উত্তর কোরিয়ার ব্যালেস্টিক মিসাইল পৌঁছাতে পারে অ্যামেরিকা!
১ নভেম্বর ২০২৪
বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়া এই মিসাইল পরীক্ষা করেছে বলে জানা গেছে। পশ্চিমা দেশগুলি এর প্রবল নিন্দা করেছে।
বিজ্ঞাপন
উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে কিম জং উনের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার এই পরীক্ষা হয়েছে। যে মিসাইলটি ছাড়া হয়েছে, তা ব্যালেস্টিক মিসাইল বলেই মনে করা হচ্ছে। এর আগে উত্তর কোরিয়া যত মিসাইল পরীক্ষা করেছে, এটি তাদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে দাবি করেছে গণমাধ্যম।
কিম বলেছেন, ''এই পরীক্ষার মাধ্যমে বিপক্ষ দেশগুলিকে যুতসই বার্তা দেওয়া গেল।'' বস্তুত, বুধবারই দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছিল, উত্তর কোরিয়া তাদের সপ্তম পরমাণু পরীক্ষার জন্য তৈরি বলে তাদের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। শুধু তা-ই নয়, তাদের হাতে এখন এমন ব্যালেস্টিক মিসাইল আছে, যা অ্যামেরিকা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এর পরই বৃহস্পতিবার ব্যালেস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করলো উত্তর কোরিয়া। মনে করা হচ্ছে, এই মিসাইল অ্যামেরিকা পর্যন্ত পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে।
মিসাইল প্রদর্শনের সামরিক মহড়ায় সকন্যা কিম জং উন
উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশাল সামরিক মহড়ার আয়োজন করা হয়। পিয়ংইয়ংয়ের কিম ইল সুং স্কোয়ারে বুধবার ক্ষেপণাস্ত্রগুলি প্রদর্শিত হয়। কিম-আমলের সবচেয়ে বড় সামরিক প্রদর্শনের ঝলক দেখুন ছবিঘরে..
ছবি: KCNA/REUTERS
সামরিক মহড়া
পিপলস আর্মির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। সামরিক অনুশীলন সম্প্রসারণ ও আরো জোরদার করার প্রতিজ্ঞা করেছে তারা।
ছবি: KCNA/REUTERS
বিশাল মহড়া
পিয়ংইয়ংয়ের সামরিক কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে বিশেষ করে তাদের রেকর্ডসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ। কিন্তু তাদের সমালোচনায় বিন্দুমাত্র পাত্তা দেয়নি কিম জং উনের দেশ। রীতিমতো জাঁকজমক করে সামরিক ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে তারা।
ছবি: KCNA/REUTERS
প্রতিপক্ষকে জবাব?
গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথ বিমান মহড়া করে। সেই মহড়ার পর পিয়ংইয়ংয়ের তরফে পাল্টা জবাব ছিল এই সামরিক মহড়া। বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের প্রদর্শনের মাধ্যমে হুমকি দিয়েছে তারা।
ছবি: KCNA/REUTERS
কিমের সঙ্গে সামরিক কর্তারা
এই কুচকাওয়াজে শাসক কিমের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দেশের দুই সামরিক কর্তাও। একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণই শুধু নয় ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের এক বৈঠকে কিম বলেছেন সামরিক বাহিনীকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে। তাই এই কুচকাওয়াজ ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ছবি: KCNA/REUTERS
বাহিনীর প্রস্তুতি
দেশের প্রতিটি বাহিনীর কর্তা ও কর্মীরা অংশ নিয়েছেন এই মেগা কুচকাওয়াজে। সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা বিশ্বের প্রতিটি দেশের কাছে 'তুলে ধরতে' কিমের এই আয়োজন।
ছবি: KCNA/REUTERS
সাঁজোয়াতেও পিছিয়ে নেই
৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একাধিক সুবিশাল সাঁজোয়া যান এই সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। সেই ছবি ধরা পড়েছে আলোকচিত্রীর ক্যামেরায়
ছবি: KCNA/REUTERS
মহড়ায় ক্ষেপণাস্ত্র
সামরিক কুচকাওয়াজের সময় ক্ষেপণাস্ত্রগুলি প্রদর্শিত হয়েছে একাধিকবার।
ছবি: KCNA/REUTERS
কিম কী চান
কিম তার দেশের পারমাণবিক অস্ত্রাগারে "এক্সপোনেনশিয়াল ইনক্রিস"-এর আহ্বান জানানোর দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এই সর্ববৃহৎ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ছবি: KCNA via REUTERS
বাহিনীর ক্ষমতা
বুধবার রাতের সামরিক কুচকাওয়াজে প্রায় এক ডজন উন্নত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেছে উত্তর কোরিয়া, যাকে রাষ্ট্র-চালিত মিডিয়ায় পিয়ংইয়ংয়ের "পারমাণবিক হামলার ক্ষমতা" হিসাবে বর্ণনা করেছে।
ছবি: KCNA/REUTERS
কিমের উল্লাস
সামরিক মহড়ার সময় কিম জং উনের চোখেমুখে ছিল হাসি। মহড়ায় প্রদর্শিত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, তাত্ত্বিকভাবে এসব ক্ষেপণাস্ত্রের অনেকগুলোরই যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত করার ক্ষমতা রয়েছে।
ছবি: KCNA/REUTERS
উত্তরসূরি?
বুধবার রাতের কুচকাওয়াজের মহড়ায় কিমের সঙ্গে একটি বাচ্চা মেয়েকে দেখা গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে সেই হলো কিমের মেয়ে জু আয়ে। তাকে সম্ভবত কিমের চূড়ান্ত উত্তরসূরি হিসাবে তৈরি করা হচ্ছে। কিমের মেয়ের স্পটলাইটে আসা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
ছবি: KCNA/REUTERS
11 ছবি1 | 11
জার্মানি এই পরীক্ষাকে বেআইনি বলে ঘোষণা করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া একের পর এক গণহত্যার জন্য অস্ত্র তৈরি করছে। অ্যামেরিকা এবং জাতিসংঘ বৃহস্পতিবারই এর বিরোধিতা করেছিল। আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, উত্তর কোরিয়া একের পর এক ব্যালেস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করে চরম বেআইনি কাজ করছে। এই পরীক্ষা নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের বিরোধী।
সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার এই বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বিশেষ বৈঠক হতে পারে। বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারে, ফ্রান্স, মালটা, জাপান, স্লোভেনিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবারই দক্ষিণ কোরিয়ার সেনা প্রধান জানিয়েছিলেন, উত্তর কোরিয়া ব্যালেস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করেছে। উত্তর সাগরে গিয়ে সেই মিসাইল পড়েছে। মিসাইলের গতি দেখে মনে হয়েছে, এটি একটি দূরপাল্লার মিসাইল। এবং সে কারণেই মিসাইলটিকে উপরের দিকে অ্যাঙ্গেল করে ছোঁড়া হয়েছিল, যাতে তা বেশি দূর পৌঁছাতে না পারে।
জাপানের কোস্টা গার্ডি জানিয়েছিল, মিসাইলটি জাপানের দ্বীপ অকুসিরি থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে পড়েছে। এদিকে জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, মিসাইলটি এক হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সাত হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত তা উপরে উঠেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।