উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন: বিজেপির ইস্তেহারেও লাভ জেহাদ
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
যোগী আদিত্যনাথ সরকারে আসার পর লাভ জেহাদ আইন হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। ইস্তেহারে লাভ জেহাদের জন্য দশবছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিতর্কিত লাভ জেহাদ আইন আগেই পাশ হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। ভিনধর্মের বিয়ের ক্ষেত্রে এই আইনের প্রয়োগ করা হয়। উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের আগে এবার সেই লাভ জেহাদ নিয়ে আরো সরব হলো বিজেপি। বলা হয়েছে লাভ জেহাদে দোষী সাব্যস্ত হলে যাতে ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়, তার ব্যবস্থা করা হবে। আর্থিক ক্ষতিপূরণও দিতে হবে। পাশাপাশি মেধাবী ছাত্রদের স্কুটার এবং স্মার্টফোন-ট্যাব দেওয়ার ঘোষণা রয়েছে ইস্তেহারে। চাকরিক্ষেত্রে নারীদের জায়গা দ্বিগুণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। কৃষকদের থেকে ন্যূনতম মূল্যে ফসল সংগ্রহ করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
কেন ঘরবাড়ি ছাড়ছে উত্তর প্রদেশের মুসলমানরা?
কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ- এমতাবস্থায় ভারতের উত্তরপ্রদেশে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের আধিপত্য চরমে৷ তাদের নানাবিধ প্রভাবে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক মুসলিম জনগোষ্ঠী৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
বাড়িছাড়ার হিড়িক
ভারতের উত্তর প্রদেশের নয়াবান গ্রামে মোট ৪ হাজার মানুষের মধ্যে ৪০০ জন মুসলিম৷ গত দুই বছরে তাঁদের মধ্যে প্রায় এক ডজন ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন অন্যত্র৷ আরো অনেকে গ্রাম ছাড়ার পরিকল্পনা করলেও সামর্থের অভাবে পারছেন না বলে তাঁরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন৷ এর মধ্যে গত বছরের শেষে গরু নিয়ে সহিংসতার ক্ষত এখনো তাদের মধ্যে গদগদে৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
গরু নিয়ে সহিংসতার জের
গত নভেম্বরে নয়াবানে গরু জবাইয়ের অভিযোগে সহিংসতা জড়ায় হিন্দুরা৷ পুলিশ গরু জবাই বন্ধ করতে পারেনি, এমন অভিযোগে মহাসড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখায় তারা৷ সে সময় সংঘর্ষে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুইজন নিহত হয়েছিলেন৷ এরপর ওই ঘটনায় মামলা হয়, বিনা অপরাধে জেল খেটেছেন অনেক মুসলিম৷ ওই সংঘর্ষের জের এখনো রয়েছে বলে মনে করছেন মুসলিমরা৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
মাইকে আজান দেয়া নিষেধ
২০১৭ সালে যোগী আদিত্যনাথ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে সেখানকার পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে৷ পরের রমজানে মাদ্রাসাকেন্দ্রিক একটি মসজিদে আজান দেওয়া বন্ধ করে দেয় কট্টরপন্থি হিন্দুরা৷ দীর্ঘ সময় ধরে চললেও আজান দেওয়া বন্ধ করে দিতে হয় মুসলিমদের৷ মুসলিম বাসিন্দা আয়েশা বলেন, ‘‘এখন এখানে আমরা ধর্মীয় বিষয় প্রকাশ করতে পারি না৷ তাঁরা (হিন্দুরা) যা ইচ্ছা তা করতে পারে৷’’
ছবি: Reuters/A. Abidi
হিন্দুরা যান না মুসলিম দোকানে
গরু জবাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৬ দিন জেল খেটেছেন ৩৮ বছর বয়সি শরফুদ্দিন সাইফি৷ যদিও পরে এর কোনো প্রমাণ পায়নি পুলিশ৷ এখন হিন্দুরা তাঁর কাপড়ের দোকান এড়িয়ে চলেন৷ বিক্রি কমা আর মামলার পেছনে টাকা খরচ হওয়ায় দোকানে মালামাল তুলতে পারছেন না সাইফি৷ ছেলেকে ভালো স্কুল থেকে সরিয়ে আনতে হয়েছে তাঁকে৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
‘ওরা পুলিশ মারে, আমরা কোন ছাড়’
উত্তর প্রদেশের নয়াবান ছেড়ে দিল্লির নিকটবর্তী মাসুরিতে চলে গেছেন কাঠমিস্ত্রী জব্বার আলী৷ এক সময়ের এই সৌদি প্রবাসী সেখানে একটি বাড়ি কিনেছেন৷ তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘‘যদি হিন্দুরা অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত পুলিশকে হত্যা করতে পারে, তাহলে আমরা মুসলিমরা কোন ছাড়?’’
ছবি: Reuters/A. Abidi
‘এখন হিন্দু-মুসলিম একসঙ্গে খেলে না’
রাজধানী নতুন দিল্লিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চলেছেন ওই গ্রামের বাসিন্দা, ২২ বছর বয়সি জুনাইদ৷ আগে হিন্দু প্রতিবেশীদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলার কথা এখনো মনে পড়ে তাঁর৷ ‘‘আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন হিন্দু-মুসলিম একসঙ্গে খেলতাম- বিশেষ করে ক্রিকেট৷ আমি অনেক খেলেছি৷ কিন্তু গত একবছরে আমরা একসঙ্গে খেলিনি,’’ রয়টার্সকে বলেন জুনাইদ৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
‘সব শেষ করেছেন মোদী-যোগী’
হিন্দুত্ববাদের স্লোগান উচ্চকিত করে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নরেন্দ্র মোদী৷ এরপর ২০১৭ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় আসেন হিন্দু পুরোহিত যোগী আদিত্যনাথ৷ আগে সম্প্রীতি থাকলেও এখন তাঁদের প্রভাবে এলাকার সম্প্রীতি একেবারেই নষ্ট হয়েছে বলে মনে করছেন নয়াবানের মুসলিমরা৷ ‘‘মোদী আর যোগী সব শেষ করে দিয়েছে৷ তাঁদের প্রধান এজেন্ডাই হিন্দু-মুসলিম বিভক্তি,’’ রয়টার্সকে বলেছেন নয়াবানের বাসিন্দা গুলফাম আলী৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
মোদীকে ভয়
লোকসভা নির্বাচনে এক্জিট পোলে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে ‘এগিয়ে’ নরেন্দ্র মোদী৷ বিজেপি আবার ক্ষমতায় আসলে পরিস্থিতি আরো বাজে হতে পারে বলে শঙ্কায় নয়াবানের মুসলিমরা৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
অস্বীকার করছে বিজেপি
ঘরবাড়ি ছাড়ার অভিযোগ মুসলিমরা করলেও কোনো ধরনের আধিপত্যের কথা অস্বীকার করেছে বিজেপি৷ দলের মুখপাত্র গোপাল কৃষ্ণ আগারওয়াল বলেন, ‘‘বিজেপির সময়ে কোনো দাঙ্গা হয়নি৷ অপরাধমূলক ঘটনার সঙ্গে হিন্দু-মুসলিমের বিষয় মেলানোটা ভুল হবে৷’’ বিরোধী দলগুলো সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
‘যা-ই হোক, চলে যাব না’
অনেকের মনে এলাকা ছাড়ার প্রবণতা থাকলেও কোনো কোনো মুসলিম বলছেন লড়াই চালানোর কথা৷ তাঁদের মতো একজন ৪২ বছর বয়সি আয়াস মোহাম্মদ৷ নিকটবর্তী শহরে এই টাইলসের দোকানি রয়টার্সকে বলেন, ‘‘আমি লড়াই চালিয়ে যাব৷ আমি ভীত নই৷ তবে, মোদী আবার ক্ষমতায় আসলে অনেকের জন্য এখানে থাকা কঠিন হয়ে যাবে৷’’
ছবি: Reuters/A. Abidi
10 ছবি1 | 10
১০ ফেব্রুয়ারি সাত দফায় উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন শুরু হচ্ছে। প্রথম দফায় ভোট হবে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে। দিল্লি লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের এই অঞ্চল জঠ বেল্ট নামেও পরিচিত। জাঠ কৃষকরা গত একবছর ধরে কৃষক আন্দোলনে সরাসরি যোগ দিয়েছিলেন। আন্দোলন উঠলেও ওই অঞ্চলের কৃষকরা এখনো বিজেপির বিরুদ্ধে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এবং সে কারণেই ইস্তেহারে কৃষকদের জন্য একটি বড় অংশ রাখা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনটি সংশোধিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বসেছিলেন কৃষকরা। কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষমা চেয়ে সেই আইন বাতিল করেছে। কিন্তু কৃষকদের দাবি শেষ হয়ে যায়নি। তাদের বক্তব্য, কৃষকদের ফসলের ন্যূনতম মূল্য দিতে হবে। সরকার তা এখনো মানেনি। কিন্তু বিজেপির ইস্তেহারে বলা হয়েছে, কৃষকদের থেকে ন্যূনতম মূল্যে ফসল কেনার বিষয়টি দেখা হবে। এছাড়াও সেচের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ঐতিহাসিক হেট স্পিচ
পৃথিবী জুড়ে রাজনৈতিক নেতারা হেট স্পিচে মেতেছেন৷ তবে রাজনৈতিক ইতিহাসে হেট স্পিচ নতুন কিছু নয়৷ নানা সময়ে নানা নামে নানা কায়দায় হেট স্পিচ চালু ছিল৷ ছবিঘরে তারই কিছু উদাহরণ দেওয়া গেল৷
ছবি: picture-alliance/CPA Media Co. Ltd
ডোনাল্ড ট্রাম্প
বিশ্ব রাজনীতিতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি হেট স্পিচের জন্য নাম কিনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ একবার নয়, বার বার হেট স্পিচ দিয়েছেন৷ তাঁর টার্গেট হয়েছেন কখনো মুসলিমরা আবার কখনো আফ্রিকার মানুষেরা৷ একদা তিনি বলেছিলেন, মুসলিমদের দেশে ঢোকা বন্ধ করে দেবেন তিনি৷ আর আফ্রিকার কয়েকটি দেশের মানুষদের বিষয়ে বলেছিলেন, তাঁরা ‘শিটহোল’ দেশ থেকে এসেছেন৷ যা নিয়ে প্রভূত সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাঁকে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Harnik
খেয়ার্ট ভিল্ডার্স
গোটা ইউরোপেই এখন অতি দক্ষিণপন্থিদের বারবাড়ন্ত৷ হল্যান্ডে এখনো দক্ষিণপন্থিরা সেভাবে থাবা বসাতে না পারলেও ডাচ নেতা খেয়ার্ট ভিল্ডার্স সংসদে দাঁড়িয়ে যে বক্তৃতা করেছিলেন তা ডাচ ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কের দিন৷ ভিল্ডার্স বলেছিলেন, ইসলাম একটি খারাপ বিষয়৷ ইসলামের জন্য হল্যান্ডের সংস্কৃতি নষ্ট হচ্ছে৷ সংসদেই ভিল্ডার্সকে এরপর চ্যালেঞ্জ করেছিলেন অন্যান্য সংসদেরা৷
ছবি: Imago/Hollandse Hoogte
যোগী আদিত্যনাথ
ভারতে বর্তমান শাসকদল বিজেপি এবং তার সহযোগীরা হেট স্পিচের জন্য বিখ্যাত৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরাসরি অভিযুক্ত গুজরাট দাঙ্গার জন্য৷ হেট স্পিচও দিয়েছেন তিনি একসময়৷ তবে সমসময়ে তাঁর শিষ্য এবং উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ হেট স্পিচের জন্য সবচেয়ে কুখ্যাত হয়েছেন৷ উত্তর প্রদেশে মুসলিমদের বিরুদ্ধে একাধিক হেট স্পিচ দিয়েছেন তিনি প্রকাশ্যে৷ দাঙ্গাও বাঁধিয়েছেন৷
ছবি: Imago/Zumapress
প্রবীণ তোগাড়িয়া
বিশ্বহিন্দু পরিষদ বিজেপিরই অন্যতম শাখা সংগঠন৷ সেই সংগঠনের প্রধান প্রবীণ তোগাড়িয়া একটি জনসভায় মুসলিমদের কুকুরের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন৷ এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বহু মামলা হয়েছে৷ সে সব মামলা এখনো চলছে৷
ছবি: UNI
জর্জ ডাব্লিউ বুশ
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগেও বহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট হেট স্পিচের জন্য ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন৷ ট্রাম্পের সমকক্ষ না হলেও জর্জ ডাব্লিউ বুশ তাঁর অন্যতম৷ বর্ণবিদ্বেষমূলক নীতি গ্রহণের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে৷ বিশেষত স্কুলের ছাত্রদের ক্ষেত্রে তিনি বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ৷
ছবি: picture-alliance/AP Images/S. Wenig
জন ক্যালভিন কোলড্রিজ
১৯২৩ থেকে ১৯২৯ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন কোলড্রিজ৷ ১৯২৭ সালে হয় ভয়াবহ মিসিসিপি বন্যা৷ অভিযোগ, শ্বেতাঙ্গদের দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা করলেও কোলড্রিজ কৃষ্ণাঙ্গদের উদ্ধারের কোনো ব্যবস্থাই করেননি৷ বহু কৃষ্ণাঙ্গ সে সময় প্রাণ হারিয়ে ছিলেন৷ পৃথিবী জুড়ে কোলড্রিজের বিরুদ্ধে সমালোচনা হয়েছিল৷
ছবি: Imago/Ralph Peters
উড্রো উইলসন
১৯১৩ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন উড্রো উইলসন৷ বহু ভালো কাজের জন্য প্রশংসিত হলেও অধিকাংশ মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতো তিনিও হেট স্পিচ দিয়েছেন৷ ক্ষমতায় এসে ফেডারেল শ্রমিকদের কাজের পুনর্নবিকরণ করেছিলেন৷ সে সময় অধিকাংশ কৃষ্ণাঙ্গকে চাকরিচ্যূত করেছিলেন৷ যাঁদের কাজ বেঁচে গিয়েছিল, তাঁদের জন্য আলাদা খাওয়ার ঘর, কাজের পরিসরের ব্যবস্থা হয়েছিল৷ শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গে কাজ করার অধিকার ছিল না তাঁদের৷
ছবি: Getty Images
আডল্ফ হিটলার
কমিউনিস্ট, মুসলিম এবং ইহুদিদের বিরুদ্ধে তিনি যা বলেছেন, সবই হেট স্পিচ৷ শুধু বলেছেন না, ইহুদিদের কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানোরও ব্যবস্থা করেছেন৷ বিশ শতকের দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি হেট স্পিচের রেকর্ড আডল্ফ হিটলারের মুকুটেই৷
ছবি: picture-alliance/CPA Media Co. Ltd
বেনিটো মুসোলিনি
তাঁর শাসনকালেই ‘ফাশিস্ত’ শব্দটির উদ্ভব৷ বিরোধীদের প্রসঙ্গে যে ধরনের মন্তব্য তিনি করতেন, তা এক কথায় হেট স্পিচ৷
ছবি: picture alliance/AP
ইদি আমিন
১৯৭১ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত উগান্ডার স্বৈরাচারী শাসক ছিলেন ইদি আমিন৷ তাঁর আগের শাসক আবোটের অনুগামীদের বিরুদ্ধে কুৎসিত মন্তব্য করে তিনি নিজের সমর্থকদের তাতিয়ে দিতেন৷ অভিযোগ, আকোলি এবং ল্যাঙ্গো উপজাতির বিরুদ্ধেও একইরকম মন্তব্য করতেন তিনি৷ এবং শেষ পর্যন্ত ওই দুই উপজাতির মানুষদের নৃশংস ভাবে হত্যা করেছিল তাঁর দলবল৷ উগান্ডার ইতিহাসে এখনো যা সবচেয়ে কলঙ্কিত অধ্যায়৷
ছবি: Getty Images
জোসেফ স্ট্যালিন
সোভিয়েত রাশিয়ার এই কমিউনিস্ট নেতার বিরুদ্ধেও হেট স্পিচের অভিযোগ আছে৷ কেবল অ্যামেরিকা নয়, তাঁর নিজের দেশের বিরোধীদের সম্পর্কেও বহু হেট স্পিচ দিয়েছেন তিনি৷ মানুষ উসকেছেন বিরোধীদের একঘরে করার জন্য৷ বস্তুত আয়রন ক্যাম্পও তাঁরই সৃষ্টি৷
ছবি: AFP/Getty Images
আশিন উইরাথু
তিনি ‘মিয়ানমারের বিন লাদেন’ হিসেবেও পরিচিত৷ এই কট্টর জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষু ফেসবুকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে উস্কানি ও বিদ্বেষমূলক পোস্ট দিয়ে ব্যাপক আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছেন৷ তার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এতটাই প্রভাব বিস্তার করছিল যে ফেসবুক তাঁর পেজটি মুছে ফেলতে বাধ্য হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Gacad
জুলফিকার আলী ভুট্টো
বাংলাদেশ ও এদেশের জনগণ পাকিস্তানের শোষণমূলক ব্যবস্থার বিরোধিতা করায় এ নিয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টোর খুবই মনোকষ্ট ছিল৷ তিনি কখনো মেনে নিতে পারেননি যে, এদেশের মানুষ তাঁর কথার বিরোধিতা করেছে৷ এমনকি প্রকাশ্যে তিনি জনসভাতেই বলে ফেলেছিলেন৷ ঢাকায় এক জনসভায় তিনি বলেই ফেলেছিলেন যে, ‘‘মঞ্জুর হ্যায় তো ঠিক হ্যায়, নেহি মঞ্জুর হ্যায় তো শুয়োর কে বাচ্চে, জাহান্নাম মে যায়ে৷’’
ছবি: STF/AFP/GettyImages
13 ছবি1 | 13
করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল কলেজ বন্ধ ছিল। স্কুল কবে খুলবে এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। একইসঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভও দেখেছে উত্তরপ্রদেশ। এই সবকিছু মাথায় রেখে মেধাবি ছাত্রদের পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের স্কুটার, ট্যাব, স্মার্টফোন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
তবে লাভ জিহাদ নিয়ে ইস্তেহারের বক্তব্য নিয়ে নতুন করে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। লাভ জিহাদ আইন আদৌ কতটা সাংবিধানিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। তবে উত্তরপ্রদেশে যোগীর সরকার সবার প্রথম এই আইন নিয়ে আসে। পরবর্তীকালে আরো কয়েকটি বিজেপি-শাসিত রাজ্যে তা চালু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এবারের উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন ধর্মীয় মেরুকরণের উপর দাঁড়িয়ে আছে। এবং সে কারণেই ইস্তেহারে লাভ জিহাদকে এতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই আইনকে আরো কঠোর করা হবে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, লাভ জেহাদের প্রসঙ্গটি সামনে এনে বিভাজনকে আরো বাড়াতে চাইছে বিজেপি।