেও এটা সার্ফিংয়ের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ জায়গা নয়৷ এখানকার ঢেউগুলো এত গতিতে আসে যে, জেট স্কি’কে সার্ফারের সঙ্গে ধরে রাখতে আলাদা ব্যবস্থা নিতে হয়৷ সেই সঙ্গে পানির তলের উঁচু-নীচু পাথুরে কাঠামো পরিস্থিতিকে আরো অনিশ্চিত করে রাখে৷
ছবি: Getty Images/E. Shaw
পিয়াহি
হাঙরের আক্রমণে যেমন ভবিষ্যতবাণী চলে না, তেমনি চলে না, এই জায়গার ঢেউ নিয়েও৷ এখানকার ঢেউ হরহামেশাই ১৮ মিটার অতিক্রম করে৷ পানির নীচের কাঠামোর কারণে এটা হয়ে থাকে৷ এখানে একজন সার্ফারের উপর দিয়ে ৫০ ফুট উঁচু ঢেউ চলে যেতে পারে৷ এলাকাটি হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাউই-এ অবস্থিত৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Bielmann
প্রেইরা ডু নর্টে
তবে উঁচু ঢেউয়ের সার্ফিংয়ে এটাই সর্বোচ্চ রেকর্ড নয়৷ এর জন্য যেতে হবে পর্তুগালে৷ এখানেই মার্কিন সার্ফার গেরেট ম্যাকনামারা সবচেয়ে উঁচু সার্ফিংয়ের রেকর্ড করেন৷ যেখানে ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল ৭৮ ফুট বা ২৪ মিটার৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Leong
শিপস্টার্ন ব্লাফ
অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ার দক্ষণে শিপস্টার্ন ব্লাফে বড় বড় ঢেউ তৈরি হয়৷ যা আছড়ে পড়ে পাশের শক্ত খাড়া পাথুরে দেয়ালে৷ সঙ্গে আছে তীব্র ঠাণ্ডা আবহাওয়া এবং প্রচুর হাঙর৷ এখানে তাই খুব অভিজ্ঞরাই সার্ফিং করতে পারেন৷
ছবি: Imago/UIG
ওয়াইমেয়া সাগর
বড় বড় ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সার্ফিং করার জন্য যে সব স্থান বিখ্যাত, ওয়াইমেয়া সাগর তার একটি৷ হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের ওয়াহুতে এর অবস্থান৷ এখানে ৬০ ফুট উঁচু ঢেউয়ের সাক্ষাৎ মেলে৷ এখানে বড় ঢেউয়ের সার্ফিংয়ের একটা প্রতিযোগিতাও হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Tanner
হাঙরের আক্রমণে বন্ধ যে সৈকত
হাঙরের বারংবার আক্রমণে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের বালিনা শহরের সৈকতগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Hunt
পানির নীচে ‘হা’ করা হাঙর
সার্ফিংয়ে আপনি যেমন সফল হতে পারেন, তেমনি যে কোনো সময় পড়ে যেতে পারেন পানিতেও৷ এমন আশঙ্কা থাকে সব সময়ই৷ কিন্তু যেখানে সার্ফিং করছেন, সেই এলাকাটা যদি এমন হয়, নীচে ‘হা’ করে আপনাকে গিলতে অপেক্ষা করছে অসংখ্য হাঙর, তাহলে কেমন হবে? ঘটনাটা অনেকটা এরকমই৷ পৃথিবীর সবচেয়ে হাঙর উপদ্রত দক্ষিণ আফ্রিকার সিল আইল্যান্ড এরপরও সার্ফিংয়ের জন্য বিখ্যাত স্থান৷
সে অনুভূতি বর্ণনা করার ক্ষমতা তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফিলিপ ক্যোস্টার-এর থাকলেও থাকতে পারে৷ ফিলিপ এসেছেন ফেমার্ন দ্বীপের সার্ফ ফেস্টিভালে অংশ নিতে; সদ্য একটা চোট থেকে সেরে উঠে ধীরে ধীরে আবার নিজের শৈলি ফিরে পাচ্ছেন৷ ফিলিপ বলেন, ‘‘জলের ওপর দিয়ে ভেসে যাওয়ার সময় সত্যিই একটা স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়া যায়, যা অবর্ণনীয়৷ জলের ওপর কতো কী করা যায় – নিজেকে কীরকম মুক্ত বোধ হয়৷ আমার কাছে এর চেয়ে সুন্দর অনুভূতি আর কিছু নেই৷’’
চরম স্পোর্ট নয়
কিন্তু এই এক্সট্রিম বা চূড়ান্ত সার্ফিং করার মতো দক্ষতা ও কৌশল খুব কম মানুষই আয়ত্ত করে৷ বাকিরা জলের ওপর দিয়ে সোজা ভেসে যেতে পারলেই খুশি৷ ‘সার্ফ-ম্যাগাজিন’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক আন্ড্রেয়াস এয়ার্বে জানেন যে, সার্ফিং-এর ইতিহাসে একাধিক ভুল বিকাশ ঘটেছে: ‘‘যে কারণে সার্ফিং একটা চরম ভাবমূর্তি পেয়েছে: জলের ওপর নানা কায়দা-কসরৎ আর ‘অ্যাকশান' ক্রমেই আরো কঠিন, আরো ভীতিকর হয়ে উঠেছে৷ ইতিমধ্যে পরিস্থিতি আবার কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে৷ আমাদের পত্রিকাতেও আমরা সাধারণ সার্ফারদের দিকে অনেক বেশি মনোযোগ দিচ্ছি, যাতে আরো বেশি মানুষ সার্ফিং-এর মজা পান আর সার্ফবোর্ড নিয়ে জলে নামেন৷’’
বাংলাদেশে সার্ফিং ও তার সম্ভাবনা
নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের জন্য বিখ্যাত দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পর্যটন শহর কক্সবাজার সার্ফিংয়ের জন্যও বেশ উপযুক্ত৷ সেখানে আজকাল প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বেশ কয়েকজন সার্ফার৷ তাদের মধ্যে মেয়েরাও রয়েছে৷ ছবিঘরে থাকছে সেসব কথা৷
ছবি: Getty Images/A. Joyce
প্রথম জাতীয় প্রতিযোগিতা
২০১৫ সালের এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে দু’দিনব্যাপী জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়৷ এতে ১০ জন মেয়ে সহ ৭০ জন সার্ফার অংশ নেয়৷
ছবি: Bangladesh Surfing Association
আগের কথা
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংস্থা ‘সার্ফিং দ্য নেশনস’-এর কর্মীরা ২০০৩ সালে প্রথম বাংলাদেশে যান৷ এর দুই বছর পর তাদের উদ্যোগে কক্সবাজারে সার্ফিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়৷ এরপর বিভিন্নভাবে তারা স্থানীয় সার্ফারদের প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা দিয়ে এসেছে৷ এরই ধারাবাহিকতায় এপ্রিলে প্রথম জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়৷
ছবি: Getty Images/A. Joyce
ইতিবাচক ধারা
সার্ফিংকে এগিয়ে নিতে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সার্ফিং অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক সার্ফিং সংস্থার সদস্যপদও পেয়েছে তারা৷ সার্ফিং প্রতিযোগিতা আয়োজনে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও ব্র্যাকের একটি সহযোগী সংস্থা৷ ছবিতে সার্ফার জাফর আলমকে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Farjana KHAN GODHULY/AFP/Getty Images
পর্যটনকে এগিয়ে নেয়া
সার্ফিং ভক্ত গায়ক ও অভিনেতা তাহসান মনে করেন, সার্ফিংয়ের মাধ্যমে কক্সবাজারকে বিশ্ব দরবারে আরও ইতিবাচকভাবে তুলে ধরা সম্ভব৷ প্রথম জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘সার্ফিং এমন একটা বিষয় যেটা খুবই আকর্ষণীয় ও রোমাঞ্চকর৷ তাই অনেক মানুষ এই খেলা দেখতে আসে৷ তাই এটার মাধ্যমে আমরা কক্সবাজারকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে পারি৷’’
ছবি: Bangladesh Surfing Association
মেয়েদের মধ্যে প্রথম
জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে মেয়েদের মধ্যে প্রথম হয়েছে ১২ বছরের রিপা৷ বছর দুয়েক আগে সমুদ্রসৈকতের ধারে পানির বোতল, চিপস আর ঝিনুকের মালা বিক্রি করত সে৷ এখন সার্ফিং করে পরিবারকেও সহায়তা করছে রিপা৷
ছবি: Getty Images/A. Joyce
রানার আপ
মেয়েদের মধ্যে রানার আপ হয়েছে ১৩ বছরের শবে মেহেরাজ৷ উত্তাল সমুদ্রে ভেসে বেড়াতে সে-ও খুব ভালোবাসে৷
ছবি: Getty Images/A. Joyce
প্রশিক্ষকের কথা
ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে রিপা ‘কক্সবাজার লাইফ সেভিং সার্ফিং ক্লাব’-এর দুই প্রশিক্ষক শিফাত ও রাশেদের (ছবিতে ডানপাশে) কথা জানান৷ রাশেদ আলম ঐ ক্লাবের সভাপতি৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মেয়েরা সমুদ্রসৈকতে কাজ করত৷ তারা পানি, চিপস এবং ডিম বিক্রি করত৷ তাদেরই আমরা সার্ফিংয়ে আসার জন্য উৎসাহিত করলাম৷’’
ছবি: Getty Images/A. Joyce
ছিল বাধা
প্রশিক্ষক শিফাত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মেয়েদের সার্ফিংয়ে আনা সহজ ছিল না৷ এখনও ধরে রাখা কঠিন৷ অ্যামেরিকার এলিয়ান্ট নামে এক নারীর অনুদানে এখনো আমরা কয়েকটি মেয়েকে ধরে রাখতে পেরেছি৷ উনি আমাদের অনুদান পাঠান৷ আর সেই টাকা থেকেই আমরা প্রতিটি মেয়েকে মাসে আড়াই হাজার টাকা করে দেই৷ পাশাপাশি পোশাক ও বোটগুলো দেয়া হচ্ছে সেই অনুদানের টাকাতেই৷’’
ছবি: Getty Images/A. Joyce
অনুদান বন্ধ হয়ে গেলে?
বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন শিফাত৷ তিনি বলেন, ‘‘গরিব পরিবারের এই মেয়েদের বয়স একটু বাড়লেই পরিবার থেকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়৷ ফলে নতুন নতুন কিশোরীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এখানে আনতে হচ্ছে৷ আগাগোড়া মেয়েদের ধরে রাখাটাই বড় চ্যালেঞ্জ৷’’
ছবি: Getty Images/A. Joyce
স্বাধীন হয়ে উঠবে মেয়েরা
রাশেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মেয়েরা স্কেটিং করছে, সার্ফিং করছে, শিখছে৷ তারা নিজেদের জীবন নিজেরাই রক্ষা করছে৷ আমার বিশ্বাস, তাদের এই প্রচেষ্টা তাদের পরিবারের স্বপ্নেও একদিন পরিবর্তন ঘটাবে৷ অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের নিয়ে কিছু একটা করার স্বপ্ন দেখবেন৷ আর মেয়েরা পরিবারে স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে৷’’
ছবি: Getty Images/A. Joyce
10 ছবি1 | 10
তবে সার্ফিং-এর আগে অনেকেই যে বস্তুটি করেন তার নাম হলো এসইউপি বা স্ট্যান্ড-আপ প্যাডলিং – সার্ফবোর্ডের উপর খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে প্যাডল দিয়ে দাঁড় বাওয়া৷ নরম প্লাস্টিকের বোর্ডগুলো হাওয়া ভরে ফুলিয়ে নেওয়া যায়, কাজেই গাড়িতে রাখার কোনো অসুবিধে নেই৷ এ ধরনের প্লাস্টিকের বোর্ডের ওপর ইনফ্ল্যাটেবল ‘সেল’ বা পাল বসানোরও ব্যবস্থা থাকে – সব মিলিয়ে সার্ফিং-এর সাজসরঞ্জাম আজকাল এতোই হালকা হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, উইন্ডসার্ফিং-এর আরো জনপ্রিয় হবার পথে সেটা আর কোনো বাধাই নয়৷ আন্ড্রেয়াস বলেন, ‘‘বাতাস না থাকলে, প্যাডলিং করা চলে৷ বাতাস আর একটু জোরালো হলে অধিকাংশ এসইউপি বোর্ডের ওপর পাল বসিয়ে নেওয়া যায়৷ আর প্যাডলিং থেকে একবার ভারসাম্য রাখার অভ্যেস হয়ে গেলে পর, ঐ বোর্ড নিয়ে উইন্ডসার্ফিং করা সহজেই রপ্ত করা যায়৷’’
৫০ বছর পরেও কালে স্মিট-এর দৃঢ় বিশ্বাস যে, উইন্ডসার্ফিং-এর বিরাট ভবিষ্যৎ আছে: ‘‘উইন্ডসার্ফিং আবার ফিরে আসবে – তা সে এই প্রজন্মেই হোক বা তার পরের কিংবা পরের প্রজন্মেই হোক৷ সার্ফবোর্ডের আকর্ষণ কেউ এড়াতে পারবে না৷’’