1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উচ্চশিক্ষা চাই, তবে কতটা?

১০ অক্টোবর ২০১১

ডবল মাস্টার্স, পিএইচডি না এমবিএ? ক্যারিয়ারের একটা প্রান্তে এসে অনেকেই মুখোমুখি হন এমন একটা প্রশ্নের৷ অথচ একটা সময় ছিল, যখন শুধু ‘আন্ডারগ্র্যাজুয়েট’ করলেই ভালো বেতনের এবং নির্ভরশীল একটি চাকরি পাওয়া যেত৷

ছবি: Fotolia/Yuri Arcurs

এখন যুগ বদলেছে৷ আর তার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে প্রতিযোগীতা৷ তাই আজকাল, নিদেনপক্ষে একটা মাস্টার্স ছাড়া ভালো চাকরি পাওয়া প্রায় অসম্ভব৷ এর সঙ্গে আপনি যদি বহিরাগত বা বিদেশি হন – তাহলে তো কথাই নেই! পিএইচডি, একাধিক মাস্টার্স, এমনকি পিএইচডির সঙ্গে এমবিএ করেছে – এমন লোকও একেবারে অপ্রতুল নয়৷ যেমন অ্যান থমাস'এর কথায়, ‘‘অবশ্য সব ক্ষেত্রে বিষয়টা এক নয়৷ যেমন ডাক্তারি পড়লে খুব একটা উচ্চশিক্ষার সরাসরি প্রয়োজনীয়তা নেই৷ আবার ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বা কম্পিউটার সায়েন্স পড়লে শুধু একটি মার্স্টাস থাকলেই ভালো চাকুরির সুযোগ রয়েছে৷ আর যাঁদের পরবর্তীতে শিক্ষকতা বা গবেষণায় যাওয়ার ইচ্ছে আছে, তাদের জন্য শুধু মাস্টার্স না করে সরাসরি পিএচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া ভালো৷ অবশ্য সে ইচ্ছে না থাকলে, এমবিএ করাটাই হয়তো বেশি বুদ্ধিমানের৷ অন্তত আজকের বাজারে৷''

কিন্তু পিএইচডি করার বৈশিষ্ট কি? মনে আছে, আমার এক বন্ধু বলেছিল পিএইচডি মানে – ‘পার্মানেন্ট হেড ড্যামেজ'৷ শুনে হেসেছিলাম৷ আদতে পিএইচডি হচ্ছে কোনো বিষয় নিয়ে ‘স্পেশালাইজেশন'৷ অর্থাৎ, সে বিষয়টি সম্পর্কে সবটুকু জ্ঞান আরহন করা৷ অবশ্য আমার সেই বন্ধু বলেছিল, এই ডিগ্রি নিয়ে ক্যারিয়ারের পথ হবে খুব সংকীর্ণ, অথচ উঁচুমাত্রায় স্পেশালাইজড৷ আমি আবারো হেসেছিলাম৷

সে যাই হোক৷ বর্তমানে কিন্তু অনেক পিএইচডি ধারীকেই কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে৷ এর একটাই কারণ৷ যাঁরা পিএইচডি করেন, তাঁদের প্রাথমিক লক্ষ্য থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করা৷ কিন্তু বাস্তবে, পিএইচডি করার পর প্রফেসর পদে চাকরি পেতে এক থেকে দুই বছর পোস্ট ডক্টরেট করতে হয়৷ ওদিকে, প্রয়োজনের তুলনায় বাজারে বেশি ডক্টরেট থাকায়, অনেককেই বেকার বসে থাকতে হচ্ছে৷

ছবি: Fotolia/LVDesign

কোনো কোনো ক্ষেত্রে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে একজন ডক্টরেট'এর বদলে অ্যাসেসিয়েট প্রফেসার দিয়েই কাজ চালিয়ে নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি৷ উপরন্তু বয়স্ক প্রফেসররা বহুদিন ধরে পদ আঁকড়ে থাকায়, নতুন প্রফেসরদের জন্য সুযোগ-সুবিধাও কম৷ তাছাড়া, প্রফেসর পদে চাকরি পাওয়ার পরও যে শান্তি নেই৷ গবেষণার জন্য ‘ফান্ডিং' নিয়ে যুদ্ধ এবং পেপার প্রকাশের দৌড়ে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়, যা কিনা খুব সাধারণ ব্যাপার ডক্টরেটদের মধ্যে৷

অন্যদিকে, এমবিএ'এর বৈশিষ্ট্যই হলো ‘জেনারেলাইজেশন'৷ এর ফলে চাকরির বাজারে নিজের ক্যারিয়ার ট্র্যাক বদলে নানা দিকে যাওয়ার সুযোগ থাকে৷ আমার সেই বন্ধুর ভাষায়, এমবিএ হলো – ‘মিডিওকোর বাট অ্যারোগেন্ট'৷ তবে এর মূল সমস্যা হলো, আজকাল প্রচুর বিশ্ববিদ্যালয় এই এমবিএ ডিগ্রী দিচ্ছে৷ তাই খুব ভালো কোনো জায়গা থেকে এমবিএ না করলে তার মূল্য তেমন একটা নেই৷ তার ওপর এমবিএ'এর খরচও বেশি৷ থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা ইত্যাদির খরচ ছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শীর্ষ স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ করতে বর্তমানে খরচ হয় প্রায় ৫০ হাজার ডলার৷

অ্যান থমাস জানান, ‘‘এমবিএ করে জেনারেলাইজেশনের পিঠে চড়ে চাকরি-বাজারে ভালো মানের বেতন পাওয়া হয়তো যায়৷ কিন্তু এতে করে নিজের পছন্দের বিষয় থেকে সরে ম্যানেজমেন্টের কাজে ব্যস্ত হয়ে যেতে হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে৷ তাই সাধারণত যাঁরা এমবিএ পড়তে আগ্রহী, তাঁদের সঙ্গে পিএইচডি করতে চাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের একটা বেশ চরিত্রগত পার্থক্য আছে৷ অবশ্য এমবিএ'এর সঙ্গে সায়েন্স বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কোনো বিষয়ে আন্ডারগ্রাজুয়েট, মাস্টার্স বা পিএইচডি থাকলে কথাই নেই৷ এধরণের চাকরিকেই যে বলা হয় ‘গোল্ডেন কলার জব'৷''

স্বাভাবিকভাবেই, উচ্চশিক্ষার যে কোনো পথ বেছে নেওয়ার আগে, এটা জানা দরকার যে প্রতিটি মানুষের গল্প স্বতন্ত্র৷ তাছাড়া, প্রতিটা মানুষের অভিজ্ঞতা, শিক্ষা এবং তার ফলাফলও হয় ভিন্ন৷ তাই প্রত্যেকের উচিত নিজের লক্ষ্যটিকে প্রথমে নিশ্চিত করা এবং একটি পরিষ্কার পরিকল্পনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া৷

প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ