1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তর কোরিয়ার রকেট প্রযুক্তি

১৭ আগস্ট ২০১৭

নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকার একটি বিবরণ অনুযায়ী উত্তর কোরিয়া ইউক্রেনের কালোবাজার থেকে রকেট ইঞ্জিন কিনে পরে সেই প্রযুক্তির আরো বিকাশ ঘটায়৷ আরেক হদিশ গেছে রাশিয়ার দিকে৷

ছবি: picture alliance/AP Photo

পূর্ব ইউক্রেনের নিপ্রো শহরে অবস্থিত সাবেক সোভিয়েত রকেট তৈরির কারখানাটির নাম ইয়ুঝমাশ৷ ভিটালি জুশচেভস্কি এখানে ডেপুটি প্রোডাকশন ম্যানেজার ছিলেন৷ মার্কিন নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকার সোমবারের সংস্করণে দাবি করা হয় যে, রকেট প্রযুক্তিতে উত্তর কোরিয়ার চমকপ্রদ প্রগতির সঙ্গে ইয়ুঝমাশের সংযোগ থাকতে পারে – জুশচেভস্কির প্রতিক্রিয়া: ‘‘ওটা একটা মিথ্যা৷''

ইয়ুঝমাশ ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানাটি আর্থিক বিপাকে; সেই কারণেই হয়তো অপরাধীরা কারখানার সাবেক কর্মীদের সঙ্গে যোগসাজসে পুরনো সোভিয়েত রকেট ইঞ্জিন – বা তার যন্ত্রাংশ – উত্তর কোরিয়ায় পাচার করেছে৷ এনওয়াইটি এই প্রসঙ্গে লন্ডনের ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ' (আইআইএসএস)-এর একটি সমীক্ষা ও মার্কিন গুপ্তচর সংস্থাগুলির অনুমানের কথা উল্লেখ করেছে৷ তবে পত্রিকাটি শুধু হদিশের কথা বলেছে, কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণের কথা বলেনি৷

হঠাৎ এই প্রগতি ঘটল কী করে?

আইআইএসএস-এর মাইকেল এলম্যান উত্তর কোরিয়ার হোয়াসং ১২ ও ১৪ গোত্রের মাঝারি পাল্লার ও আন্তঃ-মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রগুলি বিশ্লেষণ করে দেখেছেন৷ এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি সম্ভবত মূল মার্কিন ভূখণ্ডে পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে৷ উত্তর কোরিয়ার পক্ষে মাত্র দু'বছরের মধ্যে রকেট প্রযুক্তিতে এই পরিমাণ প্রগতি করা শুধুমাত্র বিদেশি সরবরাহকারী, এক্ষেত্রে প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের সাবেক সদস্যদেশগুলির সাহায্যেই সম্ভব – এলমান এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন৷

সর্বাধুনিক হোয়াসং রকেটগুলিতে যে এক চেম্বারের ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে, তা সোভিয়েত আরডি-২৫০ রকেট ইঞ্জিনটির কথা মনে করিয়ে দেয়, বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত – যদিও আরডি-২৫০-এর ইঞ্জিনের দু'টি চেম্বার ছিল৷ ষাটের দশকে এই রকেট ইঞ্জিন তৈরি করা হয়৷

ইয়ুঝমাশ কারখানায় আরডি-২৫০ রকেট ইঞ্জিনটি তৈরি করা হয়েছে কি হয়নি, তা প্রমাণ করা শক্ত৷ জুশচেভস্কির বিবৃতি অনুযায়ী, রাশিয়া থেকে এই ইঞ্জিনগুলি এসেছিল ও ‘‘স্বল্প পরিমাণে উৎপাদন করা হয়েছিল''৷ ইউক্রেনে আরডি-২৫০ রকেট ইঞ্জিন যথেষ্ট পরিমাণে তৈরি করা হয়েছিল, বলে এলমানের ধারণা৷ আইআইএসএস-এর সমীক্ষায় তিনি লিখেছেন যে, ‘‘শত শত, কিংবা তারও বেশি'' আরডি-২৫০ রকেট ইঞ্জিন রাশিয়া ও সেই সঙ্গে ইউক্রেনে রয়ে গেছে৷ কাজেই মস্কো স্বয়ং পিয়ংইয়ং-কে রকেট ইঞ্জিন সরবরাহ করেছে, এমন সম্ভাবনাও দেখেন তিনি৷

রুশ অপপ্রচার?

‘‘নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ যে ধরনের ইঞ্জিন দেখানো হয়েছে, (ইয়ুঝমাশে) আমরা কখনো সে ধরণের ইঞ্জিন উৎপাদন করিনি'', বলেন অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার জুশচেভস্কি, যিনি প্রায় ৫০ বছর ধরে কোম্পানিটিতে কাজ করেছেন৷ ক্রাইমিয়া দখলের পর যখন রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ হয়ে যায়, তখন থেকে নিপ্রোর রকেট কারখানাটি ‘‘প্রায় মৃত'', বলে বর্ণনা করেন তিনি৷ ইয়ুঝমাশ থেকে উত্তর কোরিয়ায় প্রযুক্তি পাচার তাঁর কাছে অকল্পনীয়৷ ইউক্রেন সরকার ও ইয়ুঝমাশের কর্মকর্তারাও নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকার বিবরণ অস্বীকার করেছেন৷ কিয়েভ সরকার প্রযুক্তি পাচার সম্পর্কে কিছু জানতেন না, বলেই এলম্যানের ধারণা৷

সোভিয়েত ইউনিয়নের সুবিশাল এসএস-১৮ ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইলটি তৈরি হতো এই ইয়ুঝমাশ কারখানায়৷ ইয়ুঝমাশ জাতিসংঘের আরোপিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ এই প্রথম৷ তবে উত্তর কোরিয়া যে ইউক্রেনীয় জানকারিতে আগ্রহী, অতীতে তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে: ২০১২ সালে ইয়ুঝমাশের উপর গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ইউক্রেনে দু'জন উত্তর কোরীয় নাগরিকের বিচার হয়৷

নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টটি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ অপপ্রচারের অঙ্গ, বলে কিয়েভের অধিকাংশ পর্যবেক্ষকের বিশ্বাস৷

রোমান গঞ্চারেঙ্কো/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ