পালিয়ে আসা উত্তর কোরীয়রা তুলে ধরেছেন সে দেশে নারীদের যৌন নিপীড়নের ভয়াবহ চিত্র৷ তাঁরা মনে করেন, আইনের প্রয়োগ না থাকায় অপরাধীরা সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানায় যে, ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা উত্তর কোরিয়ায় অনায়াসে নারী নিপীড়ন চালিয়ে যান৷ শাস্তির কোনো ভয় তাঁদের না থাকায় সে দেশে নারী সুরক্ষার অবস্থা ভয়াবহ খারাপ৷
৫৪ জন উত্তর কোরীয় সাধারণ শরণার্থী ও ৮জন সাবেক সরকারি কর্মকর্তার সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কীভাবে সেখানে অহরহ যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে৷ সেখানে বলা হয়, সমাজের বিভিন্ন স্তরের ক্ষমতাবানেরা প্রায়ই নারীদের যৌন নিপীড়ন করেও সহজেই পার পেয়ে যান৷
কিম জং উনের রহস্যময়ী বোন সম্পর্কে যা জানেন না
উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ পরিষদের বিকল্প সদস্য হয়েছেন কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং৷ দেশের সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পরিষদের সদস্য হলেন উত্তর কোরিয়ার নেতার বোন৷ জং উনের এই রহস্যময়ী বোন সম্পর্কে কতটা জানেন আপনি?
ছবি: picture-alliance/dpa/Jiji Press/M. Matsutani
বোনদের ধারাবাহিকতা
দেশটির প্রয়াত নেতা কিম জং ইল ক্ষমতায় থাকাকালীন নিজের বোন কিম কিয়ং হি কে এই পদে অভিষিক্ত করেছিলেন৷ আর জং উনের বোন কিম ইয়ো-জং তার ফুপুর স্থলাভিষিক্ত হয়ে দেশটির ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর বিকল্প সদস্য হলেন৷ তাঁর ফুফুরও বেশ প্রভাব ছিল পলিটব্যুরোতে৷
ছবি: picture alliance/dpa/Jiji Press
পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য
কিম জং ইল এর সাত সন্তানের মধ্যে ইয়ো জং কনিষ্ঠ এবং জং উনের ছোট বোন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Jiji Press/M. Matsutani
পড়ালেখা
কিম ইয়ো জং এর পড়ালেখার শুরু বাড়িতে থেকে৷ পরে ভাই জং উনের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্নের কাছে একটি স্কুলে পড়ালেখা করেছেন৷ এরপর উত্তর কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন তিনি৷ এর অল্প কিছুদিন পর পশ্চিম ইউরোপে গিয়ে কয়েকটি কোর্স করেন৷
ছবি: picture-alliance/Kyodo
রাজনীতিতে প্রথম অংশগ্রহণ
কিম ইয়ো জংকে প্রথম দেখা যায় ২০১০ সালে ওয়ার্কার্স পার্টির তৃতীয় সম্মেলনে৷ সেখানে তাঁকে বাবার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Yonhap/North Korean Central TV
২০১২ সাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদে
২০১২ সালে জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশনের অধীনে কিম জং উনের সফরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন তিনি৷ ২০১৪ সালের অক্টোবরে কিম জং উনের চিকিৎসা চলাকালীন রাষ্ট্রক্ষমতা তাঁর হাতে ছিল বলে জানা যায়৷ একই বছরের নভেম্বরে ইয়ো জংকে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রচারণা ও আন্দোলন বিভাগের উপ-পরিচালক পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Ahn Young-joon
কালো তালিকাভুক্ত
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে উত্তর কোরিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৮ বছর বয়সি ইয়োকে উত্তর কোরিয়ার আরও কয়েকজন কর্মকর্তাসহ কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Ahn Young-joon
6 ছবি1 | 6
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর পরিচালক কেনেথ রথ বলেন, ‘‘কিম জং উনের শাসনে কোনো নারীর বিচার পাওয়ার আশা খুবই কম৷ নারীদের এই বিষয়ে বলতে দিলে আমি নিশ্চিত, তাঁরাও বর্তমানে বিভিন্ন দেশে চলমান ‘মি-টু’ আন্দোলনের সাথে গলা মেলাতেন৷’
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের বড় বড় নেতা থেকে জেলের রক্ষী বা পুলিশ বলতে গেলে সবার কিরুদ্ধেই যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে৷
‘ইউ ক্রাই অ্যাট নাইট, বাট ডোন্ট নো হোয়াই’, অর্থাৎ, ‘তুমি রাতের বেলা কাঁদো, কিন্তু কেন, তা জানো না’ শিরোনামের এই প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সমাজের সব ধাপে অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ থাকার ফলে নারীরা অভিযোগ দায়ের করেন না৷ শুধু তা-ই নয়, যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত অনেক ব্যক্তিই পুলিশ বা প্রশাসনের সাথে জড়িত৷ স্বাভাবিকভাবেই হয়রানির শিকার হওয়া নারীদের আইনের সাহায্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে৷
কর্পোরেট অফিসে কাজ করা নারীরাও নিস্তার পান না এই নিপীড়ন থেকে৷ প্রতিবেদনটি এমনটিই জানানো হয়েছে৷ এক নারী কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায় যে, যাদের হাতে অনেক ক্ষমতা, তারা সাধারণত আইনের আওতার বাইরেই থেকে যান৷ এমন ব্যক্তিদের কাছে নারী যেন খেলার পুতুল৷
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর মতে, উত্তর কোরিয়ার সরকার যৌন নিপীড়নকে যথাযথ গুরুত্ব দেয় না, অভিযুক্তদের আড়াল করে বলেই সেখানে বাড়ছে যৌন হয়রানির ঘটনা বাড়ছে৷