উগান্ডায় ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেল বাড়ছে
২ মে ২০২৪জোসেলিন কেম্বাবাজি একটি মোটরসাইকেলের গর্বিত মালিক- যে-কোনো মোটরসাইকেল নয়, প্রায় একটি ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেল৷ বছরখানেক আগে তিনি একটি ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেল কোম্পানি থেকে ঋণ পেয়েছেন৷ তিনি জানান, ‘‘তারা আমাকে একটা অফার দিয়েছিল৷ আমি কোনো ডাউন পেমেন্ট দেইনি৷ তারা আমাকে একটি বাইক দেয়৷ আমি তাদের প্রতিদিন পাঁচ হাজার শিলিং দেই৷''
অর্থাৎ মাসে প্রায় ৩২ ইউরো৷ কেম্বাবাজির মোটরসাইকেল সৌর বিদ্যুৎচালিত ব্যাটারিতে চলে- যে বিষয়টি উগান্ডায় একেবারে নতুন৷
পে-এজ-ইউ-গো ভিত্তিতে ই-মোটরসাইকেল দেওয়ার পরিকল্পনা এসেছে স্টার্ট-আপ ‘জেম্বো'র কাছ থেকে৷ তারা চীন থেকে সস্তার ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেল আমদানি করে৷ কোম্পানির ওয়ার্কশপে ব্যাটারি চার্জ করা হয়৷
উগান্ডার সব গ্যাসোলিনচালিত মোটরসাইকেল যদি ইলেক্ট্রিকে পরিণত করা যায় তাহলে বছরে প্রায় ১০০ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড কম নির্গত হবে৷ এখনও দেশটিতে প্রায় ছয় লাখ গ্যাসোলিনচালিত মোটরসাইকেল আছে৷
কিন্তু এটা ভবিষ্যৎ হতে পারে না বলে মনে করে জেম্বো৷
জেম্বোর সিইও জেমস ওবারোস্কি জানান, ‘‘উগান্ডায় প্রতিমাসে প্রায় ১২ হাজার পেট্রোল মোটরসাইকেল আমদানি করা হচ্ছে৷ অথচ এগুলো ইলেক্ট্রিক হওয়া উচিত৷ সব মোটরসাইকেল ইলেক্ট্রিক করতে চাইলে আমাদের শুধু বাইক কেনায় বিনিয়োগ পেলেই চলবে না, ব্যাটারি ও চার্জ দেওয়ার অবকাঠামো তৈরিতেও বিনিয়োগ লাগবে৷''
এজন্য আগামী কয়েক বছরের জন্য কয়েক মিলিয়ন ইউরো প্রয়োজন৷ এখন পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে যে সুবিধা পাওয়া গেছে সেটা হচ্ছে, ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেল আমদানিতে শুল্ক পরিহার করা হয়েছে৷
এরপরও একটি ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেলের দাম প্রায় ১,৩০০ ইউরো- স্থানীয় বিচারে যা সস্তা নয়৷ তারপরও কাম্পালায় প্রায় এক হাজার ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেল চলছে৷
ওবারোস্কি বলেন, ‘‘চাহিদা আছে৷ যাত্রীরাও এমন বাইক পছন্দ করেন৷ কারণ এতে তাদের অনেক টাকা বাঁচে৷ এটি চালাতে ফুয়েল বাইকের চেয়ে কম খরচ হয়৷ আমাদের শুধু বিনিয়োগের অভাব৷ নতুন ব্যবসার নতুন মডেলের স্টার্ট-আপ হিসেবে বিনিয়োগ পাওয়া কঠিন৷ স্টার্ট-আপের জন্য প্রচলিত উপায়ে অর্থ পাওয়ার সুযোগ নেই৷''
অন্তত তারা আন্তর্জাতিক কোম্পানি ও সংস্থা, বিশেষ করে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সহায়তা পাচ্ছে৷
এ ধরনের সবুজ প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন গুরুত্বপূর্ণ৷ তা না হলে আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলো ইলেক্ট্রিক পরিবহণে বিনিয়োগ করতে পারবে না৷
এভাবে তারা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকেও নিজেদের রক্ষা করতে পারবে৷
আফ্রিকান উন্নয়ন ব্যাংকের হিসেবে, ২০৩০ সালের মধ্যে উগান্ডার ২৭ বিলিয়ন ইউরোর বেশি লাগবে৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত দেশটি গ্লোবাল নর্থের কাছ থেকে মাত্র ১০ শতাংশ অর্থ পেয়েছে৷
সবশেষ জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে৷
এখন অর্থ ছাড় করা হচ্ছে যেন আফ্রিকার আঞ্চলিক ব্যাংকগুলো জেম্বোর মতো ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেল স্টার্ট-আপগুলোকে সহায়তা করতে পারে৷
ইকুইটি ব্যাংক উগান্ডার এলিজাবেথন মোয়েরিন্ডে কাসেদে বলেন, ‘‘আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য আরও অর্থ আসছে৷ ইকুইটি ব্যাংক গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের অ্যাক্রিডিটেশন পেয়েছে৷ সে কারণে আমরা অবশ্যই আরও কিছু করতে সমর্থ হব৷ আমাদের শুধু একটু সাহসী হতে হবে এবং আমাদের নিজেদের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে যেন আমরা আমাদের মোট ঋণছাড়ের অন্তত ৩০ শতাংশ বিভিন্ন সবুজ প্রকল্পে দিতে পারি৷''
কেম্বাবাজি ইতিমধ্যে পরিবেশবান্ধব হয়েছেন এবং এই বিনিয়োগ করে তিনি খুশি৷ যদিও এখনও চার্জ শেষ হয়ে যাওয়া ব্যাটারি পরিবর্তনের জন্য চার্জিং স্টেশন খুঁজে পাওয়া কঠিন৷
জুলিয়াস মুগাম্বা, ইউলিয়া মিল্কে/জেডএইচ