আবার উইম্বলডন জিতলেন জোকোভিচ। জিতলেন ২০ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম।
বিজ্ঞাপন
এতদিন রেকর্ড ছিল রজার ফেডেরার ও রাফায়েল নাদালের কাছে। ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার রেকর্ড। রোববার উইম্বলডনে তিন ঘণ্টার লড়াইয়ে তিনি ইটালির বেরেত্তিনিকে হারালেন ৬-৭, ৬-৪, ৬-৪, ৬-৩ গেমে। বেরেত্তিনি ভালো খেলেছেন। কিন্তু জোকোভিচের নৈপুণ্যের সামনে তিনি দাঁড়াতে পারেননি।
জিতেই ঘাসের কোর্টে শুয়ে পড়েন জোকোভিচ। তারপর চলে যান কোচিং বক্সের কাছে। সেখানে গোরান ইভানিসেভিচ ও মারিয়ান ভাজদাকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। জাকোভিচ এখন তার ফর্মের শীর্ষে। নাদাল ও ফেডেরার তাদের কেরিয়ারের শেষ পর্বে। তাই জোকোভিচ যে আরো গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতবেন তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই।
হঠাৎ রেগে জরিমানা পাওয়া টেনিস খেলোয়াড়েরা
সম্প্রতি ইউএস ওপেনের ফাইনালে সেরেনা উইলিয়ামস আম্পায়ারের উপর ক্ষেপে গিয়ে তাঁকে ‘চোর’ বলে জরিমানা গুনেছেন৷ টেনিসে এমন ঘটনা অনেকবারই ঘটেছে৷
ছবি: Getty Images/D. Korotayev
সেরেনা উইলিয়ামস
ইউএস ওপেনের ফাইনালে চেয়ার আম্পায়ারের একটি সিদ্ধান্ত পছন্দ না হওয়ায় রেগে গিয়ে তাঁকে ‘চোর’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস৷ কার্লোস রামোস নামের পর্তুগিজ ঐ আম্পায়ারের উদ্দেশ্যে এমন মন্তব্য করায় সেরেনার বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ এনে ১৭ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/MediaPunch
আবারও সেরেনা
২০০৯ সালের ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালে বেলজিয়ামের কিম ক্লাইস্টাসের বিরুদ্ধে খেলছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস৷ কিন্তু লাইনসওম্যানের একটি সিদ্ধান্তের পরই ক্লাইস্টাসের বিজয় নিশ্চিত হয়৷ সেরেনা লাইনসওম্যানের ঐ সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে তাঁকে ‘বল দিয়ে গলায় জোরে আঘাত করার’ হুমকি দিয়েছিলেন৷ পরিণতিতে এক লক্ষ ১৭ হাজার ডলার জরিমানা ও দুই বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয় তাঁকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Gombert
জন ম্যাকেনরো
টেনিস কোর্টে রাগ দেখাতে পটু ছিলেন মার্কিন এই টেনিস তারকা৷ ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে আসরের ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে৷ সেখানে ম্যাকেনরো আম্পায়ারকে তাঁর মায়ের সঙ্গে এমন কিছু করতে বলেছিলেন, যা মায়ের সঙ্গে করা একেবারেই শোভন নয়৷ তারও আগে ১৯৮৭ সালের ইউএস ওপেনে আপত্তিকর আচরণের জন্য দুই মাস নিষিদ্ধ করা হয়েছিল তাঁকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Ossinger
লেইটন হিউইট
২০০১ সালের ইউএস ওপেনে মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড় জেমস ব্লেকের সঙ্গে খেলছিলেন বিশ্বের সাবেক এই এক নম্বর খেলোয়াড়৷ এক পর্যায়ে এক কৃষ্ণাঙ্গ লাইনসম্যানের দেয়া সিদ্ধান্তে উত্তেজিত হয়ে ব্লেক এবং লাইনসম্যানের গায়ের রংয়ের মিল নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন৷ এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটাতেন অস্ট্রেলীয় হিউইট৷ আরেকবার ২০০৮ সালের উইম্বল্ডনে আম্পায়ারের সঙ্গে অখেলোয়াড়সুলভ আচরণের জন্য এক হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছিল তাঁকে৷
ছবি: Reuters/T. Peter
মারাত সাফিন
তিনি খেলছেন অথচ ব়্যাকেট ভাঙার ঘটনা ঘটেনি, তা হয় না৷ বিশ্বের সাবেক এই এক নম্বর খেলোয়াড় ২০১১ সালে নিজেই জানিয়েছিলেন যে, তিনি তাঁর ক্যারিয়ারে মোট ১,০৫৫টি ব়্যাকেট ভেঙেছেন৷ সুতরাং বুঝতেই পারছেন, কত সহজে রেগে উঠতেন তিনি আর সেজন্য তাঁকে জরিমানাও করা হতো প্রায়ই৷
ছবি: Getty Images/D. Korotayev
মার্কোস বাঘদাতিস
২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের একটি ম্যাচ চলার ফাঁকে উত্তেজিত হয়ে নিজের চার-চারটি ব়্যাকেট ভেঙে ফেলেছিলেন৷ এর মধ্যে দুটি ব়্যাকেটের প্যাকেজ তখনও খোলা হয়নি! এই ঘটনার জন্য তাঁকে ৮০০ ডলার জরিমানা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Walton
টিম হেনম্যান
ব্রিটিশ টেনিস প্লেয়ার টিম হেনম্যানকে ১৯৯৫ সালে উইম্বল্ডন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল৷ ঐ প্রতিযোগিতা থেকে কোনো খেলোয়াড়কে বহিষ্কারের ঘটনা ওটাই প্রথম ছিল৷ হেনম্যানের অপরাধ, রাগ কমাতে তাঁর দ্রুতবেগে ছুঁড়ে মারা বল গিয়ে লেগেছিল এক বল কুড়ানো তরুণীর মাথায়৷ হেনম্যান অবশ্য পরে সবার সামনে ঐ তরুণীর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন৷ তিনি তাঁকে একগুচ্ছ ফুল ও গালে ছোট্ট চুম্বন উপহার দিয়েছিলেন৷
ছবি: Getty Images/ALLSPORT/G. M. Prior
জেফ তারাঙ্গো
১৯৯৫ সালের উইম্বল্ডনে আম্পায়ারের সঙ্গে বিতর্কের পর জিনিসপত্র গুটিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন জেফ তারাঙ্গো৷ কিন্তু তাঁর স্ত্রী বেনেডিক্ট যাবার আগে ঐ আম্পায়ারের মুখে দুবার চড় মারেন৷ সে কারণে বেনেডিক্টের স্বামীকে ৬৩ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়৷ সঙ্গে গ্র্যান্ড স্লাম খেলার উপর দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়৷ পরে অবশ্য শাস্তি কমিয়ে ২০ হাজার ডলার জরিমানা ও এক বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Neilsen
ডেভিড নালবান্ডিয়ান
আর্জেন্টাইন এই টেনিস খেলোয়াড় অবশ্য ইচ্ছে করে ঘটনাটা ঘটাননি৷ হতাশা থেকে তিনি লাইন জাজের চেয়ারের নীচের অংশে লাথি মেরেছিলেন৷ কিন্তু কপাল খারাপ, একটি স্লিন্টার গিয়ে বিঁধে চেয়ারে বসা ঐ জাজের পায়ে৷ এতে তাঁর পা কেটে রক্ত বেরিয়ে যায়৷ এই ঘটনায় নালবান্ডিয়ানকে বহিষ্কার করা ছাড়াও ৭০ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/Actionplus
ডেনিস শাপোভালোভ
ক্যানাডার ১৭ বছরের এই তরুণ টেনিস খেলোয়াড় গতবছর ডেভিস কাপে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে খেলছিলেন৷ এক পর্যায়ে রেগে গিয়ে তিনি বেশ জোরে বল ছুঁড়ে মারেন৷ কিন্তু সেটি গিয়ে লাগে আম্পায়ার আরনাও গাবার (ছবি) বাম চোখে৷ সঙ্গে সঙ্গে সেই চোখ ফুলে ওঠে৷ পরে গাবাকে অস্ত্রোপচারও করাতে হয়েছিল৷ এই ঘটনায় ক্যানাডাকে প্রতিযোগিতা থেকে বহিষ্কার করা হয়৷ আর শাপোভালোভকে সাত হাজার ডলার জরিমানা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/empics/The Canadian Press/J. Tang
10 ছবি1 | 10
জোকোভিচ মোট ছয়বার উইম্বলডন জিতলেন। এবার নিয়ে পরপর তিনবার। প্রতিবারই জেতার পর তিনি কোর্টের ঘাস চিবিয়ে থাকেন। এবারও করেছেন। তারপর বল রুমে গিয়ে প্রিন্স চার্লস ও কেটের সঙ্গে দেখা করেছেন।
তবে শেষ ছয়টা ম্যাচে মাত্র একটি সেট হারিয়েছিলেন জোকোভিচ। তবে ফাইনালে তাকে লড়াই করে জিততে হয়েছে। প্রথম সেটে হেরে যাওয়ার পর তিনি যেভাবে পরপর তিনটি সেটে জিতেছেন, তা অসাধারণ প্রতিভাধর, লড়াকু টেনিস প্লেয়ারের আদর্শ উদাহরণ। ৩৪ বছর বয়সি জোকোভিচ এভাবে খেলতে পারলে আরো বেশ কয়েকটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে তার খুব একটা অসুবিধা হবে না।
মেয়েদের খেতাব বার্টির
উইম্বলডনে মেয়েদের খেতাব জিতলেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশলে বার্টি। ৪১ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার নারী টেনিস প্লেয়ার আবার উইম্বলডন জিতলেন। শনিবার ফাইনালে তিনি হারিয়েছেন ক্যারোলিনা প্রিসকোভাকে। ১৯৭১ সালে তার দেশের এভোনে গুলাগং যে পোশাক পরে খেলে জিতেছিলেন, বার্টিও সেই রকম পোশাক পরে খেললেন। পুরস্কার নিয়ে তিনি বলেন, ''আশা করি, আমি এভোনেকে গর্বিত করতে পেরেছি।''