যুক্তরাষ্ট্র-ইরান
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩![epa03667267 United States President Barack Obama addresses the audience during an interfaith service held at the Cathedral of the Holy Cross in Boston, Massachusetts, USA, 18 April 2013. Three people were killed along with over 170 others injured on 15 April 2013 in an apparent terrorist attack near the finish line of the 117th Boston Marathon in the northeastern US city. EPA/CJ GUNTHER](https://static.dw.com/image/16755870_800.webp)
জুনের নির্বাচনের পর পরমাণু সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি হওয়া এবং তার দেশের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পথ খুঁজছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি৷ জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সে সুযোগ এসে গেল৷
তিন দশকেরও বেশি সময় পর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসতে যাচ্ছে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র৷ ১৯৭৯ সালে ইরানে বিপ্লবের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই৷ ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র – জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এই পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের সাথে থাকছে জার্মানি৷ আর এই ৬টি দেশের সাথে প্রথমবারের মত পরমাণু ইস্যুতে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কোনো দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের ব্যবস্থা না থাকলেও সুযোগ থাকছে মুখোমুখি আলোচনার৷
তবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান ক্যাথরিন অ্যাশটনের আমন্ত্রণে পরমাণু ইস্যুতে বড় কোনো আলোচনা হওয়ার আশা নেই৷ কূটনীতিকরা বলছেন, বৃহস্পতিবারের বৈঠকেই ইরানের নতুন নেতার মনোভাব সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যাবে৷ তাঁরা বলছেন, এখানে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি যে কেবল শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক খাতে ব্যবহারের জন্য, সেটা প্রমাণের সুযোগও থাকছে ইরানের হাতে৷
পরমাণু সমস্যার সমাধানে রোহানির আশাবাদ
ওয়াশিংটন পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বুধবার রাতে রোহানি বলেছেন, পরমাণু ইস্যুতে আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যেই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি৷ তিনি আরো জানান, এটা কয়েকটি মাসের ব্যাপার, বছরের নয়৷
প্রেসিডেন্ট পর্যায়ে বৈঠকে রাজি ইরান
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরো উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় যেতে রাজি ইরান – সংবাদ সংস্থা ইরনাকে এমনটাই জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ৷ মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট রোহানির বৈঠক করতে কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন তিনি৷ নিউ ইয়র্কে এই আলোচনা শুরু হতে পারতো বলে আশা করেছিলেন জারিফ৷ সেটা একটা শুভ সূচনা হতো৷ রোহানি জানিয়েছেন, জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে তিনি সব ধরনের কাজ করতে প্রস্তুত৷ জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন উপলক্ষ্যে বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করেছে মার্কিন সরকার৷ কিন্তু বৈঠক আয়োজনের জন্য যথেষ্ট সময় হাতে নেই বলে জানিয়েছেন জারিফ৷ তিনি বলেছেন, ওবামার কথায় আগের চেয়ে ইরানের প্রতি নমনীয় ভাব ফুটে উঠেছে৷
টুইটারে জারিফ লিখেছেন, পরমাণু সমস্যা সমাধানের ঐতিহাসিক সুযোগের দ্বারপ্রান্তে তারা৷ তবে এজন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে ইরানের নতুন মনোভাবের সাথে সমঝোতা করতে হবে৷
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমল
এদিকে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ার আগেই এশিয়ার বাজারে তেলের দাম কমে গেছে৷ দুদেশের সম্পর্কে উন্নয়নের ইঙ্গিত পেয়েই এমনটা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
মঙ্গলবার জাতিসংঘে ওবামা ও রোহানি পরপর ভাষণ দেন এবং দুজনেই পরমাণু সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে নিজস্ব আগ্রহের কথা জানান৷ তাই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের উপরই নির্ভর করছে ইরানের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যে নিষেধাজ্ঞা আছে, তা কতটা শিথিল করা হবে বা আদৌ হবে কিনা৷
এপিবি/এসবি (এএফপি/ডিপিএ)