1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মানুষই দায়ী

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি২৩ জুন ২০১৩

ভারতের উত্তরাখন্ডে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য মানুষের অবিবেচনাকে দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা৷ পরিবেশগত ঐ সংবেদনশীল এলাকায় ক্রমাগত অরণ্য নিধন ও নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে বহুতল ঘরবাড়ি এবং বাঁধ নির্মাণই ডেকে এনেছে এই বিপদ৷

REFILE - CORRECTING HEADLINES AND ADDING TAGS Soldiers rescue stranded people after heavy rains in the Himalayan state of Uttarakhand June 18, 2013. India's monsoon rains could ease soon after hitting 89 percent over averages in the week to June 19, according to weather office sources, in a third straight week of downpours that have caused major flooding in north India. Picture taken June 18, 2013. REUTERS/Stringer (INDIA - Tags: DISASTER ENVIRONMENT MILITARY)
ছবি: Reuters

হিমালয় পার্বত্য রাজ্য উত্তরাখন্ডের হালের ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে যে প্রশ্নটা বারংবার উঠে আসছে পরিবেশবিদদের মনে, তা হলো এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী কে? প্রকৃতি না মানুষ? তাঁরা মনে করেন এটা মানব-সৃষ্ট৷ মানুষের অপরিনামদর্শিতার কারণেই জানমালের এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতি৷ অথচ ২০০২ সালে নদী তীরের ১০০ মিটার এলাকার মধ্যে সব রকম নির্মাণকাজ নিষিদ্ধ করা হয়৷

সেই নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শুধুমাত্র বাণিজ্যিক কারণে পর্যটক ও তীর্থযাত্রিদের আকর্ষণ করতে অবৈধভাবে তৈরি হয় গেস্টহাউস, হোটেল, ধর্মশালা৷ উজানে ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার বৃষ্টি ও হড়কা বানে ভেসে যায় সেইসব বাড়িঘর৷ মারা যায় বহু মানুষ৷ প্রশাসন তথা সরকার যদি আর একটু সতর্ক থাকত, তাহলে বন্যার এই তাণ্ডব এড়ানো অসম্ভব ছিল না৷

উত্তরাখন্ডের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য মানুষের অবিবেচনাকে দায়ী করছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরাছবি: STRDEL/AFP/Getty Images

পরিবেশ রক্ষার চেয়ে বাণিজ্যিক স্বার্থ যে বেশি জরুরি, সেটা আরো একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল রাজ্যের বর্তমান শাসকদল কংগ্রেস৷ কেন্দ্রীয় সরকার ২০১২ সালের ডিসেম্বরে উত্তরাখন্ডের গঙ্গোত্রী থেকে উত্তরকাশি পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার অঞ্চলকে পরিবেশগত দিক থেকে অতি স্পর্শকাতর এলাকা বলে ঘোষণা করে সেখানে উন্নয়নের জন্য কোন নির্মাণকাজ নিষিদ্ধ করা হয়৷

কিন্তু রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেন ঐ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে৷ যুক্তি স্থানীয় মানুষজন এর বিরোধী৷ কারণ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হোক বা পরিকাঠামো হোক তার সুফল থেকে তাঁরা বঞ্চিত থাকবে৷দ্বিতীয়ত, পর্যটক আকর্ষণের জন্য হোটেল, গেস্টহাউস না বানালে তাঁদের রুজি রোজগার মার খাবে৷উত্তরাখন্ডের পূর্বেকার বিজেপি সরকারের অবস্থানও ছিল অভিন্ন৷ তাই দলমত নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক দল বিধানসভায় সর্বসম্মত প্রস্তাব নেয় যে ঐ ১০০ কিলোমিটার এলাকাকে যেন পরিবেশ- স্পর্শকাতর- এলাকা বলে চিহ্নিত করা না হয়৷

উল্লেখ্য, উত্তরাখন্ডের ১৪টি নদী উপত্যকায় ২০০টিরও বেশি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে এবং তারজন্য খনন কাজ চলছে৷ খননের সময় বা সুড়ঙ্গ তৈরির জন্য পাহাড়ে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়৷ তাতে পাহাড়ের মাটি পাথর আলগা হয়ে যায়৷ বৃষ্টিতে ধস নামার এটা অন্যতম কারণ৷ ধসের ফলে নদীগর্ভ বুজে যায়, ফলে হড়কা বানে দুকূল ভেসে যায়৷২০১১-১২ সালে উত্তরকাশির বন্যা বিপর্যয়ের কারণ অসিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প৷

উজানে ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার বৃষ্টি ও হড়কা বানে ভেসে যায় সেইসব বাড়িঘরছবি: STRDEL/AFP/Getty Images

সরকারের তরফে সাফাই দেয়া হচ্ছে, এবারের বর্ষা সময়ের আগে শুরু হয়েছিল যেটা প্রত্যাশিত ছিলনা৷প্রতিবছরই অল্পবিস্তর প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়, এবারে সেটা যে এত ব্যাপক আকারে হবে তা জানা ছিল না৷ভবিষ্যতে এই ধরণের বিপর্যয় এড়াতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ, আবহাওয়া দপ্তর এবংকেন্দ্রীয় ওয়াটার কমিশন এক যৌথ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ