উত্তর অ্যামেরিকার সমর্থন ধরে রাখতে মরিয়া জেলেনস্কি
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩প্রায় ১৯ মাস ধরে রাশিয়ার হামলার মুখে পশ্চিমা বিশ্বের সামরিক ও অন্যান্য সহায়তা পেয়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন৷ কিন্তু সম্প্রতি সেই লাগাতার সহায়তায় কিছু ফাটল দেখা যাচ্ছে৷ যুদ্ধ সম্পর্কে কিছুটা ক্লান্তি ও রুশ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের যথেষ্ট সাফল্যের অভাব এর অন্যতম কারণ৷ এমন পরিস্থিতিতে অ্যামেরিকা ও ক্যানাডা সফর করে যতটা সম্ভব সহায়তার প্রতিশ্রুতি আদায় করতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি৷
জেলেনস্কির ওয়াশিংটন সফর উপলক্ষ্যে মার্কিন প্রশাসন প্রায় ৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার অংকের নতুন সামরিক সহায়তার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে৷ বিশেষ করে আরো এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পেতে চলেছে ইউক্রেন৷ তবে সে দেশ এটিওসিএমএস মিসাইল চাইলেও ওয়াশিংটন আপাতত সেই অনুরোধ মানতে নারাজ৷ মোটকথা রাশিয়ার হামলা প্রতিহত করতে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহে আপত্তি না থাকলেও রাশিয়ার উপর সক্রিয় হামলার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্রের প্রশ্নে আরো সতর্কতা অবলম্বন করে চলেছে অ্যামেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্ব৷ তাই প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম এটিওসিএমএস মিসাইলের প্রশ্নে ওয়াশিংটনের সংশয় এখনো কাটছে না৷ তা সত্ত্বেও প্রায় ৫৭৫ দিনের যুদ্ধে অ্যামেরিকা এখনো পর্যন্ত মোট ৪,৩৯০ কোটি ডলার অংকের সামরিক সহায়তা দিয়ে এসেছে, যা অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি৷
রাশিয়ার হামলার মুখে একটানা সহায়তার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন৷ হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে আলোচনার পর জেলেনস্কি বলেন, অ্যামেরিকার নতুন সামরিক প্যাকেজে ঠিক সেই সব অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম থাকছে, যা ইউক্রেনের সৈন্যদের এই মুহূর্তে প্রয়োজন৷ আসন্ন শীতকালে রুশ হামলা প্রতিহত করতে এয়ার ডিফেন্স ব্যবস্থা আরো জোরদার করার জন্যও তিনি ধন্যবাদ জানান৷ বাইডেন জানান, আগামী সপ্তাহেই ইউক্রেন আব্রামস ব্যাটেল ট্যাংক হাতে পাবে৷ গত জানুয়ারি মাসে সেই সিদ্ধান্তের পর অবশেষে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে৷
বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন ও সহায়তা চালিয়ে গেলেও মার্কিন রাজনৈতিক মহলে সার্বিক সহানুভূতি ও সামরিক সাহায্যের প্রশ্নে ঐকমত্যে ফাটল দেখা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে বিরোধী রিপাব্লিকান দলের একাংশ এমনকি খোলাখুলি এমন সহায়তার বিরোধিতা শুরু করেছে৷ ফলে কংগ্রেসের উভয় কক্ষের অধিবেশন ডেকে জেলেনস্কির ভাষণের ব্যবস্থা করাও সম্ভব হয়নি৷ অথচ গত ডিসেম্বর মাসে সেটা সম্ভব হয়েছিল৷ এবারের সফর মূলত রুদ্ধাদ্বার বৈঠকেই সীমাবদ্ধ ছিল৷ প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মার্কিন কংগ্রেসের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের সংশয় দূর করার চেষ্টা করেন৷ তিনি তাঁদের সহায়তার জন্যও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন৷ ইউক্রেনের প্রতি সমর্থনের জন্য জেলেনস্কি সাংবাদিকদেরও ধন্যবাদ জানান৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)