1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তরপ্রদেশ আবার যোগীর

১০ মার্চ ২০২২

উত্তরপ্রদেশে আবার সরকার গঠন করতে চলেছেন যোগী আদিত্যনাথ। পরপর দুইবার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে রেকর্ড করতে চলেছেন তিনি।

প্রাথমিক ফলে অনেক এগিয়ে যোগী আদিত্যনাথ। ছবি: MONEY SHARMA/AFP

উত্তরপ্রদেশে বিপুল ভোটে জয় পেলেন যোগী আদিত্যনাথ। অখিলেশ যাদবের সাইকেলকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছে যোগীর পদ্ম। গতবারের তুলনায় অখিলেশ অনেক ভালো ফল করেছেন। বিজেপি-র আসন গতবারের তুলনায় কমেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও যোগীকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জায়গায় পৌঁছাতে পারেননি অখিলেশ। বিজেপি এগিয়ে ২৬৯টি আসনে, অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি ১২৯টি আসনে এগিয়ে। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর যাবতীয় চেষ্টা সত্ত্বেও কংগ্রেস দুইটি আসন পেয়েছে। মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির অবস্থা আরো খারাপ। তারা পেয়েছে একটি আসন। গতবারের তুলনায় বিজেপি ৫৪টি আসন কম পাচ্ছে। অখিলেশ ৭৮টি আসন বেশি পেয়েও যোগীর ধারেকাছে নেই।

এই ফলাফল থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, উত্তরপ্রদেশে লড়াই হয়েছে সরাসরি বিজেপি ও সমাজবাদী পার্টির মধ্যে। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর কংগ্রেস এবং মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি উত্তরপ্রদেশে এই বিধানসভা নির্বাচনে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।

অখিলেশের চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করে যোগী আদিত্যনাথ আবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন। উত্তরপ্রদেশের ইতিহাসে সাধারণত কেউ পরপর দুইবার মুখ্যমন্ত্রী হন না। যোগী সেই মিথ ভাঙতে চলেছেন। সম্ভবত দ্বিতীয়বার এই ঘটনা ঘটতে চলেছে। উত্তরপ্রদেশে এবার যোগীই ছিলেন বিজেপি-র মুখ। মোদী নন, তাঁকে সামনে রেখেই ভোটে গিয়েছিল বিজেপি। আর অনিবার্যভাবে যোগী প্রচারপর্বে হিন্দুত্বের প্রসঙ্গ তুলেছেন। বিভাজনের চেষ্টা করেছেন। মন্দির-মসজিদ প্রসঙ্গ তুলেছেন, সেই সঙ্গে ৮০-২০-র কাহিনি শুনিয়েছেন। ৮০ শতাংশ হিন্দু ও ২০ শতাংশ মুসলিমকে বিভাজনের কাহিনি। তিনি বারবার অযোধ্যায় রামমন্দির, মথুরায় কৃষ্ণজন্মভূমি ও কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের করিডোরকে প্রচারে সামনে এনেছেন। এভাবে মেরুকরণ বা বিভাজনের একটা চেষ্টা সমানে করেছে বিজেপি। 

ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, যোগীর ৮০-২০-র কৌশল সফল হয়েছে। বিজেপি-কে ৫৪টির মতো আসন হারাতে হলেও, তারা সমাজবাদীর পার্টির থেকে প্রায় দেড়শ আসনে এগিয়ে আছে। উত্তরপ্রদেশে পরপর দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর যোগীর রাজনৈতিক উচ্চতা বাড়তে বাধ্য। সারা ভারতেই তিনি হিন্দুত্বের মুখ হিসাবে আরো অনেক সামনে আসবেন বলে বিজেপি নেতারাই মনে করছেন। আর যোগী জেতার পর লখনউতে এই জয়ের সব কৃতিত্ব মোদীকে দিয়েছেন। 

যোগী আদিত্যনাথের গোরক্ষপুর

04:29

This browser does not support the video element.

স্বরাজ পার্টির নেতা ও সাবেক ভোটবিশেষজ্ঞ যোগেন্দ্র যাদব এনডিটিভি-কে বলেছেন, সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক বিষয় হলো, কিছুদিন আগেই করোনাকালে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছেন। অক্সিজেন না পেয়ে মারা গেছেন। গঙ্গা দিয়ে একের পর এক শব ভেসে এসেছে। তারপরেও মানুষ মনে করছে, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে যোগী ভালো কাজ করছেন এবং তারই থাকা উচিত।

উত্তরপ্রদেশ ভোটপর্ব ঘুরে দেখার সময় মনে হয়েছে, দুইটি বিষয় বিজেপি-কে সাহায্য করছে। দরিদ্রদের বিনা পয়সায় প্রতি মাসে চাল, গম, তেল, ছোলা, নুন দেয়া এবং স্থানীয় স্তরে গুন্ডামি বন্ধ করা। তাতে পুলিশরাজের অভিযোগ উঠলেও সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে ছিলেন বলে দাবি করেছেন।

উত্তরপ্রদেশের ভোট: মোদীর নির্বাচনকেন্দ্র বারাণসীর অন্দরে

09:34

This browser does not support the video element.

অখিলেশের ভোট পাওয়ার হার গতবারের তুলনায় অনেক বেড়েছে। গতবার তার দল পেয়েছিল প্রায় ২২ শতাংশ ভোট। এবার তাদের ভোট পাওয়ার হার গিয়ে পৌঁছেছে ৩৪ শতাংশে। বিজেপি-ও তাদের ভোটের হার চার শতাংশ বাড়াতে পেরেছে। তারা এবার প্রায় ৪৫ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়েছে। ভোটপ্রাপ্তির হারে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মায়াবতীর দল। তারা গতবার ভোটের হারে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এবার তাদের ভোট পাওয়ার হার অর্ধেক হয়েছে। 

এই হিসাব থেকেই স্পষ্ট, গতবারের তুলনায় অখিলেশ অনেক ভালো ফল করেছেন। কিন্তু বিজেপি-র কাছাকাছি তিনি পৌঁছাতে পারেননি। 

উত্তরপ্রদেশের এই ফলাফল বিজেপি-কে নিঃসন্দেহে স্বস্তি দেবে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে হার, করোনাকালের কঠিন সময়, অর্থনীতির বেহাল অবস্থার পর উত্তরপ্রদেশ হাতছাড়া হলে, সেটা হতো মোদী-শাহের কাছে বড় ধাক্কা। কিন্তু কঠিন সময়ে এই জয়ের ফলে তারা রাজনৈতিক দিক থেকে আবার অন্যদের অনেক পিছনে ফেলে দেবেন। 

উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের হাল আরো খারাপ হয়েছে। মায়াবতীর স্থিতি তার থেকেও খারাপ। যে কংগ্রেস দীর্ঘদিন উত্তরপ্রদেশ শাসন করেছে, যে মায়াবতী দলিতদের মুখ হিসাবে উঠে এসেছেন এবং মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, তাদের উত্তরপ্রদেশে বিপর্যয় হয়েছে। এখান থেকে আগামী ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে ভালো ফল করার আশাও অনেকটাই কমেছে। 

উত্তরপ্রদেশ সহ চার রাজ্য জেতার পর মোদী-শাহের নজর এবার গুজরাটের বিধানসভা ভোট। সেজন্য ফলাফলের ব্যস্ততা কাটার পরই তারা গুজরাট যাচ্ছেন। 

জিএইচ/এসজি (পিটিআই)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ