নাইজেরিয়ায় ১৯৯৯ সালে সামরিক শাসনের অবসানের পর এত বড় বিক্ষোভ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে চলা বিক্ষোভ ছিল পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ। বিক্ষোভ হচ্ছে পুলিশি বাড়াবাড়ির প্রতিবাদে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, স্পেশাল অ্যান্টি রবারি স্কোয়াড ভেঙে দিতে হবে। সেই অহিংস প্রতিবাদে দেখা গিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতা।

বিক্ষোভে যথেচ্ছ গুলির পর অনেকে মারা গেছেন। প্রচুর মানুষ হাসপাতালে। কারো পায়ে গুলি লেগেছে। কারও আঘাত হাতে। কারো আঘাত গুরুতর।

অভিযোগ, নাইজেরিয়ার সেনাই গুলি চালিয়েছে। অ্যামেরিকাও জানিয়েছে, মনে করা হচ্ছে, সেনাই গুলি চালিয়েছে। এটা খুবই নিন্দনীয় ঘটনা। এরপর সেনার তরফে জানানো হয়েছে, তারা গুলি চালায়নি। তা হলে গুলি চালাল কে? অধিকার কর্মীদের বক্তব্য, সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীই যে গুলি করেছে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

নাইজেরিয়ার বাণিজ্যিক রাজধানী লাগোসে বহু জায়গায় আগুন ধরানো হয়েছে। লাগোস জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে কালো ধোঁয়া। অনেক জায়গায় লুটপাট শুরু হয়েছে। একটি বন্দিবহুল জেলেও আগুন লেগেছে

বাড়ির সামনে রাখা গাড়িও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেই গাড়ির কঙ্কাল পড়ে আছে।

আগুন লাগানো হয়েছে টিভিসি টেলিভিশন সেন্টারেও। ছাদ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সেই আগুন।

এতদিন বিক্ষোভ পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ ছিল। এখনো বিক্ষোভ থেকে অশান্তি ছড়ায়নি। তা হলে এই আগুন, লুটপাটের পিছনে কারা? অভিযোগের আঙুল উঠছে সরকারের দিকেই। বিক্ষোভকারীদের বদনাম করতেই এই ধরনের কাজ করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।

গুলি, আগুন, লুটপাটের মধ্যেও বিক্ষোভ থামেনি। হাতে হাত মিলিয়ে তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। এত অত্যাচারের পরেও তাঁদের মনোবল ভাঙেনি।

লাগোসে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তা অগ্রাহ্য করেই চলছে বিক্ষোভ। রাতেও।

বিমান ধরতে হবে। কিন্তু বিক্ষোভ ও সহিংসতার জেরে যানবাহন নেই রাস্তায়। তাই হাঁটাই একমাত্র পথ। এই পরিবার বিমান ধরার জন্য তাই হেঁটেই এয়ারপোর্ট যাচ্ছেন।

বিক্ষোভকারীরা লাগিয়েছেন এই পোস্টার, করদাতাদের টাকায় করদাতাদের হত্যা বন্ধ হোক।

প্রতিবাদ করছে বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলি। প্রতিবাদ করেছে অ্যামেরিকা। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের উপর এ ভাবে গুলি চালানো মানতে রাজি নয় কেউই। তাঁদের প্রতিবাদে সরকার চাপে। তবে প্রেসিডেন্ট বুহারি বলেছেন, পুরো তথ্য জেনেই মন্তব্য করা উচিত।