উত্তর প্রদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভগবান ভরসায়: হাইকোর্ট
১৮ মে ২০২১গঙ্গা দিয়ে ভেসে আসছে একের পর এক শবদেহ। বালিতে পুতে রাখা হচ্ছে মরদেহ। উত্তর প্রদেশে করোনাকালের এই চমকে দেয়া ছবি নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা কম হয়নি। এই বার এলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, উত্তর প্রদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা 'ভগবান ভরসায়' আছে। গ্রাম ও ছোট শহরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পর্যালোচনা করে এই মন্তব্য বিচারপতিদের।
উত্তর প্রদেশ ভারতের সব চেয়ে জনবহুল রাজ্য। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে এ পর্যন্ত ১৬ লাখ ১৯ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এখন প্রতিদিন ২০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। বিচারপতি সিদ্ধার্থ ভার্মা ও বিচারপতি অজিত কুমারের পর্যবেক্ষণ হলো, ''উত্তর প্রদেশের ছোট শহর ও গ্রামে চিকিৎসা ব্যবস্থা সাধারণ সময়েই মানুষের চিকিৎসার প্রয়োজন মেটাতে পারে না, করোনার সময় তো তা ভেঙে পড়বেই।''
বিচারপতিরা পশ্চিম উত্তর প্রদেশের বিজনোর জেলার উদাহরণ দিয়েছেন। রাজ্য সরকারের দেয়া তথ্য তুলে ধরে তারা বলেছেন, বিজনোর জেলায় তিনটি সরকারি হাসপাতালে ১৫০টি বেড আছে। বাইপ্যাপ মেশিন আছে পাঁচটি। আর গ্রামের ৩২ লাখ মানুষের জন্য ১০টি কমিউনিটি হেলথ সেন্টার আছে। প্রতিটি হেলথ সেন্টার কমবেশি তিন লাখ মানুষের জন্য। প্রতিটি সেন্টারে গড়ে বেড আছে মাত্র ৩০টি। বাইপ্যাপ মেশিন নেই।
আদালত জানিয়েছে, ১০টি হেলথ সেন্টারে ৩০০টি বেড আছে, আর অক্সিজেন কনসেনট্রেটর আছে ১৭টি। অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে ২৫০টি।
অন্যদিকে ব্লুমবার্গের রিপোর্ট বলছে, ভারতের গ্রামের দিকে পরিবারগুলি করোনার প্রকোপে শেষ হয়ে যাচ্ছে। তারা ১৮টি ছোট শহর বা গ্রামের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট তৈরি করেছে। তারা সেখানে দিল্লির কাছে উত্তর প্রদেশের বাসির গ্রামের কথা বলেছে, যেখানে পাঁচ হাজার ৪০০ মানুষ থাকেন। সেখানে এক তৃতীয়াংশের করোনা হয়েছে। গত তিন সপ্তাহে ৩০ জন মারা গেছেন।
গ্রামের প্রতিনিধি সঞ্জীব কুমার ব্লুমবার্গকে বলেছেন, যারা কম অসুস্থ তারা জেলা সদরে যাচ্ছেন। আর বেশি অসুস্থ হলে চার ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। অনেকেই সেই কষ্ট সহ্য করতে পারছেন না।
প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''উত্তর প্রদেশ কেন গোটা দেশের অবস্থাই কম বেশি একই। রাজধানী দিল্লির ছবিটাও আলাদা নয়। তবে উত্তর প্রদেশে ২০১১-১২-তে এনআরএইচএম কেলেঙ্কারি হয়েছিল। কেন্দ্র তখন গ্রামের চিকিৎসাকেন্দ্রের জন্য সব মেশিনপত্র পাঠিয়েছিল। সেগুলি বেশিরভাগ হয় পড়ে ছি্ল বা কী করে তা চালানো হবে, তার জন্য প্রশিক্ষিত কর্মী ছিল না। ফলে সে সবই জলে গেছে। তাই এখনকার ছবিটা আশ্চর্যজনক নয়।''
জিএইচ/এসজি(এনডিটিভি)