গত অগাস্টে উত্তর কোরিয়া হটলাইন বন্ধ করে দিয়েছিল। ফের তা চালু হলো দুই দেশের মধ্যে। তবে উত্তর কোরিয়া মিসাইল পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
উত্তর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির জন্য একটি হটলাইন চালু করা হয়েছিল। গত অগাস্টে অ্যামেরিকা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সেনা মহড়ার সময় উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন সেই হটলাইন বন্ধ করে দেন। ফের তা চালু হলো। উত্তর কোরিয়ার আহ্বানেই ফের হটলাইন শুরু হলো বলে সংবাদসংস্থার দাবি।
উত্তর কোরিয়ায় অনাড়ম্বর প্যারেডের কারণ
উত্তর কোরিয়ার ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বুধবার মাঝরাতে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সেখানে কিম জং উন উপস্থিত থাকলেও কোনো বক্তব্য দেননি৷ এছাড়া এবার প্যারেডে কোনো ব্যালিস্টিক মিসাইলও ছিল না৷
ছবি: KCNA/REUTERS
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্যারেড
উত্তর কোরিয়ার ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বুধবার মাঝরাতে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সেখানে কিম জং উন উপস্থিত থাকলেও কোনো বক্তব্য দেননি৷
ছবি: KCNA/REUTERS
করোনার চিহ্ন
আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তর কোরিয়া করোনা শনাক্তের কোনো তথ্য দেয়নি৷ তবে সংক্রমণ রোধে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়াসহ কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল৷ প্যারেডে যারা অংশ নিয়েছেন তারা হ্যাজম্যাট স্যুট (হ্যাজার্ডাস ম্যাটেরিয়ালস স্যুট) পরেছিলেন৷ মুখে ছিল মেডিকেল-গ্রেড মাস্ক৷
ছবি: KCNA via REUTERS
তবে দর্শকরা মাস্ক পরেননি
প্যারেডে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের অনেকে মাস্ক পরলেও প্যারেডের দর্শকরা মাস্ক পরেননি৷ এমনকি কিম জং উনের খুব কাছে অনেককে মাস্কহীন অবস্থায় দেখা গেছে৷ মাস্ক ছাড়াই তাদের উনকে ছুঁতে এবং হাত মেলাতে দেখা গেছে৷
ছবি: KCNA/REUTERS
ব্যালিস্টিক মিসাইল ছিল না
এবারের প্যারেডে কোনো ব্যালিস্টিক মিসাইল ছিল না৷ যদিও গত অক্টোবরে এক প্যারাডে প্রথমবারের মতো আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল দেখানো হয়েছিল৷ এছাড়া সেসময় কিম জং উন তার বক্তব্যে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ক্ষমতা সম্পর্কে বক্তব্য দিয়েছিলেন৷
ছবি: KCNA/REUTERS
অনেকদিন পর ‘রেড গার্ডসের’ উপস্থিতি
১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের পর চীনা বাহিনী উত্তর কোরিয়া ছেড়ে যাওয়ার পর ‘ওয়ার্কার-পিজেন্ট রেড গার্ডস’ নামে একটি জননিরাপত্তা বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল৷ ২০১৩ সালের পর এবার আবার তারা প্যারেডে অংশ নিয়েছেন৷
ছবি: KCNA/REUTERS
অনাড়ম্বর প্যারেডের কারণ
সৌলের নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়াং মু-জিন বলছেন, প্যারেডে ব্যালিস্টিক মিসাইল না থাকা এবং রেড গার্ডসের উপস্থিতির অর্থ হচ্ছে কিম জং উন অভ্যন্তরীণ ইস্যু যেমন করোনা, অর্থনীতি, জাতীয় ঐক্য ও সংহতির বিষয় দেখাতে চেয়েছেন৷ এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ভবিষ্যতে আলোচনায় ভালো অবস্থানে থাকতে চাওয়ার লক্ষ্যে হয়ত ব্যালিস্টিক মিসাইল দেখানো হয়নি৷
ছবি: KCNA/REUTERS
আলোচনা বন্ধ আছে
উত্তর কোরিয়া যেন পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করে সেই লক্ষ্যে আলোচনা ২০১৯ সাল থেকে বন্ধ আছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন কূটনীতির মাধ্যমে এ ব্যাপারে সফলতা পেতে চান৷ গত জুলাই মাসে আন্তঃকোরীয় হটলাইন চালু হওয়ার পর আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল৷ তবে গতমাসে যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ মহড়া শুরুর পর উত্তর কোরিয়া আর ফোন ধরছে না৷
ছবি: KCNA/REUTERS
7 ছবি1 | 7
২০১৮ সালে উত্তর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে প্রথম হটলাইন চালু হয়েছিল। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছিল। ট্রাম্প নিজেও কথা বলেছিলেন কিমের সঙ্গে। আলোচনা এগোয়নি। তবে হটলাইনে দুই দেশের মধ্যে বিবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই উত্তর কোরিয়া হটলাইন বন্ধ করে দেয়। অভিযোগ, বেলুনের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর কোরিয়ায় প্রোপাগান্ডা লিফলেট পাঠিয়েছিল।
এরপর গত জুলাই মাসে ফের দুই দেশের হটলাইন চালু হয়। কিন্তু অগাস্টেই তা বন্ধ করে দেয় উত্তর কোরিয়া। এবার কিমের উদ্যোগেই ফের তা চালু হলো।
সম্প্রতি উত্তর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। অ্যামেরিকা-সহ একাধিক দেশ উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আরো নতুন নিষেধাজ্ঞা জারির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অভিযোগ, একের পর এক মিসাইল পরীক্ষা করছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিটি মিসাইল পরীক্ষার দিকে নজর রাখছে। তারই মধ্যে ফের হটলাইন খোলা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে কিমের হটলাইন খোলার প্রস্তাব বরফ গলার ইঙ্গিত।