পিয়ংইয়ংকে পরমাণু বোমার পরীক্ষায় ‘সহায়তা' করেছে পাকিস্তান৷ ডয়চে ভেলের সাথে সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন পরমাণু বিষয়ক পাকিস্তানি পদার্থবিদ পারভেজ হুডভয়৷ তিনি কথা বলেছেন পারমাণবিক বোমার বিস্তার রোধ চুক্তির প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে: পরমাণু প্রযুক্তির জন্য পাকিস্তান থেকে কি মাত্রায় সহায়তা পেয়েছে উত্তর কোরিয়া?
পারভেজ হুডবয়: পাকিস্তান উত্তর কোরিয়াকে সেন্ট্রিফিউজ প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে৷ এটা অবশ্য সরাসরি পরমাণু বোমার প্রযুক্তিতে কাজে লাগেনি৷ কারণ উত্তর কোরিয়ার পরমাণু প্রকল্প প্লুটোনিয়াম নিষ্কাষণ প্রযুক্তির ওপর নয়, বরং ইউরেনিয়ামের ওপর নির্ভরশীল৷
উত্তর কোরিয়ায় এই ‘পরমাণু প্রযুক্তি সরবরাহ' কবে শুরু হয়? শেষই বা হলো কবে?
২০০৩ সালে যখন পাকিস্তানের বিজ্ঞানি আব্দুল কাদির খান বা এ কিউ খান পরমাণু প্রযুক্তি সরবরাহ করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন, তখনই এ ধরনের সব লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়৷ তবে কখন তা শুরু হয়েছিল, এটা বলা কঠিন৷ সম্ভবত ১৯৮৯ সালে বেনজির ভুট্টো ক্ষমতায় আসার কিছুদিনের মধ্যেই এটি শুরু হয়৷
পিয়ংইয়ংকে প্রযুক্তি সরবরাহে কি শুধু এ কিউ খানই জড়িত ছিলেন?
এটা বিশ্বাস করা খুবই কঠিন যে, এ কিউ খান একাই উত্তর কোরিয়া, লিবিয়া এবং ইরানে পরমাণু প্রযুক্তি সরবরাহ করেছেন৷ কারণ এই প্রযুক্তি খুবই উচ্চ নিরাপত্তার একটি স্থাপনায় সংরক্ষিত ছিল৷ সেখানে সবসময়ই ব্যাপক সংখ্যায় পুলিশ এবং সেনা গোয়েন্দাদের পাহারা থাকে৷ তাছাড়া এক একটা সেন্ট্রিফিউজের ওজন ৫০০ কিলোগ্রামের কাছাকাছি, ফলে ম্যাচের বাক্সে লুকিয়ে নিয়ে গেলাম, এমন জিনিস এটা নয়৷ সুতরাং, উচ্চ পর্যায়েই কোনো ধরনের সমস্যা ছিল৷
কিন্তু পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন জেনারেল পিয়ংইয়ংকে সহায়তার অস্বীকার করেছেন৷ তাঁরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু প্রযুক্তি প্লুটোনিয়ামভিত্তিক, যা পাকিস্তানের নেই৷
আমি মনে করি এটা সত্যি৷ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র প্লুটোনিয়ামভিত্তিক এবং প্লুটোনিয়াম বোমা আর ইউরেনিয়াম বোমা একরকমভাবে কাজ করে না৷ পাকিস্তান উত্তর কোরিয়াকে সেন্ট্রিফিউজ সরবরাহ করেছে ঠিকই, কিন্তু দুই দেশের পরমাণু প্রকল্পের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই৷
পিয়ংইয়ংকে সাহায্য করার বিনিময়ে পাকিস্তান কী পেয়েছে?
উত্তর কোরিয়াকে সেন্ট্রিফিউজ দেয়ার বিনিময়ে ‘ডুডং' নামে একটি মিসাইল পেয়েছে পাকিস্তান৷ পরবর্তীতে তরল জ্বালানিচালিত এই মিসাইলের নাম দেয়া হয় ‘ঘুরি'৷ পাকিস্তানের অস্ত্রাগারে এখনও আছে এই মিসাইল৷ এই জ্বালানি তৈরি করতে বেশি সময় লাগে না, এবং এটা ‘সলিড ফুয়েল' বা ‘কঠিন জ্বালানির' মতো এত কার্যকরও নয়৷ ফলে এই লেনদেন অবশ্যই সমানেসমান ছিল৷ আমার মনে করি, এই বিনিময়ে দুই পক্ষই লাভবান হয়েছিল৷ তবে খুব বেশি না৷
উত্তর কোরিয়াকে ‘শায়েস্তায়’ নিয়োজিত যে রণতরি
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তপ্ত সম্পর্কে যে আরো উত্তপ্ত হচ্ছে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে৷ ফলে ইউএসএস কার্ল ভিনসনকে অবস্থান নিচ্ছে উত্তর কোরিয়ার কাছাকাছি সমুদ্র অঞ্চলে৷ চলুন জেনে নিই এই বিমানবাহী রণতরিটি সম্পর্কে৷
ছবি: Reuters/U.S. Navy/M. Castellano
সেই ১৯৮৩ সালে সমুদ্রযাত্রা
মার্কিন বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস কার্ল ভিনসন সেই ১৯৮৩ সালে সমুদ্রযাত্রা শুরু করে৷ পরবর্তীতে একাধিকবার এটির সংস্কার করা হয়৷ জর্জিয়ার কংগ্রেসম্যান কার্ল ভিনসনের নামে এটির নামকরণ করা হয়েছে৷ বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার কাছাকাছি অবস্থান করছে বিমানবাহী রণতরিটি৷
ছবি: Reuters/U.S. Navy/Z.A. Landers
অন্যতম বড় বিমানবাহী রণতরি
৯৭,০০০ টন ওজনের বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজটিতে রয়েছে টমহক মিসাইল, কয়েক ডজন যুদ্ধবিমান এবং অন্তত পাঁচ হাজার যুদ্ধ জাহাজ৷ এটি মার্কিন নৌ বাহিনীর কাছ থেকে নিমিৎস সিরিজের দশটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার্ড বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজের তৃতীয়টি৷ নিউক্লিয়ার পাওয়ার্ড হওয়ায় এটি বিশ বছর পর্যন্ত কোনো রকম জ্বালানি ছাড়াই চলতে পারে৷
ছবি: Reuters/U.S. Navy photo(C. Brown
ঘন্টায় ৩৫ মাইল
ভিনসনে চারটি প্রপেলার রয়েছে, যা দিয়ে এটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩৫ মাইল বেড়ে চলতে পারে৷ এটি ১০৯২ ফিট লম্বা এবং ২৫২ ফিট চওড়া৷ ছবিতে রণতরিটির পাশে একটি হেলিকপ্টারকে সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/U.S. Navy/M. Castellano
‘গোল্ড ইগল’
দক্ষিণ চীন সাগরে মোতায়েন ভিনসনের ডাকনাম হচ্ছে ‘গোল্ড ইগল৷’ ২০০১ সালে একটি ছবির শুটিং করা হয়েছে যুদ্ধজাহাজটিতে৷
ছবি: Reuters/Erik De Castro
ওসামা বিন লাদেনের মরদেহ
আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন পাকিস্তানে মার্কিন বাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার পর তার মরদেহ কার্ল ভিনসনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়৷ এই জাহাজ থেকে মরদেহটি সমুদ্রে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিল বলেও গুজব রয়েছে৷
ছবি: Reuters/U.S. Navy/Z.A. Landers
ইরাক যুদ্ধে ভিনসন
১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে পারস্য উপসাগরে মোতায়েন ছিল ভিনসন৷ সেখান থেকেই ইরাকে মার্কিন হামলায় ভূমিকা রাখে রণতরিটি৷ সেই সময় ১১টি যুদ্ধবিমান এই রণতরি থেকে উড়ে গিয়ে ইরাকের পঞ্চাশটি স্থানে হামলা চালিয়েছিল৷
ছবি: Reuters/U.S. Navy photo/M. Castellano
উত্তর কোরিয়ার হামলা প্রতিরোধে কি সক্ষম?
বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার চোখ রাঙানির জবাব দিতে ইউএসএস কার্ল ভিনসনকে সামনে ঠেলে দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ কিন্তু নিউজ উইকের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া ব্যালেস্টিক মিশাইল ছুড়লে তা ধ্বংসের ক্ষমতা রণতরিটির নেই৷ মার্কিন নেভি অবশ্য জানিয়েছে, ভিনসন উত্তর কোরিয়ার যে কোনো হামলাই প্রতিরোধে সক্ষম৷
ছবি: Reuters/U.S. Navy/M. Castellano
7 ছবি1 | 7
এ কিউ খানের এই ‘পরমাণু নেটওয়ার্ক' কি এখনও সচল আছে?
এটা বলাও খুব কঠিন৷ পাকিস্তানের পরমাণু প্রকল্প এখন পর্যবেক্ষণ করা হয়৷ ফলে এখন পারমাণবিক প্রযুক্তি দেশের বাইরে পাচার করা আরো কঠিন৷
উত্তর কোরিয়া ছয়টি সফল পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছে, এটা প্রতিষ্ঠিত৷ সর্বশেষটি সম্ভবত হাইড্রোজেন বোমা ছিল৷ দেশটির পরমাণু পরীক্ষার অর্জন পাকিস্তানের চেয়ে বেশি, প্রায় ভারতের কাছাকাছি৷
পারমাণবিক উত্তর কোরিয়া যে এখন বাস্তবতা, তা নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই৷ সুতরাং ভারত ও পাকিস্তানের সাথে একই পাল্লায় মাপতে হবে দেশটিকে৷
পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন ‘দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রগুলোর' হুমকি মোকাবেলা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কী করার আছে?
‘দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রের' ধারণা তারাই তৈরি করেছে, যারা নিজেরা পরমাণু শক্তিধর৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই আখ্যা বারবারই ইরান ও উত্তর কোরিয়া এবং তারও আগে ইরাকের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে এসেছে৷ এই শব্দগুলোর কোনো বৈধতা নেই, কারণ যুক্তরাষ্ট্রই দু'বার এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে – একবার হিরোশিমায়, আরেকবার নাগাসাকিতে৷ তাছাড়া আমরা আগেও দেখেছি যে, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ বিশ্বশান্তি রক্ষায় সহায়ক হয় না৷ পরাশক্তি হওয়া মানে এই না যে, যে কোনো রাষ্ট্রকে ‘দুর্বৃত্ত' বলার লাইসেন্স পেয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র৷
উত্তর কোরিয়ার মতলব কী?
বিশেষজ্ঞদের অনেক পূর্বাভাষ ভুল প্রমাণ করে এখনো টিকে আছে কিম জং উন-এর স্বৈরাচারী শাসনযন্ত্র৷ শুধু তাই নয়, একের পর এক সামরিক পদক্ষেপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহলকে প্ররোচনা দিয়ে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া৷ এই সাফল্যের রহস্য কী?
ছবি: Reuters/KCNA
পথের কাঁটা দূর করা
কোনো ব্যক্তিকে সামান্যতম হুমকি মনে করলেই পথের কাঁটা হিসেবে তাকে নিশ্চিহ্ন করতে পিছপা হন না কিম জং উন৷ সম্প্রতি তাঁর সৎ-ভাইকে যেভাবে মালয়েশিয়ায় খুন করা হয়েছে, তার পেছনে এই মনোভাব কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ এর আগেও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে এমন নিষ্ঠুর আচরণের দৃষ্টান্ত রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Kambayashi
ঘরে-বাইরে শত্রু
নিজের পারিবারিক শাসনতন্ত্র বাঁচিয়ে রাখতে ঘরে-বাইরে আস্ফালন চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর কিম জং উন৷ ঘরের শত্রুদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, বাইরের জগতকে ক্ষেপণাস্ত্র ও আণবিক অস্ত্র দেখিয়ে ঠেকিয়ে রাখার নীতি অনুসরণ করে চলেছেন ‘মহান নেতা’৷ সেই কৌশল কাজ করছে বলেও অনেকে মনে করছেন৷
ছবি: Reuters/KCNA
বিফল হলেই বা কী!
উত্তর কোরিয়ার অনেক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বিফল হয়েছে৷ কিন্তু একের পর এক প্রচেষ্টা জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো প্রতিবেশী দেশের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়৷ এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও পরমাণু শক্তিধর উত্তর কোরিয়ার উপর সামরিক হামলার কথাও এতকাল ভাবতে পারেনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Yeon-Je
পুরানো প্রযুক্তির সুবিধা
প্রশ্ন ওঠে, কার্যত একঘরে হয়ে থাকা একটি দেশ কীভাবে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি আয়ত্ত করছে? সেই ১৯৫০-এর দশকের মার্কিন, রুশ বা চিনা প্রযুক্তির ভিত্তিতেই উত্তর কোরিয়া তার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে আসছে৷ তাই সেই প্রচেষ্টা বানচাল করতে সাইবার হামলা চালানোরও কোনো উপায় নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Kcna
চিনের সঙ্গে দূরত্ব
আন্তর্জাতিক স্তরে নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত দেশ উত্তর কোরিয়া সাধারণ সীমান্তসহ একাধিক কারণে চীনের উপর নির্ভরশীল৷ তবে পিয়ংইয়ং ও বেইজিং-এর মধ্যে খোলাখুলি মতবিরোধ এখন আর বিরল ঘটনা নয়৷ এমন অবস্থা সত্ত্বেও স্থিতিশীলতার স্বার্থে চীন সে দেশের প্রতি সংযম দেখিয়ে চলেছে এবং অন্যান্য দেশকেও সেই পরামর্শ দিচ্ছে৷
ছবি: MARK RALSTON/AFP/Getty Images
চিনের উভয়-সংকট
উত্তর কোরিয়ার উপর প্রভাব কমে যাওয়ায় অন্যান্য দেশগুলিও আর চিনের আশ্বাসে আশ্বস্ত হতে পারছে না৷ দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাই চীনের দোরগড়ায় অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা মোতায়েনের উদ্যোগ নিচ্ছে৷ ফলে প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে চিনের নিজস্ব স্বার্থের ক্ষতি হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/U.S. Department of Defense/Missile Defense Agency
6 ছবি1 | 6
পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি – এনপিটি কি এখনও প্রয়োজনীয় এবং কার্যকর?
একসময় এনপিটি খুব কার্যকর ছিল, পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধে তা সাহায্য করেছিল৷ যত বেশি দেশের কাছে পরমাণু অস্ত্র থাকবে, বিশ্ব ততটাই বিপজ্জনক হয়ে উঠবে৷
তবে এই চুক্তি সম্ভবত এখন উপযোগিতা হারিয়েছে৷ অনুচ্ছেদ ৬ বিষয়ে এখনও একমত হয়নি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো, নিজেদের অস্ত্র ধ্বংসও করেনি তারা৷ বিপরীতে আরো কার্যকরি পরমাণু বোমা তৈরির দিকে মনোযোগ দিয়েছে তারা৷ ফলে আমাদের নতুন একটি কার্যকরি চুক্তি প্রয়োজন৷
সাত্তার খান/এডিকে
ড. পারভেজ হুডভয় একজন পাকিস্তানি পরমাণু পদার্থবিদ, গণিতবিদ এবং অ্যাকটিভিস্ট৷ ফোরমান ক্রিস্টিয়ান কলেজে সম্মাননীয় অধ্যাপক হিসেবেও আছেন তিনি৷ কোয়ান্টাম ফিল্ড তত্ত্ব, পার্টিক্যাল ফেনোমোলজি এবং পার্টিক্যাল ফিজিক্স সুপারসিমেট্রি নিয়ে কাজ করেন ড. পারভেজ৷ হুডভয় একজন বিশিষ্ট সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মী, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং শিক্ষা নিয়ে কাজ করেন পাকিস্তানে৷
প্রতিবেদনটি কেমন লাগলো লিখুন নীচের ঘরে৷
যে দেশে জিন্স ‘হারাম’, গাঁজা ‘হালাল’
দেশটি এতটাই যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী যে সেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবেই ‘জিন্স’-এর পোশাক পরা নিষিদ্ধ৷ অথচ অন্যদিকে যে যত খুশি ‘গাঁজা’ সেবন করতে পারবেন! এমন দেশ উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে জানুন মজার কিছু তথ্য৷
ছবি: Getty Images/C. Chu
ইচ্ছে মতো চুল কাটা মানা
হ্যাঁ, উত্তর কোরিয়ায় যার যেমন খুশি চুল কাটবেন সে উপায় নেই৷ স্বৈরশাসক কিম জং উন ক্ষমতায় আসার পর পরই ঠিক করে দিয়েছেন, দেশের সব পুরুষকে বিশেষ ১০টি আর মেয়েদের ১৮টি হেয়ার স্টাইলের মধ্যেই যে কোনো একটি বেছে নিতে হবে৷ আর কিম জং উন যেভাবে চুল কাটান সেভাবে দেশের আর কেউ কাটাতে পারবেন না৷
ছবি: picture alliance/AP Images
যে দেশে ‘স্বর্গ’ আছে...
উত্তর কোরিয়ার সব মানুষ মন থেকে নিজের দেশকে ‘স্বর্গ’ না বললেও, যাঁরা গাঁজা সেবন করেন, তাঁরা নিশ্চয়ই বলেন৷ এ দেশে যে যত খুশি গাঁজা খেতে পারেন৷ গাঁজা সেখানে কোনো নিষিদ্ধ মাদক নয়৷ সুতরাং যে যত খুশি গাঁজা খেলে কোনো সমস্যাই নেই৷
ছবি: picture alliance/Photopqr/l'Alsace
সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম
বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামটি কিন্তু উত্তর কোরিয়ায়৷ নাম রুনগ্রাদো মে ডে স্টেডিয়াম৷ ১৯৮৯ সালের পহেলা মে স্টেডিয়ামটির কাজ শেষ হয়েছিল বলে নামের সঙ্গেও জুড়ে দেয়া হয়েছে ‘মে দিবস’৷ ১ লক্ষ ৫০ হাজার দর্শকের আসন আছে স্টেডিয়ামটিতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জন্মদিনেও বাধা...
উত্তর কোরিয়ায় বছরের বিশেষ দু’টি দিনে কেউ জন্ম নিলে সেই দিনে জন্মদিন উদযাপন করা যাবে না৷ উত্তর কোরিয়া সাবেক দুই শাসক কিম ই সুং এবং কিম জং ইল মৃত্যুবরণ করেছিলেন বলে সেই দিনগুলোতে দেশের কোনো সাধারণ মানুষের জন্মদিন উদযাপন রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ৷ এ নিয়ম মানতে গিয়ে প্রায় ১ লাখ মানুষকে ৮ জুলাই বা ১৭ ডিসেম্বরের জন্মদিন উদযাপন করতে হয় একদিন পর, অর্থাৎ ৯ জুলাই এবং ১৮ ডিসেম্বরে৷
ছবি: Fotolia/Jenny Sturm
যুক্তরাষ্ট্র ‘শত্রু’, তাই...
এক সময় উত্তর কোরিয়ায় সমাজতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা ছিল, কিন্তু এখন যে ধরনের শাসন চলছে তাকে সমাজতান্ত্রিক বলার উপায় নেই৷ দেশের নাম ‘ডেমোক্র্যাটিক পিপল’স রিপাবলিক অফ কোরিয়া’, অথচ ঘোষিতভাবেই চলছে একদলীয় শাসন৷ তবে সমাজতন্ত্র না থাকলেও উত্তর কোরিয়ার সেই ‘শীতল যুদ্ধের’ সময়কার যুক্তরাষ্ট্রবিরোধিতা ঠিকই আছে৷ যুক্তরাষ্টের মানুষ বেশি জিন্স পরে বলে এ দেশে জিন্স পরা নিষিদ্ধ৷