1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তরের ভেনিস আমস্টারডাম

২৮ জুলাই ২০১৭

নেদারল্যান্ডস বলতে মনে পড়ে টিউলিপ ফুল, ‘চিজ' আর বাইসাইকেল – সেই সঙ্গে আমস্টারডাম নামের একটি ছোট্ট, খালে ঘেরা শহর, যা আন্তর্জাতিকতা ও বৈচিত্র্যে নিউ ইয়র্ককেও হারিয়ে দেয়৷

Bahnhof Amsterdam Centraal
ছবি: Fotolia/Jan Kranendonk

উত্তরের ভেনিস আমস্টারডাম

04:35

This browser does not support the video element.

আমস্টারডামকে তার নানা খালের জন্য উত্তরের ভেনিস বলা হয়ে থাকে৷ নেদারল্যান্ডসের রাজধানীর কিন্তু আরো একটি পরিচয় আছে: ইউরোপে আমস্টারডাম হলো সাইকেল-চালকদের রাজধানী৷ ২০০১ সালে আমস্টারডামের সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশনের কাছে বিশ্বের প্রথম সাইকেল পার্কিং ব্লক তৈরি হয়৷

শন কোডি নেদারল্যান্ডসের মানুষ৷ তাঁর কোম্পানির নাম হলো ‘জয় রাইড টুর্স'৷ কোম্পানির কাজ হলো টুরিস্টদের সাইকেলে চড়িয়ে আমস্টারডাম ঘুরিয়ে দেখানো৷ শন বলেন, ‘‘আমার কাছে আমস্টারডামের মজা শুধু এই সুন্দর শহরটাই নয়, তার বাসিন্দারাও বটে৷ সারা বিশ্ব থেকে মানুষজন এসেছেন আমস্টারডামে বাস করতে – জাতির হিসেব ধরলে আমস্টারডাম বিশ্বে পয়লা নম্বর, নিউ ইয়র্ককেও ছাড়িয়ে যায়৷ অথচ শহরটা ছোট, যা আমার খুবই ভালো লাগে৷ শহরের কেন্দ্রে লাখ আটেক মানুষের বাস, শহরতলিগুলো ধরলে তার দ্বিগুণ৷ কাজেই একটি আন্তর্জাতিক শহরের আবহটা পাওয়া যায়, আবার একটা ছোট, বাসযোগ্য, উপভোগ্য শহরও বটে৷''

ডামপ্লাৎস

অনেকক্ষেত্রেই শন কোডির সাইকেল টুর শুরু হয় আমস্টারডামের কেন্দ্রে ডামপ্লাৎস থেকে, যেখানে এই শহরের জন্ম বলা চলে: ত্রয়োদশ শতাব্দীতে জেলেরা আমস্টেল নদীর তীরে বাসা বাঁধেন ও প্রথম ‘ডাম' অথবা বাঁধটি তৈরি করেন৷ ডামপ্লাৎসে সপ্তদশ শতাব্দীর একটি রাজপ্রাসাদও দেখতে পাওয়া যাবে৷ শন জানালেন, ‘‘গোড়ায় এটা রাজপ্রাসাদ ছিল না, এটা ছিল আমস্টারডামের মেয়রের অফিস৷ সেই কারণে প্রাসাদটা খুব জাঁকজমকপূর্ণ নয়, যদি ভার্সাই কিংবা উইন্ডসর ক্যাসলের সঙ্গে তুলনা করা যায়৷ কিন্তু আদতে এটা ছিল ইউরোপের বৃহত্তম সরকারি ভবন – ওলন্দাজ প্রজাতন্ত্রের শক্তিমত্তার প্রতীক৷''

ছবি: picture alliance/dpa/D.Kalker

সপ্তদশ শতাব্দীতে আমস্টারডাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়৷ সেই ‘সোনার শতাব্দীতে' শহরের বিখ্যাত ‘গ্রাখটেন' বা খালের নেটওয়ার্কটি গড়ে ওঠে৷ আমস্টারডামের প্রাচীন অংশকে চক্রাকারে ঘিরে রয়েছে ১৬৫টি খাল বা জলপথ, যেগুলি আজ ইউনেস্কোর বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অঙ্গ৷

ফান গখরেমব্রান্ট

আমস্টারডামে বহু সংগ্রহশালা আছে, তার মধ্যে একটি হল মিউজিয়ামসপ্লেন-এ ফান গখ মিউজিয়াম৷ এখানে এই প্রখ্যাত ওলন্দাজ চিত্রকরের আঁকা ২০০টির বেশি ছবি রাখা আছে৷ অথবা রাইক্স-মিউজিয়াম, যা কিনা নেদারল্যান্ডসের জাতীয় সংগ্রহশালা৷ উদ্বোধন হয় ১৮৮৫ সালে, সম্ভবত বিশ্বের একমাত্র মিউজিয়াম, যার ভিতর দিয়ে সাইকেলে চেপে যাওয়া যায়৷ এখানে ওলন্দাজ চিত্রকলার স্বর্ণযুগের শিল্পীদের কৃতি দেখতে পাওয়া যাবে, ভার্মিয়ার থেকে শুরু করে রেমব্রান্ট পর্যন্ত৷ শন জানালেন, ‘‘রাইক্স-মিউজিয়াম তৈরি হয় ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি৷ নকশা করেছিলেন স্থপতি পিয়ের কয়পার্স৷ ট্রেনে করে আমস্টারডামে এলে দেখতে পাবেন যে, কেন্দ্রীয় রেল স্টেশনটিও কয়পার্সের নকশা অনুযায়ী তৈরি হয়েছে৷ যে কারণে এই সাদৃশ্য৷''

ছবি: picture-alliance/dpa/N. Jorgensen

আনা ফ্রাংক

প্রিন্সেনগ্রাখ্ট খালের ধারে আমস্টারডামের একটি বিশেষ দর্শনীয় স্থান হলো আনা ফ্রাংকের বাড়ি৷ প্রতিদিনই এখানে দর্শকদের লাইন পড়ে – ২০১৬ সালে এসেছিলেন প্রায় ১৩ লাখ দর্শক৷ সবাই চান আনা ফ্রাংকের ডায়েরির রচয়িতা সেই ইহুদি কিশোরীর আদি বাড়িটিকে দেখতে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৩ বছর বয়সের অ্যান তার পরিবারের সঙ্গে এই বাড়ির পিছনের অংশে লুকিয়ে ছিল, নাৎসিদের ভয়ে৷ ঘরগুলোয় কোনো আসবাব না থাকলেও, আনা ফ্রাংকের নিজস্ব কিছু স্মৃতিচিহ্ন রাখা আছে৷

ছবি: Getty Images

বলুন 'চিজ'!

আমস্টারডামে সাইকেল টুরের এখানেই শেষ নয়৷ নেদারল্যান্ডস তাদের ‘চিজ'-এর জন্য বিখ্যাত, কাজেই শহরের কোনো না কোনো ‘চিজ'-এর দোকানে না থামলে কি চলে? ‘কাস-হাউস ট্রম্প' বা ‘ট্রম্পের চিজ হাউস'-এ খৌডা, এমেন্টালার ইত্যাদি নামকরা ওলন্দাজ ‘চিজ' পাওয়া যায়৷ স্টোর ম্যানেজার ড্যানি ব্রুভারের ভাষ্যে: ‘‘নেদারল্যান্ডসের মাটি খুব উর্বর, এখানে খুব ভালো ঘাস গজায়৷ তাই গরু পোষা ওলন্দাজদের পক্ষে একটা স্বাভাবিক পেশা৷ পোষা গরুরা প্রচুর দুধ দেয়, সেই দুধ থেকে ছানা তৈরি হয়৷'' আর ছানা থেকে চিজ – বোঝা আর শক্ত কি৷

শন কোডির সাইকেল টুর শেষ হয় আমস্টারডামের নিজস্ব ট্রেডমার্কে: সুবিশাল সব অক্ষরে লেখা আমস্টারডামের নাম, টুরিস্টরা যার ওপর চড়তে ভালোবাসেন৷

শ্যারন ব্যারকাল/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ