উগ্র ডানপন্থিদের অভিযোগ: জার্মান ফুটবল দল ততটা জার্মান নয়
২ জুলাই ২০২৪
ইউরো ২০২৪--এ স্বাগতিক জার্মানির সমর্থনে নেমেছেন রাজনীতিবিদেরা৷ ব্যতিক্রম উগ্র ডানপন্থি দল এএফডির কয়েকজন নেতা৷ তারা কটাক্ষ করে বলছেন, এবারের জার্মান দলটি ‘খুব বেশি রাজনৈতিকভাবে নির্ভুল’, বৈচিত্র্যময় এবং ততটা জার্মান নয়৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে চলছে ইউরোপীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ বা ইউরো ২০২৪৷ স্বাগতিক দলের সমর্থনে নেমেছেন রাজনীতিবিদেরাও৷ তবে ব্যতিক্রম উগ্র ডানপন্থি দল এএফডির কয়েকজন নেতা৷ তারা কটাক্ষ করে বলছেন, এবারের জার্মান দলটি ‘খুব বেশি রাজনৈতিকভাবে নির্ভুল’, বৈচিত্র্যময় এবং ততটা জার্মান নয়৷
রাজনৈতিক সমর্থন
ইউরোতে জার্মানির ম্যাচগুলোতে নিয়মিত উপস্থিত থাকছেন কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কার্ল লাউটারবাখ৷ এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফিও দিচ্ছেন৷ তার সঙ্গে সেই সেলফিতে অন্যদের মধ্যে দেখা গেছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফ্যাজাকে৷ শলৎস এমনিতে সোশ্যাল মিডিয়াতে ততটা সরব না হলেও দলকে উৎসাহ যুগিয়েছেন৷ সাধারণভাবে এবারের আসর নিয়ে আয়োজক হিসেবে জার্মানি যথেষ্ট উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখিয়ে যাচ্ছে৷
ইউরো ২০২৪: কার পকেট কত ভারি?
01:58
এএফডির অবস্থান
উলটো দিকে অলটারনেটিভ ফর জার্মানি বা এএফডি দলের রাজনীতিবিদদের মধ্যে উৎসাহের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে৷ উগ্র-ডানপন্থি হিসেবে পরিচিত দলটি আশ্রয় ও অভিবাসন নিয়ে যথেষ্ট রক্ষণশীল৷ দলটির ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য ম্যাক্সিমিলিয়ান ক্রাহ দলটিকে ‘রাজনৈতিকভাবে নির্ভুল ভাড়াটে দল’ বলে মন্তব্য করেছেন৷ দলটির টুরিঙ্গিয়া রাজ্যের নেতা বিয়োর্ন হ্যোকে দলের বৈচিত্র্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং একে ‘রংধনু মতাদর্শের’ বলে উল্লেখ করেছেন৷
দলে বৈচিত্র্য
জার্মানির ইউরো দলটিতে বেশ কয়েকজন বিদেশি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড় রয়েছেন৷ যেমন, ইওনাটান টাহ, বেনিয়ামিন হেনরিকস, আন্টোনিও রুডিগার, ইলকায় গুনডোয়ান, এমেরি চান, ডেনিৎস উনডাফ, ভালডেমা আন্টন, লিরয় জানে ও জামাল মুসিয়ালা৷ দলটি জার্মানির বৈচিত্র্যকে প্রতিনিধিত্ব করে৷ কারণ দেশটিতে সাড়ে আট কোটি মানুষের আড়াই কোটি বিদেশি বংশোদ্ভূত৷
একটি জরিপ ও প্রতিক্রিয়া ইউরোর ঠিক আগে একটি জরিপ করা হয়েছিল৷ সেখানে অংশ নেয়া ২১ ভাগ জার্মান দলটিতে আরো শ্বেতাঙ্গ জার্মান দেখতে চান বলে জানিয়েছেন৷ এই সমর্থকদের ৪৭ ভাগ এএফডির সরাসরি সমর্থক৷ সে সময় এই দলকে প্রত্যাখ্যান করার আলোচনা শুরু হয় এই সমর্থকদের মধ্যে৷ এমন কথাও উঠেছে, নিজেদের অবস্থান প্রমাণ করতে এএফডি জার্মানির হার কামনা করছে৷ এখন দেখার বিষয় যদি জার্মানি ইউরোই জিতে যায় তাহলে এই সমর্থকদের প্রতিক্রিয়া কী হয়৷
আন্ড্রেয়াস স্টেন-সিমন্স/জেডএ
ইউরো ২০২৪: যে ফুটবলারেরা অন্য দেশের হয়ে খেলতে পারতেন
ইউরো ২০২৪-এ অংশ নেওয়া কয়েকজন ফুটবলার বর্তমান দেশের হয়ে না খেলে অন্য দেশের হয়েও খেলতে পারতেন৷ ছবিঘরে তাদের কথা থাকছে৷
ছবি: Michael Memmler/Eibner-Pressefoto/picture alliance
জামাল মুসিয়ালা
খেলছেন জার্মানির হয়ে৷ তবে খেলতে পারতেন ইংল্যান্ডের হয়েও৷ কারণ জার্মানিতে জন্ম নেওয়া মুসিয়ালা সাত বছর বয়সে ইংল্যান্ডে চলে যান৷ সেখানে চেলসি ফুটবল অ্যাকাডেমিতে তিনি ফুটবলার হয়ে ওঠেন৷ ইংল্যান্ডের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলেও খেলেছেন৷ তবে পরবর্তীতে জার্মানির জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সিদ্ধান্ত নেন মুুসিয়ালা৷ ২০২১ সালের মার্চে জার্মানির হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেন তিনি৷
ছবি: Ralf Ibing/firo Sportphoto/picture alliance
কিলিয়ান এমবাপে
বাবা ক্যামেরুনের আর মা আলজেরিয়ার হওয়ায় ঐ দুই দেশের হয়েই খেলতে পারতেন এমবাপে৷ তবে বয়সভিত্তিক থেকে শুরু করে জাতীয় দল সবসময় ফ্রান্সকেই বেছে নিয়েছেন তিনি৷
ছবি: FRANCK FIFE/AFP
মাটেও রেটেগি
আর্জেন্টিনায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা রেটেগি ২০২৩ সালের মার্চে ইটালি জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন৷ আর্জেন্টিনার বোকা জুনিয়র্সে ২০১৮ সালে পেশাদার জীবন শুরু করা রেটেগি পরবর্তীতে ইটালির সিরি এ দল জেনোয়াতে যোগ দেন৷ তার দাদা-দাদি, নানা-নানির মধ্যে দুজন ইটালির হওয়ায় ইটালির হয়ে খেলার সুযোগ হয় তার৷
ছবি: Giuseppe Maffia/IMAGO
কালাম স্টাইলস
ইংল্যান্ডের গ্রেটার ম্যানচেস্টারে জন্মগ্রহণ করা স্টাইলসের দাদা-দাদি, নানা-নানি হাঙ্গেরি ও ইউক্রেনের৷ ফলে দুই দেশের হয়েই খেলার সুযোগ ছিল তার৷ তবে তিনি হাঙ্গেরিকে বেছে নিয়েছেন৷ ২০২২ সালের মার্চে তিনি প্রথম হাঙ্গেরির হয়ে খেলেন৷
ছবি: Zac Goodwin/PA Images/IMAGO
ইলকায় গুনডোয়ান
জার্মানির গেলজেনকির্শেনে তুর্কি মা-বাবার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন গুনডোয়ান৷ তার দাদা খনিকর্মী হিসেবে কাজ করতে তুরস্ক থেকে জার্মানিতে এসেছিলেন৷ গুনডোয়ান জার্মানির হয়ে খেলছেন৷
ছবি: ANP/IMAGO
লামিন ইয়ামাল
মরক্কোর বাবা ও ইকুয়েটোরিয়াল গিনির মায়ের ঘরে স্পেনে জন্মগ্রহণ করেন ইয়ামাল৷ ১৬ বছর ৫০ দিন বয়সে স্পেনের জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার৷
ছবি: Samuel Gonzalez/DAX Images/NurPhoto/picture alliance
জেরেমি ফ্রিমপং ও মেম্ফিস ডেপায়
জেরেমি ফ্রিমপং (বামে) ও মেম্ফিস ডেপায় (ডানে) দুজনই নেদারল্যান্ডসের হয়ে খেলেন৷ তবে দুজনেরই ঘানার হয়ে খেলার সুযোগ ছিল৷ ফ্রিমপং ইংল্যান্ডের হয়েও খেলতে পারতেন, কারণ সাত বছর বয়সে তিনি মা-বাবার সঙ্গে ইংল্যান্ডে জীবন শুরু করেছিলেন৷
ছবি: Koen van Weel/ANP/IMAGO
রোমেলু লুকাকু
মা-বাবা দুজনই ডিআর কঙ্গোর৷ তবে লুকাকুর জন্ম বেলজিয়ামে৷ ১১৪ খেলায় ৮৩ গোল করে বেলজিয়ামের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M.Becker
হাকান চালহানলু
জার্মানির মানহাইমে তুর্কি মা-বাবার ঘরে জন্ম তার (৫ নং জার্সি পরিহিত)৷ কখনও তুর্কি কোনো ক্লাবে খেলেননি তিনি৷ তবে ২০১৩ সাল থেকে তিনি তুরস্ক জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন৷
ছবি: picture-alliance/empics/O. Humphreys
গ্রানিট জাকা ও জেরডান শাকিরি
দুইজনই খেলছেন সুইজারল্যান্ডের হয়ে৷ তবে আলবেনিয়ার হয়েও খেলতে পারতেন তারা৷ জাকার জন্ম সুইজারল্যান্ডে হলেও শাকিরির জন্ম আলবেনিয়ায়৷