উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ দুই পদে রদবদল
৭ জুন ২০১০শুধু জাং সং-থায়েকের মনোনয়নই নয় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং ইলের বংশেরই আরেক সদস্যকে মনোনীত করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য৷ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে কিম ইয়ং ইলকে৷ গত বছরের শেষ দিকে মুদ্রা মানের পুনর্মূল্যায়নের জের ধরেই সম্ভবত পদ হারাতে হলো কিম ইয়ং ইলকে৷ কারণ ঐ পদক্ষেপের ফলে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতিতে বেশ বড় ধাক্কা লেগেছে, অন্তত অর্থনীতিবিদরা তা-ই মনে করেন৷ দেশটির অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণে শীর্ষ পদ হিসেবে বিবেচিত প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন ৮১ বছর বয়সি চো ইয়ং-রিম৷ সোমবার এসব তথ্য পরিবেশন করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ৷
সংসদের অধিবেশনে তেমন একটা দেখা না গেলেও এই গুরুত্বপূর্ণ পদে মনোনয়নের অধিবেশনে নিজেই হাজির ছিলেন জং ইল৷ জানা গেছে জং ইল সভাপতিত্ব করেছেন এই অধিবেশনে৷ দেশটির সাংসদরা সাধারণত বছরে একটি অধিবেশনে মিলিত হন৷ কিন্তু এই বছর এপ্রিলে অধিবেশন করার পর সোমবার আবারও কেন অধিবেশনে বসলেন তাঁরা সে বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি৷
সং-থায়েকের এই মনোনয়নের ফলে তাঁকেই দেশটির পরবর্তী শীর্ষ নেতা হিসেবে দেখা যাবে এমন ধারণা বিশ্লেষকদের৷ ২০০৮ সালে স্ট্রোকের শিকার জং ইলের অপারগতায় আগামীতে ৬৪ বছর বয়সি সং-থায়েককেই দেশের হাল ধরতে হবে, জল্পনা-কল্পনা সেরকমই৷ তবে এসব কিছুই যে, ইলের ছোট ছেলে জং উনের জন্য পথ পরিষ্কার করার প্রক্রিয়া সেই গুঞ্জনও বেশ জোরালো৷ যেমন কোরিয়া ইন্সটিটিউট ফর ন্যাশনাল অ্যানালাইসিস এর পার্ক ইয়ং-হো'র মন্তব্য, ‘‘জং-উনকে ক্ষমতায় বসাতে মূল ভিত্তি তৈরির কাজে জং ইলের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ব্যক্তিই হতে পারেন সং-থায়েক৷'' ইয়ং-হো আরো বলেন, ‘‘এসব কিছু থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, আগামীতেও কোন সংস্কার, আধুনিকীকরণ কিংবা উন্মুক্ত কোন পদ্ধতি নয়, বরং বর্তমান শাসন কাঠামো চালু রাখারই সংকেত এটি৷''
এছাড়া শীর্ষ পর্যায়ের পদসমূহে এমন মনোনয়ন থেকে ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, দেশে বিরাজমান অর্থনৈতিক মন্দা এবং সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনা নিয়ে তাদের উপর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে হয়তো দ্রুতই অবসরে যেতে চান জং ইল৷ বিশেষ করে একদিকে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা, অন্যদিকে গত মার্চে দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনীর জাহাজ ডোবানোর দোষ চাপিয়ে পিয়ংইয়ংকে শাস্তি দেওয়ার হুমকি উচ্চারিত হচ্ছে জোরেশোরেই৷
উল্লেখ্য, দেশটির ক্ষমতাধর শ্রমিক দলের উপ-প্রধানের পদে থাকা সং-থায়েক ২০০৬ সালে দেশে ফেরার আগে দুই বছর পুরোপুরি দৃষ্টির আড়ালে ছিলেন৷ তবে দেশে ফেরার পর থেকে বেশ দ্রুতই এগিয়ে গেছেন ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়ে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম