1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তাপ ছড়াচ্ছে রাজনীতি: চলছে হুমকি, পাল্টা-হুমকি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৬ ডিসেম্বর ২০১৪

বাংলাদেশের রাজনীতি আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে৷ বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ পাল্টা-পাল্টি সমাবেশ ডাকছে একই দিনে, একই স্থানে৷ আর তা নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় জারি করা হচ্ছে ১৪৪ ধারা৷ ৫ই জানুয়ারি ‘শো-ডাউন’ হবে দুই দলেরই৷

Kombobild Khaleda Zia und Sheikh Hasina
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY

শনিবার গাজীপুরে বিএনপির সমাবেশ নিয়ে এখন চলছে চরম উত্তেজনা৷ ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ মাঠের সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিত থাকার কথা৷ তবে একই সময় সেখানে সমাবেশ ডেকেছে শাসক দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ৷ এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার দুপুর দুটো থেকেই গাজীপুর জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে৷ গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘দুই পক্ষকে সমঝোতা করতে বলেছিলাম৷ তারা সমঝোতায় আসতে না পারায় শনিবার দুপুর দুটো থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে৷''

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরছবি: Imago

‘‘যে কোনো মূল্যে শনিবার গাজীপুরে সমাবেশ করা হবে'' – বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দিনের শুরুতে এ কথা বললেও, পরে ১৪৪ ধারা ঘোষণার সিদ্ধান্তকে ‘পূর্বপরিকল্পিত' বলে অভিযোগ করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘শনিবার বেলা ২টায় গাজীপুরে ২০ দলীয় জোটের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাষণ দেওয়া কথা৷ এই জনসভা বানচাল করতেই সরকার পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৪৪ ধারা জারি করেছে৷''

এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার চলছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল৷ জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে বগুড়া এবং শেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএনপি- জামায়াতের কয়েকশ' নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করা হয় শুক্রবার সকালে তাঁর ঢাকার বাসা থেকে৷ তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা মেডিকেলের সামনে সাংসদ ছবি বিশ্বাসের গাড়িতে হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে৷ এছাড়া খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে বকশীবাজারে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের দেড় শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে৷

বিএনপি চাইছে ৫ই জানুয়ারির আগেই মাঠে নামতে৷ তারা চাইছে, ৫ই জানুয়ারি মাঠ দখলে রাখতে৷ কর্মসূচি চূড়ান্ত না হলেও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানা গেছে৷ বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ক্ষমতাসীনদের আচরণের ওপর নির্ভর করে আন্দোলনের ছক অনুসারে শিগগিরই মাঠে নামবে বিএনপি৷ এ মাসে কিংবা জানুয়ারি মাসের যে কোনো সময় একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে সরকার পতনের জন্য রাজপথে চূড়ান্ত আন্দোলন গড়ে তোলা হবে, যার নেতৃত্বে থাকবেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া৷''

আন্দোলন সফল করতে বিএনপি তৃনমূল এবং ছাত্রদলকে চাঙ্গা করার কাজ এগিয়ে নিচ্ছে এর মধ্যে৷ ছাত্রদলের একজন নেতা জানান, ‘‘গত সপ্তাহে খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরার দিন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা মাঠে থেকে এর প্রমাণ দিয়েছেন৷ ছাত্রলীগ পুলিশের সহায়তায় হামলা করলেও, তারা পেরে ওঠেনি ছাত্রদলের সঙ্গে৷'' তাঁর দাবি, পুলিশি সহায়তা না পেলে ছাত্রলীগ একদিনও মাঠে টিকতে পারবে না৷

ঢাকার কলাবাগান এলাকার ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেন, ‘‘গত কয়েক সপ্তাহে পরিস্থতি বদলেছে৷ তুণমূলের কমিটি হওয়ায় এখন সাবাই আন্দোলনে মাঠে নামতে প্রস্তুত৷ মাঠে নামছেও৷ ৫ই জানুয়ারির জন্য প্রস্তুত আছি আমরা৷''

ওদিকে শাসক দল আওয়ামী লীগও বসে নেই৷ তারা রাজপথে বিএনপিকে প্রতিহত করার জন্য প্রস্ততি নিচ্ছে৷ মিরপুর এলাকার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে৷ ঢাকায় ৫ই জানুয়ারির মহাসমাবেশ সফল করতে ব্যাপক গণসংযোগ চালানো হচ্ছে৷'' তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিএনপির প্রস্তুতিও নজরে রাখছি৷ অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেব৷''

ছাত্রলীগ এরইমধ্যে খালেদা জিয়াকে প্রহিতের ঘোষণা দিয়েছে৷ তারা দাবি করেছে, তারেক রহমান বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লন্ডনে যে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন, তা প্রত্যাহার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের কোথাও সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হবে না৷ তারই অংশ হিসেবে ছাত্রলীগ গাজীপুরে বিএনপির সমাবেশ স্থলে পাল্টা সমাবেশ ডেকেছে৷ এই সমাবেশে খালেদা জিয়ার থাকার কথা৷

ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল আলম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এরই মধ্যে বিএনপি নেতাদের ‘নেড়ি কুত্তার মতো পেটানোর' হুমকি দিয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমের খবর৷ আওয়ামী লীগ নেতা এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘‘বিএনপিকে মাঠেই নামতে দেয়া হবে না৷''

তিনি বলেন, ‘‘আগামী ৫ই জানুয়ারি দেশের কোথাও বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের রাজপথে নামতে দেয়া হবে না৷ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাজপথ দখলে রেখে খুনি বাহিনীকে প্রতিহত করবে৷''

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘৫ই জানুয়ারি নির্বাচন না হলে দেশে গণতন্ত্র থাকত না, এ দেশে ‘মার্শাল ল' কায়েম হতো৷ গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতেই শেখ হাসিনা জীবন বাজি রেখে ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন করেছিলেন৷ ২০১৯ সালের জানুয়ারির এক দিন আগে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না৷''

চলতি বছরের ৫ই জানুযারি একরফা নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ৷ বিএনপি নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহতের চেষ্টা করে৷ গত এক বছর ধরে তারা নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনের জন্য আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়৷ এবার ৫ই জানুয়ারিকে টার্গেট করে আন্দোলন গড়ে তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে বিএনপি৷ অন্যদিকে সরকার তথা আওয়ামী লীগও বিএনপি জোটের আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুত৷ এখন চূড়ান্ত অবস্থা দেখার জন্য তাই কমপক্ষে ৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ