‘উগ্র ইসলামপন্থিদের সন্তানরা জার্মানির জন্য হুমকি'
৬ আগস্ট ২০১৮
জার্মানিতে উগ্র ইসলামপন্থি পরিবারে বেড়ে উঠা সন্তানরা দেশটির জন্য হুমকি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন আভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হানৎ-জর্জ মাসেন৷ এ নিয়ে জার্মানিতে চলছে তুমুল আলোচনা৷
বিজ্ঞাপন
উগ্র ইসলামপন্থি পরিবারে বেড়ে উঠা সন্তানেরা আগামী বছরগুলোতে জার্মানির নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে হুমকির মধ্যে ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
আভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা বিভাগের এক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে ফুংকে মিডিয়া গ্রুপ এক প্রতিবেদনে জানায়, উগ্র ইসলামপন্থি পরিবারে বেড়ে উঠা সন্তানদের মধ্যে উগ্রপন্থি ভাবধারার বিস্তার ঘটছে৷
প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, এই ধরনের পরিবারের শিশুরা কট্টরপন্থি মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠছে, যা তাদের মধ্যে নিজ গোত্রের বাইরের লোকজন সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেয়৷
প্রতিবেদনটি মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ বিধ্বস্ত এলাকা থেকে আসা পরিবারগুলোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷
‘আঙ্কের’ অভিবাসী ট্রানজিট সেন্টার খুলল বাভেরিয়া
অস্ট্রিয়া সীমান্ত দিয়ে জার্মানিতে প্রবেশ করা অভিবাসীদের জন্য প্রথম বিতর্কিত ট্রানজিট সেন্টার চালু করেছে দক্ষিণাঞ্চলীয় বাভেরিয়া প্রদেশ৷ আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা কমানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Puchner
বাভেরিয়ায় প্রথম ট্রানজিট সেন্টার
জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফারের অভিবাসন বিষয়ক মহাপরিকল্পনার অংশ এসব সেন্টার৷ আশ্রয়প্রার্থীকে এদেশে থাকতে দেওয়া হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়া পর্যন্ত তাদের এসব কেন্দ্রে রাখার পরিকল্পনা থেকে এগুলো করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Puchner
নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন
বাভেরিয়া মোট সাতটি ‘আঙ্কের’ সেন্টার চালু করবে৷ প্রতিটিতে এক থেকে দেড় হাজার শরণার্থীকে রাখা যাবে৷ জার্মান শব্দ ‘আনকুন্ফট’, এনশাইডুং ও রুকফুরুং (পৌঁছানো, সিদ্ধান্ত, ফেরত) থেকে এই নামকরণ করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Puchner
বিচ্ছিন্নতার সতর্কবার্তা
সেন্টারগুলোকে বিতাড়ন শিবির আখ্যায়িত করে উদ্বেগ জানিয়েছে বিভিন্ন চার্চ গ্রুপ, শরণার্থীদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার কর্মী এবং বিরোধী দলগুলো৷ এর মধ্য দিয়ে অভিবাসী কমিউনিটিগুলোকে বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে সতর্ক করেছেন তারা৷ বেসরকারি সংস্থা সেইভ দ্য চিলেড্রন বলছে, এসব সেন্টার আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য দুশ্চিন্তা এবং তাদের ওপর বলপ্রয়োগের জায়গা হবে বলে সেগুলো শিশুদের জন্য সহায়ক হবে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Puchner
সমঝোতার ফসল
চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফারের শেষ মুহূর্তের রাজনৈতিক সমঝোতার ফল হিসেবে এসেছে এসব সেন্টার৷ অভিবাসীদের সীমান্তে নিয়ে যাওয়ার সেহোফারের প্রাথমিক পরিকল্পনা বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছিল, যাতে ম্যার্কেলের খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী পার্টি, তাদের বাভেরিয়ায় সহযোগী দল সিএসইউ ও সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের জোট সরকার উৎখাতের উপক্রম হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld
জার্মানিতে উৎসাহে ভাটা
এসব সেন্টার প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকার পর্যায়ে হলেও এগুলোর দায়দায়িত্ব মূলত রাজ্যগুলোর ওপর৷ বাভেরিয়া প্রথম এই উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে আগামী অক্টোবরে গুরুত্বপূর্ণ ভোটের লড়াইয়ে নামতে হবে সেহোফারের রক্ষণশীল সিএসইউকে৷ তবে অন্য রাজ্যগুলোর কতগুলো মাইগ্রেন্ট ট্রান্সফার সেন্টার তৈরিতে সময় নিচ্ছে, আর অন্যগুলো এটা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Puchner
5 ছবি1 | 5
এদিকে রক্ষণশীল রাজনৈতিক দলগুলো নাগরিকদের উপর নজরদারির বয়সসীমা কমিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে৷ আইন অনুযায়ী, সর্বনিম্ন ১৪ বছর বয়সি কোনো নাগরিককে নজরদারি করতে পারে সরকার৷ বলা বাহুল্য, গোয়েন্দা বিভাগের এ প্রতিবেদনটি রাজনৈতিক দলগুলোর নজরদারির বয়সসীমা কমিয়ে আনার দাবিকে আরো জোরালো করেছে৷
খ্রিষ্টীয় সামাজিক ইউনিয়নের মুখপাত্র স্টেফান মায়ের বলেন, বয়সসীমা কমিয়ে এনে নজরদারি করার বিষয়টি মূলত শিশুদেরকে অধিকার সুরক্ষা করতে সহায়তা করবে৷ খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দলের সদস্য ও নর্থ-রাইন-ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের ইন্টেরিয়র মিনিস্টার হ্যারবার্ট রেউলের দাবি, মধ্যপ্রাচ্যর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশগুলো থেকে আসা শারীরিক ও মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত ১৪ বছরের কমবয়সি শিশুদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে৷