শবরীমালা মন্দিরে ঋতুবতী দুই নারী প্রবেশের জের ধরে চলমান উত্তাপের মধ্যেই আরেকজন নারী প্রবেশ করেছেন৷ কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, এক ৪৬ বছর বয়সি নারীও এবার এই মন্দিরে প্রবেশ করেছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP
বিজ্ঞাপন
শ্রীলংকান সেই নারীর প্রবেশ প্রসঙ্গে স্পষ্ট করে কোনো তথ্য দেয়নি মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়৷ গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, শশীকলা নামের সেই নারীর জরায়ু নেই৷ তাই ঋতুবতী বলে প্রবেশাধিকার থাকবে না এমন নীতির বাইরেই পড়েন তিনি৷ বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে প্রবেশ করেন তিনি৷ সে সময় তাঁর সঙ্গে তাঁর স্বামী ও পুলিশ প্রহরা ছিল৷
এদিকে কেরালা রাজ্যের শবরীমালা মন্দিরে দুই নারীর প্রবেশকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করেছে বিজেপি৷ ভাঙচুর করা হয়েছে শতাধিক বাস৷ গ্রেফতার হয়েছে ২ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী৷
এর আগে সরকারপন্থিদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন বিজেপির এক কর্মী৷
উল্লেখ্য, শবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী কোনো নারীর প্রবেশাধিকার নেই৷ এই নারীদেরকে ঋতুবতী ও অপবিত্র আখ্যা দিয়ে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করে রেখেছিল মন্দির কর্তৃ্পক্ষ৷ সুপ্রিম কোর্ট ঋতুবতী নারীদের ঐ মন্দিরে প্রবেশাধিকারের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিলেন গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর৷ চার মাস কেটে যাওয়ার পরও ঋতুবতী কোনো নারী এর আগে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেননি৷ গত বুধবার প্রথম ৪০ বছর বয়্সি দুই নারী প্রবেশ করেন৷ এর পরপরই প্রধান পুরোহিত মন্দির শুদ্ধিকরণের জন্য বন্ধ করে দেন৷ শুদ্ধিকরণের পর মন্দির আবার খুলে দেওয়া হয়৷
ভারতের ধনী মন্দিরগুলো
ভারতের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়গুলোতে ভক্তের ভিড় লেগেই থাকে৷ এ সব ভক্তরা কিন্তু মন্দিরগুলোতে খালি হাতে যান না৷ তারা দান করের অর্থ, স্বর্ণ, অলঙ্কারসহ অনেক কিছু৷ আর এ সব দানে ভারতের বেশ কিছু মন্দির এখন সম্পদে ভরপুর৷
ছবি: Narinder Nanu/AFP/Getty Images
অনন্ত পদ্মনাথ স্বামী মন্দির
কেরালার রাজধানী থিরুভানান্তাপুরমে অবস্থিত এই মন্দিরটি৷ এটি ভারতের অন্যতম ধনী মন্দির৷ এই মন্দিরে ভগবান বিষ্ণুর পুজো করা হয়৷ এই মন্দিরের ভূগর্ভস্থ কক্ষ থেকে সম্প্রতি ১ লাখ কোটি রূপির সম্পদ উদ্ধার করা হয়েছে৷
ছবি: dapd
তিরুপতি বালাজি মন্দির
অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলায় তিরুমালা পাহাড়ি এলাকায় এর অবস্থান, যা কিনা বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীন পর্বত বলে ধারণা করা হয়৷ এই মন্দিরে দেবতা বিষ্ণুর অবতার ভেঙ্কটেশ্বরের পুজো হয়৷ এখানে মূলত ভক্তরা মাথার চুল দান করেন৷ প্রতি বছর এই মন্দিরে ৫০ হাজার ভক্তের আনাগোনা হয়৷ এই মন্দিরে ৫০ হাজার কোটি রূপির সম্পদ আছে বলে জানা গেছে৷
ছবি: HB-Verlag
সোমনাথ মন্দির
গুজরাটের প্রভাসক্ষেত্রে এই মন্দিরের অবস্থান৷ এই মন্দিরের সম্পর্কে বলা হয় যে, এর উল্লেখ ঋগবেদেও আছে৷ মুসলিমদের শাসনামলে অন্তত ১৭ বার এই মন্দিরটিকে ভাঙা হলেও, পরে আবারো পুনর্নিমাণ করা হয়৷ শিবের মন্দির এটি৷ পুরো মন্দিরটি পাথর দিয়ে তৈরি৷
ছবি: picture alliance/DINODIA
শ্রী জগন্নাথ মন্দির
উড়িষ্যা রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকা পুরীর এই মন্দিরে ভগবান জগন্নাথ দেবের পুজো হয়৷ ১২শ শতাব্দীতে নির্মাণ কাজ শেষ হয় এই মন্দিরের৷ হিন্দুদের চার ধামের অন্যতম এটি৷ মন্দিরটি থেকে ১৭ টন রূপা উদ্ধার করেছিল পুলিশ৷
ছবি: picture-alliance/akg-images/A. F. Kersting
সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির
ভারতের মুম্বইতে এই মন্দিরে সিদ্ধিদাতা গণেশের পুজো করা হয়৷ এই মন্দিরের সম্পদের মধ্যে আছে ৭২৭ কেজি সোনা, যার বাজার মূল্য ৬ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার৷
ছবি: AP
স্বর্ণ মন্দির
পাঞ্জাবের অমৃতসরে এই মন্দিরের অবস্থান৷ কেবল ভারত নয়, পুরো বিশ্ব থেকে লাখো মানুষ এই মন্দিরটি দেখতে যান৷ শিখ সম্প্রদায়ের কাছে এটা অন্যতম পবিত্র স্থান৷ মন্দিরটির দেয়াল রূপা এবং স্বর্ণ দিয়ে তৈরি৷ প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০ হাজার ভক্ত মন্দিরটি পরিদর্শন করেন৷